মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। মহাবিশ্ব নিয়ে, মহাবিশ্বের বয়স নিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে নানা রকম জল্পনা-কল্পনা। মহাবিশ্বের বয়স কত? কীভাবে এ মহাবিশ্ব সৃষ্টি হলো? কত শত বছর আগে এর উদ্ভব? মহাবিশ্বের ধ্বংসই বা কবে হবে? ইত্যাদি।
বিজ্ঞানী ও গবেষকদের নানান গবেষণায় পৃথিবীর বুকে উন্মেষ ঘটেছে ডিজিটাল প্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞান, দর্শন ও সাহিত্যের। যেভাবে আবার পুরোনো ভার্সন বাতিল হয়ে সৃষ্টি হয়েছে নতুন সংস্করণ ও নতুন তত্ত্ব। সেভাবে মহাবিশ্ব সম্বন্ধে কৌতূহলের এক যুগের বিজ্ঞান ব্যাখ্যা বাতিল হয়েছে অন্য যুগে। তবুও থেমে নেই প্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার খেলা। থেমে নেই মহাকাশ বিজ্ঞানীদের নিরলস সাধনা।
খ্যাতিমান জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডউইন হাবল তার চমকপ্রদ আবিষ্কারের তথ্যানুযায়ী বলেন, মহাবিশ্ব প্রসারমান। মহাবিশ্বের বিস্তৃতি ঘটছে। তার তত্ত্বে গাণিতিক হিসাব দিয়ে বলেন, মহাবিশ্বের বয়স ২০০ কোটি বছর। অবশ্য ৭০০ বছর আগে হাবল এ মতবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।
তবে পরবর্তী সময়ে গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে জানা যায়, এই মতবাদ নির্ভুল নয়। মহাবিশ্বের জন্মরহস্য নিয়ে এ পর্যন্ত যে সূত্রটি স্বীকৃত হয়েছে তা হলো ‘বিগ ব্যাং’ তত্ত্ব। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রায় দেড়-দু’হাজার কোটি বছর আগে এক মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছিলো এই মহাবিশ্বের।
সৃষ্টির পূর্বে এ মহাবিশ্বে শক্তি ছাড়া কিছু ছিলো না। তাও আবার এ শক্তি ছিলো পুঞ্জীভূত অবস্থায়। একেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ‘বিগ ব্যাং’ বলে অভিহিত করেন। পরে কিছু পরিমাণ শক্তি রূপান্তরিত হয় পারমাণবিক কণায়। সৃষ্টি হয় আধানযুক্ত ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন ইত্যাদি।
এক সময় প্রোটন কণাকে ঘিরে পরিক্রমণ করতে শুরু করে ইলেকট্রন কণা। এর ফলে সৃষ্টি হয় হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম পরমাণুর। বিস্ফোরণের পর স্বল্পকালের মধ্যেই ১০০০ কোটি থেকে ১০ হাজার কোটি নক্ষত্র নিয়ে তৈরি হয় এক একটি গ্যালাক্সি।
হাইড্রোজেনের পরিব্যাপ্ত মেঘ ঘনীভূত হয়ে সৃষ্টি হয় সমস্ত গ্রহ-উপগ্রহ আর নক্ষত্র। বিজ্ঞানীদের মতে, মহাবিশ্বে কমপক্ষে ১০০ কোটি গ্যালাক্সি আছে। একেকটি গ্যালাক্সির মধ্যে আনুমানিক ১০ হাজার কোটি নক্ষত্র ও নীহারিকা আছে। যা দ্বীপ বিশ্ব বলে পরিচিত। মহাবিশ্বের প্রসারণের মাত্রা চিহ্নিত করতে এবার হাবলের আবিষ্কারে ফিরে যেতে হয়। তার মতে, দূরবর্তী গ্যালাক্সিগুলো আমাদের নিজস্ব মিল্কিওয়ে থেকে সঞ্চারমান অবস্থায় আছে। যতো বেশি দূরে অবস্থান করে ততো বেশি গতিতে সঞ্চারমান হয়।
মানুষের জ্ঞানের পরিসীমা খুবই নগণ্য। তাই নির্মম সত্যটি হলো মানুষ কখনো এই মহাবিশ্বের কুলকিনারা করে উঠতে পারবে কি না বলা কঠিন। হয়তো আমরা মানুষরা অনেক কিছু জেনেছি বা অনেক ডিজিটাল যন্ত্র আবিষ্কার করেছি। তবে এই অসীম মহাবিশ্বের অজানা রহস্যের কাছে আমরা অতি নগণ্য। তবুও বলা যেতেই পারে, হয়তো একদিন মহাকাশ বিজ্ঞানী-গবেষকদের নিরলস সাধনা প্রমাণ করবে মহাবিশ্বের সঠিক বয়স।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন