নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১
দুই বছর বাকি থাকতেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন ধরণের সরকার থাকবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার কথা বলছে বিএনপি। তবে সংবিধানের বাইরে একচুলও যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারা।
বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে। সংবিধান মতে সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে নির্বাচন কমিশন। সরকার নির্বাচনের সময় সংবিধান অনুযায়ী রুটিন কাজ করবে। নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। জনগণ যে রায় দেবে-বর্তমান সরকার তা মাথা পেতে নেবে। জনগণের আন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করে বিএনপি। সে কারণে নির্দলীয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করারও সুযোগ নেই। সে কারণে সংবিধান অনুযায়ীই বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। সংবিধানে যে কোনো ধরনের ফাঁক সৃষ্টি করে দিলে কতিপয় ক্ষমতালিপ্সু জনসমর্থনহীন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী দেশের এক বা একাধিক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন পরাশক্তির সমর্থন দেখিয়ে প্রোভোক করে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বিনষ্ট করার সুযোগ পাবে। সুতরাং ভবিষ্যতে নির্দলীয় সরকার বা এহেন কোনো ধরনের দেশ ও গণতন্ত্রবিরোধী দাবি পূরণ করা সম্ভব নয়।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচন কমিশনের ওপর সরকার বা কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি আবারও আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আর কোনো নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। দেশে হবে সাংবিধানিক সরকার। সংবিধানের আলোকে আগামী দিনের নির্বাচন হবে।
দল ও সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের দীর্ঘ সময় বাকি থাকলেও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপি নেতারা বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখার চেষ্টা করছেন। দীর্ঘদিন তারা ক্ষমতার বাইরে থাকায় নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়ছেন। কেউ কেউ দল ছাড়ছেন। নেতা-কর্মীরা যেন চাঙা থাকেন সে কারণে এই সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করছে। ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা বলছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংবিধানেই পরিষ্কার ব্যাখ্যা আছে। এ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করার কোনো সুযোগ নেই। যে কোনো ন্যায্য দাবি, গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক মতামতকে আওয়ামী লীগ সবসময় সম্মান জানাতে প্রস্তুত। কারণ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল। আর আওয়ামী লীগের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা সব সময় ছিল। তবে কোনো ধরনের অন্যায্য, অগণতান্ত্রিক বা অসাংবিধানিক দাবি আওয়ামী লীগ সমর্থন করবে না, বা মেনেও নেবে না।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি নেতারা জানে আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই হবে। আর আওয়ামী লীগই আবার ক্ষমতায় আসবে। সে কারণেই তারা নানা কথা বলছে।
তিনি বলেন, যে কোনো ন্যায্য দাবি, গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক মতামতকে আওয়ামী লীগ সব সময় সম্মান জানাতে প্রস্তুত। কারণ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল। আর আওয়ামী লীগের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা সব সময় ছিল। তবে কোনো ধরনের অন্যায্য, অগণতান্ত্রিক বা অসাংবিধানিক দাবি আওয়ামী লীগ সমর্থন করবে না, বা মেনেও নেবে না।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আমাদের নতুন কোনো ভাবনা নেই। কীভাবে নির্বাচন হবে তা শাসনতন্ত্রেই বলা হয়েছে। সেভাবেই আগামী নির্বাচন হবে।
আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, জনগণের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির প্রচলন হয়েছিল। কিন্তু ২০০১-এ ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বিতর্কিত করেছে। এখন আর মানুষের কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। মহামান্য আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা সংবিধানের বাইরে একচুলও যাব না।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।