নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০১ পিএম, ২৪ অক্টোবর, ২০২০
বর্তমান সময়ে রাজনীতিতে আলোচিত নাম ফরিদপুর ৪ আসনের এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী। নিক্সন চৌধুরী একটি উপজেলা নির্বাচন নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়েছেন।
কিন্তু এই বিতর্ক কেবল ফরিদপুরের বির্তক থাকেনি। শেষ পর্যন্ত এটি এখন প্রশাসন বনাম জনপ্রতিনিধিদের লড়াইয়ে রুপ গ্রহণ করেছে।
এর মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। অনেক জায়গায় জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের কর্তৃত্ব সম্মান এবং মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য প্রকাশ্য হচ্ছেন। অনেক জায়গায় নিক্সন চৌধুরীর দেখানো পথেই জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধে জড়াচ্ছেন অনেক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।
আর এ সমস্ত প্রেক্ষাপটেই মনে করা হচ্ছে যে; নিক্সন চৌধুরী সাহস দেখিয়েছেন। তিনি যেভাবে জেলা প্রশাসকের সাথে কথাবার্তা বলেছেন, সেটি শোভন হয়নি, সেটি শালীন হয়নি। কিন্তু একজন নির্বাচিত এমপি যে জেলা প্রশাসকের চেয়ে পদমর্যাদার উপরে এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হবার কারণে তার গুরুত্ব যে অনেক বেশি এটা প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি চেষ্টা করেছেন। এই জায়গায় জনপ্রতিনিধিরা তার পক্ষ নিয়েছেন।
কিন্তু কেউ কেউ বলছেন; এটা নিক্সন চৌধুরীর পক্ষেই সম্ভব। অন্য কোন এমপি যদি এরকম করতো বা এর ধারে কাছেও কাজ করতো তাহলে সেটা বরদাশত করা হতো না।
প্রশ্ন উঠেছে নিক্সন চৌধুরীর খুঁটির জোর কোথায়? অনেকেই মনে করে যে, নিক্সন চৌধুরী যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় সে জন্য তিনি এরকম করার সাহস পাচ্ছেন। কিন্তু যারা প্রধানমন্ত্রীকে চেনেন তারা জানেন যে, এ ধরনের কোনো কিছুতেই তিনি প্রশ্রয় দেন না। আর প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় যদি হবেন তাহলে তো তিনি ফরিদপুর ৪ আসনে স্বতন্ত্র এমপি পদে দাঁড়াবেন না। তাহলে তো তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েই নির্বাচন করতেন।
কাজেই প্রধানমন্ত্রীর সহানুভুতি বা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষপাত নিক্সন চৌধুরীর পক্ষে আছে এমন ভাবাটা অযৌক্তিক এবং কল্পনা প্রসূত ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ প্রধানমন্ত্রী তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আত্মীয়-অনাত্মীয় বিবেচনা করেন না। বরং দলের আদর্শ এবং নীতির প্রতি সম্মান দেখান। আর এ কারণেই নিক্সন চৌধুরী আত্নীয় হওয়া সত্বেও গত দুটি নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি।
দ্বিতীয় যে বিষয়টি মনে করা হয় নিক্সন চৌধুরীর খুঁটির জোর হলো তার সাহস। তিনি সবসময় সাহসের সঙ্গে স্পষ্ট করে তার মনের কথা ব্যক্ত করেন এবং তিনি সাহসের সঙ্গে কথা বলার জন্যই আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা কাজী জাফর উল্লাহ সঙ্গে লড়াই করে এখনো টিকে আছেন। আর এই সাহসটাই তার খুঁটির জোড়।
তবে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, শুধু সাহসের জোরে রাজনীতিতে টিকে থাকা যায় না। কারণ অনেকেরই সাহস আছে এবং সাহস দেখিয়ে অনেকে রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন।
এরকম বাংলাদেশে শুধু সাহস দেখিয়ে রাজনীতিতে টিকে থাকা এবং প্রশাসনের সঙ্গে যুদ্ধ করা যায় না ।
কেউ কেউ মনে করেন যে বিপুল জনপ্রিয়তাই নিক্সন চৌধুরীর মূল খুঁটি। কারণ নিক্সন চৌধুরী তার ফরিদপুর ৪ আসনে বিপুল ভাবে জনপ্রিয় এটা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই।
কারণ ২০১৪ এবং ২০১৮ দুটো নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন। ওই দুটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রায় ৯০ শতাংশ আসন দখল করেছে। সে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া তাও আবার আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতাকে চ্যালেঞ্জ করে বিজয়ী হওয়াটা জনপ্রিয়তার প্রমাণ বহন করে বটে।
এলাকায় তিনি যে বিপুল জনপ্রিয় তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তার কর্মী এবং সাধারন জনগন সব সময় তার পক্ষে। এলাকার জনগণ বলেন যে; নিক্সন চৌধুরী এলাকার জন্য যে কাজ করেন সেটি অনন্য অসাধারণ এবং তাদের জন্য অত্যন্ত আশা জাগানিয়া।
আর এ কারণেই মাদারীপুরের লোক হওয়ার পরও তিনি ফরিদপুরের এমপি হয়েছেন। এবং পরপর দু`বার এমপি হয়েছেন। আর এ জনপ্রিয়তাই নিক্সনের খুঁটির জোর বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কারণ নিক্সন চৌধুরী যেভাবে জেলা প্রশাসককে চ্যালেঞ্জ করেছেন জনপ্রিয়তা না থাকলে ওই চ্যালেঞ্জের ফলাফল অন্যরকম হতে পারতো। জনপ্রিয়তা আছে বলেই নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের আগে দশবার চিন্তা করতে হয়। কারণ জনগণের শক্তি সবচেয়ে বড় শক্তি এটি ফরিদপুরে নিক্সন চৌধুরী প্রমাণ করেছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।