নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
দুই নেত্রীর মুক্তির মধ্যে দিয়ে নির্বাচনের পথে হাটতে শুরু করে বাংলাদেশ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার মাইনাস ফর্মুলা ও দুর্নীতি বিরোধী অভিযান বন্ধ রেখে নির্বাচনের দিকে মনোযোগী হয়। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচনের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে যেগুলো সব মহলে প্রশংসিত হয়েছিল।
প্রথমত, ছবিসহ নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয়ত, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়ম বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া হয়। তৃতীয়ত, নির্বাচনের কিছু আইন সংশোধন করা হয় যার ফলে প্রত্যেক প্রার্থীকে হলফনামায় তার সম্পদের বিবরণ ও তার বিরুদ্ধে মামলা আছে কি না সেটি একটি ছকে লিপিবদ্ধ বাধ্যতামূলক করা হয়। এর ফলে নির্বাচন ব্যবস্থায় বড় ধরনের অগ্রগতি সাধিত হয়েছিলো।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছিলো বহু আগে থেকেই। সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনার মুক্তির পর তিনি যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান তখন থেকেই নির্বাচনী কাজকর্ম শুরু করেছিলেন। বিশেষ করে নির্বাচনী এলাকায় জন্য যোগ্য প্রার্থী বাছাই, বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার আওয়ামী লীগের সমস্যাগুলো বিচার বিশ্লেষণ করা এবং মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে এরকম একটি নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন করা।
অন্যদিকে শুরুতেই নির্বাচনী দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছিল বিএনপি। খালেদা জিয়ার দেরিতে মুক্তি হওয়া, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল জোরালো হওয়ার কারণে বিএনপির জন্য নির্বাচন হয়ে দাঁড়ায় একটি জটিল পরীক্ষার বিষয়। আর এই অবস্থায় বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো পথ খুঁজতে থাকে। এই অবস্থা আরও তরান্বিত হয় যখন ৪টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের ভরাডুবি এবং জয়ী হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিচক্ষণতার কারণে বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারেনি। এর মধ্যে রাজনৈতিক কর্ম চাঞ্চল্যতার শুরু হয়। এই পরিস্থিতির মধ্যে আবার আলোচনায় আসেন দুই নেত্রী। ২১ নভেম্বর ছিলো সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বরাবরের মত সেনাকুঞ্জে আয়োজন করা হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। সেই সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানানো হয় দুই নেত্রীকে এবং দুই নেত্রীর উপস্থিতিই ছিলো সশস্ত্র বাহিনী দিবসের প্রধান আকর্ষণ।
অনুষ্ঠানে দুই নেত্রী মুখোমুখি হন এবং কিছুটা সময় কাটান। এখানেই তারা তাদের জেলখানার অভিজ্ঞতার কথা বিনিময় করেন এবং শেখ হাসিনা কীভাবে বেগম জিয়ার জন্য খাবার পাঠিয়েছিলেন। দুই নেত্রীর যুগল ছবি আবার নবজাগরণের সূচনা করে। সবাই বুঝতে পারেন নির্বাচন হচ্ছে এবং সেই নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করছে।
আগামীকাল শেষ পর্ব: দিন বদলের ইশতেহারের পক্ষে গণ রায়।
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।