নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১০ এএম, ০৪ মে, ২০২১
হেফাজতে ইসলাম শুরুতে অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে কার্যক্রম শুরু করলেও সময়ে সাথে নিজেদের রাজনৈতিক মোড়কে মুড়িয়ে ফেলে। বিশেষ করে সংগঠনটির আমির আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর জুনায়েদ বাবানুগরীর নেতৃত্বে অর্থ ও রাষ্ট্রক্ষমতার লোভ চরমভাবে পেয়ে বসে সংগঠনটির। এরপর থেকে রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী নানা ইস্যুতে জড়িয়ে ফেলে নিজেদের।হেফাজত নেতাদের গ্রেফতারের পর একে একে বেড়িয়ে আসছে সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাবলীগ জামাত ভাঙার পেছনেও হেফাজতের ইন্ধনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। হেফাজতের সদ্য সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ একাধিক নেতাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
হেফাজতের একটি সূত্র বলছে, হেফাজতের একটি অংশ নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে এবং ধর্মভিত্তিক একমাত্র শক্তি হতে অন্য ইসলামীক সংগঠনগুলোকেও টার্গেট বানাতে ছাড়েনি। বিশেষ করে তবলীগ জামাতে যে সমস্যার কারণে তাদের মধ্যে বিভাজন এবং ভেঙেছে তার পেছনে হেফাজতের ইন্ধন একটা বড় ভূমিকা রেখেছে। আর এসব বিষয়গুলো এখন হেফাজতের অনেক নেতাই রিমান্ডে এসে মুখ খুলছেন যা নিয়ে খোদ হেফাজতের মধ্যেই এখন টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, তাবলীগ জামাত ভাঙার ব্যাপারে নতুন তথ্য পেয়েছি। তাবলীগ জামাত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে। এতে ইজতেমার জৌলুস আগের চেয়ে কমে গেছে। তাবলীগ জামাতকে পরিকল্পিতভাবে ভাঙতে হেফাজতের কোনো কোনো নেতা দীর্ঘদিন কাজ করেছে, যাতে অরাজনৈতিক এই সংগঠন তাদের ওপর আরও নির্ভরশীল হয়। এটা ছিল তাবলীগ জামাত ভাঙার অন্যতম উদ্দেশ্য। হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাবলীগ জামাত ভাঙার ব্যাপারে এমন বক্তব্য তারা দিয়েছেন।
দিল্লি ও লাহোরের নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৮ সালে বিভক্ত হয়ে পড়ে তাবলীগ জামাত। এ দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসার আলেমদের একটি অংশ যুক্ত হয়ে পড়ে। তারা একটি পক্ষকে সমর্থন দেওয়ায় এ বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে না বলে মনে করছেন তাবলীগ জামাত সংশ্নিষ্টরা। বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের দু`পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাত বছর আগে শাপলা চত্বরে যেভাবে জড়ো হয়ে হেফাজত তাণ্ডব চালায়, একই কায়দায় এই রমজানে তারা কর্মসূচি করার ব্যাপারে সব প্রক্রিয়া শেষ করে। রমজানে বদরের যুদ্ধ হয়েছিল। তাদের ভাষায়, এ কারণেই তারা বড় ধরনের কোনো কর্মসূচির ছক কষে। আরেকটি শাপলা চত্বরের দিকে ধাবিত হয়ে তারা সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দেওয়ার চক্রান্ত করে।
বিশ্লেষকর বলেন, হেফাজতের রাজনৈতিক অভিলাস এবং রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে আকাঙ্খা পেয়ে বসেছিলো তাই তারা নিজদের অবস্থান শক্ত করার জন্য অনেক কিছুই করে। তবে সবচেয়ে বড় কথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তারা যে ষড়যন্ত্র করেছে তার জন্য সাধারণ মানুষের মথ্যেও এখন তাদের অবস্থান শূন্যের কোঠায়। এই পরিস্থিতিতে সরকার বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যখন প্রমাণের ভিত্তিতে হেফাজত নেতাদের গ্রেফতার করছে তখন হেফাজতের মধ্যেই বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে হেফাজত এখন ভেঙেচুরে একটি অচল অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।