নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০২ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
আওয়ামী লীগকে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। এজন্য একদিকে যেমন তিনি, দলের অনিষ্পন্ন কমিটিগুলো চুড়ান্ত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। অন্যদিকে দলকে পরিচ্ছন্ন এবং দূবৃত্ত মুক্ত করতেও পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই, এক জেলায় এক নেতার কর্তৃত্ব এবং রাজত্ব অবসানের উদ্যোগ নিয়েছেন শেখ হাসিনা।
দেখা যায় একটি জেলায় একজন নেতাই সর্বেসর্বা হয়ে উঠেন। তার ইচ্ছা অনিচ্ছায় ঐ এলাকায় চুড়ান্ত বলে শিরোধার্য হয়। ঐ নেতা ছাড়া দ্বিতীয় কোন নেতাকে বিকশিত হতে দেয়া হয় না। ঐ জেলার কমিটি হয় ঐ নেতার অনুগত এবং আজ্ঞাবহদের দিয়ে। নেতার মৃত্যু হলে তার ছেলে বা স্ত্রী ঐ আসনের মনোনয়ন পান এবং শুরু হয় তার ‘রাজত্ব’। এভাবে চলতে থাকে পরস্পরা। ঐ জেলা বা এলাকায় যারা ত্যাগী, পরীক্ষিত বা সম্ভাবনাময় তরুণরা থাকেন, তারা আস্তে আস্তে হতাশ হয়ে যান। একসময় অনেকেই রাজনীতি থেকে সরে যান নীরব অভিমানে।
এক এলাকায় এক নেতা থাকার কারণে সংগঠন বিকশিত হয় না। দূর্নীতিবাজ, চাটুকাররা ঘিরে ফেলেন নেতাকে। এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতি হয় আওয়ামী লীগের। গত ১০ বছরে এক নেতার রাজত্বের কারণে, আওয়ামী লীগের অনেক বদনাম হয়েছে। ঐ নেতাদের হাত ধরেই অনুপ্রবেশকারীরা আওয়ামী লীগে ঢুকেছে বলেও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। আর তাই শেখ হাসিনা এই অবস্থার অবসানের উদ্যোগ নিয়েছেন। শেখ হাসিনা তার অভিপ্রায়ের প্রথম প্রকাশ ঘটিয়েছেন দলের মনোনয়নের ক্ষেত্রে। পাবনা-৪ আসনে ডিলু পরিবারকে শেখ হাসিনা বাদ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা মনে করেন, এটি ছিলো শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট বার্তা।
একই ভাবে, ঢাকা-৫ আসনেও আওয়ামী লীগ সভাপতি মোল্লা পরিবারের কাউকে মনোনয়ন দেন নি। এবার প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে সুস্পষ্ট ভাবে একই বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা। গণভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, পকেট কমিটি হবে না। শুধু নেতার অনুগতদের দিয়ে কমিটি করলে সেই কমিটি ‘অনুমোদন’ পাবে না। এটা তৃণমুলকে ব্যাপক ভাবে উজ্জীবিত করবে বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, দেখা যায় দলের হেভিওয়েট নেতা। কিন্তু এলাকায় কমিটি নেই, দ্বিতীয় কোন নেতাকে বড় হতে দেয়া হয় না। পকেট কমিটি না করার নির্দেশনা তৃণমুলে নতুন শক্তি এবং সাহস যোগাবে। এর ফলে দলের তৃণমূলে গণতন্ত্র চর্চা এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মীরা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।