নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত বিএনপির জন্য বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো। বিএনপি নেতারা ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি যে এরকম একটি ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। শুধু বিএনপি কেন, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই এ ব্যাপারে অন্ধকারে ছিলেন। শেখ হাসিনার নির্দেশেই যে শাজাহান খান এই প্রস্তাব জামুকা’র বৈঠকে এনেছিলেন, তা সহজেই অনুমেয়। এটাই হলো আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চমক। এরকম আচমকা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি বিএনপিকে হতভম্ব, হতবিহ্বল এবং তছনছ করেছেন। বিএনপি যেটি স্বপ্নেও ভাবেনি, সেটি শেখ হাসিনা করে বিএনপিকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় করেছেন। আসুন এরকম আরো কিছু সিদ্ধান্ত জেনে নেয়া যাক;
১. ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ: বাংলায় একটা কথা হচ্ছে ‘ভিটেয় ঘুঘু চড়ানো।’ সেই উক্তির আক্ষরিক বাস্তবায়ন হলো বেগম জিয়াকে মঈনুল রোডের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ। বিএনপি নেতারা স্বপ্নেও ভাবেনি শেখ হাসিনা এটা করতে পারেন। আর আচমকা আসাতে আদালতে গিয়ে বিএনপির আইনজীবীরাই খালেদাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের শেষ আনুষ্ঠানিকতা টুকু স্থাপন করেন।
২. গণভবনে চায়ের দাওয়াত: ২০১৪ এর নির্বাচনের আগে বেগম জিয়াকে আচমকা চায়ের দাওয়াত ছিলো শেখ হাসিনার আরেক চমক। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি আন্দোলন করছে। এরমধ্যে সংলাপে আমন্ত্রণ জানায়ে টেলিফোন করলেন বেগম জিয়াকে। আচমকা এই ফোনে বেগম জিয়া যা বলেছেন, তাতে তার রাজনীতির বারোটা বেজেছে।
৩. কোকোর মৃত্যুর পর খালেদার অফিসে যাওয়া: সরকার বিরোধী লাগাতার অবরোধের মধ্যেই বেগম জিয়ার ছোট ছেলে কোকো মালয়েশিয়ায় মারা যায়। এসময় খালেদা জিয়া দলীয় কার্যালয়ে লাগাতার থাকার ঘোষণা দিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন। নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে কোনও রকম প্রটোকল ছাড়া শেখ হাসিনা গুলশানে ছুটে যান বেগম জিয়াকে সান্তনা দিতে। শেখ হাসিনার আচমকা সিদ্ধান্তে খেই হারায় বিএনপি। দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে দেয়। এটি সম্ভাবত শেখ হাসিনার কাছে খালেদার সবচেয়ে বড় পরাজয়।
৪. খালেদার কারাগার ও জামিন: ২০১৮ এর ৭ ফেব্রুয়ারি যখন বেগম জিয়া দন্ডিত হয়ে কারাগারে যান, বিএনপির কোনও নেতা দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি যে, বেগম জিয়া ২৫ মাস জেলে থাকবেন। আবার গত বছর ২৫ মার্চ বেগম জিয়ার জামিনও ছিলো বিএনপির জন্য যেন আচমকা বজ্রপাত। ২৫ মাসে বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপির দৈন্যরাজনীতি আর জামিন দিয়ে শেখ হাসিনার করুনা এবং উদারতা বিএনপিকে বিকলাঙ্গ করে দেয়।
৫. বীর উত্তম খেতাব বাতিল: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়ার খেতাব বাতিলও ছিলো সর্বশেষ চমক। এটি কি বিএনপির কফিনে শেষ পেরেক?
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।