নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ০৬ মে, ২০২১
বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তার পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে তাকে যেন উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। সরকার এই আবেদনটি নিয়ে কোনো কালক্ষেপণ করেননি এবং যথেষ্ট সহানুভূতির সঙ্গে আবেদনটি বিচার বিবেচনা করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে বলেছে আমরা আবেদনটি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করব। এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে গেছে এবং এখন পর্যন্ত যা খবর পাওয়া গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেবে সরকার। সরকার এই কার্যক্রমটি করেছে একটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। এর মধ্যে কোনো রাজনীতি করতে চায় নি সরকার। সরকারের বক্তব্য হচ্ছে যে, খালেদা জিয়া একজন অসুস্থ মানুষ এবং একজন অসুস্থ বয়প্রবীণ মানুষের জন্য যে সহানুভূতি এবং সহমর্মিতা দেখানোর দরকার সরকার সেটি করেছে।
কিন্তু বেগম জিয়ার অসুস্থতার পর যেভাবে তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ এবং নাটকীয়তা শুরু হয়েছে তার প্রেক্ষিতে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে যে বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি কোনো রাজনীতি করছে কিনা। কিছু দিন ধরেই বিএনপি নেতৃবৃন্দ চাইছেন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে। এর আগেও যখন বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ তৃতীয়বারের মতো বাড়ানো হয়েছিলো তখন সেই জামিনের আবেদনের তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় তখন সেটি অনুমোদন না দিয়ে আগের শর্তেই জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছিলো। কিছুদিন ধরেই বিএনপি`র মধ্যে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে। বিশেষ করে লন্ডনে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে সরকারের এক ধরনের অনাগ্রহ এবং আপত্তি ছিলো। কিন্তু এখন যেহেতু বেগম জিয়া অসুস্থ এবং সিসিইউতে সেহেতু সরকার সেই আপত্তিটি বহাল রাখে নি। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থ সত্যি কিন্তু এই অসুস্থতা উপযোগী করে কি বেগম জিয়াকে যেকোনো মূল্যে লন্ডনে নিয়ে যেতে আগ্রহী তারেক জিয়া? বিএনপি`র একাধিক নেতা গোপনে বলছেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে একবার দেশের বাইরে নিয়ে যেতে পারলেই হলো। তখন তারেক জিয়ার খেলা শুরু হবে। তারেক জিয়ার বাংলাদেশে প্রধান দুর্বলতার জায়গা হলো বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির অনেক নেতাই ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বলেন যে, খালেদা জিয়া আছেন জন্যই তারেক জিয়া অনেক কিছুই করতে পারছেন না বাংলাদেশ নিয়ে। কারণ কিছু করতে গেলেই সেখানে খালেদা জিয়ার ওপর তার প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
বিশেষ করে বিএনপি`র অনেকেই মনে করে, তারেকের কারণেই বেগম খালেদা জিয়াকে ২৫ মাস জেল খাটতে হয়েছে। আর এ কারণেই বিএনপি নেতারা মনে করছেন যে, খালেদা জিয়া যদি বিদেশে যায় তাহলে তারেক জিয়া সমূর্তিতে আবির্ভূত হবে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে একটি মেরুকরণ চলছে। সরকার হেফাজতের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে এমন কথা বলা যায় না। দেশি-বিদেশি অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। আর তারেক জিয়া যদি একবার তার মাকে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে পারেন তাহলে ষড়যন্ত্রের ষোলোকলা পূর্ণ হবে। তখন তারেক জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র শুরু করবে। এমনকি একটি প্রবাসী সরকার গঠনের জল্পনা-কল্পনাও কিছুদিন ছিলো। আর এই সবকিছু মিলেই বিএনপি`র নেতাকর্মীরা কিছুটা উল্লসিত।
তারা প্রথমত মনে করছে যে, বেগম জিয়ার একধরনের মুক্তি ঘটবে তিনি বিদেশ যেতে পারলে। দ্বিতীয়ত মনে করছে, তারেক জিয়া তখন তার আসল রূপ দেখাবে। কিন্তু গত ১২ বছর ধরেই তারেক জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম ষড়যন্ত্র করেছে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ষড়যন্ত্র করে রাজনীতিতে কেউ বিজয়ী হতে পারে না।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।