নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ০৪ মার্চ, ২০২১
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তৃতীয় দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে আবেদন পাঠানো হয়েছে সেই আবেদনটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষাধীন রয়েছে। সেই আবেদনে বেগম খালেদা জিয়ার কেবল জামিন বৃদ্ধির কথাই বলা হয়নি পাশাপাশি আরো তিনটি বিষয়ে বলা হয়েছে। প্রথমত, তার দন্ড স্থগিত করার কথা বলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, তার উন্নত চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। তৃতীয়ত, তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনুমতি দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বেগম খালেদা জিয়াকে এই জামিন আবেদনের মাধ্যমে দেশের বাহিরে পাঠানো প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইছে বিএনপি। দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির মধ্যে এ ধরনের কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিলাে। বিএনপি নেতারা বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলছে। তবে এতোদিন বিশ্বে করোনার প্রকোপ বেশি থাকার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার ব্যাপারে তার পরিবারের খুব একটা আগ্রহ ছিলো না। তবে এখন বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারও তাকে লন্ডনে পাঠাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একাধিক কারণে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে বিএনপি এবং তার পরিবার আগ্রহী। বেগম খালেদা জিয়া যদি বিদেশে যান তাহলে তার ওপরে সরকারের নজরদারি থাকবে না এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থাকবেন তিনি। ফলে সেখানে গিয়ে তিনি তার মতো করে যে কোনো কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারবেন।
ু
বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া, যুদ্বাপরাধী গোষ্ঠী এবং লন্ডনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠিগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে একটি পাল্টা প্রবাসী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া করছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো রাকধাক না রেখেই বক্তব্য রাখছে। তাদের এই প্রবাসী সরকার গঠনের প্রধান বাধা হচ্ছে খালেদা জিয়া। কারণ বেগম খালেদা জিয়া দেশে থাকলে যদি বিএনপি এরকম দেশবিরোধী কোনো তৎপরতায় জড়িত থাকে তাহলে বেগম খালেদা জিয়াই জিম্মি হবেন এবং খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হতে পারে।
এরকম বাস্তবতায় প্রবাসী সরকারের বিষয়টি ঝুলে আছে। আর এ কারণেই তারেক জিয়া বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে। কারণ খালেদা জিয়া লন্ডনে গেলেই তারেক জিয়া বাংলাদেশ সরকারের পাল্টা একটি প্রবাসী সরকার গঠনের প্রস্তাব সামনে নিয়ে আসবে এবং এটি দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরকারকে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলার চেষ্টা করবে। আর সেজন্যই বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে বিএনপি এবং তার পরিবার।
তবে সরকারে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয় এখানে আইনগত বাধা রয়েছে। কারণ বেগম খালেদা জিয়াকে যে প্রক্রিয়ায় মুক্তি দেয়া হচ্ছে তা একটি নির্বাহী আদেশ এবং এটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী প্রযোজ্য। এই ধারায় তাকে বিদেশে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।