নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৫ এএম, ১১ মার্চ, ২০২১
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় ফরম বিক্রি উন্মুক্ত এবং জমাদানের সময় বৃদ্ধি করল আওয়ামী লীগ। স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতাদের প্রভাবমুক্ত রাখা, `মাইম্যান` প্রার্থী করতে গিয়ে `জনপ্রিয়দের` বাদ দেওয়াসহ নানা অভিযোগে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল দলের নীতিনির্ধারকরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, বিগত পৌরসভায় বিএনপি দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ করলেও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলগতভাবে অংশগ্রহণ করবে না মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। সে কারণে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর করতে করণীয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা নেতারা। প্রথম ধাপের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ৩৭১ ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী করতে তৃণমূলকে চিঠি পাঠানো হয়। যেসব জেলায় প্রথম ধাপের ভোট হচ্ছে সেখান থেকে দলীয় রেজুলেশন চাওয়া হয়। অনেক জেলা-উপজেলার নেতারা সঠিক সময়ে রেজুলেশন পাঠাতে ব্যর্থ হন। আবার অনেক উপজেলা-জেলার শীর্ষ নেতা কিংবা স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীরা পছন্দের লোককে মনোনয়ন দিতে প্রভাব খাটিয়ে জনপ্রিয় প্রার্থীদের বাদ দিয়েছেন-এমন অভিযোগ জমা পড়েছে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে। সে কারণে দলীয় ফরম বিক্রি উন্মুক্ত করল আওয়ামী লীগ।
দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডি কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, নোয়াখালীর হাতিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয় প্রকল্পের দরিদ্রদের জন্য ঘর না দিয়ে সে অর্থ আত্মসাৎ করেন তমরুদ্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফাররুখ আহমেদ, বুড়িচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়া আলী মোবারক কল্লোক ও জাহাজমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম মিল্লাহ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগের সত্যতা পায়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তাদের বিরুদ্ধে কার্যত কোনো ব্যবস্থা এখনো গ্রহণ করা হয়নি। বরং সেই তিন চেয়ারম্যানকে আবারও দলীয় মনোনয়ন দিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সুপারিশ করেছে। এমন অভিযোগ দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে জমা পড়েছে। এখানে এক প্রভাবশালী নেতার পছন্দের লোকদের নাম পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রে। বাদ দেওয়া হয়েছে একাধিকবারের জনপ্রতিনিধি ও জনপ্রিয় সাবেক ছাত্রনেতাদের।
এদিকে আসন্ন ১১ পৌরসভা ও ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ফরম সংগ্রহ ও জমাদানের সময় বাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ফরম সংগ্রহ ও জমা কার্যক্রম চলাকালীন এ ঘোষণা দেন দলের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। এ সময় তিনি বলেন, যে কয়দিন লাগে যতক্ষণ লাগে আমরা সবাইকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ করব এবং মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করব। কাল হোক, পরের দিন হোক।
তিনি আরো বলেন, `ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার আজ যে শেষ দিন ছিল সেই সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আমাদের নেত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, যে কয়দিন লাগে সে কয়দিন আমরা ফরম বিতরণ ও সংগ্রহ করব।`
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।