নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ১৬ অক্টোবর, ২০২০
সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণ একটি আলোচিত ইস্যু। সরকার ইতিমধ্যে ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ড করেছে। সাজা বাড়ানোসহ ধর্ষনের মতো সামাজিক অপরাধের আদ্যোপান্ত নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক মির্জা মাহমুদ আহমেদ।
বাংলা ইনসাইডার: সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার মত কী?
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর: ধর্ষণের ঘটনাগুলো বিচার পর্যন্ত আসতে পারছে না। নানা কারণে বিচার প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটছে। তদন্ত হচ্ছে না। গ্রেফতার হচ্ছে না। বিচার প্রক্রিয়া পর্যন্ত যেতে পারছে না। অর্থাৎ আইনের শাসন কাজ করছে না। আমার জানা মনে ভিকটিমদের পক্ষ থেকে শাস্তি বাড়াবার দাবি করা হয়নি। ইসলামিক একটি গ্রুপ থেকে প্রথমে শাস্তি বাড়াবার দাবি উঠেছে। কিন্তু যারা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছেন, ভিকটিম যারা বা যারা মানবাধিকার কর্মী তাদের থেকে কিন্তু শাস্তি বাড়াবার দাবি কখনোই আসে নাই। কারণ সাজা বাড়বে কী কমবে সেটা অনেক পরের কথা।
ধর্ষণের সাজা যে যথাযথ না এটা নিয়ে কোন অভিযোগ নাই। অভিযোগ হচ্ছে বিচার ব্যবস্থা কাজ করছে না। বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না।
ধর্ষণের শাস্তি যখন মৃত্যুদন্ড হয়ে যাবে বিচারিক প্রক্রিয়া আরও লম্বা-চওড়া হয়ে যাবে। অপরাধীর রাইট বেড়ে যাবে;হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স আসবে। একজন আইনজীবী হিসেবে আমাদের প্র্যাকটিকাল অভিজ্ঞতায় দেখেছি; যেখানে অপরাধের সাজা মৃত্যুদন্ড থাকে সেখানে আদালত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে অনেক কিছু চুলচেরা বিশ্লেষন করেন। যেহেতু একজনের জীবন কেড়ে নেবেন সেখানে দন্ডাদেশের হার কমে যায়।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অনান্য দেশে আমাদের অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি। যখন ধর্ষণের সাজাটা কমিয়ে নিয়ে আসা হয় তখন ঝটপট বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা যায় এবং দন্ডাদেশের হারও বেড়ে যায়। ধর্ষণের সাজা হিসেবে মৃত্যুদন্ড দেয়ার পেছনে একটা কারণ থাকতে পারে যে আমরা সতীত্বটাকে খুব বেশি মূল্যায়ন করছি। এটা তো এই মূর্হুতে প্রাসঙ্গিক না।
ধর্ষণের সাজাটা যথাযথ না এটা কোন ভিকটিম দাবি করে নাই। ভিকটিমদের কথা হচ্ছে আমি বিচার প্রক্রিয়ার ভেতরে ঢুকতে পারছি না কেন?
একটা আন্দোলন গড়ে উঠেছে ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদন্ড ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনটাকে দাবিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদন্ড হোক এটা তো দাবি না দাবিটা হচ্ছে বিচারিক প্রক্রিয়া কেন শুরু হচ্ছে না। আইন যে নাই একথা তো বলা হচ্ছে না কথাটা হচ্ছে আইন থাকা সত্ত্বেও আইনের প্রয়োগটা কেন হচ্ছে না; বিচারিক প্রক্রিয়া কেন শুরু হচ্ছে না। এটা শুরু না হওয়ার কারণে প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা যারা অপরাধী তাদের আড়াল করে রাখছে কি না।
বাংলা ইনসাইডার: মৃত্যুদন্ড যেহেতু সমাধান না তাহলে সমাধান কিসে?
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর: ধর্ষণের ঘটনা তদন্তের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ইনভেস্টমেন্ট লাগবে। পুলিশ, সিআইডি যাতে ভালো করে মামলাগুলো তদন্ত করতে পারে সেজন্য ট্রেনিং প্রদান করতে হবে।
একটা বিশেষ সেল খুলতে হবে যাতে ভিকটিমদের সহায়তা দেয়া যায়। নারী পুলিশ, মানবাধিকার কর্মীদের দিয়ে ভিকটিমদের যাতে তাৎক্ষনিক সহায়তা দেয়া যায় সেজন্য পাড়া মহল্লা এলাকায় এলাকায় এনজিও, পুলিশের সমন্ধয়ে লিঁয়াজো সেল খুলতে হবে।
বিচারিক প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত শুরু হয় সেজন্য পুলিশের বিভিন্ন সেল এবং পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি চালু করতে হবে। প্রতিনিয়ত এগুলো মনিটর করতে হবে।
একটা কলমের খোঁচা দিয়ে আমি ডেথ পেনাল্টি দিয়ে দিলাম আর সব শেষ হয়ে গেল এটাতো হয় না। মৃত্যুদন্ডের ঘোষণা দিয়ে বরং ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন দাবিয়ে দেয়া হচ্ছে।
ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদন্ড হওয়ার ফলে ভিকটিমকে তো জানে বাচিঁয়ে রাখবে না । রেপ করে খুন করে ফেলবে। যাতে সাক্ষী দিতে না পারে। কারণ খুন করলেও মৃত্যুদন্ড ধর্ষণ করলেও মৃত্যুদন্ড। এই শাস্তি বাড়ানোটা বুমেরাং হবে।
বুমেরাং হবে বলছি কারণ প্রথমত অপরাধী ভিকটিমকে জানে বাচিঁয়ে রাখবে না । দ্বিতীয়ত ডেথ রেফারেন্স বাধত্যামূলক হওয়ায় বিচারিক প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘমেয়াদী হয়ে যাবে। অপরাধী সেটার বেনিফিট পাবেই। প্রতিটি মামলা হাইকোর্ট পর্যন্ত আসবে। সুতরাং কনভিকশন পাওয়ার দিক থেকে আমরা অনেক দুরে চলে যাবো।
বরং আমাদের যে দাবিটা ছিলো যে; বিচারিক প্রক্রিয়া কেন শুরু হচ্ছে না। যথাযথভাবে কেন বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাচ্ছে না এইসব বিষয় তদারকি করার জন্য সরকারের উচিত খুব হাই পাওয়ার একটা সেল তৈরি করা। ধর্ষণের মামলাগুলো তদন্তের জন্য আমরা যদি সিআইডিকে বিশেষায়িতভাবে প্রস্তুত করি এবং এটা মনিটর করার জন্য প্রত্যোক এলাকায় যে হাই পাওয়ার সেল আছে তাদেরকে যদি কাজে লাগাই তাহলে ধর্ষণের ঘটনা অনেক কমে আসবে।
যারা ধর্ষণ করছে আমি বলবো তাদের পুরুষত্বের অভাব আছে। একটা নারীর মন জয় করতে যে পারেনা, একজন নারীর মন জয় করার যার মুরোদ নেই সেই ধর্ষণ করে। যে একজন নারীর মন জয় করতে পারে তার তো রেপ করার প্রয়োজন হয় না।
ধর্ষণ প্রতিরোধে ক্রিকেট ষ্টার, পপষ্টার, সোশ্যাল আইকনদের এগিয়ে আসতে হবে। আমি দেখতে চাই ধর্ষণ বিরোধি আন্দোলনে তারা এগিয়ে আসছেন এবং তারা বলবেন ‘যারা ধর্ষণ করছে তারা কাপুরুষ’ তাদের পুরুষত্ব নাই। একটা নারীর মন জয়ার মুরোদ তাদের নেই।
ধর্ষণকারীদের অবস্থানটা আমি ছ্যাচড়া চোরের মতো দেখতে চাই, ডাকাতের মতো বা খুনীদের মতো দেখতে চাই না। মৃত্যুদন্ড দিয়ে তাকে এত গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।
যাদের পুরুষত্ব নেই নারীর মন জয় করার মুরোদ নেই তারাই ধর্ষণ করছে।
দেশ বিদেশের বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে; ধর্ষণ করে যৌন তৃপ্তি কখনোই পাওয়া যায় না। কারণে এখানে একজন পারটিসিপেন্ট বেজার। সে খুশি না। সেখানে কোন ভালবাসা নাই। ধর্ষণ করা হয় আধিপত্য বিস্তার করার জন্য। এটা একটা ক্ষমতার খেলা।
বাংলা ইনসাইডার: ধর্ষণের ঘটনাগুলোতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিকটিমকে দায়ী করা হয়। এ বিষয়ে কি বলবেন।
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর: অনেক সময় দেখা যায় পুরুষে পুরুষে দ্বন্দ্ব থাকলে নারীকে হেয় করার জন্য ধর্ষণ করা হয়।
কিন্তু লজ্জাটা যে ভিকটিম তার না; লজ্জাটা হচ্ছে অপরাধীর। লজ্জাটা সামাজিকভাবে আমাদের শিফট করতে হবে। সমাজ সচেতনতা বাড়াতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। এই লজ্জাটা কিভাবে আমরা অপরাধীর ঘাড়ে শিফট করবো সেটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।
যখনই কেউ ধর্ষণের শিকার হয় তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আমরা যখন ইয়াসমিনের মামলা করলাম তখন দেখলাম তাকে পতিতা বানানোর পায়ঁতারা করা হয়েছিলো। বাঁধনের মামলাতেও বাঁধনের পরনে কি ছিলো সেটা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিলো।
ধর্ষণের আইনী সংজ্ঞায় কিন্তু বলা নাই সেখানে কেবলমাত্র ভদ্রমহিলারা আইনী সুরক্ষা পাবেন। কেবলমাত্র ভদ্র, চরিত্রবান মহিলাদের ধর্ষণ করা যাবে না অন্য মহিলাদের ধর্ষণ করা যাবে এরকম কথা কিন্ত আইনে বলা নাই। সেজন্য ধর্ষণ মামলায় নারীর চরিত্র নিয়ে কথা বলাটাই অপ্রাসঙ্গিক। আমরা অতীতে দেখেছি এখনও দেখছি ধর্ষণের শিকার নারীদের চরিত্র নিয়ে কথা ওঠানো হয়।
কিন্তু এখানে অপরাধীর অতীত কর্মকান্ড এবং চরিত্র নিয়ে কথা বলা বেশি প্রয়োজন। আমাদের বিদ্যমান আইনে ভিকটিমকে নিয়ে মন্তব্য করা অপরাধ।
সিনিয়র অ্যাডভোকেট মইনুল হক টকশোতে একজন নারী সাংবাদিককে দুশ্চরিত্র বলেছিলেন। তাকে কিন্তু জেলে যেতে হয়েছিলো।
নারী অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে সরকার বা প্রশাসন কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ভিকটিমকে কেন মামলা করতে হবে?
ক্রিমিনাল অপরাধ যখন হয় এটা তো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ। রাষ্ট্রতো নিজেই পদক্ষেপ নিতে পারে। প্রকাশ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে, ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে, টেলিভিশনে যখন ভিকটিমকে অবমাননা করা হয় তখন সরকার নিজেই স্ব প্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে এটা আইনেই আছে। সেই আইনটা কেন প্রয়োগ হচ্ছে না?
আইন প্রয়োগ না করে আন্দোলনের মুখে সরকার ধর্ষণের সাজা বাড়িয়ে দিলো। সাজা যে কম এটা তো কেউ বলছে না। বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না এটা নিয়ে সবাই কথা বলছে।
যারা ধর্ষণ করছে তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। নিজের মতামতটা করে অন্যের উপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দিচ্ছে। ধর্ষণ একটা ক্ষমতার খেলা। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এখানে যৌন তৃপ্তি কখনো ওভাবে হয় না। এটা একটা ক্ষমতার খেলা।
একাত্তরে আমাদের এখানে গণহত্যা হয়েছে গণধর্ষণ হয়েছে।
এক ধরনের ক্ষমতার খেলা, নির্যাতনের অংশ হিসেবেই এগুলো করা হয়েছে। একটা নেশন চেঞ্জ করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
যারা এখন ধর্ষণ করছে তাদের আমি ধিক্কার জানাই।
কারণ স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা একাত্তরে লড়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে নারী পুরুষ একসাথে হাতে হাত মিলিয়ে আমরা লড়াই করেছিলাম।
একটা খুব দক্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্ব, মুজিবনগরের সফল সরকারের অধীনে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা লড়েছিলাম।
যারা আজকে এ ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে তাদেরকে ধিক্কার দেয়া; তারা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এসব অপকর্ম করে না বেড়ায়। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাইরে।
ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পর বিচার চাইতে পুরো দেশবাসীকে আন্দোলন করতে হবে এটা লজ্জার বিষয়। প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনার জন্য কি আমরা প্রতিবার আন্দোলন করবো? অনেকগুলো আলোচিত ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পর পুর্নাঙ্গ আইন হয়েছে। আইনের প্রয়োগে সমস্যা রয়ে গেছে। এজন্য আমরা সরকারকে একটা ইমপ্লিমেন্টটেশন সেল করতে বলেছিলাম। মনিটরিং জোরদার করতে বলেছিলাম।
বাংলা ইনসাইডার: ধষর্ণের মতো সামাজিক অপরাধ কিভাবে রোধ করা যায়?
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর: ধর্ষণ প্রতিরোধে পাড়া-মহল্লায় কমিটি করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে উদ্যোগ নিতে হবে। অ্যাসিড সন্ত্রাস নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পর অ্যাসিড সন্ত্রাস অনেক কমে গেছে। অ্যাসিডের সাপ্লাই কমে যাওয়ার পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতাও অনেক বেড়েছে।
ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে প্রথমত; আমাদের তরুণ পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে। তারা ধর্ষনকারীদের ধিক্কার জানাবেন। তারা জোর গলায় বলবেন যারা ধর্ষণ করে তাদের পুরুষত্ব নেই।
দ্বিতীয়ত;আমাদের ক্রিকেট ষ্টার, ফুটবল ষ্টার, সিনেমার হিরো, ইয়ুথ লিডারদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যখন অ্যাসিড সন্ত্রাস নিয়ে কাজ করেছিলাম তখন এরকম অনেক পুরুষ তারকারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।
ধর্ষণকারীকে সামাজিকভাবে লজ্জা দেয়া ধিক্কার দেয়া উচিত। এবং তাকে ছ্যাচরা চোরের মতো ট্রিট করা উচিত ডাকাত বা খুনীর মতো নয়। মৃত্যুদন্ড দিয়ে ধর্ষণকারীকে আমরা আরও উচ্চস্তরে নিয়ে গেলাম।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিআইডিএস যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত চিত্র। বিআইডিএসের গবেষণার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। কারণ তারা কতগুলো গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে যেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সুতরাং বিআইডিএস যেটা বলছে সেটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি না।