নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০১ এএম, ২২ জুন, ২০২১
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। সেই রাজনৈতিক দলের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামীকাল বুধবার। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এই দলটি জন্ম হয় এবং এই দলের হাত ধরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ সময় কেটেছে লড়াই-সংগ্রামে। সবকিছু মোকাবিলা করে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলটি টানা এক যুগের বেশি ক্ষমতায় রয়েছে। তবে এ সুসময়ে সাংগঠনিকভাবে দলটির তৃণমূল বেশ অগোছালো অবস্থায় রয়েছে। অনেক জায়গায় কমিটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় বিলুপ্ত পুরাতন কমিটি দিয়েই চলছে দলের কার্যক্রম। ফলে আওয়ামী লীগকে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই সুসংগঠিতভাবে গড়ে তুলতে চান দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। একই সঙ্গে করোনাভাইরাস মোকাবিলা এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সতর্ক তারা।
দলটির নীতিনির্ধারণীয় পর্যায়ের নেতারা জানান, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ। তবে তৃণমূলের কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা আছে। সেগুলো সমাধানে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে মাঠেও নেমেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এ জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত। এর প্রমাণ করোনাকালে আমরা পেয়েছি। দলের সবাই জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমি মনে করি-এর মধ্য দিয়ে আমরা সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশলী হয়েছি। তিনি বলেন, তবে আমাদের বেশকিছু কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। করোনাকালে আমরা সম্মেলনও করতে পারিনি। এতে কাজে সমস্যা না হলেও নেতৃত্বে কিছুটা সমস্যা হয়। দলের সভাপতি ইতোমধ্যে নেতাদের সমন্বয়ে আটটি টিম করে দিয়েছেন। তারা কাজও শুরু করেছেন। করোনা পরিস্থিতি আরেকটু ভালো হলে কাজ আরও জোরদার করা হবে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য যে সাংগঠনিক শক্তি দরকার তা আওয়ামী লীগের আছে। এ শক্তি দিন দিন আরও বাড়বে। করোনাকালেও আমরা সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সামনে রেখে সংগঠনকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করার প্রত্যয়ের কথা জানান তিনি। করোনাকালে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছে। দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন, তরুণ ও মেধাবীদের সুপথের রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, জঙ্গি নির্মূল, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার কাজ সম্পন্ন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য মর্যাদা, দেশ ও জনগণের ভাগ্যের আমল পরিবর্তন এবং বিশ্বদরবারে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী লীগ।
একটানা ক্ষমতায় থাকায় দেশের উন্নয়ন হলেও দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্রমে দূরত্ব বাড়ছে। নেতাদের সঙ্গে কর্মীদের যে সংযোগ স্বাভাবিক সময়ে ঘটে, তা ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। এছাড়া স্থানীয় এমপি এবং জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের বিভেদ তো আছেই। এরই মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ের বেশির ভাগ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আবার যেগুলোর সম্মেলন হয়েছে-এখনো সেগুলো পূর্ণাঙ্গ করা হয়নি। সাংগঠনিক তৎপরতা না থাকায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে হতাশা। তবে এমন পরিস্থিতি আর জিইয়ে রাখতে চায় না আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলীয় সভাপতির নির্দেশনায় এ কাজে মাঠে নেমেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, তারা আশা করছেন-করোনা পরিস্থিতি ভালো থাকলে ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূল সম্মেলন শেষ করে নতুন কমিটি গঠন করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে সুদৃঢ় ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে। চিহ্নিত অপরাধী, চাঁদাবাজ, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের কোনো অবস্থাতেই দলে আনা যাবে না। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করতে হবে।
এদিকে করোনা মহামারির কারণে যথাযথভাবে ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে পারছে না আওয়ামী লীগ। অনুষ্ঠান কাটছাঁট করে সীমিত আকারে ঘরোয়াভাবে করা হবে।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।