নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২১
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ব্যাংককের একটি বৈঠকের সূত্র অনুসন্ধানের চেষ্টা করছে। গত বছরের শুরুতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যে বৈঠকে বিএনপির কয়েকজন ঊর্ধ্বতন নেতা এবং হেফাজতের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য উড়ে গিয়েছিলেন হেফাজতের প্রয়াত মহাসচিব কাসেমীসহ কয়েকজন নেতা। বিএনপি`র আবদুল আউয়াল মিন্টু সহ কয়েকজন নেতাও ব্যাংককে গিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে হেফাজতের দুই একজন নেতা বলেছেন যে, তাদের প্রয়াত আমির আল্লামা শফীর নির্দেশে তারা এ বৈঠকে গিয়েছিলেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, এই বৈঠকে সরকার উৎখাতের একটা নীল নকশা তৈরি করা হয়েছিল। সেই নীলনকশা অনুযায়ী হেফাজত পরবর্তীতে পুনর্বিন্যাস্ত হয়। আল্লামা শফীকে হত্যা করা হয় এবং হেফাজত সরকারে বিরুদ্ধে এক ধরনের কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে যে, তারা এ বিষয়টি অনুসন্ধান করছে এবং গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র বলছে যে, ব্যাংককে বৈঠকের ব্লুপ্রিন্ট পাওয়া গেলে সবকিছু অনেক পরিস্কার হয়ে যাবে এবং কারা কারা কেন নাশকতাগুলো করেছে তার সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। জানা গেছে যে ২০২০ সালের শুরুতেই যখনও সারাবিশ্বে করোনা নিয়ে উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগের তৈরি হয়নি, সেই সময় বিএনপি`র অন্তত পাঁচজন নেতা উড়ে গিয়েছিলেন ব্যাংককে। আর সঙ্গে গিয়েছিলেন হেফাজতের কয়েকজন নেতা। তাদের মধ্যে একজন এই বৈঠকের কথা স্বীকার করেছিলেন। তিনি হলেন কাসেমী। কাসেমী কিছুদিন আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। কাসেমী ছাড়াও এই বৈঠক মামুনুল হক গিয়েছিলেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও এখন যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের মধ্যে অন্তত দুইজন ওই বৈঠকে যোগদান করেছিলেন। বিএনপি`র পক্ষ থেকে ওই বৈঠকে গিয়েছিলেন বিএনপি`র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ বেশ কয়েকজন নেতা।
আবদুল আউয়াল মিন্টুর ব্যাংকক ভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে এবং ব্যাংকককে ঘিরেই তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কার্যক্রম পরিচালনা করেন বলেও জানা যায়। এই বৈঠকের উদ্যোক্তা ছিল বিএনপি। মূলত বিএনপি অসংগঠিত এবং আন্দোলন করতে অক্ষম। এই বাস্তবতায় কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক হেফাজতকে সামনে নিয়ে এসে সারাদেশে একটি তাণ্ডব তৈরি করে পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই ছিল ওই বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য। তবে বৈঠকের খুঁটিনাটি ইত্যাদি বিস্তারিত বিষয়গুলো আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তারা মনে করছেন যে, এই বৈঠকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, অনেক গভীর ষড়যন্ত্রের বীজ পতিত হয়েছিল। এই বৈঠকের প্রেক্ষিতে হেফাজতের নেতারা ঢাকায় ফিরে আসেন এবং বাবুনগরীর নেতৃত্বে সংঘটিত হতে থাকেন। এই পর্যায়ে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান আল্লামা শফী। আল্লামা শফী হেফাজতের আমির হলেও তিনি ছিলেন সকলের কাছে অভিভাবকের মতো এবং হেফাজতের সাধারণ কর্মী এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা তার ব্যাপারে অন্ধ ছিল।
আর এ কারণেই হেফাজতের জুনায়েদ বাবুনগরীসহ কয়েকজন পরিকল্পনা করেন যে আল্লামা শফীকে হত্যা না করলে হেফাজতের কর্তৃত্ব নেওয়া যাবে না এবং হেফাজতের কর্তৃত্ব না নেয়া গেলে এই সরকার উৎখাতের প্রচেষ্টাও সফল হবে না। আর এ কারণেই আল্লামা শফীকে মেরে ফেলা হয় বলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে। এ ব্যাপারে পিবিআই তদন্ত করছে এবং তাদের তদন্ত প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে। আর ব্যাংককের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বাবুনগরী তার পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে, যারা স্বাধীনতার রিবোধী, বিএনপিপন্থী এবং উগ্র আওয়ামী বিরোধী তাদেরকে বেছে বেছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেয়া হয়। যে কোনোভাবে একটি ইস্যু দিয়ে সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানানো এবং সরকারকে একটা কোণঠাসা অবস্থায় ফেলে সরকার উৎখাত করার একটা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন জুনায়েদ বাবুনগরী। তারই অংশ হিসেবে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা করা এবং চূড়ান্ত রূপ দেখা যায় ২৬ এবং ২৭ মার্চ তাণ্ডবের মধ্যে দিয়ে। তবে এটি ষড়যন্ত্রের শেষ নয়, আরো কিছু ষড়যন্ত্র অপেক্ষা করছে। তবে সে ষড়যন্ত্রটা কি সেটি তদন্ত করে খুঁজে বের করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।