৬
ডিসেম্বর ১৯৯০। আনুষ্ঠানিকভাবে অবসান হল ৯ বছরের
স্বৈরশাসনের। এরশাদ বিদায় নিলেন। বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন। এর ক’দিন পরেই
এরশাদ গ্রেফতার হয়েছিল। নব্বইয়ের তীব্র গণআন্দোলনের মুখে এরশাদের ৯ বছরের শাসনের
অবসান ঘটে। সে সময় অনেকেই
মনে করেছিল যে, রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয়
পার্টিরও অবসান ঘটবে এবং জাতীয় পার্টি হিসেবে কোন রাজনৈতিক দল থাকবে না।
বিশেষ করে গণআন্দোলনের মুখে এরশাদের পতনের পর জাতীয় পার্টি
অস্তিত্বের সংকটে পড়েছিল। অধিকাংশ নেতা হয় জেলে গিয়েছিলেন,
না হলে আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। অনেকে জনগণের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছিলেন। সেরকম একটি রাজনৈতিক দল ৩১ বছর
এখনো টিকে আছে কিভাবে সেটাই রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বিস্ময়।
পৃথিবীর
ইতিহাসে স্বৈরাচারের অবসানের পর স্বৈরাচারের রাজনৈতিক
দল টিকে থাকা একটি বিরল ঘটনা। কিন্তু জাতীয় পার্টি এখনও ঠিক আছে। কাগজে কলমে এ দলটি এখন
দেশের প্রধান বিরোধী দল। জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসে আছে। যদিও এরশাদের পতনের পর এ দলটির
মধ্যে নানারকম টানাপোড়েন চলছে। কিন্তু এখনো জাতীয় পার্টি বড় ধরনের কোন ভাঙ্গনের মুখে পড়েনি। জাতীয় পার্টির অস্তিত্বের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল ৯১ এর নির্বাচন।
ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করে। যদিও জাতীয় পার্টির মধ্যে ওই নির্বাচন বর্জনের
পক্ষে প্রবল একটা মতামত ছিল। কিন্তু সেই মতামতকে উপেক্ষা করে জাতীয় পার্টির তৎকালীন নেতারা এবং এরশাদ নিজে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ওই নির্বাচনে জাতীয়
পার্টি অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে। বিশেষ করে এরশাদ পাঁচটি আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। প্রথমে পাঁচটি আসনে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে তিনি পাঁচটি আসনে নির্বাচন করার সুযোগ পান এবং পাঁচটিতেই বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে জাতীয়
পার্টির তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত
হয়।
এরপর
জাতীয় পার্টির মধ্যে নানারকম ভাঙা-গড়া চলেছে। বিভিন্ন সময় এরশাদকে ছেড়ে জাতীয় পার্টির নেতারা চলে গেছেন। নতুন
দল করেছেন, কেউ বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু জাতীয় পার্টির তারপরও টিকে আছে। এই টিকে থাকার
কৌশল টা ছিল অদ্ভুত।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ-বিএনপির রাজনৈতিক বিরোধে জাতীয় পার্টি ছিল ভারসাম্যের কেন্দ্র। যে দলকে জাতীয়
পার্টি সমর্থন দেবে সেই দলের জয়ই অবধারিত। এরকম একটি অবস্থায় জাতীয় পার্টির দুই দলের সঙ্গে কখনো আপস করে, কখনো সমঝোতা করে বা কখনো অনুগত
হয়ে নিজেদের অস্ত্বিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। জাতীয় পার্টির ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেন এবং জাতীয় পার্টির তৎকালীন নেতা আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আওয়ামী লীগের ঐক্যমতের মন্ত্রী সভায় যোগদান করেছিল। আবার ২০০১ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি বিএনপির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে পেন্ডুলামে
পরিণত হয় জাতীয় পার্টি এবং এটিই তার টিকে থাকার মূল রহস্য বলে মনে করেন।
এরশাদ
সবসময় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আপস-সমঝোতার মাধ্যমে রাজনীতিতে টিকে ছিলেন। এটি তার দ্বিমুখী লক্ষ্যের অংশ ছিল। প্রথম লক্ষ্য ছিল তার যেন জেল-জুলুম ইত্যাদি আর না হয়,
আবার যেন তাকে কারাগারে না যেতে হয়।
আর দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল যে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে থেকে সংগঠনকে গুছাতে পারেন। কিন্তু এটি করতে যেয়ে গত ১৩ বছরে
জাতীয় পার্টি এখন একটি গৃহপালিত বিরোধী দলে পরিণত হয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতারাই এখন জাতীয় সংসদে বলেছেন তাদেরকে সরকারের দালাল বলা হয়। যদিও সরকারের দালাল পরিচয় থেকে জাতীয় পাটি বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এখন সংসদে সরকারের সমালোচনা করছে। কিন্তু তারপরও যাচ্ছে জাতীয় পার্টি স্বক্রিয়, স্বাতন্ত্র্য এবং সত্যিকারের একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে কিনা সে নিয়ে অনেকেই
সংশয় প্রকাশ করেছে। তবে রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির আবির্ভাব হয়েছিল আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করে। নীতি-আদর্শের দিক থেকে জাতীয় পার্টি এক ধরনের কার্বন
কপি ছিল। কিন্তু বারবার আপসকামিতা এবং আদর্শহীন রাজনীতির কারণে জাতীয় পার্টি বিএনপির স্থান দখল করতে পারেনি। বরং আওয়ামী লীগের বি টিম হিসেবেই
জাতীয় পার্টি এখন ধুঁকছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে এই
দলটি কতদিন টিকে থাকবে তা সময়ই বলে
দেবে।
জাতীয় পার্টি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটার ও প্রার্থীদের ধারণা পাল্টিয়েছে, বিশ্বাস জন্মেছে।
তার কারণেই প্রার্থীরা আবারও ভোটাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটাদের দ্বারে
যাওয়ার যে সংস্কৃতি সেটা আবারও ফিরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) যশোর শিল্পকলা
একাডেমির মিলনায়তনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে
অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যশোর, নড়াইল ও মাগুরার জেলার প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে
মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
একদিন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন বিশ্বের
রোল মডেল হবে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৩৬ শতাংশ
এ সময়ে অনেক। দেশের কয়েকটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নেয়াতে ভোটার উপস্থিতি কম।
আগামীতে দেশের যত ভোট আসছে, ততই আমাদের ভোটের পরিবেশ, ভোট গ্রহণ পরিবর্তন ঘটছে। বিগত
সময়ে নির্বাচন নিয়ে কি ঘটেছে সেটা ফিরে তাকানোর আর কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন
কমিশন সকল বির্তক, সমালোচনা পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়িয়ে দিন দিন উন্নতির দিকে যাচ্ছে।
ইসি আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে ভোটারের
উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা কাজ করবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম
ধাপে মোট ভোট গ্রহণের শতাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা এবার থেকে ভোট গ্রহণে উপজেলা ভিত্তিক
তালিকা প্রকাশ করা হবে। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীরা আলাদাভাবে
প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ভোটাদের বাঁধা দিবে তাদের প্রতিহত করবে প্রশাসন।
আমরা প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি আইনের হাত ও ক্ষমতা অনেক বেশি। নির্বাচন বানচাল করতে
সেই ক্ষমতা কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে প্রশাসন।
ইসি আরও বলেন, বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমান
কমিশন সততার সঙ্গে কাজ করছে। শুধু কমিশন নয়, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা সততার
সঙ্গে কাজ করছে। নির্বাচনে সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আইন পাস করেছে এ কমিশন। কেউ সাংবাদিকদের
কাজে বাধাগ্রস্ত করলে জেল জরিমানার বিধান করা হয়েছে। মিডিয়াকে এ অবস্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে
এ কমিশন ও সরকার ভূমিকা রাখছে।
যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল
হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় যশোর, নড়াইল ও মাগুরা জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপাররা
বক্তব্য রাখে। সভায় যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার সকল প্রার্থী, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উপজেলাসমূহের
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাবৃন্দ, আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাবৃন্দ
এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ
নেয়।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে শার্শা উপজেলা
পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেন ইসি আহসান
হাবিব খান।
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।