নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৩ অক্টোবর, ২০২১
ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয়-তৃতীয় ধাপের মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগে রীতিমতো তুলকালাম চলছে। এই মনোনয়ন নিয়ে যখন হুলস্থুল তখন সিলেট ছাত্রলীগের নতুন কমিটি নিয়ে আরেক তুলকালাম কাণ্ড শুরু হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন তোলপাড় চলছে। দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত ব্যক্তিরা বলছেন, আওয়ামী লীগের নৌকায় ছদ্মবেশী ডাকাত ঢুকেছে। এখন এরা সবকিছু লুণ্ঠন করবে। নৌকা ডুবিয়ে দেবে।
গত কিছুদিন ধরে আওয়ামী লীগের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিডদের কথা বলা হচ্ছিল। এখন বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি আওয়ামী লীগে ভালো মতোই গাঁটছড়া বেঁধেছে। এবার আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের যে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, সেই মনোনয়নে অন্তত ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যারা পৈতৃকসূত্রে রাজাকারের সন্তান বা যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। আওয়ামী লীগে এ রকম যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের ছবি এবং অতীত ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হচ্ছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, এর সবই যে সত্যি তা নয়। এর কিছু কিছু সত্যতা আছে। যেখানে সত্যতা আছে, সেখানে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ বেশ কিছু মনোনয়ন পরিবর্তনও করেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেটুকু অভিযোগ আছে, তা তো আছেই, এর বাইরে আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে অভিযোগের স্তূপ জমা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন প্রার্থী এবং মনোনয়ন লাভের ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ব্যাপারে।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, যে সমস্ত অভিযোগ এসেছে, সেই সমস্ত অভিযোগগুলোকে যাচাই বাছাই করা হবে এবং যাচাই-বাছাই করার পর যেগুলোতে সত্যতা পাওয়া যাবে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলছেন, যে অভিযোগগুলো আসছে সেই অভিযোগগুলোর প্রধান কারণ হলো আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অপরিণামদর্শী আচরণ এবং লোভ। অনেকে মনে করছেন যে, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কিছু ব্যক্তি লোভে পড়ে এ ধরনের মনোনয়ন দিচ্ছে। এই মনোনয়ন দেওয়ার ফলে আওয়ামীলীগ একটি সংকটে পড়তে যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে, আমরা অতীতেও দেখেছি যে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন এক ঝাঁক অনুপ্রবেশকারী আওয়ামী লীগের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এরা আওয়ামীলীগের বদনাম করে এবং যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে চলে যায় তখন এরা দল থেকে সটকে পড়ে। একই অবস্থা বর্তমানে হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন। আর এই সমস্ত অভিযোগগুলো নিয়েই আওয়ামী লীগ এখন একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন যে, অনতিবিলম্বে যদি আওয়ামী লীগের এই অনুপ্রবেশকারীদের দাপট ঠেকানো না যায়, বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী, বিতর্কিত ব্যক্তিদের মনোনয়ন যদি ঠেকানো না যায় তাহলে পরে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের জন্য অশনিসংকেত তৈরি হবে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছে যে, নৌকায় যেমন ছদ্মবেশে ডাকাত মাঝি হয়, মাঝ নদীতে গিয়ে সেই ডাকাত তার আসল রূপ প্রকাশ করে এবং যাত্রীর সবকিছু ছিনিয়ে নেয়, তেমনি আওয়ামী লীগের নৌকাতেও এখন ডাকাত মাঝিরা ঠাঁই করে নিচ্ছে। এরাই আওয়ামী লীগকে ডুবানোর জন্য যথেষ্ট।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।