নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৮ পিএম, ০২ অগাস্ট, ২০২১
হাবীব উন নবী খান ও আবদুল কাউয়ুমকে সরিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখায় আহ্বায়ক কমিটি দিয়েছে বিএনপি। এতে উত্তরের নেতৃত্বে এসেছেন আমান উল্লাহ আমান। আর দক্ষিণের নেতৃত্ব দেবেন আবদুস সালাম। তাঁরা দুজনই বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।
আমান ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, আর আবদুস সালাম অবিভক্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব ছিলেন। আজ সোমবার আমানের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর উত্তরে ৪৭ সদস্যের এবং সালামের নেতৃত্বে দক্ষিণে ৪৯ সদস্যের কমিটি দিয়েছে বিএনপি। আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদকদেরও নতুন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়নি।
ঢাকা দক্ষিণের সদস্যসচিব করা হয়েছে রফিকুল ইসলামকে। আর উত্তরের সদস্যসচিবের দায়িত্বে এসেছেন সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক।
সোমবার (২ আগস্ট) বিকেলে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের চলতি দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ জানান, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন।
ঢাকা উত্তরের কমিটিতে ১০ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ৩৫ জনকে সদস্য করা হয়েছে। আর দক্ষিণে ১২ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ৩৫ জনকে সদস্য করা হয়েছে। বিগত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলের দুই প্রার্থী তাবিথ আউয়াল (উত্তর) ও ইশরাক হোসেনকে (দক্ষিণ) কমিটিতে ১ নম্বর সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
ঢাকা উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়কেরা হলেন আবদুল আলী, আনোয়ারুজ্জামান, আতিকুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, ফেরদৌসি আহমেদ, এ জি এম শামসুল হক, মোয়াজ্জেম হোসেন, আতাউর রহমান, আক্তার হোসেন ও গোলাম মোস্তফা।
কমিটিতে সদস্যরা হলেন, তাবিথ আউয়াল, ফয়েজ আহমেদ, শাহিনুর আলম, আবুল হাসেম, মাহফুজুর রহমান, আলাউদ্দিন সরকার, তুহিনুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, সোহেল রহমান, মো. আক্তারুজ্জামান, আবুল হোসেন, মো. শাহ আলম, এল রহমান, আফাজ উদ্দিন, আহসান হাবিব মোল্লা, সালাম সরকার, গোলাম কিবরিয়া, এ বি এম রাজ্জাক, তারিকুল ইসলাম, হাজী মো. ইউসুফ, আলী আকবর আলী, আহসান উল্লাহ চৌধুরী, মিজানুর রহমান, হুমায়ুন কবির, আমজাদ হোসেন, রেজাউর রহমান, মাহবুব আলম, হাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীর মোল্লা, আজহারুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, আফতাব উদ্দিন, মো. হানিফ মিয়া, মো. মোজাম্মেল হেসেন ও মো. জিয়াউর রহমান।
ঢাকা দক্ষিণ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কেরা হলেন নবী উল্ল্যাহ, ইউনুস মৃধা, মো. মোহন, মোশারফ হোসেন, আবদুস সাত্তার, সিরাজুল ইসলাম, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ, তানভীর আহমেদ, লিটন মাহমুদ, এস কে সেকেন্দার কাদির ও মনির হোসেন।
আর সদস্যরা হলেন, ইশরাক হোসেন, ফরিদ উদ্দিন, গোলাম হোসেন, সাব্বির হোসেন, ফারুকুল ইসলাম, মকবুল হোসেন, আবদুল হান্নান, আরিফুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, কে এম জুবায়ের এজাজ, ফরহান হোসেন, লতিফ উল্লাহ, মকবুল হোসেন সরদার, মোহাম্মদ আলী, আবদুল আজিজ, জামিনুর রহমান, হাজী শহিদুল ইসলাম, আকবর হোসেন, শামছুল হুদা, সাইদুর রহমান, এস এম আব্বাস, লোকমান হোসেন, জুম্মন হোসেন, ফজলে রুবায়েত, আবদুল হাই, মহিউদ্দিন চৌধুরী, আরিফা সুলতানা, সাইফুল্লাহ খালেদ, ওমর নবী, আবুল খায়ের, নাছরিন রশিদ, নাদিয়া পাঠান, হাজী নাজিম, জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী ও জামশেদুল আলম।
ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুই ভাগ করে ২০১৭ সালে হাবীব উন নবী খান ও আবদুল কাউয়ুমকে সভাপতি করে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তরে প্রথম কমিটি দিয়েছিল বিএনপি। ওই কমিটিতে দক্ষিণে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল সূত্রাপুর এলাকার সাবেক কমিশনার কাজী আবুল বাশারকে। আর উত্তরে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন কাফরুল এলাকার সাবেক কমিশনার আহসানউল্লাহ হাসান। নতুন কমিটিতে বিগত দুই কমিটির সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক কাউকেই কোনো দায়িত্বে রাখা হয়নি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন