নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ১২ মার্চ, ২০২১
আগামীকাল আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করবেন বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে। এটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিষয় হলেও এই সভায় আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন এলাকায় বিশৃঙ্খলা বিরোধ অন্তর্কলহ নিয়ে আলোচনা হবে বলে দলের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে দলের বিভিন্ন জায়গায় অন্তর্কলহে সহিংসতা এবং পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে দলের বিভক্তি বিষয়টি আলোচনা করা হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে সারাদেশে পৌরসভা নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিল এবং তাদেরকে যারা সমর্থন দিয়েছে সে সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তালিকা এবং বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। পাশাপাশি এই নির্বাচনগুলোতে কোন কোন এমপি এবং মন্ত্রী নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে কাজ করেছে সে সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নোয়াখালী।
কারণ নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ এমনভাবে বিভক্ত হয়েছে এবং যেভাবে সহিংসতায় লিপ্ত হয়েছে সেটি পুরো আওয়ামী লীগের জন্যই বিব্রতকর। তাছাড়া আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন যে নোয়াখালীতে যেহেতু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নির্বাচনী এলাকা তাই এখানে চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়াটা আওয়ামী লীগের জন্য খুবই অস্বস্তিকর। আর এই প্রেক্ষিতেই নোয়াখালীসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগের যে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পরা তা ঠিক করার জন্যই আওয়ামী লীগ সভাপতি কিছু সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সিনিয়র নেতা এবং প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন বলে জানা গেছে। তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিচ্ছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সারাদেশে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনা এবং দলের শৃঙ্খলা এবং গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যক্রমকে বন্ধ করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশে একটি বিশেষ টিম হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা মূলত এই দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমগুলো তদারকি করবেন এবং এজন্য তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আর এই সাংগঠনিক সম্পাদকদের কাজের দেখভাল করবেন দু`জন প্রেসিডিয়ামের সদস্য এবং দু`জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। যে দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্য এই শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে তদারকি করবেন তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান। আর দু`জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সারাদেশের আওয়ামী লীগের বিশৃঙ্খলা, অন্তর্কলহ, দ্বন্দের জন্য সাংগঠনিক টিমের সাথে সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করবেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এবং আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম। এদের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শুধু তারা ঢাকা থেকে তদারকি করবেন এমনটি নয় বরং তারা বিভিন্ন এলাকায় যাবেন বিভিন্ন বিবাদমান পক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন এবং একটি বিরোধ নিস্পন্নের ফর্মুলা বের করবেন। এটির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের অন্তর্কলহ, বিরোধ তা বন্ধের কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।