নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৪ নভেম্বর, ২০২১
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে নানা রকম গুজব, গুঞ্জন চারিদিকে এখন সয়লাব হয়ে গেছে। গতরাতেও গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল খালেদা জিয়া সম্পর্কে। পরবর্তীতে দেখা গেছে, এই গুজবটি সত্যি নয়। এক ধরনের গুজব সৃষ্টি করে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করা এবং অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য তৎপর একটি মহল। এর বাইরে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে রাজপথে বিএনপি আস্তে আস্তে সরব হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার দাবিতে বিএনপি একের পর এক বিভিন্ন কর্মসূচি জানাচ্ছে। এই কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে দিয়ে বিবৃতি দেয়ানো হচ্ছে। সাংস্কৃতিক কর্মীদের বিবৃতির পর সাংবাদিকদের একটি অংশের পক্ষ থেকেও বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতির জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু এই সব দাবি দাওয়ার পরও সরকার এখন পর্যন্ত তার অবস্থানের কোন পরিবর্তন করেনি। বরং আইনমন্ত্রী এখন পর্যন্ত তার আগের অবস্থানেই অটল আছেন। তিনি বলেছেন যে, বর্তমান বাস্তবতায় বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়ার কোন সুযোগ নেই।
এই পরিস্থিতিতে বেগম খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয় তাহলে দায় দায়িত্ব সরকারের উপর বর্তাবে বলে বিএনপি হুঁশিয়ারি দিয়েছে। স্পষ্টতই বিএনপি সরকারের উপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ প্রয়োগ করছে এবং এমন ভাবে একটি আবহ তৈরি করা হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি ধারণা সৃষ্টি করা হয় যে, বেগম খালেদা জিয়ার এই অবস্থার জন্য সরকার দায়ী। বেগম খালেদা জিয়ার পরিণতি নিয়ে রাজনৈতিক হিসেব-নিকেশও এখন বেশ জোরেশোরেই হচ্ছে। কোনোরকম রাখ-ঢাক ছাড়াই বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারের কি ধরনের ক্ষতি হবে বা বিএনপির কি ধরনের লাভ হবে তার হিসেব-নিকেশ করছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে সরকার কি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে? সরকার কি শেষ পর্যন্ত নাটকীয়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিবেন? এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম আলাপ আলোচনার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
একদিকে সরকার বিরোধী আন্দোলনের হুমকি দেয়া হচ্ছে, অন্যদিকে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা এবং বিএনপির একটির অংশ সরকারের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে দেন দরবার করছে। এখনও বিএনপির কেউ কেউ আশা করছে যে, শেষ পর্যন্ত হয়তো বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিলেও দেয়া হতে পারে এবং কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন যে, এটি যদি দেয়া হয় তাহলে পরে রাজনীতিতে একটি সুবাতাস বইতে শুরু করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকার এমন একটি সিদ্ধান্ত নিবে কিনা সেটিই একটি বড় প্রশ্ন। এক্ষেত্রে সরকার একাধিক বিষয় বিবেচনা করছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রথমত, আইনের ব্যত্যয়। এটি বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয় তবে সেটি হবে আইনের বড় ধরনের একটি ব্যত্যয় এবং এটি খারাপ নজির হিসেবে বিবেচিত হবে। এর ফলে, বিভিন্ন দণ্ডিত ব্যক্তি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার আবেদন করবে এবং নানা রকম চেষ্টা তদবির করবে। এটি সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এটি হবে বড় একটি অন্তরায়।
দ্বিতীয়ত, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়া হলেই লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া তার সাম্প্রতিক সময়ে যে ষড়যন্ত্র সেগুলোকে আরও বাড়াবেন এবং সরকার বিরোধী আন্দোলনকে আরও জোরদার করার চেষ্টা করবে।
তৃতীয়ত, এ রকম একটি পরিস্থিতির পরে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়ে নাটকীয় ভাবে সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং তখন তিনি ভোল পাল্টে সরকারকেই আক্রমণ করা শুরু করবেন। এবং সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
এই তিনটি বিষয় এড়িয়ে শেষ পর্যন্ত সরকার বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে যদি কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেন সেটি হবে রাজনীতিতে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। সেই সিদ্ধান্ত কি সরকার নেবে?
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।