ইনসাইড পলিটিক্স

অনন্য শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০৯ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০


Thumbnail

আজ ২৮শে সেপ্টেম্বর - জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। প্রতিটি মানুষের জীবনে জন্মদিন একটি বিশেষ দিন। এই দিনে প্রিয়জনদের কাছ থেকে আসে অনেক অনেক শুভ কামনা, শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ। ভালবাসার মানুষটির জন্য সবাই কামনা করে সুখ, শান্তি ও সফলতা। কিন্তু আজ আমি জাতির পিতার কন্যার ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতার কথা জানাতে চাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্রপরিচালনায় জনকল্যানে স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে এসেও কিছু কাজ করেন যা এদেশের মানুষের কাছে হয়ত কোন দিনই প্রকাশ পাবে না। তাই আজ আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনকেই বেছে নিলাম আমার জানা কিছু অসাধারণ ঘটনা জনগণের কাছে প্রকাশ করার জন্যে। 

অক্টোবর, ২০০৯ সাল। কোটালীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রে সরকারের ন্যাশনাল আই কেয়ার কর্মসূচীর আওতায় বিরাট চক্ষু ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। আমি তখন ন্যাশনাল আই কেয়ার কর্মসূচীর লাইন ডাইরেক্টর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আই ক্যাম্পে আগত চোখের রোগীদের সাথে কথা বলতে যুক্ত হলেন। অনুষ্ঠানে তখনকার মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, শেখ কবির হোসেন ও শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সহ গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার সাথে দীর্ঘক্ষন বাংলাদেশের অন্ধত্ব নিবারণ নিয়ে কথা বলেন এবং পরবর্তীতে রোগীদের সাথে কথা বলে তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজখবর নেন। তিনি আমাকে ন্যাশনাল আই কেয়ার কর্মসূচীর মাধ্যমে সারাদেশের দরিদ্র মানুষের বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশ প্রদান করেন এবং তার জন্য যা যা দরকার তা করে দেয়ার নিশ্চয়তাও দেন। তাঁরই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশ ব্যাপী সরকারীভাবে চক্ষু চিকিৎসা সেবার বিস্তার ঘটেছে। বর্তমানে ন্যাশনাল আই কেয়ার কর্মসূচীর মাধ্যমে সরকারী ও বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে প্রতি বছর দুই লক্ষেরও অধিক ছানি জনিত অন্ধ রোগীর চোখে অপারেশনের মাধ্যমে দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

২০১১ সাল। ঢাকার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে স্যার ফজলে হাসান আবেদের সাথে কোন এক সভা চলাকালীন সময়ে তিনি আমাকে বাংলাদেশের অন্ধত্ব নিবারণে ন্যাশনাল আই কেয়ারের সাথে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বৃহওর সিলেটে ভিশন বাংলাদেশ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে অন্ধত্ব দূরীকরনে কাজ শুরু করতে চান। আমি বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে অবহিত করি। আমার কথা শুনে তিনি সাথে সাথে আমাকে ব্র্যাকের লিখিত প্রস্তাবনা তাঁর দপ্তরে পাঠাতে নির্দেশ দেন এবং তিনি এও বলেন যে, উক্ত প্রস্তাবে বিদেশ থেকে কত টাকা আনা হবে এবং রোগীদের চিকিৎসার জন্য কত টাকা খরচ করা হবে তা যেন পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকে। আমি বিষয়টি স্যার ফজলে হাসান আবেদকে জানানোর পর তিনি তার প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তার প্রস্তাব পেশ করেন। আমি ব্র্যাকের প্রস্তাবটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণ করার এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পিএস ২ ব্র্যাকের সাথে কাজ করার প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির কথা আমাকে জানিয়ে দেন। বিদেশ থেকে আনা অনুদানের টাকার সিংহভাগ গরীব মানুষের চক্ষু চিকিৎসা বাবদ ব্যয় করা হবে নিশ্চিত হয়েই সেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্র্যাকের সাথে কাজের অনুমতি দিয়েছিলেন। ব্র্যাক পরে ন্যাশনাল আই কেয়ারের পার্টনার হিসাবে ভিশন বাংলাদেশ প্রকল্প নিয়ে অত্যন্ত সফলতার সাথে সিলেট বিভাগে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কাজ করে। ব্র্যাকের এই কার্যক্রমের মাধ্যমে তিন বছরে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এক লক্ষ দশ হাজার ছানি জনিত অন্ধ রোগী আবার তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। 
  
২০১৮ সালের আরেকটি ঘটনা। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষন প্রতিষ্ঠান, গোপালগঞ্জকে কেন্দ্র করে চারিদিকের ৮টি জেলার ২০টি উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল আই কেয়ার সারাদেশ ব্যাপী কমিউনিটি ভিশন সেন্টার প্রতিষ্ঠার কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রাম গঞ্জের মানুষ সারা বছর ব্যাপী বিনামূল্যে ছানি অপারেশন, চশমা ও ঔষধপত্র সহ আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা সেবার সুযোগ পাবে। প্রধান অতিথি হিসেবে উক্ত অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের দরিদ্র মানুষের চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিরবিছিন্ন রাখার জন্য ২০ কোটি টাকার সরকারী অনুদান প্রদান করেন যা ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে রাখা হবে এবং এর লভ্যাংশ বিশেষ প্রয়োজনে হতদরিদ্র রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ব্যয় করা হবে এই নির্দেশনাও তিনি দিয়ে দেন। 

উল্লেখযোগ্য আরেকটি ঘটনা। গাজীপুরের কাশিমপুরের তেঁতুইবাড়ীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট কর্তৃক একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়। হাসপাতালটির নাম শেখ  ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল। প্রতিদিন এই হাসপাতালে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচুর দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। তাদের মধ্যে অনেকেই অর্থের অভাবে চিকিৎসা খরচ চালাতে পারে না। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে মালয়েশিয়ার কেপিজে গ্রুপ। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গণ এই হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করে থাকে। হাসপাতাল পরিচালনায় কেপিজে গ্রুপকে বিরাট অংকের ব্যয়ভার বহন করতে হয় কাজেই চাইলেই সংখ্যাতিরিক্ত গরীব রোগীকে স্বল্প মূল্যে বা নাম মাত্র মূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। আমি প্রথম থেকেই প্রতি শনিবার উক্ত হাসপাতালে একজন চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে কাজ করি এবং কিছুটা দেখাশোনা করি বিধায় এ ব্যাপারে অবগত হই। আমি বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করি এবং তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলি যে একজন গরীব মানুষের শুধু টাকা নেই বলে এই হাসপাতালে কোন চিকিৎসা পাবে না তাহলে যার নামে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার প্রতি অবিচার করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাথে সাথে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। তিনি গরীব দুঃখী মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালটির নামে ২০ কোটি টাকার অনুদান দিয়ে একটি ফিক্সড ডিপোজিট খুলে দেন এবং বলে দেন যে ফিক্সড ডিপোজিটের লভ্যাংশ থেকে অসহায় দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার খরচের ভর্তুকি মিটানো হবে। বর্তমানে ফিক্সড ডিপোজিটের লভ্যাংশ থেকে অসহায় মানুষ চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছে।

এছাড়াও আমার জানা মতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসার জন্য আগত দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা ব্যয়ের ভর্তুকির জন্য ২৫ কোটি টাকার অনুদান দিয়ে একটি ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়া হয়েছে। বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য মহোদয় বিষয়টি আমাকে অবহিত করেছেন।

উল্লেখিত ঘটনাগুলো অসাধারণ মানবিক কাজ বলে চিরদিন বিবেচিত হবে। ঘটনাগুলোর আমি স্বাক্ষী বলে জানাতে পারলাম। জনকল্যানে এমন আরও বহু কাজ দেশরত্ন শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন যা হয়ত এদেশের মানুষ কোনদিন জানবেও না। এই কাজগুলো একজন প্রধানমন্ত্রীর দৈনন্দিন রুটিন কাজের মধ্যে পরে না। অনেক দেশের সরকার প্রধানের কাছে এসকল কাজ বাড়তি বলে মনে হতে পারে কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতি হলো গণমানুষের কল্যানের রাজনীতি। তিনি তো হলেন জাতির পিতার কন্যা। রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ করাই তাঁর রাজনীতির দর্শন। তিনি তো তাঁর জীবন বহু আগেই বাংলাদেশের গরীব দুঃখী মানুষের কল্যানে উৎসর্গ করেছেন। বার বার বুলেট ও গ্রেনেড আক্রমন থেকে অলৌকিক ভাবে বেঁচে আসা এক অকুতোভয় নেতাকে হয়তো মানুষের কল্যানের জন্যই মহান আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন। আজ তাই তাঁর এই শুভ জন্মদিনে বলতে চাই বাংলাদেশের মানুষের জন্য শেখ হাসিনা অপরিহার্য। এদেশের মানুষের জন্য তাঁর ভালবাসার প্রতিদান দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। শুধু এই টুকুই বলবো - অনন্য শেখ হাসিনা, তিনি অসাধারণ ও অতুলনীয়।

জন্মদিনে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে জানাই হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা। তার জীবন হোক নতুন সকালের ন্যয় পবিত্র, সজিব ও উজ্জ্বল। তাঁর খ্যাতি হোক জগৎ জুড়ে, ব্যাপ্তি হোক আকাশ সমান। মহান আল্লাহ তাঁকে সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু দান করুন।

অধ্যাপক ডাঃ দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, 
চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সাবেক মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

প্রকাশ: ০৭:৪৩ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নোটিশ দেওয়া হয়।

নোটিশে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিককালে আপনার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এটি সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং এতে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এর দায়ভার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই বহন করবে না।

‘এমতাবস্থায়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে মর্মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ (৯) ধারা মোতাবেক উপযুক্ত ও যথার্থ যুক্তিযুক্ত কারণসহ আগামী ১৫ মে’র মধ্যে লিখিত জবাব প্রদানের নির্দেশ দেয়া হলো।’

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রিয়াজকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সে সময় তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি এবং একটি স্কুলের তহবিল তসরুপের অভিযোগ ওঠে।

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের (নারী শিক্ষা মন্দির) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের বিরুদ্ধে।

এবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য এবং একটি ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরের অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে পড়লে টাকার বিনিময়ে তাকে বাঁচানো সংক্রান্ত রিয়াজের একটি বক্তব্যের অডিও প্রকাশ হয়।

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ   মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

স্থানীয় নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর অংশ নেওয়া উচিত ছিল: নুর

প্রকাশ: ০৬:৪৪ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সরকারবিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন নুর। স্থানীয় টাউন ক্লাব মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিপি নুর বলেন, উপজেলা নির্বাচন উপহাসে পরিণত হয়েছে। যদিও আমি মনে করি বিরোধী দলগুলোর সম্মিলিতভাবে উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল। নির্বাচন বর্জন করায় বিনাযুদ্ধে রাজ্য দখল করে নিচ্ছে তারা।

নুর আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন মুহূর্তের মধ্যে হবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে রক্ষার জন্য তরুণ-যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। এতদিন অনেক রথি-মহরথিরা জোট গঠন করেছেন, ফ্রন্ট গঠন করে জাতির সর্বনাশ করেছেন। তারা দেশ ও জনগণের মুক্তি এনে দিতে পারেননি।

গণঅধিকার পরিষদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার আহ্বায়ক আলমগীর কবীর শিফতির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আল আমীনসহ অন্যরা। 

উপজেলা নির্বাচন   নুরুল হক নুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের পাঁচ ‘না’

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপিতে তারেক জিয়ার নাম হয়েছে ‘মি. না’। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন সব কিছুতেই ‘না’ বলছেন। কোন আলোচনা ‘না’ কোন সমঝোতা ‘না’। নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তাও ‘না’। তার কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিষয়েও তিনি ‘না’ সূচক বক্তব্য দিচ্ছেন। আর এই ‘না’ এর অত্যাচারে বিএনপি এখন অতিষ্ঠ। 

বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন, সাম্প্রতিক সময় একাধিক স্পর্শকাতর বিষয়ে তারেক জিয়ার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। আর তারেক জিয়ার এই নেতিবাচক মনোভাবের কারণেই বিএনপি এখন আরও স্থবির হয়ে পড়েছে। 

যে সমস্ত বিষয়ে তারেক জিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ‘না’ বলেছেন, তার মধ্যে রয়েছে;

১. নেতৃত্ব ছাড়া: গত কিছুদিন ধরে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছিল বিভিন্ন মহলে। যেহেতু তিনি লন্ডনে থাকেন সেজন্য নির্বাহী দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে তিনি যদি কোন আলঙ্কারিক দায়িত্ব যেমন প্রধান পৃষ্ঠপোষক বা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে দলে যারা নেতৃত্বে থাকবেন তারা দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই বিবেচনা থেকে আন্তর্জাতিক মহল এবং দেশেও তারেকের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এটিকে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, কোন অবস্থাতেই তিনি নেতৃত্ব ছাড়বেন না। অর্থাৎ আপাতত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। 

২. ফখরুলের পরিবর্তনে ‘না’: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার এবং তার স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। তার স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত। তিনি নানা রোগে আক্রান্ত। এর জন্য তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলে মহাসচিবের পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য মনস্থির করেছিলাম। কিন্তু তারেক জিয়া তাকেও ‘না’ করে দিয়েছেন। তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন করা যাবে না। 

৩. কাউন্সিল ‘না’: বিএনপির অনেকে দলকে চাঙ্গা করার জন্য, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য দ্রুত একটি কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠানের জন্য তাগাদ দিচ্ছিলেন। বিশেষ করে তৃণমূল থেকে বলা হচ্ছিল যে, অনেক নেতাই এখন অসুস্থ, অনেক পদ শূন্য। এই কারণে দলের নতুন নেতৃত্বের সামনে আনা দরকার, আনা দরকার দলের গতিশীলতা। আর এ কারণেই দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠান করা জরুরি। কিন্তু তারেক জিয়া আপাতত কাউন্সিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

৪. স্থায়ী কমিটির শূন্যপদ পূরণ: বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে পাঁচটি শূন্যপদ রয়েছে। স্থায়ী কমিটি এমনিতেই কার্যকর, যারা অকার্যকর, যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন তাদের অনেকে অসুস্থ, বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন। সে কারণে স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠন ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের সময়ের দাবি। কিন্তু আপাতত স্থায়ী কমিটির শূণ্যপদ পূরণ করার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ নেই। কারণ তিনি ব্যাখ্যা করেননি বটে, তবে আপাতত বিএনপির স্থায়ী কমিটির শুন্যপদ গুলো পূরণ হচ্ছে না।

৫. জোটে ‘না’: বিএনপি চেয়েছিল ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে। বিশেষ করে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে। আর এ কারণে বিএনপি অনেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিল, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তারা একটি অভিন্ন বা যৌথ কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগে সে জোট হয়নি। এখন আবার বিএনপি শরিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এটি তারেক জিয়ার নির্দেশে করা হচ্ছে। তারেক জিয়া অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিশ্বাস করতে পারছেন না। আর এ কারণে তিনি জোটগত ভাবে আন্দোলনের ব্যাপারেও ‘না’ সূচক বার্তা দিয়েছেন। 

আর এ সব ‘না’ এর কারণে বিএনপি এখন নেতিয়ে পড়েছে।


তারেক জিয়া   বিএনপি   আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে যারা বেশি পেয়েছে তারাই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে

প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের যে সমস্ত নেতারা যোগ্যতার চেয়ে অতিরিক্ত পেয়েছেন তারাই দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন, দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন, দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। যুগে যুগে আওয়ামী লীগের জন্য একটি বাস্তবতা। 

খন্দকার মোশতাক কখনোই আওয়ামী লীগের এত বড় নেতা হওয়ার কথা ছিল না। যোগ্যতার বাইরে বঙ্গবন্ধু তাকে সামনের দিকে এনেছিলেন এবং খুনি মোশতাক তার চরম বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, অযোগ্যরা সবসময় বিশ্বাসঘাতক হয়। সবাই মোশতাকের মতো বড় মাপের বিশ্বাসঘাতক না হলেও বিভিন্ন সঙ্কট দেখা গেছে, আওয়ামী লীগে যারা অযোগ্য, আওয়ামী লীগ যারা যত বেশি পেয়েছে তারাই দলের শৃঙ্খলার প্রতি ততটা বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। 

এক এগোরোর সময় হঠাৎ করে বড় হয়ে যাওয়া নেতারাই আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ কারণ হয়ে গিয়েছিল। আর এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, তখন সেই সিদ্ধান্ত যারা লঙ্ঘন করেছে তাদের একটি বড় অংশই হলো অনেক বেশি পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতারা। 

আমরা যদি এবারের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে সমস্ত মন্ত্রী এবং এমপিরা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের হিসাব খতিয়ে দেখি তাহলে দেখব যে, বেশির ভাগই আছেন যারা অনেক বেশি আওয়ামী লীগ থেকে পেয়েছেন। এদের মধ্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন ২০০০ সালের দিকে। যোগদান করেই তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন, নির্বাচন করেছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পেয়েছেন। ২০০৯ সালে তিনি মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালেও তিনি মন্ত্রী ছিলেন এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবেও তিনি এখন দায়িত্ব পালন করছেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগে এত কিছু পেয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর এই সৌভাগ্যের প্রতিদান তিনি দিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশ অমান্য করে তার খালাতো ভাই হারুন অর রশীদ হীরাকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করে।

শাজাহান খান আরেকজন যিনি আওয়ামী লীগে এসে প্রাপ্তির ঝুড়ি পূর্ণ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মন্ত্রী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা হিসেবে তিনি পরিবহন সেক্টরে আধিপত্য  দখল করেছেন। আর এবার নির্বাচনে তিনি তার ছেলে আসিফুর রহমান খানকে প্রার্থী করেছেন। 

একরামুল করিম চৌধুরী সেই বিরল ভাগ্যবান আওয়ামী লীগের নেতা যিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কথা বলে এবং স্থানীয় এলাকা দলের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েও আওয়ামী লীগ সভাপতির আপাত্য স্নেহের কারণে এখনও রাজনীতিতে টিকে আছেন। আর তার প্রতিদান তিনি দিলেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ছেলে আতাহার ইশরাক ওরফে শাবাব চৌধুরীকে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে।

সাহাদারা মান্নান আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা কৃষিবিদ মুহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সহধর্মিণী। কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান এক এগোরার সময় সংস্কারপন্থী ছিলেন। বাংলাদেশের পচাঁত্তর পরবর্তী রাজনীতিতে শেখ হাসিনা যাদেরকে টেনে তুলে পাদপ্রদীপে এনেছেন তাদের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত আব্দুল মান্নান অন্যতম। আর ২০০৬ সালে সংস্কারপন্থি হওয়ার পরও শেখ হাসিনা তাকে বগুড়া থেকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগে তিনি কিছুটা কোণঠাসা থাকলেও দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। বরং তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সাহাদারা মান্নানকে মনোনয়ন দিয়ে শেখ হাসিনা তার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। আর সেই সহানুভূতির পুরস্কার হল সাহাদারা মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

বাংলাদেশে যদি সৌভাগ্যবান কোন আওয়ামী লীগার থাকে তার মধ্যে অন্যতম হলেন আ হ ম মোস্তফা কামাল। তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে শুয়ে বসে দিন কাটিয়েছেন। তবু শেখ হাসিনা তার সব অত্যাচার সহ্য করেছেন। অর্থনীতির বারোটা বাজানোর পরও আ হ ম মোস্তফা কামালকে মন্ত্রিসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়নি। আর তার পুরস্কার তিনি দিয়েছেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে। তার আপন ছোট ভাই এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

জাহিদ মালেক হলেন আওয়ামী লীগের ভাগ্যবান এক ব্যক্তি, যিনি রাজনীতিতে কোনো রকম ত্যাগ তিতিক্ষা না করেই অনেক কিছু পেয়ে গেছেন। বিশেষ করে তার বাবা ছিলেন স্বৈরাচারের দোসর এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কর্নেল মালিকের মতো স্বৈরাচারের দোসরদেরকে ছাত্র জনতাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেই কর্নেল মালেক পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান এবং তার সূত্র ধরে জাহিদ মালেক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান মানিকগঞ্জ থেকে। তিনি ২০১৪ সালে প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালে পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন। তিনি এখন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটিরও সদস্য। অথচ তিনি কিনা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাইকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন।

গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের নেতা এবং জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী আ কম মোজাম্মেল হক। তিনি এতোই ভাগ্যবান যে শেখ হাসিনা তাকে দুবার দলের জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হিসেবে অলঙ্কৃত করেছেন। মন্ত্রী হিসেবে তিনি কতটুকু সফল হয়েছেন সেটি সাধারণ জনগণ ভালো মতোই জানেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পর একজন জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হয়েও তিনি দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাতিজা মুরাদ কবীরকে কালিয়াকৈর উপজেলায় প্রার্থী করেছেন। 

এরকম তালিকা অনেকে দীর্ঘ। যারাই যত বেশি সুযোগ পেয়েছেন তারাই তত বেশি দলের শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এটাই আওয়ামী লীগের একটি বড় ট্রাজেডি।

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় বিএনপির বিদ্রোহীদের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতারা

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।

প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।


বিএনপি   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   মির্জা ফখরুল   ড. মঈন খান   নজরুল ইসলাম খান  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন