নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৫ পিএম, ০৯ অগাস্ট, ২০২০
বিতর্ক এবং সঙ্কট যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না স্বাস্থ্যখাতের। স্বাস্থ্যখাতের সঙ্কট দূর করার জন্য ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়েছে। মহাপরিচালক চলে গেছেন, নতুন মহাপরিচালক দায়িত্ব নিয়েছেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নতুন সচিব দেওয়া হয়েছে, সিএমএসডি’তে নতুন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারপরেও বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না স্বাস্থ্যখাতের। বরং একটি সমস্যা শেষ না হতেই নতুন সমস্যার মুখে পড়ছে স্বাস্থ্যখাত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়ের অভাব রয়েছে, রয়েছে অভিজ্ঞতার অভাব এবং একের পর এক নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিজেই। সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চতুর্মূখী সঙ্কটে পড়েছে আর এই সঙ্কটগুলোর উত্তরণ না হলে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে স্বাস্থ্যখাতের বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্যখাতে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বহীনতা এবং অযোগ্যতার কথা বলা হচ্ছে। আর এগুলোর ফলে এখন একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি করে চলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যখাত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে সমস্ত বিষয় নিয়ে এখন সঙ্কটে আছে স্বাস্থ্যখাত, তাঁর মধ্যে রয়েছে-
চিকিৎসকদের অসন্তোষ বাড়ছে
চিকিৎসকদের নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে শুরু থেকেই সঙ্কট চলছিল। বিশেষ করে চিকিৎসকদের সুরক্ষা সামগ্রী পিপিই দেওয়া নিয়ে বিতর্ক এবং করোনা চিকিৎসা কিভাবে করা হবে তা নিয়ে বিতর্কের পর সাময়িক সময়ের জন্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের এখন হোটেল সুবিধা দেওয়া-না দেওয়া নিয়ে বিএমএ-এর সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে স্বাস্থ্যখাতের। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে, এখন এই বিতর্কটি অনভিপ্রেত এবং বাস্তবতা বিবর্জিত। তাঁরা মনে করছেন যে, হোটেল বাতিল না করে এখন যেহেতু হাসপাতালগুলোর উপর রোগীদের চাপ কমেছে, সেজন্য সরকারিভাবে কোভিড হাসপাতালের সংখ্যা কমিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র অল্প কিছু হাসপাতাল রাখাই উচিত। বেশকিছু হাসপাতাল রয়েছে যেখানে রোগী যাচ্ছে না কিন্তু চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করছেন। এটা ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। আবাসন সুবিধা বন্ধ না করে বরং যেসকল হাসপাতালগুলোতে এখন রোগীর সংখ্যা কম, সেই হাসপাতালগুলোতে কোভিড চিকিৎসা বন্ধ করে বিতর্কের অবসান করা যেত বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভিন্ন পথে হাঁটছে।
দুর্নীতিবাজরা এখনো সক্রিয়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিতর্কিত মহাপরিচালক চলে গেছেন, কিন্তু তাঁর অনুসারী ‘প্রেতাত্মারা’ এখনো রয়ে গেছেন যারা স্বাস্থ্যখাতে এখনো চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন লাইন ডিরেক্টর এবং পরিচালক পদে যারা আছেন তাঁরা অধিকাংশই সাবেক মহাপরিচালকের আজ্ঞাবহ এবং অনুগ্রহতুষ্ট। তাঁদের হাত ধরেই স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। সেই লাইন ডিরেক্টর এবং পরিচালকদের এখন পর্যন্ত পরিবর্তনের কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এমনকি যারা দুর্নীতিবাজ হিসেবে সক্রিয় ছিল, তাঁরা এখন আবার নতুন করে পরিবর্তিত রূপে আবির্ভূত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বেসরকারি হাসপাতালে সঙ্কট
নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অভিযান বন্ধে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জন অসন্তোষের কারণ সৃষ্টি করেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কেউ কেউ বলেন যে, স্বাস্থ্যখাতের গডফাদারদের বাঁচানোর জন্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই রকম পদক্ষেপ নিয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ২৩ আগস্টের মধ্যে লাইসেন্স নবায়নের নির্দেশ দিয়েও একটা নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
ভ্যাকসিন বিতর্ক
এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবথেকে বড় কাজ হলো ভ্যাকসিনের ব্যাপারে কাজ করা এবং ভ্যাকসিন গবেষণার পথ উন্মুক্ত করা। কিন্তু সেক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই ভ্যাকসিন করার ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যে একীভূত করা, সমন্বয় করা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার উদ্যোগ দেখা যাচ্ছেনা। এর ফলে বিশ্বে ভ্যাকসিন আসার পরও বাংলাদেশে ভ্যাকসিন প্রথমদিকে আসবে কিনা এবং সব মানুষ পাবে কিনা তাই নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এই সঙ্কটগুলো যেন ভবিষ্যতে আবার পুঞ্জীভূত না হয় সেজন্য অনতিবিলম্বে এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।