নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৭ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০
যে কোনো সময় মন্ত্রীসভায় রদবদল হতে পারে, এমন আলোচনা এখন সচিবালয়ে প্রকাশ্য হচ্ছে। বৃহস্পতিবার অধিকাংশ মন্ত্রী তৎপর ছিলেন এবং মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলেছেন। সরকারের মন্ত্রীদের কাছে এই রকম খবর আছে যে, যে কোনো সময় মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে পারে। কোন কোন মন্ত্রী বলছেন, আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিসভায় রদবদলের জন্য প্রস্তুতি রয়েছে বলে, তাদের কাছে খবর রয়েছে।
মন্ত্রী বিভাগ অবশ্য বলছেন যে, মন্ত্রিসভায় রদবদলের জন্য সব সময় তারা প্রস্তুত থাকে। এটাই তাদের রুটিন কাজ। তবে কখন মন্ত্রীসভায় রদ বদল হবে, এ ব্যাপারে এখনও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে কোন তথ্য নেই।
উল্লেখ্য যে, মন্ত্রিপরিষদের রদবদলের কাজটি সম্পন্ন করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, মন্ত্রিসভায় রদ বদল এককভাবে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সেভাবেই নতুন মন্ত্রীদের শপথের আয়োজন করেন বা দপ্তর পরিবর্তন করেন। আসলে মন্ত্রিসভার রদ বদলের আকার-প্রকরণ কিভাবে হবে এবং এই মন্ত্রীসভার রদ বদলে কারা থাকবেন বা বাদ পড়বেন- সে বিষয় নিয়েই আলোচনা চলছে।
এতো দিন ধরে মন্ত্রিসভার প্রধান আলোচনার বিষয় ছিল দুটি। প্রথমত, ধর্ম মন্ত্রণালয়ে নতুন একজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেয়া। দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গতকাল কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যে ইঙ্গিত করেছেন তাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তন নিয়ে আবার অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনা মোকাবেলায় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছে এবং তাদের সমালোচনা হবেই। সমালোচনায় কান না দিয়ে কাজ করে যাবার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে, প্রশ্ন উঠেছে যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কি পরিবর্তন হচ্ছে? নাকি স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে যাচ্ছেন। কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর টিকে থাকার প্রত্যয়ন পত্র বলে মনে করছেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বলেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভালো কাজ করছেন। কাজেই এই অবস্থায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিবর্তন নিয়ে যতোই আলোচনা হোক, তা কাজে আসবে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী তার নিজস্ব চিন্তা, কৌশল অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ সাজাবেন। কারণ এই মুহূর্তে যদি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পরিবর্তন করা হয়, তাহলে মনে করা হবে যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আসলে ব্যর্থ। এজন্য মন্ত্রীকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
করোনা সংকট নিয়ে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সফল না ব্যর্থ- এই নিয়ে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। অধিকাংশ জনগণই মনে করে যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনা মোকাবেলায় যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারেনি। বিশেষ করে, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একের পর এক বিতর্কিত বক্তব্য এবং তার ভূমিকা নিয়ে সর্বস্তরে সমালোচনা হয়েছে। আর এই সমালোচনার প্রেক্ষিতে যদি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিবর্তন করা হয়, তাহলে সেটি সরকারের ঘাড়ে আসতে পারে বলে, অনেকে মনে করেন। কারণ এতোদিন তাহলে পরিবর্তন করা হয়নি কেন বা স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে তাকে এতদিন রাখা হল কেন ইত্যাদি প্রশ্ন আসতে পারে। এটিকে সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।
এ রকম বাস্তবতায় সরকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরিবর্তন নাও করতে পারেন, বলে ধারণ করা হচ্ছে। অবশ্যই আবার বিপরীত মতামতও পাওয়া গেছে। অনেকে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য ইংগিতবাহী। তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ব্যর্থতার জন্য পরিবর্তন করছেন না। বরং স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভালো করেছেন, তাকে অন্য একটি মন্ত্রণালয়ে দেয়া হচ্ছে। ব্যর্থতার জন্য তাকে পদত্যাগ করানো হচ্ছে না। এটি বোঝানোর জন্যই হয়ত প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সফলতার কথা বলছেন।
তবে এর আশ্বাস পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তন হবে- কিনা সেটি দেখার বিষয়। আর একটি মন্ত্রণালয় নিয়ে গুঞ্জন আছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একের পর এক পেয়াজ সংকট, জিনিসপত্রের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ইত্যাদি নিয়েও কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। এই মুহূর্তে তাকে পরিবর্ত করা হবে কিনা- তা নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছেন। কথা হচ্ছে অর্থমন্ত্রীকে নিয়েও। এই করোনা সংকটের সময় অর্থমন্ত্রীর ভূমিকা তেমন ইতিবাচক ছিলো না, বলে অনেকে মনে করছেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে রদবদল হবে, এটি অনেকের কাছেই একটি অবাস্তব চিন্তা । সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাত নিয়েও কথাবার্তা হচ্ছে। বিদ্যুৎ জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়েও ভাবা হচ্ছে। এছাড়াও কাজের সমন্বয় করার জন্য নতুন প্রতিমন্ত্রী, নতুন মন্ত্রী নিয়োগের বিষয়টি নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে। দলের গুরুত্বপূর্ণ হেভিওয়েট নেতাদের কেও এখন মন্ত্রিসভায় আনা হতে পারে, এমন কথা আওয়ামী লীগের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে হচ্ছে।
তবে মন্ত্রিসভায় আকার-প্রকরণ কি হবে এবং মন্ত্রিসভায় রদ বদল ছোটো হবে নাকি বড় হবে- সে বিষয় নিয়ে নানা রকম আলাপ-আলোচনা ও গুঞ্জন থাকলে, সঠিক এবং নিশ্চিত তথ্য কারো কাছে নেই। তবে সবাই একটি কথা বলছেন যে, আগামীকাল থেকে যে সপ্তাহটি শুরু হচ্ছে, এই সপ্তাহ থেকে মন্ত্রিসভায় বড় ধরণের রদবদল হতে পারে।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।