নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ২০ অক্টোবর, ২০২০
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিবেদন বলেছে এ বছর মাথা পিছু মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ভারতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১ হাজার ৮৮৮ ডলার, আর ভারতের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১ হাজার ৮৭৭ ডলার। এদিকে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকেও ভারতকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক ফুড পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট প্রকাশিত বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৭৫তম। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তান ৮৮তম, ভারত ৯৪তম এবং আফগানিস্তান ৯৯তম অবস্থানে রয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই জাদুকরী পরিবর্তনগুলোর নিয়ামক নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজম্ব প্রতিবেদক মির্জা মাহমুদ আহমেদ।
বাংলা ইনসাইডার: জিডিপি এবং ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই ম্যাজিকের নিয়ামকগুলো কী বলে মনে করেন।
ড. আতিউর রহমান: আমরা অনেকদিন থেকেই আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং মানবিক সূচকে ভালো করছি। খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি মানুষের খাবার কেনার সক্ষমতা বাড়ানো গেছে বলেই ক্ষুধা সূচকে আমরা ১৭ ধাপ এগিয়েছি এবছর । মানুষের হাতে টাকা পয়সা পৌঁছুনো গেছে। এক্ষেত্রে শুধু এ বছর ভালো করেছি ব্যাপারটা তা না। এ বছর একটা সংকটকাল ।তবুও যে আমাদের অর্থনীতি ভালো করছে সেটা নি:সন্দেহে স্বস্তির। সেজন্যেই আমাদের এই অর্জন অনেকের চোখে পড়ছে। নিশ্চয় আমাদের স্বপ্নের দিগন্ত প্রসারিত করতে বাইরের দিকে তাকাবো। তবে সেটিই শেষ কথা নয়। একই সঙ্গে আমরা তাকাবো নিজেদের ভেতরের দিকে। কোথা থেকে পাচ্ছি এই শক্তি তা জেনে রাখা ভালো। সংকটকালে পড়শী ভালো করছে না সেজন্য আমাদের ওতটা উৎফুল্ল হওয়ার দরকার নেই। আমরা চাই তারাও ভালো করুক। তবে আমরা কোথায় ভালো করছি, কেন ভালো করছি সে জায়গাগুলোর দিকে আরও বেশি নজর দেয়া চাই।
আমাদের এই সাফল্য কিন্তু সহসাই আসেনি। এর শুরু অনেকদিন আগে থেকে। বাংলাদেশ সৃষ্টি হবার পর থেকেই। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যেহেতু বাংলাদেশ জন্ম লাভ করেছে সেহেতু আমাদের একটা লড়াকু মানসিকতা তৈরি হয়েছে। লড়াই করবার মন মানসিকতা আমাদের একদম প্রথম থেকেই ছিলো। মুক্তিযোদ্ধাদের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগই কৃষক-সন্তান। এখনও আমাদের অর্থনীতিতে নানাভাবে অবদান রাখছে এখনকার কৃষক সন্তানেরা। অগ্রগতির এই পর্যায়ে আসার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে কৃষি।
কৃষি ভালো করছে বলে অনান্য খাতও ভালো করছে। শিল্প ভালো করছি। আমরা দুই পায়ে হাঁটছি। কৃষি যেমন ভালো করছে শিল্পও তেমন ভালো করছে। কৃষি ভালো করছে বলেই আমরা শিল্পে ভালো করছি। শিল্পের জন্য সস্তা শ্রম এবং চাহিদার জোগান দিচ্ছে কৃষি।
বিশেষ করে আমাদের স্মল এবং মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজগুলো ভালো করছে। ছোট,ক্ষুদ্র এবং মাঝারী উদ্যোক্তারাও ভালো করছে। কারণ কৃষি একদিকে খাদ্য যোগায় অন্যদিকে কর্মসংস্থান দেয়। মানুষের হাতে আয় রোজগার দেয়। সেগুলো আবার শিল্প পণ্যের জন্য চাহিদা তৈরি করে।
গামের্ন্টস এবং লেদারেও বাংলাদেশ ভালো করছে। এ বছর পাটের রপ্তানীতে বাংলাদেশ ভালো করেছে। সুতরাং রপ্তানী খাতে বাংলাদেশ ভালো করছে। এইক্ষেত্রেও আমাদের কৃষক সন্তানদের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
আরেক ভালো করছে আমাদের রেমিট্যান্স খাত। অনেকেই ভেবেছিলেন করোনাকালে রেমিট্যান্স কমে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কমেনি। বরং রেমিট্যান্স বাড়ছে। এর একটা কারণ হচ্ছে; রেমিট্যান্সের ওপর সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছিলো সেটা কাজ করছে।
দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে অনেকেই বিদেশ থেকে একবারে চলে আসছেন। একবারে চলে আসার কারণে তাদের আয় রোজগার সব গুটিয়ে নিয়ে চলে আসছেন। সেজন্যও রেমিট্যান্স বেশ খানিকটা বাড়তে পারে। এ জায়গাটাতে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। যারা ফিরে আসছে তাদেরকে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে হবে। তারা কিন্তু কাজ করে করে দক্ষতা অর্জন করেছে। তাই তাদের বসিয়ে না রেখে কাজে লাগাতে হবে। ছোট খাটো নয়া উদ্যোক্তা করবার জন্য সরকার ইতিমধ্যে কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রবাসী কল্যান ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, পিকেএসএফ এর মাধ্যমে সরকার কিছু কর্মসূচি নিয়েছে।
প্রবাসীদের জন্য সরকার দুই হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। যারা প্রবাস থেকে ফিরে আসছে তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।
আমার প্রস্তাব থাকবে এয়ারপোর্টেই যেন তাদের ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ব্যবস্থা থাকে। যেসব প্রবাসীরা একেবারে দেশে ফিরে আসছেন তারা যেন রেজিস্ট্রেশন বুথে রেজিস্ট্রেশন করে ডেটাবেজে তালিকাভুক্ত হতে পারেন। প্রাথমিকভাবে যদি একটা ডেটাবেজ তৈরি করা যায় তারপরে তাদের রিচ করা সহজ হবে। আমার মনে হয় সেটা খুব ভালো কাজ হতো। এ ব্যাপারে সরকারকে ভাবতে হবে।
তৃতীয়ত; এ বছর অর্থনীতি ভালো করার আরেকটি কারণ হলো সরকার করোনার মধ্যেও সময়মতো প্রণোদনা প্যাকেজগুলো ঘোষণা করেছিলো। এপ্রিল মাসের পাঁচ তারিখে সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলো।
যখন অনান্য দেশ প্রণোদনার কথা ভাবতেও পারেনি তখন আমরা কাজ শুরু করেছিলাম। সময়মতো প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার ফলে আমাদের উদ্যোক্তাদের মনে এক ধরনের সাহস তৈরি হয়েছে। বিজনেস এনভারমেন্টটা ইতিবাচক করা গেছে। আস্হার পরিবেশ ফিরে এসেছে।
আরেকটি কাজ যেটা হয়েছে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলোকে বন্ধ হতে দেয়া হয়নি। গার্মেন্টস ফাক্টরীগুলো চালু রাখায় শ্রমিকদের বেতনসহ সরকার নানা ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছেন। ছোট এবং মাঝারী শিল্প উদ্যোক্তা এবং কৃষির জন্যও প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও সেগুলো বাস্তবায়নের হার অনেক কম।
যারা বড় উদ্যোক্তা তারা ব্যাংক থেকে তাড়াতাড়ি টাকা নিয়ে নিয়েছেন। যারা ছোট ও মাঝারী উদ্যোক্তা তারা ধীরে ধীরে টাকা নিচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকগুলোকে প্রতিনিয়ত চাপ দিয়ে যাচ্ছে। সরকারও প্রশাসনের মাধ্যমে মনিটরিং করছে। এই মনিটরিংটা আরও জোরদার করা উচিত। যাতে সবাই টাকাটা পায়। আমার ধারণা ডিসেম্বর নাগাদ সবাই টাকাটা পাবে। তখন অর্থনীতি আরও ভালো ভাবে এগোবে।
বাংলা ইনসাইডার: ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বে আপাতত কোন সুখবর নেই। করোনাকাল দীর্ঘ হলে অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে আমাদের করণীয় কী হবে?
ড.আতিউর রহমান: একটু ঝুঁকি নিয়েই আমরা কিন্তু এগোচ্ছি। করোনার যে বিপদ এটা মাথায় রেখেই আমরা এগুচ্ছি। আগামী দিনগুলোতে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ আসবে বলে আশস্কা করা হচ্ছে। করোনার সেকেন্ড ওয়েভ আসুক বা না আসুক আমাদের সাবধান থাকা উচিত। প্রতিটি জায়গায় যাতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় সেটার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরকারি প্রশাসনে নিয়ম করা উচিত যদি কেউ মাস্ক ব্যবহার না করে তাহলে তাকে সেবা প্রদান করা হবে না। বাসসহ সকল গণপরিবহনে মাস্ক ব্যবহার বাধত্যামূলক করতে হবে। বাজার বা মার্কেটে প্রবেশের আগে নির্দিস্ট জায়গায় হাত ধোঁয়া বা স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা থাকা উচিত। মাস্ক ছাড়া ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রি করবেন না দোকানী এমন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। ইদানিং স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে একটু ঢিলে ঢালা ভাব দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সামনের শীতকালে যেহেতু করোনার প্রকোপ বাড়ার অশস্কা করা হচ্ছে আমার মনে হয় স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে আমাদের আরও গুরুত্বারোপ করা উচিত।
স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ডিসিরা পরিকল্পনা করে চলেছেন।
প্রশাসনের বাইরে বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমও স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনগণকে উদ্বুদ্ব করতে পারে। যতদিন পর্যন্ত ভ্যাকসিন আমাদের কাছে সহজলভ্য না হচ্ছে ততদিন আমরা যেন করোনা নিয়ে হেলাফেলা না করি।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা যদি দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারি তবে অর্থনৈতিক এবং ব্যবসায়িক উদ্যম স্বাভাবিকভাবেই বজায় থাকবে।
বাংলা ইনসাইডার: অর্থনীতির চালিকা শক্তি শ্রমজীবী মানুষদের ইউমিনিটি বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।
ড.আতিউর রহমান: সবক্ষেত্রে আমরা শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকি এটা ঠিক না। শ্রমজীবী মানুষের ইউমিনিটি বাড়াতে শিল্প উদ্যোক্তা ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে। একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে কয়েক হাজার কর্মী আছে। এই কর্মীরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় সেজন্য তাদের মালিকরা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। মালিকরা কোন সবজি ও খাদ্য পণ্য সরবরাহকারি কোম্পানীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে শ্রমিকদের ভতুর্কী মূল্যে পুষ্টিকর খাবার অথবা খাবারের উপকরন সরবরাহ করতে পারেন। শ্রমজীবী মানুষের ইউমিনিটি বাড়াতে তাদের পুষ্টিকর খাবার দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
শ্রমিকদের বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার পৌছে দেয়া যেতে পারে কিংবা ফ্যাক্টরীতে বুথ করে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা যেতে পারে।
মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আমরা খুব দ্রুত ও সহজে টাকা পয়সার লেনদেন করতে পারছি। ই-কর্মাস ডেভলপ করেছে। বাংলাদেশ ডিজিটালি অনেক এগিয়ে গেছে। এইসব কারণেও বাংলাদেশ ভালো করছে। তবে এসব নিয়ে আত্নতুষ্টির সুযোগ নেই। আমাদের পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে সবদিকের সম্বনয় নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছি বন্যার কারণে হয়তো আমন ধানে খানিকটা ঘাটতি পড়বে। এর প্রভাবেই চালের দাম বাড়ছে। ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার এবং ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আগেই কিছু চাল আমদানী করে ফেলা উচিত ছিলো। এখনও চাল আমদানীর সুযোগ আছে। যাতে করে বাজারটা স্থিতিশীল রাখা যায়। এরকম সম্বনিত উদ্যোগ আমাদের নিতে হবে।
বাংলাদেশ ভালো করছে তার বড় কারণ হলো বাংলাদেশের ভেতরে একটা লড়াকু শক্তি আছে। সেই শক্তিটা কাজে লাগাতে হবে।
আমাদের সামাজিক স্থিতিশীলতা আছে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে । সুতরাং অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে আমাদের কোন বাঁধা নেই। এখন দরকার সবাই মিলে কাজ করা। সামাজিক ও রাজনৈতিক শান্তি কিছুতেই নষ্ট হতে দেয়া যাবে না। তাহলেই অর্থনীতি পথ হারাবে না।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, এপ্রিল মাসে তীব্র তাপদাহ যাচ্ছে। এটা একটু কষ্টদায়ক বটে। তবে মে মাসেও তো আবহাওয়া এমন থাকবে এবং সে সময় প্রচন্ড গরম থাকবে। কিন্তু তাই বলে তো আর স্কুল, কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এত লম্বা সময় ধরে বন্ধ রাখা যায় না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যারা দলের নির্দেশনা মানতে পারেননি, তারা তো না পারার দলে। দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপির পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা ছিল দলের বৃহত্তর স্বার্থে। সেজন্য সেটা পালন করা সবাই নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু যখন কেউ কেউ সেই নির্দেশ মান্য করেননি সেটার দায়-দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। দলের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে আমার বড় প্রশ্ন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এর মধ্য দিয়ে একটি স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজনীতির মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর উত্থান হয়েছে এবং তিনি যে দল ও ত্যাগী নেতাদের ভালোবাসেন, তাদের প্রতি যে তার মমত্ববোধ সেটি প্রকাশ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাজনীতিতে নতুন আলোর সঞ্চার দেখছেন এবং তারা নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা আশ্বস্ত হয়েছেন যে, রাজনীতি রাজনীতিবিদদের কাছেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেছেন, বুয়েটে শুধু ছাত্রলীগ ছাত্ররাজনীতি চায় না। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোও তো ছাত্ররাজনীতি চায়। তাহলে কেন শুধু এখন সামনে ছাত্রলীগের নাম সামনে আসছে। বুয়েটে যারা ছাত্ররাজনীতি চাচ্ছে তাদের প্রথম পরিচয় তারা বুয়েটের ছাত্র। আর বুয়েট কর্তৃপক্ষ যেটা করেছে যে, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করেছে, এটা বুয়েট প্রশাসন করতে পারে না। তাদের এখতিয়ার নেই। দেশের প্রচলিত মৌলিক আইন যেখানে আমাকে অধিকার দিয়েছে বুয়েট সেটা নিষিদ্ধ করতে পারে না। আইনে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন এবং নিয়মের মধ্যেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হবে। সেখানে বুয়েট তো বাংলাদেশের বাইরের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। দেশের নিয়মেই তো বুয়েট চলার কথা। কিন্তু সেখানে বুয়েট প্রশাসন কীভাবে আমার মৌলিক অধিকার রহিত করে? আমার ক্যাম্পাসে আমি মুক্ত চিন্তায় ঘুরবো, আমি কথা বলবো, আমি স্লোগান দিবো, আমি বক্তৃতা দিবো, আমি পড়াশুনা করবো। এটা থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ কীভাবে আমাকে বঞ্চিত করতে পারে।