নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২৭ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
আজকে আমার একজন সহকর্মী তার স্মার্টফোনে আমাকে একটা ভিডিও দেখিয়েছে। আমি আমার জীবনে এর চাইতে হৃদয়বিদারক কোনও ভিডিও দেখেছি বলে মনে করতে পারি না। ভিডিওটি একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর। ছেলেটি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে বলছে, সে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে, প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নের উত্তরও সে পেয়ে গেছে। কিন্তু সেই উত্তরে বেশ কয়েকটা ভুল ছিল। ক্ষুব্ধ ছাত্রটি বলছে, কেন ভুল উত্তর সরবরাহ করে তাদের এভাবে উত্ত্যক্ত করা হয়?
যে কোনও হিসেবে এটাকে খুবই মজার একটা কৌতুক হিসেবে বিবেচনা করার কথা ছিল কিন্তু আমি এই ভিডিওটি দেখে বিন্দুমাত্র কৌতুক অনুভব করিনি। আমি এক ধরনের আতঙ্ক অনুভব করেছি। আমাদের দেশে আমরা নতুন একটি তরুণ প্রজন্ম তৈরি করেছি, যারা সাংবাদিকদের বলতে সঙ্কোচবোধ করে না যে, তারা ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে। সেই প্রশ্নের উত্তর সরবরাহকারীদের ওপর তারা ক্ষুব্ধ হয়, যদি তারা উত্তরে ভুল করে। আমাদের এই নতুন প্রজন্ম ন্যায় এবং অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য করতে পারে না।
এ রকমটি আগে ছিল না। এ রকমটি হয়ে যাওয়ার জন্য আমরা দায়ী। আমরা হাতে ধরে এ রকম একটি প্রজন্ম তৈরি করেছি, যদি এই দেশে প্রশ্নফাঁস না হতো তাহলে আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্ম এ রকম হয়ে যেত না।
কাজেই আমি খুবই অসহায় বোধ করি যখন দেখি এই দেশের গুরুত্বপূর্ণ মানুষেরা বিষয়টিকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করছেন। তারা বলেন প্রশ্নফাঁস নতুন কিছু নয়, আগেও প্রশ্নফাঁস হতো। প্রশ্নফাঁস নিয়ে কথা বলা হচ্ছে সরকারের একটি দোষ খুঁজে বের করার চেষ্টা মাত্র। আমি এটাকে মোটেও ছোট একটা বিষয় হিসেবে দেখতে পারি না। আমার কাছে এটাকে রিক্টর স্কেলে আট মাত্রার ভূমিকম্পের মতো মনে হয়, মহামারী প্লেগের মতো মনে হয়। প্রশ্নফাঁস হওয়ার কারণে আমাদের পুরো শিক্ষাব্যবস্থাটাকে অর্থহীন করে দেওয়া হয়েছে। একটি ছেলে বা মেয়ের জিপিএ ফাইভ কথাটির অর্থ কী আমরা জানি না। আসলেই সে ভালো একজন ছাত্র বা ছাত্রী হতে পারে কিংবা সে ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা দেওয়া একজন অসৎ অভিভাবকের অসৎ সন্তান, অসৎ শিক্ষকের অসৎ ছাত্র হতে পারে। তুলনামূলকভাবে খারাপ গ্রেডের একজন ছাত্র বা ছাত্রী হয়ত আসলে একজন সোনার টুকরো ছেলে বা মেয়ে। তার চারপাশে ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্ন দেখেও সে প্রলোভনে পা দেয়নি, সৎ থেকেছে, বাবা-মায়ের বকুনি খেয়েছে বন্ধুদের হাসির পাত্র হয়েছে। কে এই প্রশ্নের জবাব দেবে?
শুধু কী তাই? পরীক্ষার নম্বর দিয়ে ছেলেমেয়েদের কলেজ ঠিক করে দেওয়া হয়। ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্ন দেখে পরীক্ষা দেওয়া ছেলেমেয়েরা ভালো ভালো কলেজের সিটগুলো দখল করে নেবে। আমাদের সোনার টুকরো ছেলেমেয়েরা হতাশ হয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ মানুষেরা তাদের দীর্ঘশ্বাস শুনতে পান না, আমি শুনতে পাই।
আগে প্রশ্নফাঁস হতো কী-না আমরা জানি না, যদি হতো অবশ্যই সেটি খুবই খারাপ একটা ব্যাপার হতো। কিন্তু আগে প্রশ্নফাঁস হতো বলে এখন প্রশ্নফাঁস হওয়াটা মেনে নিতে হবে এটা নিশ্চয়ই একটা যুক্তি হতে পারে না। আগে এদেশে রাজাকাররা গাড়িতে পতাকা উড়িয়ে ঘুরে বেড়াত বলে এখনও তারা গাড়িতে পতাকা উড়িয়ে ঘুরবে সেই কথাটি তো আমরা কখনও বলি না। খুঁটিনাটি না জেনেও শুধু কমনসেন্স দিয়ে অনেক কিছু বোঝা যায়। আগে প্রশ্নফাঁস করতে হলে কাউকে না কাউকে পুরো প্রশ্নটির একটি কপি জোগাড় করতে হতো, এখন তার দরকার হয় না। একটি প্রশ্নকে মাত্র এক ঝলক দেখার সুযোগ পেতে হয়, চোখের পলকে প্রায় অদৃশ্য একটা ক্যামেরা দিয়ে তার ছবি তুলে নিয়ে আসা যায়। আমি নিজের কৌতূহলে পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপানো এবং বিতরণ করার পুরো প্রক্রিয়াটি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছি। আমি জানি অনেক মানুষ এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, তারা অকারণে এবং অপ্রয়োজনে এই প্রশ্নটিতে হাত বুলানোর সুযোগ পান। কাজেই প্রশ্নফাঁস হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ধরাছোঁয়ার বাইরের একটি বিষয় নয়। পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত মাত্র একজন অসৎ মানুষের প্রয়োজন যে এক ঝলক প্রশ্ন দেখার সুযোগ পেলে সম্ভবত কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলতে পারে।
এখানে একটা কৌতূহলের বিষয় বলা যায়। আমি জানতে পেরেছি বেশ কিছুদিন আগে একটা সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, যেখানে বিজি প্রেসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায় সম্পত্তির খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছিল। বিজি প্রেস হচ্ছে সেই প্রেস যেখানে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ইত্যাদি গোপন কাগজপত্র ছাপানো হয়। এই প্রেসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায় সম্পত্তি বা ব্যাংক ব্যালেন্সের খোঁজখবর নেওয়ার উদ্দেশ্য খুবই সহজ, কেউ হঠাৎ করে তাড়াতাড়ি বড় লোক হয়ে যাচ্ছে কী-না, হঠাৎ করে কেউ আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে কী-না সেটি খুঁজে বের করা। যদি এ রকম কিছু দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে ‘ডালমে কুছ কালা হায়।’
তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে এই অত্যন্ত সময়োপযোগী প্রয়োজনীয় তদন্তটি হঠাৎ করে ‘ওপরের’ আদেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাজেই বিজি প্রেসের কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী অসৎ উপায়ে বড়লোক হতে শুরু করেছে কী-না সেটি জানার আর কোনও উপায় থাকল না। আমি যেটা জানতে পেরেছি তার মাঝে কতটুকু সত্যতা আছে জানা দরকার। কারণ এটি যদি সত্যি হয় তাহলে আমাদের ভয় পাওয়ার অনেক কারণ আছে। ‘ওপরের’ আদেশটি কত ওপর থেকে এসেছে আমি সেটাও জানতে খুবই আগ্রহী।
একটা সময় ছিল যখন কোনোভাবেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বীকার করতে রাজি হয়নি যে, পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস হয়েছে। আমি তখন অসহায়বোধ করেছি, কারণ আমি জানি একটি সমস্যার সমাধান করতে হলে প্রথমে সমস্যাটি বুঝতে হয়। যদিও সমস্যা আছে সেটি মেনেই নেওয়া না হয় তাহলে সমস্যার সমাধান করা হবে কেমন করে? শেষপর্যন্ত সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, এখন সবাই জানে পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস হয়। সেটি নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় এবং সবচেয়ে বড় কথা হাইকোর্ট নিজে থেকে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস বন্ধ করার ব্যাপারে সুপারিশ দেওয়ার জন্য দুটি কমিটি করে দিয়েছে। সেই কমিটি দুটির একটির দায়িত্বে রয়েছেন প্রফেসর মোহাম্মদ কায়কোবাদ। ২০১৪ সালে প্রশ্নফাঁসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য আমি যখন শহীদ মিনারে বৃষ্টির মাঝে বসেছিলাম, তখন আমার সঙ্গে সারাদেশের একজন মাত্র শিক্ষক ছিলেন, তিনি প্রফেসর কায়কোবাদ। কাজেই আমি নিশ্চিতভাবে জানি প্রশ্নফাঁসের এই অভিশাপ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য সবচেয়ে আন্তরিক মানুষটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। আমি অনুমান করতে পারি এই কমিটি নিশ্চয়ই কোনও কিছু ধামাচাপা দেবে না, সমস্যাটির গভীরে প্রবেশ করবে এবং নিশ্চিতভাবে একটি সমাধান খুঁজে বের করবে।
প্রশ্নফাঁসের ব্যাপারটি যখন আর লুকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি তখন সেটি বন্ধ করার এক ধরনের আয়োজন শুরু হয়েছে। তবে আয়োজনটি প্রশ্নফাঁস বন্ধ করার জন্য নয়, ফাঁস হয়ে যাওয়া ‘প্রশ্ন বিতরণ’ বন্ধ করার জন্য। আমরা যদি ধরে নিই প্রশ্নফাঁস আমরা বন্ধ করতে পারবো না, সেটি হবেই হবে, আমরা শুধু এর বিতরণটি বন্ধ করবো, তাহলে তো বুঝতে হবে আমরা প্রশ্নফাঁস বন্ধের যুদ্ধে আগেই পরাজয় স্বীকার করে বসে আছি। আমি বিশ্বাস করতে রাজি নই যে, প্রশ্নফাঁস বন্ধ করা সম্ভব নয়। অবশ্যই সম্ভব, শুধু সেটি আন্তরিকভাবে চাইতে হবে। যদি প্রশ্নফাঁস বন্ধ করা যায় তাহলে তার বিতরণ বন্ধ করার জন্য আলাদা করে নতুন কোনও উদ্যোগ নিতে হবে না। যে প্রশ্নফাঁস হয়নি সেটি বিতরণ করবে কেমন করে?
যারা প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি দীর্ঘদিন থেকে দেখে আসছে তারা মোটামুটিভাবে তার একটা প্যাটার্ন লক্ষ্য করে আসছে। মূল প্রশ্নটি অনেক আগেই ফাঁস হয়, সেটি ধাপে ধাপে বিতরণ করা হয়। যখন পরীক্ষা প্রায় শুরু হতে যাচ্ছে তখন বিনামূল্যে ছেড়ে দেওয়া হয়। একেবারে শেষ ধাপে যখন এটা খুচরা হিসেবে বিতরণ করা হয় তখন তাদের কাউকে কাউকে ধরা হয়েছে কিন্তু তারা নিহায়তই চুনোপুটি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছিল প্রশ্নফাঁসকারী কাউকে গ্রেফতার করতে পারলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। অনেককেই ধরা হয়েছে (এর মাঝে বাসবোঝাই এসএসসি পরীক্ষার্থীরাও আছে) তাদের কতজনকে পাঁচ লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে কে জানে।
প্রশ্নফাঁসকারী চুনোপুটিকে গ্রেফতার করেছেন এ রকম একজন পুলিশ অফিসারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে নতুন একটি তথ্য দিয়েছেন। সেটি হচ্ছে প্রশ্নফাঁসের এই রমরমা ব্যবসার মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে বিকাশ। বিকাশে টাকা পাঠানোর পুরো ব্যাপারটি যেহেতু পানির মতো সোজা, তাই এটি অপরাধ চক্রের সবচেয়ে প্রিয় পদ্ধতি। আমি ধরেই নিয়েছিলাম এ রকম একটি পদ্ধতিতে টাকা পাঠানো হলে কে পাঠাচ্ছে এবং কার কাছে পাঠাচ্ছে তার একটা হদিস থাকবে। কিন্তু আমি সবিস্ময়ে এবং মহাআতঙ্কে আবিষ্কার করেছি সেটি সত্যি নয়। কোনও রকম নিয়মনীতি না মেনে বিকাশে একটা অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলা সম্ভব এবং সেই এ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেন সম্ভব। যে বড় পুলিশ অফিসারটির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে তিনি বিশাল দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেছেন, এই বিকাশ প্রযুক্তির কারণে কিডন্যাপিং অনেক বেড়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি আমার কাছে জানতে চেয়েছেন যে প্রযুক্তি অপরাধীদের টাকা লেনদেনে সাহায্য করে, আমাদের দেশ কী সেই প্রযুক্তির জন্য প্রস্তুত হয়েছে?
আমি কখনও বিকাশ ব্যবহার করে টাকা পাঠাইনি, তাই এই প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে আমি কিছু জানি না, কিন্তু সহজ প্রশ্নটি তো করতেই পারি। যদি এই প্রক্রিয়ায় অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে টাকা লেনদেন করতে পারে তাহলে তার দায়দায়িত্ব কি বিকাশকে নিতে হবে না।
আবার প্রশ্নফাঁসের মূল ব্যাপারটায় ফিরে আসি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে একটি প্রশ্ন পুরোপুরি এবং অন্যগুলো আংশিক ফাঁস হয়েছে। যেগুলো ফাঁস হয়েছে সেগুলোর পরীক্ষা কী আবার নেওয়া হবে? শিক্ষা মন্ত্রণালয় কী বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে যদি নতুন করে নেওয়া হয় তার প্রশ্ন আর ফাঁস হবে না? যদি হয় তখন কী হবে? আমি আমার ভাঙা রেকর্ড বাজাতে বাজাতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। আর কতদিন?
বাংলা ইনসাইডার/ডিকে
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।