নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ২৬ জুলাই, ২০২১
হেফাজতের বিভিন্ন নেতাকে গ্রেপ্তার করার পর তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এটা প্রমাণিত হয়েছে যে ২০১৩ এবং এ বছরের মার্চে হেফাজত যে সমস্ত তাণ্ডব এবং সহিংসতা করেছে তার পিছনে বিএনপির উস্কানি এবং মদদ ছিল। ‘২০১৩ সালে হেফাজত যে শাপলা চত্বরে কর্মসূচি পালন করেছিল সেই কর্মসূচি সফল করার জন্য বিএনপির শুধু মদদই দেয়নি টাকা দিয়েছিল। বিএনপির চেয়েছিল যে হেফাজতকে সামনে রেখে সরকার উৎখাত করার জন্য।’ হেফাজতের অন্তত ৫ জন নেতা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ এই তথ্য স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি এ বছরের মার্চে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজত চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ঢাকায় তাণ্ডব করেছে তার পেছনেও বিএনপি`র মদদ ছিল এবং উস্কানি ছিল। আর এই তথ্য-প্রমাণ নিয়েই যখন মামলাগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন আরো নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। আগামী আগস্ট মাসকে ঘিরে বিএনপি নতুন করে হেফাজতকে উস্কে দিতে চাইছে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে যে, বিএনপি এখন হেফাজতকে সামনে রেখে আবার নতুন করে একটা পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে। আগস্ট মাস এলেই বিএনপি-জামায়াত নানারকম অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার একটা প্রক্রিয়া করে। প্রথম দিকে বিএনপি কেক কেটে বা অন্য কোনো কর্মসূচির মাধ্যমে শোকের মাসের আবহ নষ্ট করতে চাইতো। এখন জঙ্গি, সন্ত্রাসী এবং উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীকে দিয়ে একটা পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করে এবং সেই চেষ্টার অংশ হিসেবেই হেফাজতকে নতুন করে উস্কে দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, হেফাজতের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে বিএনপির বিভিন্ন মহল যোগাযোগ করেছে এবং তারা হেফাজতকে বলার চেষ্টা করছে যে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে হেফাজতের কোন লাভ হবে না। বরং হেফাজত নিঃশেষিত হয়ে যাবে। বরং মাদ্রাসা খুলে দেওয়া, আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি প্রদান সহ বিভিন্ন ইস্যুতে যদি হেফাজত আন্দোলন করে তাহলে সরকার চাপে পড়বে। আর এই আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। হেফাজতের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দকে এরকম আন্দোলনের জন্য যে অর্থ তা দেওয়ারও ব্যবস্থা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, বিএনপি এখন নিজে সরকার বিরোধী আন্দোলনে যেতে আগ্রহী নয় নানা বাস্তবতায়। প্রথমত, তাদের নেতৃত্ব শূন্যতা। দ্বিতীয়ত, তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে আড়ষ্টতা এবং আতঙ্ক। আর তৃতীয়ত, এতে তারা নতুন করে আক্রান্ত হতে পারে এরকম শঙ্কা। আর এরকম বাস্তবতায় বিএনপি-জামায়াত জোট চাইছে হেফাজতকে সামনে রেখে নতুন করে তাণ্ডব সৃষ্টি। এজন্য হেফাজতের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে তারা দেনদরবার করছেন বলে জানা গেছে। তবে হেফাজতের অধিকাংশ নেতাই এখন আন্দোলনে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী নয়। তারা মনে করছেন যে, মার্চের ঘটনার পর হেফাজতের বিপুল পরিমাণ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং এই সমস্ত আটকের ঘটনা হেফাজতকে দুর্বল করে দিয়েছে। হেফাজতের অধিকাংশ নেতাই মনে করেন যে, এই সরকারের সঙ্গে সহবস্থান করে থাকলেই শেষ পর্যন্ত হেফাজতের লাভ হবে। বরং আন্দোলন-সংগ্রাম করলে হেফাজত নিঃশেষিত হবে। তারপরও হেফাজতের মধ্যে একটি উগ্রবাদী অংশ আছে যাদেরকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিএনপি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।