বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, প্রশ্ন ফাঁস স্কুলের হোক, কলেজের হোক, নিয়ো পরীক্ষার হোক, এটা তো নিশ্চয়ই কাম্য নয়। কারণ, এতে অনেকের ভোগান্তি হয়। কারণ, পরীক্ষাগুলো বাতিল হয়ে যায়, আবার পরীক্ষা দিতে হয়। যে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে সেটা হচ্ছে ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা। আমি যখন ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম তখন ব্যাংকের পরীক্ষা কয়েকবারই আমার হাত দিয়ে হয়েছে। কখনো কিন্তু তেমন ঘটনা ঘটেনি। কারণ, আমরা খুবই কেয়ারফুল (সতর্ক) ছিলাম। সুতরাং, যারা এ ধরণের পাবলিক পরীক্ষা, যে ধরণেরই পরীক্ষা হোক না কেন, ব্যাংকের পরীক্ষা তো অন্য পাবলিক পরীক্ষার চাইতে একটু ভিন্ন। কারণ, এটা কন্ট্রোল করা একটু সহজ। একটি পাবলিক পরীক্ষা, এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা অনেক হাত ঘুরে যায়, যেকোনো যায়গা থেকে এটা লিক হতে পারে। কিন্তু একটা ইনটেক পরীক্ষা, একটা চাকরীর পরীক্ষা তেমন না।
সম্প্রতি ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস সহ বিভিন্ন দিক নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।
অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ২০০৪-৫ সালের দিকে ইস্ট-ওয়েস্টে থাকতে আমি কয়েকবার পরীক্ষা নিয়েছি। যারা প্রশ্ন করেন, প্রশ্ন ছাপেন, প্রশ্ন প্যাকেজিং করেন ওদেরকে একটু বাড়তি সতর্ক হতে হবে। আর আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এবং টেকনোলোজি তো একটি ভালো ইউনিভার্সিটি। যারা এই দায়িত্বটা পালন করেছেন তারা সম্ভবত একটু বেখেয়ালি ছিলেন, এটা উচিৎ হয়নি। এটা ওদের বেখেয়ালির কারণে প্রচুর ছেলেমেয়ের বাড়তি ভোগান্তি হয়, যেটি কখনো কাম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলো চাইলে নিজেরা ব্যবস্থা করতে পারে, সেটার মধ্যেও ঝুঁকি আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ পরীক্ষা নেয়, বিজনেস ফ্যাকাল্টি পরীক্ষা নেয়। সেই সময় কিন্তু এরকম পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে, এটা আমার জানা নেই। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশন আছে, বোর্ডের পরীক্ষার জন্য বোর্ডগুলো আছে, চাকরী প্রার্থীদের পরীক্ষা বিভিন্ন দেশে এভাবে নেয়া হয়। আমাদের দেশের ব্যাংকগুলোর ব্রাঞ্চ আছে সারাদেশে, কিন্তু আমেরিকাতে ব্রাঞ্চ ব্যাংকিংটা খুব বেশি নাই। একটা স্টেটে যে ব্যাংক আছে তা ওই স্টেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সারা আমেরিকাব্যপী কোন ব্যাংক নাই। আমাদের দেশে যেহেতু ব্রাঞ্চ ব্যাংকিং ব্যবস্থা আছে, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাংকের ব্রাঞ্চ আছে, সেখানেও লোক নিয়োগ দিতে হবে। সেই পরীক্ষা নেওয়ার মত সক্ষমতা আছে বলে আমার মনে হয়না। যেটা করেছিল তারা ঠিকই করেছিল, কিন্তু গাফলতিটা হয়েছিল ইউনিভার্সিটির।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল পেছানোর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। আমি এর কোনো সম্ভাবনা দেখি না। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর যে সন্দেহের প্রাচীর তৈরি হয়েছে তাতে সে সম্ভাবনা নেই। তবে এক দফা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল শেষ চেষ্টা হিসেবে তফসিল পেছানোর জন্য তৎপরতা চালাতে পারে। কিন্তু তফসিল পেছানোর নামে যদি আবার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে কেউ প্রশ্ন বিদ্ধ করে ফেলে তাহলে আরেকটা অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। কাজেই নির্বাচন কমিশন এবং সরকারকে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। নির্বাচনী রোডম্যাপ বিপন্ন হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। তবে তফসিল পেছানোর সম্ভাবনা দেখি না।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন যদি জনমত উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচনের দিকে যায় তাহলে চলমান যে সংঘাতময় পরিবেশ চলছে সেটাকে আরও উস্কে দেওয়া হবে। সেটা সাধারণ জনগণের জন্যও ভালো হবে না, সরকারের জন্যও ভালো হবে না। দেশের সাধারণ মানুষ এখন একটা সংকটের মধ্যে আছে। দ্রব্যমূল বৃদ্ধি সহ দুর্নীতি, লুটপাট, অব্যবস্থাপনা আগামীতে অর্থনৈতিক সংকটকে আরও তীব্রতর করতে পারে এমন আভাস অর্থনীতিবিদরা দিচ্ছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে জনমত উপক্ষো করে এবং নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকাণ্ড যেমন গ্রহণযোগ্য হবে তেমনি আমাদের দেশের সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, যেভাবে আমেরিকা চাচ্ছিল যে বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে ভারতও যেন আমেরিকার সাথে একই সুরে কথা বলে কিন্তু সেটা যে হবে না তা পরিষ্কার হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত যে আমেরিকার কথা শুনবে না সেটি তারা স্পষ্ট করেছে। এখন আমেরিকা কি করবে সেটা তারা ভালো জানে। তবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমেরিকা সারা বিশ্বের মধ্যে প্রচন্ড সমালোচনার মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েল ইস্যুতে তারা প্রচন্ড প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। আমেরিকা তার নিজ দেশেই প্রতিরোধের মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, অনেক দিন ধরে আমাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল। রাস্তা-ঘাট বন্ধ না করে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। সাধারণত নির্বাচনের আগ দিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ে। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো কি করবে না করবে, নির্বাচনী ইশতেহার কেমন হবে ইত্যাদি। কিন্তু রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দিয়ে হরতাল-অবরোধ করা কোন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর উচিত না।