নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নেতা কে হবেন, আরো সহজ ভাবে বললে আওয়ামী লীগের আগামী সাধারণ সম্পাদককে কে হবে এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নানামুখী আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগে একটি আগাম কাউন্সিলের সম্ভাবনার কথা যেমন আলোচিত হচ্ছে তেমনি নির্বাচনের আগে দলের নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন কথাও শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ তার সাংগঠনিক কার্যক্রম নতুন করে শুরু করেছে করোনার প্রকোপ কমে যাবার সাথে সাথেই। সারা দেশের জেলা সম্মেলন গুলো কাজে হাত দেওয়া হয়েছে এবং চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা সম্মেলন শেষ হবে। এরপর পর আওয়ামী লীগ কাউন্সিল এর দিকে যাবে বলে দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করছেন যে নির্বাচনকে মাথায় রেখে আগাম কাউন্সিল করতে পারে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ঘিরে মূল আলোচনাটি হয় দলের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দুই মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, কাজেই তৃতীয় মেয়াদে তার না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নানামুখী আলোচনা চলছে তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজের হাতে কয়েকজন নেতাকে তৈরি করছেন এবং এদের মধ্যে ভাগ্যবান ৩ জন রয়েছেন যারা একসাথে দলের নেতৃত্ব এবং মন্ত্রিত্ব উপভোগ করছেন।
এই তিনজন নেতাকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সভাপতির আস্থাভাজন হিসেবে এরা পরিচিত রয়েছেন। এদের মধ্যে থেকেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হবেন কিনা এ নিয়েও আওয়ামী লীগের নানামুখী আলোচনা রয়েছে। সাধারণ সম্পাদক ছাড়া আওয়ামী লীগের যে তিনজন ভাগ্যবান নেতা মন্ত্রী এবং নেতৃত্বে আছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন।
১. ড. আব্দুর রাজ্জাক। ড. আব্দুর রাজ্জাক রাজনীতিতে এসেছেন পেশাজীবী হিসেবে। তিনি সরকারি চাকরি করতেন। ১৯৯৬ সালের যে নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিল সেসময় তিনি সরকারি চাকরিতে ছিলেন, ছিলেন প্রকৃতির নেতা। এরপর আওয়ামী লীগের তার উত্থান রূপকথার মতোই। তিনি যেন আওয়ামী লীগে এলেন দেখলেন জয় করলেন। ড. আব্দুর রাজ্জাক ২০০১ সালের নির্বাচনে আবুল হাসান চৌধুরীর আসনে প্রথম মনোনয়ন পান এরপর তিনি ২০০৮ সালে মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে মন্ত্রিত্ব না পেলেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে চলে আসেন। এখন তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং গুরুত্বপূর্ণ কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। মনে করা হয় আওয়ামী লীগ সভাপতির বিশেষ আস্থাভাজন হওয়ার কারণেই চট জলদি তিনি আওয়ামী লীগের মতো একটি দলে দ্রুত নেতৃত্বের শীর্ষ পদ পেয়েছেন।
২. ড. দীপু মনি। ড. দীপু মনির উত্থান ও আওয়ামী লীগে রূপকথার মতোই। আইভি রহমানের মৃত্যুর পর সবাইকে অবাক করে দিয়ে ড. দীপু মনি আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হন। এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ওয়ান-ইলেভেনের সময় কঠিন পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হন। শেখ হাসিনার পক্ষে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ড. দীপু মনি এবং এখানেই তার রাজনৈতিক জীবনের উত্থান শুরু হয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবারের মতো এমপি হন এবং সেবারই আওয়ামী লীগ সরকারে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান এবং এখন তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আছেন এবং শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৪ সালের মন্ত্রিত্ব না থাকলেও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
৩. ড. হাসান মাহমুদ। ড. হাসান মাহমুদও আওয়ামী লীগ সভাপতির আরেকজন আস্থাভাজন নেতা। তিনিও দ্রুত রাজনীতিতে সামনের সারিতে চলে এসেছেন। ছাত্র জীবনে রাজনীতি করার পর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে আসার পর তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে আবার সম্পৃক্ত হন এবং সে সময় তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতির ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং একইসাথে বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া পান। ওয়ান ইলেভেনের পর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করেন এবং নির্বাচিত হওয়ার সাথে সাথে প্রতিমন্ত্রী এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বন-পরিবেশের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের মন্ত্রিত না পেলেও তিনি আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এবার নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন এবং একইসাথে তথ্য মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন।
এই তিনজন নেতাই শেখ হাসিনার বিশেষ নজরে রয়েছেন এবং সে কারণেই তারা দলের পদ এবং মন্ত্রিত্ব দুটোই পেয়েছে। তাহলে কি আওয়ামী লীগের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক এদের মধ্যে কেউ হবে এই প্রশ্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।