চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করেছে ভারতের মহাকাশ যান চন্দ্রযান-৩। ভারতের মহাকাশ সংস্থা ইসরোর পক্ষ থেকে শনিবার সন্ধ্যায় চন্দ্রযান-৩ এর সফলভাবে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশের খবর জানানো হয়।
এর আগে গত ১৪ জুলাই ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ হয়। আগামী ২৩ বা ২৪ অগাস্ট এটি চাঁদে দক্ষিণ মেরুর কাছে একটি রোবটযান নামাতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
যদি এই অভিযান সফল হয় তবে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে গবেষণা কাজ শুরু করতে পারবে ভারত। চাঁদের ওই অংশ সম্পর্কে এখনো খুব কিছু জানে না মানুষ। চাঁদের যে অংশে চন্দ্রযান পৌঁছাতে চায়, সেই দক্ষিণ মেরু নিয়ে মানুষের গবেষণা খুব বেশি এগোয়নি। ছায়ায় ঢাকা ওই অঞ্চল চাঁদের উত্তর মেরুর চেয়ে অনেকটা বড়। ধারণা করা হয়, সবসময় অন্ধকারে থাকা ওই অঞ্চলে পানির অস্তিত্ব থাকতেও পারে।
এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে।
শনিবার ইসরোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, চাঁদ এবং চন্দ্রযান-৩ এর মধ্যে যখন দূরত্ব সবচেয়ে কম ছিল তখনই এটি কক্ষপথ পরিবর্তন করেছে। পরবর্তীতে কক্ষপথের দূরত্ব কমানোর কাজটি করা হবে। এই দূরত্ব কমতে শুরু করবে রবিবার রাত ১১টার পর থেকে।
এরপর বিজ্ঞানীরা ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মহাকাশযানটিকে নিয়ে যাবেন, যেখান থেকে বিক্রমের অবতরণপর্ব শুরু হবে। নির্দিষ্ট সময়ে চন্দ্রযান-৩ এর অরবিটার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চাঁদের মাটিতে নেমে যাবে ল্যান্ডার বিক্রম।
অবতরণের সময়টা হতে হবে একেবারে নির্দিষ্ট, চাঁদের কোনো এক দিনের ঠিক সূচনায়। কারণ, ল্যান্ডার আর রোভারের ব্যাটারি চার্জ হতে সূর্যালোক দরকার হবে।
পৃথিবী থেকে চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদে পৌঁছাতে সময় লাগবে মোট ৪০ দিন। শনিবার তার মধ্যে ২২তম দিন সম্পূর্ণ হলো।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, আগামী ১৭ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চন্দ্রযানের কক্ষপথে প্রবেশ করার পর ইসরোর দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ সফট ল্যান্ডিং। ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান এর মূল যান থেকে আগামী ১৭ অগাস্ট বিচ্ছিন্ন হতে পারে।
ইসরোর হিসাব অনুসারে ঠিক তার ছয়দিন পর চাঁদে অবতরণ করবে বিক্রম। শেষবারে এই অবতরণের সময়ই বিপদ ঘটেছিল তাই এবার সেই সময়টি নিয়ে যেন উত্কণ্ঠা কাটছে না ইসরোর বিজ্ঞানীদের।
বিক্রম ঠিকঠাক চাঁদে নামতে পারলে এর পেট থেকে বেরিয়ে আসবে ছয় চাকার প্রজ্ঞান। চাঁদের পৃষ্ঠে ঘুরে ঘুরে সে পৃথিবীতে তথ্য আর ছবি পাঠাবে। এই রোভার সক্রিয় থাকবে চাঁদের এক দিন, যা পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান।
পাঁচ ধরনের যন্ত্র বহন করছে চন্দ্রযানের রোভার। চন্দ্রপৃষ্ঠের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য, পৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুমণ্ডল এবং ভূগর্ভে নিচে কী ঘটছে তা জানার চেষ্টা করবেন বিজ্ঞানীরা।
ইসরো প্রধান শ্রীধরা পানিকার সোমনাথ আশা করছেন, এই অভিযানে নতুন কিছু খুঁজে পাবেন তারা।
ভারত মিশন চন্দ্রযান-৩ চাঁদ কক্ষপথ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পরিবেশের ওপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রভাব মোকাবিলার একটি উপায় হয়তো খুঁজে পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা।
ক্রমবর্ধমান বিপুল পরিমাণ খাদ্যচাহিদা পূরণে চাষাবাদের জন্য প্রচুর জমির প্রয়োজন। কিন্তু জমি তো সীমিত।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন হাইব্রিড খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন। ধানের ভেতরে গরুর মাংসের সমন্বয়ে এই হাইব্রিড খাদ্য গঠিত।
গবেষণাটি ম্যাটার নামের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমোলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার সোহেয়ন পার্ক।
গবেষণাগারে উদ্ভাবিত খাবারটি দেখতে মাংসের কিমা ও ভাতের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণের। তবে খাবারটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান।
বিজ্ঞানসংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্টকে গবেষণাটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী পার্ক বলেন, কোষ-কালচারড প্রোটিন চাল থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি পাওয়ার কথা ভাবুন। ভাতে এমনিতেই উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান আছে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ থেকে কোষ যুক্ত করে এই পুষ্টি উপাদানকে আরও বাড়ানো যায়।
পার্ক আরও বলেন, এই খাদ্য তৈরি একটু শ্রমসাধ্য ব্যাপার। তবে এই খাদ্য একদিন খাবারের ওপর চাপ কমাতে পারে।
গবেষণা দলের ভাতকে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—এটি মানুষের প্রধান একটি খাদ্য। এতে ৮০ শতাংশ শ্বেতসার, ২০ শতাংশ প্রোটিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, এই খাবার দেখতে গোলাপি রঙের। গবেষকেরা বলেছেন, এই চাল সস্তা, নিরাপদ, আরও টেকসই পরিবেশসম্মত মাংসের বিকল্প হতে পারে। জলবায়ু সংকটের মধ্যে মানুষ যেভাবে খাচ্ছে, তাতে একটা বদল আনতে পারে এই চাল।
মন্তব্য করুন