নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০১ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০
এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখের বেশি। আর মারা গেছে ৪ হাজারের বেশি মানুষ। মরণব্যাধী এই ভাইরাসটি থেকে বাঁচতে সারা বিশ্ব এখন ছুটছে ভ্যাকসিনের পেছনে। করোনা মোকাবেলায় কার্যকর উপায় হিসেবে ‘ভ্যাকসিন’ কে একমাত্র উপায় হিসেবে দেখছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০০টির বেশি ভ্যাকসিন তৈরি উদ্যোগ চলমান রয়েছে। বাংলাদেশেও চীনা প্রতিষ্ঠান ‘সিনোভ্যাক’ ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করতে যাচ্ছে। করোনা ও ভ্যাকসিন নিয়ে সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ এবং সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজম্ব প্রতিবেদক মির্জা মাহমুদ আহমেদ।
বাংলা ইনসাইডারঃ বাংলাদেশে চীনের সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন ট্রায়ালের ‘সায়েন্টেফিক মেথড’ সম্পর্কে কিছু বলতেন…
মোদাচ্ছের আলীঃ আইসিডিডিআরবি ভ্যাকসিন ট্রায়ালের একটা ডিটেইল সায়েন্টেফিক মেথড তৈরি করে রেখেছে। আমাদের একটা ইথিক্যাল কমিটি আছে, ওখানে বিজ্ঞানীরা আছেন। তারা আমাকে জানিয়েছেন, যেভাবে ট্রায়াল করলে হিউম্যান ট্রায়াল দেয়া যায় তাঁর প্রতিটি শর্ত তারা পূরণ করেছে। ভ্যাকসিন ট্রায়ালের তিনটি টেকনিক্যাল পয়েন্ট আছে; একটি হচ্ছে এর সেফটি। যে ভ্যাকসিনটা মানব দেহে প্রয়োগ করা হলো এর সাইড ইফেক্ট সম্পর্কে ধারণা করা। অ্যানিমেল ট্রায়াল দেয়ার পর যেসব ডাটা পাওয়া যায়, সেসব ডাটা থেকে জাজমেন্ট করতে হয়। দ্বিতীয়ত, হলো ভ্যাকসিনের এফিকেসি। এফিকেসিতে তিনটি পর্যায় আছে। একটি হলো অ্যান্টিবডি কতোটুকু উৎপাদন করে। টিলিংককো ফাইভ একটি সেল আছে, যা শরীরে বাইরের কোন ম্যাটেরিয়াল; যেমন ভাইরাস বা ক্ষতিকর অন্য কোন পদার্থ ঢুকলে সেগুলোকে ধ্বংস করে। টিলিংকো ফাইভ বা টি সেল কতটুকু উৎপাদন করে এটাও দেখা হয়। আরেকটি হলো মেমরি। মেমরি হচ্ছে ভাইরাসের কার্যকারিতা কতদিন থাকবে। এই জিনিসগুলো অ্যানিমেল মডেলের ওপর যে ট্রায়াল দেয়া হয়েছে, তার উপর যে ডেটা দেয়, সেই ডেটা দেখে আইডিয়া করা। তারপর যখন হিউম্যান ট্রায়ালে যায় তখন আমাদের বিএমআরসিও মাঝে মাঝে পরীক্ষা করবে; তাছাড়া সিনোভ্যাকও ভ্যাকসিন ট্রায়ালের বিম্তারিত জানিয়েছে।
যদি সামান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তাহলে তারা কী পন্থা অবলম্বন করবে। কোথায় নিবে এগুলোর পুরো কর্মপন্থা আগে থেকে ঠিক করে নিতে হয়। সাতটা বা নয়টা হাসপাতাল প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে- যেটা ভ্যাকসিন ট্রায়ালের সময় ব্যবহার করা হবে। ট্রায়াল চলার কিছুদিন পরে রক্ত পরীক্ষা করা হবে। রক্ত পরীক্ষা বলতে মোটামুটি সবকিছুই পরীক্ষা করা হবে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কোথায় কি হবে, এটা তো কেউ বলতে পারবে না। যেহেতু এটি একটি অজানা জিনিস। এই সব বৈজ্ঞানিক যে নিয়ম-কানুন এটা মেনেই সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের ট্রায়াল আইসিডিডিআরবি করবে। নিয়ম অনুযায়ী সিনোভ্যাক কোম্পানীর সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ বা কোনরকম কোন বোঝাপড়া নাই। বোঝাপড়া হলো আইসিডিডি আরবি’র সাথে। আইসিডি ডিআরবি’র প্রধান অধ্যাপক জন ডি ক্যালেমেন হলেন বর্তমানে ভ্যাকসিনে ওয়ার্ল্ড এক্সপার্ট। দক্ষিণ কোরিয়াতে তিনি আট বছর ধরে ভ্যাকসিন ল্যাবরেটরি গড়ে তুলেছেন। এখানে ফেরদৌসী কাদেরী আছে যিনি চীনে কলেরা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করেছেন। ভ্যাকসিন নিয়ে মোটামুটিভাবে ওদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা আছে। যে কোন ভ্যাকসিনই যত সময় পর্যন্ত সাকসেসফুল না হয় তত সময় পর্যন্ত কিছু বলা যায় না। সফলভাবে ট্রায়াল শেষ হলে জানুয়ারী ফ্রেরুয়ারি মাসে ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হতে পারে।
বাংলা ইনসাইডারঃ যাদের ওপর ভ্যাকসিন ট্রায়াল দেয়া হবে, তাঁদের ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়াটা কী হবে……
মোদাচ্ছের আলীঃ ভ্যাকসিন ট্রায়ালের ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে কখনো স্বেচ্ছাকর্মী নেয়া যায় না। তাতে স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের চিকিৎসা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু ক্ষতিপূরণের আওতাভুক্ত থাকে। ভ্যাকসিনের মাধ্যমে কোন ক্ষতি হলে সেটা পূরণ করার ব্যবস্থা ওই চুক্তিতে থাকে। শুধু নগদ টাকা বা ইনসেনটিভ দেয়া হয় না। বিএমআরসি থেকে টাকা দেয়ার বিষয়টি অনুমোদন দেয়া হয় না। ভ্যাকসিন ট্রায়ালের সময় ট্রায়ালকারী স্বেচ্ছাকর্মীর যে কোন শারীরিক সমস্যা দেখভালের নির্দেশনা দেয়া আছে।
বাংলা ইনসাইডারঃ ‘সিনোভ্যাক’ ছাড়া অন্য কোন ভ্যাকসিন কী ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশে আসতে পারে?
মোদাচ্ছের আলীঃ ভ্যাকসিন ট্রায়ালের জন্য অফিসিয়ালি কোন আবেদন এখনো আমাদের কাছে আসেনি। আইসিডিডিআর বি’র মাধ্যমে শুনেছি ‘গ্লোব ফার্মাসিটিক্যাল’ তাদের সাথে একটি এমইইউ সাইন করতে যাচ্ছে। তারাও ভ্যাকসিন হিউম্যান ট্রায়াল দেয়ার জন্য আনবে।
বাংলা ইনসাইডারঃ সিনোভ্যাককে ভ্যাকসিন ট্রায়ালের অনুমতি দেয়ায় বাংলাদেশ কি রকম সুবিধা পাবে?
মোদাচ্ছের আলীঃ ট্রায়ালের অনুমতি দেয়ায় ‘সিনোভ্যাক’ বাংলাদেশকে এক লাখের ওপরে ভ্যাকসিন বিনা মূল্যে দিবে। এ ছাড়াও ভ্যাকসিন ট্রায়ালের সব খরচ ‘সিনোভ্যাক’ বহন করবে। ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রেও আমরা অগ্রাধিকার পাবো। আমার জানা মতে, ইনসেপ্টা ও পপুলারের ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা আছে। তাঁদের সাথেও ভ্যাকসিন উৎপাদনের ব্যাপারে সিনোভ্যাকের চুক্তি হতে পারে। সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিন সফল হলে বাংলাদেশ নানাদিক দিয়ে সুবিধা পাবে।
বাংলা ইনসাইডারঃ দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের ভ্যাকসিন আগামী মাসে হিউম্যান ট্রায়ালে যেতে পারে। এ ভ্যাকসিন নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
মোদাচ্ছের আলীঃ সফল হবে, কী হবে না। এটা ট্রায়ালের আগে বলা যাবে না। এত নাম করা অক্সফোর্ড, সেখানেও দুইবার ট্রায়াল বন্ধ রাখতে হয়েছে। সায়েন্টিফিক দৃষ্টি কোণ থেকে এখনও কোন ভ্যাকসিন সম্পর্কে মন্তব্য করা কঠিন। রাশিয়ায় দেখা গেল ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর সবারই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়েছে। একটা ভ্যাকসিন সফল হয়েছে কিনা, সেটা বুঝতে কমপক্ষে ৬ বছর সময় লাগে। কোভিড ১৯ এর জরুরী অবস্থায় যারা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করছে, তারা কোন স্টেপ বাদ দিচ্ছে না। ট্রায়াল স্টেপের সময় সীমাও কমিয়ে এনেছে।
বাংলা ইনসাইডারঃ যে কোন প্রতিষ্ঠানের সফল ভ্যাকসিন বাংলাদেশে কবে নাগাদ সহজলভ্য হতে পারে……
মোদাচ্ছের আলীঃ যদি সফল ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বাংলাদেশে হয়, তাহলে ট্রায়ালের পর পরই আমরা পাবো। আর বাংলাদেশে ট্রায়াল না হয়ে যদি একটা কমপ্লিট জিনিস আসে; তবে ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা উন্নত বিশ্বের থেকে এক-দুই মাস পিছিয়ে থাকবো এর বেশি নয়। ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে। ভ্যাকসিনগুলো বিভিন্ন জায়গায় পরিবহন করা খুব চ্যালেঞ্জিং হবে। কারণ খুব হাই মাইনাস টেম্পারেচারের ভ্যাকসিন পরিবহন করতে হয়। টেকনিক্যাল কমিটি এ নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। আমি মনে করি ভ্যাকসিনের দৌড়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, এপ্রিল মাসে তীব্র তাপদাহ যাচ্ছে। এটা একটু কষ্টদায়ক বটে। তবে মে মাসেও তো আবহাওয়া এমন থাকবে এবং সে সময় প্রচন্ড গরম থাকবে। কিন্তু তাই বলে তো আর স্কুল, কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এত লম্বা সময় ধরে বন্ধ রাখা যায় না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।