নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ২৩ জুন, ২০২১
হেফাজতের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী সম্প্রতি ৮১ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করেছেন। তীব্র বিতর্ক এবং চাপের মুখে আগের কমিটি তিনি বাতিল করেছিলেন এবং একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই আহ্বায়ক কমিটি থেকে নতুন কমিটি গঠন করেছেন কিন্তু নতুন কমিটি নিয়েও বিপত্তি কাটিয়ে জুনায়েদ বাবুনগরীর। নতুন কমিটির অনেকেই এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা নতুন কমিটির সঙ্গে থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাছাড়া আহমদ শফীর পুত্র আনাস মাদানীও এই কমিটিকে দুরভিসন্ধিমূলক বলে এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, এর আগে যে জুনায়েদ বাবুনগরী মামুনুল হক-আজিজুলদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছিলেন সেই কমিটিতে বাদপরা অনেকেই এখন জামায়াতে ইসলামে ঢুকে পড়ছে।
আহমদ শফীর মৃত্যুর পর জুনায়েদ বাবুনগরী সম্মেলন করে হেফাজতের আমীর নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর তিনি একটি কমিটি গঠন করেছিলেন যে কমিটিতে চারদলীয় জোটের অনেকেই ছিল। রাজনৈতিক পরিচয় ছিল তাদের প্রধান। তারা হেফাজতকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। এদের মধ্যে মামুনুল হক ছিলেন অন্যতম। এছাড়া আরও কয়েকজন ছিল যারা খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু এখন অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, এদের সঙ্গে আসলে জামায়াতের গোপন সম্পর্ক ছিল এবং জামায়াতই হেফাজতকে নতুনভাবে গড়ে তোলা এবং সরকারবিরোধী অবস্থানে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করেছিল। আর সেই চেষ্টার অংশ হিসেবেই নতুন কমিটি গঠন করার পরপরই জুনায়েদ বাবুনগরী সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থানে যান। প্রথমে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, তারপর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়ে আন্দোলনে নামে হেফাজতে ইসলাম। এই আন্দোলনের পিছনে বিএনপি-জামায়াতের যে হাত ছিল সে সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ সরকারের হাতে আছে। আর এরপরই বিভিন্ন অপরাধে হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই গ্রেপ্তারের প্রেক্ষিতেই জুনায়েদ বাবুনগরী কমিটি বাতিল করেন। নতুন কমিটির আগে তিনি বলেছেন যে, যাদের রাজনৈতিক পরিচয় নেই তাদেরকে এই কমিটিতে রাখা হয়েছে। কিন্তু যাদের আগে রাজনৈতিক পরিচয় ছিল তাদের কি অবস্থা, এটি খোঁজ নিতে গিয়ে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
দেখা যাচ্ছে যে, যারা কমিটিতে নেই তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে আছেন। আর যারা গ্রেপ্তার হননি তারা জামায়াতের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ করছেন এবং জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তারা জামায়াতে যোগ না দিলেও জামায়াত দ্বারা যে তারা নিয়ন্ত্রিত, এই যোগাযোগের মাধ্যমে সেটি প্রমাণিত হয়েছে। এই হেফাজতের উগ্রবাদী অংশটি জামায়াতের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বলে বহুবার বলা হচ্ছিল এবং অনেক বোদ্ধা বলছিলেন যে হেফাজত এবং জামায়াতের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। বাদপরারা যখন জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তখন এই বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে।
জামায়াতে ইসলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কারণে কোণঠাসা অবস্থায় গেছে এবং সেখানে গিয়ে তারা রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেছে। এখন অন্য দলের উপর ভর করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা এবং দেশের বাইরে থেকে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করা জামায়াতের রাজনীতির মূল কৌশল যেটি জামায়াত ১৯৭১ সালের পরে নিয়েছিল। এখন যে সমস্ত ইসলামী উগ্রবাদী সংগঠনগুলো রয়েছে সেগুলো সবই জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিপুল অর্থ-সম্পদ থাকার কারণে জামায়াত হেফাজতের যে সমস্ত নেতারা বাদ পড়েছেন তাদেরকে এখন পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করছেন। এমনকি হেফাজত যদি শেষ পর্যন্ত নমনীয় অবস্থানে যায় তাহলে নতুন সংগঠনের কথা চিন্তা ভাবনা করছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।