নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। দলের নেতারাই স্বীকার করছেন, দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পরেছে। সিনিয়র নেতাদের মধ্যে সম্পর্কের টানা পোড়েনের খবর কান পাতলেই শোনা যায়। আল-জাজিরার রিপোর্ট নিয়ে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাই শঙ্কিত। ভবিষ্যতে আরো এধরনের অপপ্রচার সরকার কিভাবে মোকাবেলা করবে, তা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলছেন নেতারা। এরমধ্যে বিএনপির নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি, কারো কারো মনে চিন্তার উদ্বেগ ঘটাচ্ছে। সব মিলিয়ে ভালো নেই আওয়ামী লীগ। কাল রোববার স্থানীয় সরকার। পৌরসভা নির্বাচনের আরেকটি পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এবারও আওয়ামী লীগের প্রধান সংকট বিদ্রোহী প্রার্থী। বার বার বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, জাতীয় কথাবার্তা এখন মূল্যহীন হয়ে পরেছে। মন্ত্রী, এমপি, কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতাদের মদদে বিদ্রোহী প্রার্থীরাই প্রবল প্রতাপে নির্বাচন প্রচারণা করেছেন। জিতলেই তাদের বরন করে নেয়া হচ্ছে। এরফলে, সারাদেশে আওয়ামী লীগ এখন কোন্দলে জর্জরিত। দলের চেইন অব কমান্ড পুরো পুরি ভেঙ্গে গেছে কোন্দলের কারণে। মাঠ পর্যায়ের নেতারাও ফ্রিস্ট্রাইলে কথা বলছেন। ইভিএম নিয়ে ফেনী আওয়ামী লীগের নেতার বক্তব্য, কিংবা ভোট নিয়ে দিনাজপুরে আওয়ামী লীগ নেত্রীর বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নেতারাও বিব্রত।
দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সক্রিয় নেতাদের সম্পর্কের টানা-পোড়নের কথা এখন প্রকাশ্যেই শোনা যায়। দলের সাধারণ সম্পাদক সংগঠনের জন্য কি করছেন, এ প্রশ্ন উঠেছে। নিরাপদ দূরত্বে হাত পা গুটিয়ে আছেন প্রবীণ হেভীওয়েট নেতারা। এরমধ্যে আল-জাজিরার রিপোর্ট নিয়ে আওয়ামী লীগ শঙ্কিত। ‘শত্রুরা অনেক বেশী সক্রিয়’ বলছেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। এখনই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন ‘এসব প্রচারণার মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তির চেষ্টা চলছে। তার মতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন বিএনপি-জামাতের দখলে। এই প্রচারণার বিরুদ্ধে আমাদের সাংগঠনিক কর্মসূচী নেই। শুধু বিবৃতি দিয়েই আমরা ক্ষান্ত।’
এরকম প্রেক্ষাপটে সামনে সরকার বিরোধী বিএনপির আন্দোলন কিভাবে মোকাবেলা করা হবে, সে প্রশ্নও আওয়ামী লীগের মধ্যে উঠেছে। পুলিশ এবং প্রশাসন নির্ভরতা দলকে দুর্বল করছে বলেও মনে করছে নেতারা। আর এই সব মিলিয়েই ভালো নেই আওয়ামী লীগ।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।