নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ০৮ মে, ২০২১
হেফাজতে ইসলাম যে ইসলামের হেফাতকারী সংগঠন নয় বিষয়টি বাংলাদেশর ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছে। বিশেষ করে ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম। ইসলাম কোনো ধরনের সহিংসতা, মানুষ হত্যা বা ক্ষমতাকে ব্যবহার করে অবৈধ অর্থ উপার্জনকে সমর্থন করে না। আর এই কাজগুলো হেফাজতের নেতারা করেছেন সেই বিষয়টি এখন দিবালোকের মতো পরিস্কার। আর হেফাজতে ইসলাম যে নিজেদের সুবিধার জন্য একের পর এক মিথ্যা কথ্য, মিথ্যা অভিনয় এবং মিথ্যা অঙ্গীকার করতে পারদর্শী সেই বিষয়টি এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। তবে এতো সব কিছুর পরেও হেফাজত তাদের অবস্থান ধরে রাখতে মরিয়া। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন বাংলাদেশে হেফাজতে ইসলামের মতো সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা এখন নেই।
সূত্রগুলো বলছে, হেফাজত সরকারের মনোভাবে বুঝতে পেরে নান কৌশলে সরকারের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আর এর জন্য কিছু রাজনৈতিক নেতা, আমলা এবং সাবেক নেতাদের ব্যবহার করছে তারা। তারা সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে হেফাজত সরকারের সব ধরনের শর্ত মেনে নিতে প্রস্তুত তাই তাদের ব্যাপারে সরকারের নমনীয় হওয়া উচিত। যদিও এ নিয়ে হেফাজতের মধ্যেও দ্বিমত রয়েছে। হেফাজতের বিএনপি-জামায়াত অংশের কথা হচ্ছে আপাতত কিছুদিন পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করে রমজান এবং লকডাউনের পর যখন মাদ্রাসাগুলো খুলে দেয়া হবে তখন কোমলমতি ছাত্রদের মগজ ধোলাই দিয়ে সর্বশক্তি এবং বিএনপি-জামায়াতের শক্তি এক করে বড় পরিসরে তাণ্ডব ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে হবে। আর এতে করে ঢাকা শহর অচল হয়ে গেলে সরকার বাধ্য হয়ে হেফাজত নেতাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে এবং হেফাজতের জয় হবে, হেফাজত নামক সংগঠনটি আরও শক্তিশালী হবে।
এই অংশের দাবি হচ্ছে এখন সরকারের কাছে যত নত হওয়া যাবে সরকার হেফাজতকে তত দুর্বল ভেবে সরকারের সিদ্ধান্তগুলো হেফাজতের ওপরে চাপিয়ে দিয়ে হেফাজতকে মূলত গৃহপালিত একটি পুতুল সংগঠনে পরিণত করবে। আর হেফাজতের এই অবস্থান যখন মানুষের মধ্যে প্রচার হয়ে যাবে যে হেফাজত বলতে কিছু নেই। সরকারের ইশারায় চলে এই সংগঠনটি তখন মানুষ হেফাজত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং একটা সংশয়ে সংগঠনটি বিলিন হয়ে যাবে।
এই সূত্রগুলো বলছে, যখন কোনো সংগঠনের নিজস্বতা, মূলনীতি, নিজস্ব এজেন্ডা থাকে না তখন সেই সংগঠনের কর্মী থাকে না আর যখন কর্মী থাকে না তখন সেই সংগঠন কোনো সংগঠনই থাকে না। আদতে একটি নাম সর্বশ্য কমিটি থাকে। কিন্তু এই অংশটি চায় নানা টালবাহানা করে সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে দেন দরবার করে ঈদ এবং লডকাউন খুলে দেয়া পর্যন্ত সরকারকে অপেক্ষায় রাখা। তারপর তারা আবার স্বরুপে ফিরে দেশকে অচল করে দেয়ার পরিকল্পনায় লিপ্ত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হেফাজত সরকারের সামনে একটি ধোয়াশা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাইছে। তারা সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে আমরা আপনাদের কোনো ধরনের বিরোধীতা করবো না আমাদের নেতাকর্মীদের মুক্তি দেন। অন্যদিকে সরকার বিরোধী অংশকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে আমরা সরকারের সঙ্গে নমনীয় ভাব দিচ্ছি এই কারণে যে সরকার ঈদ ও লকডাউন তুলে নেয়া পর্যন্ত নীরব থাকে আমাদের ব্যাপারে তারপর আমরা মাঠে শক্তিশালী কর্মসূচির মাধ্যমে নেতার্মীদের ছাড়িয়ে আনবো এবং সরকার আমাদের কথা শুনতে বাধ্য হবে।
অন্যদিকে একটা গুঞ্জন চলছে যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেহেতু হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে ৩ দফা বৈঠক করেছেন তার মানে সরকারেরও এক ধরনের আগ্রহ আছে। আর এই বার্তাটি হেফাজতকর্মীরা সারাদেশে ভালোভাবেই ছড়িয়ে দিয়েছে। ফলে এখন দেখার বিষয় হেফাজত তার কৌশলে জয়ী হয় নাকি সারকারের দক্ষ রাজনীতির কাছে পরাজীত হয়ে অস্তিত্ব হারায় সংগঠনটি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।