নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০১ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমার ব্যাক্তিগত পরিচয়ের বয়স ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে। ১৯৮১ সালে তিনি যখন স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন তখন থেকে রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন তৎকালীন বদরুননেছা কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সহ সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি। এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক সেসময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। এবং আরও অনেক নেতারাই ছিলেন। আমরা সকলেই তখন বিভিন্ন অবস্থা পর্যালোচনা করে মত দিয়ে ছিলাম যে; শেখ হাসিনার সে সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করা ঠিক হবে না। কারণ আমরা চিন্তা করছিলাম নির্বাচনে তিনি তো হারবেনই; ভোটে হারবেন এইটা ছিলো দেখার বিষয়। কারণ ছাত্র ইউনিয়ন তখন খুবই শক্তিশালী সংগঠন ছিলো বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে। আর সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগ ছিলো খুবই দুর্বল।
কিন্তু নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শেখ হাসিনা খুবই দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন। তিনি বললেন ‘আমার নিজস্ব কর্মী বাহিনী আছে; আমি নির্বাচনে দাঁড়াবো এবং নির্বাচনে জিতব’ শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করার ব্যাপারে অনড় থাকলেন।
ইতিমধ্যে তৎকালীন গর্ভনর মোনায়েম খান প্রকাশ্যে বিবৃতি দিলেন ‘শেখ মুজিবের মেয়ে যদি এই নির্বাচনে জিতে তাহলে ৬ দফার প্রতি ম্যানডেট যাবে’ সুতরাং এই জয় ঠেকাতেই হবে।
মোনায়েম খানের ঘোষণার পর আমরা আরও বেশি ঘাবড়িয়ে গেলাম। ভাবলাম জেতার আর কোন সম্ভাবনা নাই। ঢাকা মেডিকেলের হোস্টেল যেহেতু কাছেই তাই ওই নির্বাচনে আমি কিছু পোস্টার লেখা, চা-সিঙ্গারা এনে দেওয়ার কাজ করেছিলাম। তিনি অবশ্য বত্তৃতাতে অনেক জায়গায় খুব বলেন; আমি তার নির্বাচনে অনেক কাজ করেছি। আসলে খুবই সামান্য কাজ করেছি তখন। তখনকার দিনে কর্মীর সংখ্যাও কম ছিল।
ভোট গ্রহণের পর আমি,অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল নুরুল হোসেন এবং আইসিডিডিআর,বিতে কর্মরত ড: ইউনুস ভাই; আমরা তিনজন মিলে নির্বাচনের ফলাফল কি হতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা করছিলাম। এরপর যখন নির্বাচনের রেজাল্ট বের হলো তখন দেখা গেল উনি প্রায় ৭৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছেন। তার বিপক্ষে যিনি ছাত্র ইউনিয়ন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন তিনি খুব শক্তিশালী প্রার্থী ছিলেন এবং তার ভাইও ছাত্র ইউনিয়নের নামকরা নেতা ছিলেন।
প্রথম দিকে উনি যখন দেশে ফিরেন তখন বত্রিশ নম্বরে সাধারণত সন্ধ্যা ৬ টার দিকে উনি ওপরের তলায় চলে যেতেন এবং সারা রাত নামাজ,কোরআন পড়তেন এটাই ছিলো তার ১৫ই আগস্টের রুটিন।
বর্তমান সময়ের কথা বলি, এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে, বিশ্বে সরকার প্রধান হিসেবে উনি সব্বোর্চ সময় আসীন আছেন। উনার সমকক্ষ কোন দেশের কোন রাষ্ট্র প্রধান দেখা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার মতো প্রজ্ঞাবান, অভিজ্ঞ আর কোন প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর আর কোথাও নেই। তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রেই একের পর এক সফলতা অর্জন করছেন। কোন ক্ষেত্রেই তাঁর ব্যর্থতা নাই।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা যখন দেশে ফিরেন তখনও এদেশে কার্ফু বলবৎ ছিলো। রাতে কার্ফু থাকতো। তিনি আন্দোলন সংগ্রাম করে এই কার্ফু প্রত্যাহার করেন। ১৯৭৫ থেকে ২১ বছর সংগ্রাম করে অগণতান্ত্রিক পথে যারা ক্ষমতায় ছিলো তাদেরকে বিতাড়িত করে আওয়ামীলীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনেন। তারপরে গণতান্ত্রিক পথে রাষ্ট্রকে পরিচালিত করছেন।
শেখ হাসিনা একটা জিনিস মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন সেটি হচ্ছে ‘মানুষ একবারই জন্মগ্রহণ করে এবং তার মৃত্যু একবারই হবে। যার জন্য ১৫ আগষ্ট এবং ২১ আগষ্ট তিনি বেঁচে গেছেন।
শেখ হাসিনার বিজ্ঞতা,প্রজ্ঞা এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার সাথে যুক্ত হয়েছে তার সাহস। আমার মতে, এই সাহসের মূল কারণ হচ্ছে; তিনি যেকোন সময় জনগণের খেদমত করতে যেয়ে মৃত্যুবরণ করার জন্য একদম প্রস্তুত। আমরা মুখে বলি কিন্তু উনি কাজে বিশ্বাসী।
আমরা যত যাই বলি, যদি সত্যিকারের মৃত্যুর মুখোমুখি হই তাহলে চেষ্টা করবো কোন রকম আবার বেঁচে থাকা যায় কি না।
কিন্তু দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম। তিনি তার জীবন বাঁচানোর জন্য সামান্যতম গুরুত্ব দেন না। তিনি জনগণের সেবা করা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশেকে সোনার বাংলায় রুপান্তরিত করার ওপর গুরুত্ব দেন।
তিনি এই পথে সফল হচ্ছেন । তার জন্মদিনে সৃষ্টিকর্তার কাছে একটি প্রার্থনাই থাকবে; আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘজীবী করেন। সুস্থ রাখেন। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারেন সেজন্য আল্লাহ যেন তাকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে রাখেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বিশ্বাস করেন না। তিনি মনে করেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা তার জন্য দায়িত্ব।
মন্তব্য করুন
সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি সত্ত্বেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে
মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের স্বজনের প্রার্থিতা ঠেকাতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী
লীগ। হাতেগোনা দু-একজন বাদে ভোটের মাঠে রয়ে গেছেন এ ধরনের বেশিরভাগ প্রার্থী। দলীয়
নির্দেশনা অমান্য করে যেসব মন্ত্রী-এমপির স্বজন উপজেলায় ভোট করছেন, তৃণমূল পর্যন্ত
অনেক নেতাকর্মীই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সোচ্চার। তা সত্ত্বেও এ ইস্যুতে
এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আওয়ামী লীগ। গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মৌখিক
বক্তৃতায় হুমকি-ধমকির মধ্যেই বিষয়টি সীমাবদ্ধ রয়েছে। এমনকি দলের কার্যনির্বাহী কমিটিতেও
এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।
শুধু তাই নয়, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হওয়া প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আগামী দিনেও কঠোর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মূলত মন্ত্রী-এমপিসহ স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী নেতাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে উপজেলা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতেই আওয়ামী লীগ এমন কৌশল নিয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক নেতা।
আরও পড়ুন: প্রচণ্ড তাপদাহে ১৪ দলে স্বস্তির বৃষ্টি
জানা গেছে, এবারের উপজেলা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে শুরু থেকেই
সচেষ্ট ছিল আওয়ামী লীগ। এ কারণেই দলীয়ভাবে মনোনয়ন না দিয়ে সবার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত
করা হয়। তা সত্ত্বেও বিএনপি-জামায়াতসহ অনেক দল নির্বাচনের বাইরে থাকায় শেষ পর্যন্ত
এই নির্বাচন কতটা অংশগ্রহণমূলক হবে—তা নিয়ে সংশয় ছিল। বিশেষ করে সরকারের মন্ত্রী, সংসদ
সদস্য কিংবা স্থানীয়ভাব প্রভাবশালী নেতাদের হস্তক্ষেপে অনেক উপজেলায় তাদের পছন্দের
প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
বিশেষ করে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের পরিবারের সদস্য বা স্বজনরা অবাধে ভোটে দাঁড়াতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে আর কেউ প্রার্থী হতে চাইতেন না। এমন বিবেচনা থেকেই ভোটের মাঠ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন ও নিকটাত্মীয়দের নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। তা সত্ত্বেও অনেক উপজেলায় ভোটের মাঠে রয়ে গেছেন প্রভাবশালী প্রার্থীরা। তা সত্ত্বেও দলীয় কৌশল সফল হয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
আরও পড়ুন: নির্দেশ অমান্যকারী মন্ত্রী-এমপিদের সাধারণ ক্ষমা?
তাদের মতে, মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের ভোট করার নির্দেশনা দিয়ে দল
সবার জন্য একটি বার্তা দিতে চেয়েছে। তা হলো, আওয়ামী লীগ অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক উপজেলা
নির্বাচন চায়। হাতেগোনা দু-চারটি বাদে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্যরা নির্বাচনে অংশ
নিচ্ছেন না। তাদের যেসব আত্মীয়স্বজন প্রার্থী হয়েছেন, তাদের প্রায় সবাই দীর্ঘদিন ধরে
দলীয় রাজনীতিতে অবদান রেখে আসছেন। তা ছাড়া দু-চারটি ব্যতিক্রম বাদে এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
নির্বাচিত হওয়ার সংখ্যা কম। সব মিলিয়ে উপজেলা নির্বাচনে নিয়ে দলীয় কৌশল সফল হয়েছে বলেই
অনেক কেন্দ্রীয় নেতার ধারণা।
এ বিষয়ে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘দলের বার্তা খুব পরিষ্কার, উপজেলা নির্বাচন যেন প্রভাবমুক্ত হয়। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এমন বার্তাই স্পষ্ট করেছেন। নির্বাচনকে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপমুক্ত রাখতেই এই কৌশল। এখন পর্যবেক্ষণ করতে হবে নির্বাচন কতটা প্রভাবমুক্ত হয়।’
আরও পড়ুন: মন্ত্রী-এমপিরা কেন দলের সিদ্ধান্ত মানছেন না
গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ৬২ টিতেই
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করে জয়ী হন। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের মধ্যে সিংহভাগই
আওয়ামী লীগ নেতা। ফলে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলে যে দ্বৈরথ তৈরি হয়েছে, উপজেলা নির্বাচনেও
তার প্রভাব পড়তে পারে বলে আওয়ামী লীগের আশঙ্কা। এ কারণেই দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না
দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নির্বাচনকে আরও গ্রহণযোগ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে
মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবমুক্ত রাখতে আত্মীয়-স্বজনদের নির্বাচন থেকে বিরত থাকতেও নির্দেশ
দেয় ক্ষমতাসীন দল। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়ে গেছেন এ ধরনের প্রার্থীরা।
নির্বাচন কমিশনের তপশিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায়, দ্বিতীয়
ধাপে ১৬১, তৃতীয় ধাপে ১১২ ও শেষ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার
তৃতীয় ধাপের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনের হিসাব অনুযায়ী অন্তত অর্ধশতাধিক মন্ত্রী ও এমপির
স্বজন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তবে ৪৮০টি উপজেলার মধ্যে এই সংখ্যাকে খুব বেশি বলে মনে
করছে না আওয়ামী লীগ। এ কারণেই ঢালাওভাবে ব্যবস্থা নেওয়া থেকে আপাতত বিরত থাকছে তারা।
গতকাল গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি
শেখ হাসিনাও উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি
বলেন, ‘পারিবারিক ফর্মুলা কী? নিজের ছেলে-মেয়ে-স্ত্রী, এই তো। তারপর হিসাব করে দেখেন,
কয়জন ছেলেমেয়ে, কয়জন স্ত্রী দাঁড়িয়েছে। এর বাইরে তো পরিবার ধরা হয় না। আমাদের
কথা হচ্ছে নির্বাচন যেন প্রভাবমুক্ত হয়। মানুষ যেন স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে।’
জানা গেছে, প্রতিটি সংসদীয় আসনে এক বা একাধিক উপজেলা রয়েছে। এলাকার
রাজনীতিতে এমপির পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যানের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও অনেকে উপজেলা চেয়ারম্যানদের কাছে হেরেছেন।
এ কারণে উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠেন সংসদ সদস্যরা। নিজ পরিবার কিংবা বলয়ের
লোককে উপজেলা চেয়ারম্যান করতে সচেষ্ট তারা।
এ পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরেই মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের নির্বাচনে
অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে
কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে তাদের তালিকা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও দলের
সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ার করে দেন।
সূত্র জানায়, এরপরই মন্ত্রী এমপিদের স্বজনদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
জমা পড়ে দলের দপ্তরে। অনেকে সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে
লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভার আলোচ্যসূচিতেও
উপজেলা নির্বাচন ইস্যুটি অন্তর্ভুক্ত হয়। সাংগঠনিক সম্পাদকরা প্রতিবেদনও চূড়ান্ত করেন।
তবে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাহী সংসদের সভায় এ বিষয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।
বৃহস্পতিবার (০২ মে) সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার প্রশ্নে অনেকটা নমনীয় মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি বলেছিলাম (মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের নির্বাচন থেকে বিরত থাকতে)। কারণ হচ্ছে, আমরা চাইছি, নির্বাচনটা প্রভাবমুক্ত যেন হয়, মানুষ যেন স্বাভাবিকভাবে ভোটটা দিতে পারে। সেটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুন: ভোটের মাঠেই রয়েছেন মন্ত্রী-এমপির স্বজন ও বিএনপির প্রার্থীরা
এসব কারণে অনেকের ধারণা, মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নেওয়ার হুমকি ও হুঁশিয়ারি রাজনৈতিক কৌশল।
আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মূলত বিএনপি নির্বাচনে
আসবে না জেনেই নির্বাচনকে জমজমাট ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে দলীয় প্রতীক তুলে দেওয়ার
সিদ্ধান্ত দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। নির্বাচনে যদি মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন
ঢালাওভাবে অংশ নেয়, তবে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবর্তে একপেশে হয়ে যাবে—এমন আশঙ্কায়
তিনি ওই কৌশল নিয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন কালবেলাকে বলেন,
‘আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো বার্তা দিয়েই দিয়েছেন। তার বার্তা
অনুযায়ী নির্বাচন যে-ই করুক, কেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন
কঠোর ভূমিকা পালন করবে। উপজেলা নির্বাচনে কেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না, যেহেতু
দল কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’
প্রভাবশালী নেতা আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি সত্ত্বেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের স্বজনের প্রার্থিতা ঠেকাতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। হাতেগোনা দু-একজন বাদে ভোটের মাঠে রয়ে গেছেন এ ধরনের বেশিরভাগ প্রার্থী। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে যেসব মন্ত্রী-এমপির স্বজন উপজেলায় ভোট করছেন, তৃণমূল পর্যন্ত অনেক নেতাকর্মীই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সোচ্চার। তা সত্ত্বেও এ ইস্যুতে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আওয়ামী লীগ। গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মৌখিক বক্তৃতায় হুমকি-ধমকির মধ্যেই বিষয়টি সীমাবদ্ধ রয়েছে। এমনকি দলের কার্যনির্বাহী কমিটিতেও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।