নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪৮ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১
তাদের এত ভয়, এত উৎকণ্ঠা যে, বিএনপির যে লোকটি মারা গেছে সেও যদি জীবন্ত হয়ে ওঠে, তাহলে আওয়ামী লীগের ভোট যদি হাতছাড়া হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউতে ‘পাওয়ার অব ইউথ’ আয়োজিত ‘খালেদা জিয়ার ১৪তম কারামুক্তি দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। ‘তাদের (আওয়ামী লীগ) প্রহসনের মাত্রা এতটাই বেড়ে গেলো যে, লাশের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া শুরু করলো। বিএনপির যে ছেলেটা দু’বছর আগে মারা গেছে তার নামেও মামলা দেওয়া শুরু করলো।’
রিজভী বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্দেশনা চান নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য। অথচ নির্বাচন কমিশন গঠনে অথরিটি হলো রাষ্ট্রপতির ওপরে সংবিধান অনুযায়ী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রথম চয়েজ তো নুরুল হুদা। যে ব্যক্তিটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে অপরিচ্ছন্ন নির্বাচন করেছে, সে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত প্রিয়জন।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিভিন্ন রকমের জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। উনিতো (সিইসি) প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যে যে প্রার্থীকে ঘোষণা করতে বলা হয়, সেসব প্রার্থীকে ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যদি নতুন নির্বাচন কমিশনার ঘোষণার নির্দেশ দেওয়া হয়, আর প্রধানমন্ত্রী যদি এই নুরুল হুদাকে পছন্দ করেন, তাহলে নির্বাচন কমিশনে যে ধ্বংসস্তূপ গড়ে উঠেছে, তা আরও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।’
‘করোনা নিয়ে কে কী সমালোচনা করলো, আমি তার পরোয়া করি না’, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য উল্লেখ্য করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরোয়া করবে কেন তার তো ভোটের দরকার হয় না, তার তো নির্বাচনের দরকার হয় না। তিনি কীভাবে মন্ত্রী হয়েছেন তা জনগণ জানে। তাদের তো শুধু প্রধানমন্ত্রী ভালো থাকলেই সবকিছু ঠিক থাকবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ২৭ হাজার লোক মারা গেছে। করোনায় মারা যাওয়া এই ২৭ হাজার লোক স্বাস্থমন্ত্রীর উপহার।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, ‘আপনার মাঝে যদি কর্তব্যবোধ ও দায়িত্বশীলতা থাকতো, তাহলে আপনি এই কথাগুলো বলতেন না। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আমলে শুধু জাল-জালিয়াতি আর চুরি হয়েছে। উনার সব ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। জনগণ আক্রান্ত হয়েছে তাতে তার কিছু আসে যায় না।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন আপনি। আপনি ফ্লাইওভার দেখান, ব্রিজ দেখান— এগুলোতো বিভিন্ন স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকার দেখায়, তাতে কি জনগণ উপকৃত হয়? ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রের সরকারেরা ফ্লাইওভার করে, দেশের উন্নয়ন করে, কিন্তু তারা ধ্বংস করে দেয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও শিক্ষা। এগুলোর উন্নয়ন কখনও তারা করে না।’
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।