নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১২ অক্টোবর, ২০২১
আজ মঙ্গলবার আবার বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত কয়েকদিন থেকে তার জ্বর ছিল। বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা বলছেন যে তাঁর বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে, এজন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখাটা জরুরি। চিকিৎসকরা প্রাথমিক বলেছেন তিনি আর্থরাইটিস, কিডনি জটিলতাসহ বেশকিছু দীর্ঘমেয়াদী অসুখে ভুগছেন আর এজন্যই হাসপাতালে রেখে তার পরীক্ষাগুলো করার জন্য দরকার বলে চিকিৎসকরা বলছেন। এর আগে গত ২৬ এপ্রিল বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, প্রায় দুই মাস হাসপাতালে থাকার পর তিনি বাড়িতে ফিরে ছিলেন সেসময় তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার সদস্যরা বলছেন যে তিনি আসলেই অসুস্থ, ঠিক মত চলাফেরা করতে পারছেন না তার খাওয়ার রুচি কমে গেছে, এরকম পরিস্থিতিতে বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া দরকার।
এই বিদেশ যাওয়া নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার দু`দফা আবেদন করেছিলেন। প্রথম দফায় আবেদন করেছিলেন যখন বেগম জিয়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তখন, আর দ্বিতীয় দফায় বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই। গত সেপ্টেম্বরে শামীম ইস্কান্দার আবার বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সরকার প্রথম আবেদনটি নাকচ করে দিয়েছিল যে ফৌজদারি কার্যবিধিতে যে ধারা অনুযায়ী বেগম জিয়াকে জামিন দেওয়া হয়েছিলো সেই ধারার পুনঃপ্রয়োগ সম্ভব নয়, কাজেই বেগম জিয়ার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া আপাতত সম্ভব নয়। দ্বিতীয় দফায় আবেদনের সময় সরকার তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দিয়ে জামিনের মেয়াদ আরও ছয় মাস বৃদ্ধি করেছে। এরকম বাস্তবতায় আজ যখন আবার খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তখন অনেকেই প্রশ্ন করছেন যে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কি সরকার ঝুঁকি নিয়ে ফেলছে। অনেকে মনে করছেন যে বেগম খালেদা জিয়া আসলেই গুরুতর অসুস্থ, এই সময় যদি তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে বা অন্য কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে সরকারের উপর দায় বর্তাতে পারে।
অনেকেই মনে করছেন যে সরকার বেগম জিয়াকে জামিন দিয়ে যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে সেই উদারতার ধারা বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে রক্ষা করতে পারেনি। সরকার এর ফলে খালেদা জিয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছে। আর এ কারণে অনেকেই মনে করছেন যে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের এই ঝুঁকির মূল্য রাজনৈতিকভাবে দিতে হবে কিনা। কারণ বেগম খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয় তাহলে সেই ঘটনার দায় দায়িত্ব সরকারের উপর কতটুকু বর্তাবে। তবে নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার অনুমতির বিষয়টি সরকারের একক সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে না। কারণ বেগম জিয়া যে দুটি মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন সেই দুটি মামলায় হলো দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা, দুর্নীতি দমন কমিশন একটি স্বাধীন সত্ত্বা। দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুমতি ছাড়া বেগম জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সেই প্রশ্নও আইনজীবীরা করছেন। তাছাড়া বেগম খালেদা জিয়া এখন যেভাবে অসুস্থ হয়েছেন বা যে ভাবে নিজেকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন যদি তিনি বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পান তখন কি পরিবর্তন হবে। তাকে নিয়ে যে রাজনৈতিক নোংরা খেলাটা হবে সেটির কতদূর পর্যন্ত গড়াবে সে নিয়েও সংশয় রয়েছে।
কাজেই সরকার যদি আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, জেনে বুঝে একজন দণ্ডিত ব্যক্তিকে এবং যার বিরুদ্ধে আরও অন্তত ৩৪ টি মামলা আছে তাকে বিদেশে যেতে অনুমতি দিতে পারে না। এরকম অনুমতি যদি দেওয়া হয় তাহলে পড়ে ভবিষ্যতে এটি একটি খারাপ উদাহরণ হিসেবে পরিগণিত হবে। তাছাড়া করোনাকালে দেখা গেছে বাংলাদেশে উন্নত চিকিৎসা সম্ভব এবং বহু গুণীজন বাংলাদেশে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কাজেই বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসাটি একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয় এবং এটি একটি স্বাস্থ্যগত বিষয়। এটি নিয়ে যদি বিএনপি রাজনীতির জটিল খেলা খেলে তাহলে সেটি কারো জন্যই ভালো হবে না বলে অনেকেই মনে করছেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।