নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৪ অক্টোবর, ২০২১
মাহমুদুর রহমান মান্না, তুখোড় ছাত্র নেতা। জাসদের মাধ্যমে রাজনীতিতে অভিষেক। এরপর জাসদ ভেঙে বাসদ ছাত্রলীগের নেতা হয়েছিলেন। ডাকসুর ভিপি হয়েছেন দু`দুবার। ছাত্রনেতা হিসেবে অগ্নিঝরা বক্তৃতা দিয়ে সম্মোহিত করতেন শিক্ষার্থীদেরকে। ছাত্র রাজনীতি শেষ করে বাসদের রাজনীতিতে সুবিধা করতে পারেননি। একসময় যোগ দেন আওয়ামী লীগে। আওয়ামী লীগ সভাপতি তাকে ভালোই প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। একলাফে হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের মতো সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক। কিন্তু মাহমুদুর রহমান মান্নারা সবসময় সুযোগ সন্ধানী। রাজনীতিকে ব্যাবহার করেন চূড়ায় ওঠার সিঁড়ি হিসেবে। আর সে কারণেই ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি বিরাজনীতিকরণ ও মাইনাস ফর্মুলার অন্যতম প্রবক্তা হয়েছিলেন। সে সময় শেখ হাসিনাকে মাইনাস করার ক্ষেত্রে বা বিরাজনীতিকরণ করার ক্ষেত্রে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের মধ্যে মাহমুদুর রহমান মান্না ছিলেন অন্যতম।
ওয়ান ইলেভেনে পর আওয়ামী লীগে পরিত্যক্ত ঘোষিত হন মান্না। এরপর নিজেই দল গঠন করেন। তারেক জিয়া তাকে বিএনপিতে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তবে নানা হিসেব নিকেশে শেষ পর্যন্ত বিএনপিতে যোগ দেয়া হয় নি তার। কিন্তু এখন বিএনপির রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার অন্যতম প্রবর্তক মাহমুদুর রহমান মান্না। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার ক্ষেত্রেও তিনি ভূমিকা রেখেছিলেন। সে সময় বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে বি. চৌধুরীকে কৌশলে বাদ দেয়ার ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা ছিল সর্বজনবিদিত। তবে বিএনপি এখন এককভাবে রাজনীতি করতে চাচ্ছে। বিএনপির দীর্ঘ ৯ দিনের ৪৫ ঘণ্টার বৈঠকে দলটি একলা চলো নীতি অনুসরণ করছে। বিশেষ করে যেসব রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মী-সমর্থক নেই, সে সব রাজনৈতিক দলগুলোর `বোঝা` নিজেদের কাঁধে না নেয়ার প্রস্তাব এসেছে তৃনমূলের পক্ষ থেকে। সে অনুযায়ী, মাহমুদুর রহমান মান্না অস্তিত্বহীন হয়ে পরতে পারেন। কারণ মাহমুদুর রহমান মান্নারা শেকড়হীন পরগাছা, রাজনীতিতে অস্তিত্বহীন। ব্যক্তি সর্বস্ব সংগঠন ছাড়া যে রাজনীতি হয় না, তার অনেক উদাহরণ আছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ সম্ভবত মাহমুদুর রহমান মান্না।
রাজনীতিতে সম্ভাবনা জাগিয়ে যারা শেষ পর্যন্ত জনগণের জন্য কিছুই করতে পারে নি তাদেরও অন্যতম উদাহরণ হলো মাহমুদুর রহমান মান্না। শেষ পর্যন্ত বিএনপি যদি জোট ছাড়া রাজনীতি করে তাহলে মাহমুদুর রহমান মান্নার ঠিকানা কি হবে? তিনি কি বিএনপিতে যোগ দিবেন নাকি তার একক রাজনৈতিক দল নাগরিক ঐক্য নিয়ে এগোবেন? এমন গুটিকয়েক ব্যক্তি নিয়ে গড়া একটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের রাজনীতিতেই বা কি অবদান রাখবে? নাকি মাহমুদুর রহমান মান্নারা অন্য কোন সুযোগের অপেক্ষায় আছেন? বাংলাদেশে আবার কোনো বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া হলে বা অগণতান্ত্রিক শাসন আসলে মাহমুদুর রহমান মান্নাদের কপাল খুলে যাবে সে অপেক্ষাতেই কি আছেন মাহমুদুর রহমান মান্নারা? রাজনীতিতে এখন গন্তব্যহীন মান্নার জন্য এধরনের প্রশ্নগুলো বিভিন্ন সময় বারবার উঠছে।
মন্তব্য করুন
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ
থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বুধবার (০১ মে)
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয়
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও
প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে
একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে,
বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে
জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে
যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে
শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ
গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং
আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু
মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।
বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে
অনুরোধ করেছে।
এই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে
মনোনীত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১
মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের
বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে।
ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে।
৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।
ভারত নির্বাচন বিজেপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন