(সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের জাতীয় সিকিউরিটি কাউন্সিলের সাবেক উপদেষ্টা এবং নয়া দিল্লির কৌশলগত অধ্যয়ন নীতি গবেষণা কেন্দ্রের অ্যামিরেটস অধ্যাপক ব্রাহমা চেল্লানি যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত এই ভিসা নীতি বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘অসম আচরণ’ বিষয়ক একটি নিবন্ধ লিখেছেন। নিবন্ধটি জাপানের টোকিও থেকে প্রকাশিত নিক্কি এশিয়া নামক একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। পাঠকদের জন্য নিবন্ধটির অনুবাদ তুলে ধরা হলো।)
গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বাংলাদেশকে তার গণতন্ত্রের প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। অবাধ নির্বাচনে যারা বাধা প্রদান করবে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুমকি ঝুলিয়ে দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। কিন্তু পাশের দেশ পাকিস্তানে গণগ্রেপ্তার, গুম ও নির্যাতন রাজনৈতিক অস্ত্রে পরিণত হলেও সে দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতন্ত্র ও সামরিক আইন পরিস্থিতির বিষয়ে নীরব মার্কিন প্রশাসন। এটিকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
এর সংক্ষিপ্ত উত্তর হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রচার-প্রচারণা, সময়ে সময়ে গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা হয়ে ওঠা শুধুমাত্র বাছাই করা কিছু কিছু দেশের জন্য। এই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ভূ-রাজনৈতিক কৌশল ও তাদের নিজ দেশের স্বার্থকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়ে থাকে এবং গণতন্ত্রের প্রচারের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া মার্কিন নীতিনির্ধারকদের পছন্দের হাতিয়ারে পরিণত করেছে।
এছাড়াও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসন আরও দুটি বিষয়কে কাজে লাগাতে চাইছে। প্রথমত, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদদের অনেকেরই ঘনিষ্ঠ আত্মীয় রয়েছেন যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেনে বসবাস করেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলের আমেরিকান গ্রিন কার্ড রয়েছে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের রপ্তানির সিংহভাগই যায় পশ্চিমা দেশগুলোতে, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বক্তব্যের সাথে অবশ্য খুব কম লোকই দ্বিমত পোষণ করতে পারবেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে। তবে সেই লক্ষ্যে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি কতটা কার্যকর হবে- সেটি নিয়ে অবশ্যই অনেকেরই দ্বিমত রয়েছে। বরং এটি উল্টো কাজ করতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন করতে চায়। গত এপ্রিলে সংসদে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এমন একটি সরকার আনতে চায়- যার কোন গণতান্ত্রিক অস্তিত্ব নেই। এটি হবে একটি অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ।
২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনা একটি ধর্ম নিরপেক্ষ সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তিনি দেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দিয়েছেন। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে থাকা পাকিস্তানের সম্পূর্ণ বিপরীত প্রান্তে বাংলাদেশ, তারপরও ২০২১ সালে এবং চলতি বছরের শুরুতে আয়োজিত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পাকিস্তানকে উভয়বারই আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা এতে যোগ দেয়নি।
২০২১ সালে বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন এবং এর ছয়জন বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মাদক কারবারির সাথে জড়িত থাকার কারণে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সমস্ত সম্পদ জব্দ করে। কিন্তু পাকিস্তানের প্রতি তাদের ভালোবাসা অবিরাম।
ডিসেম্বরে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, কর্তৃপক্ষকে পুলিশ এবং দেশের প্রধান বিরোধীদল, যারা কট্টরপন্থী ইসলামপন্থী দলগুলোর সাথে নিজেদের জোট করেছে, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) এর সদস্যদের মধ্যে একটি মারাত্মক সংঘর্ষের তদন্ত করার দাবি জানান। অতি সম্প্রতি, ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনকে তার বাংলাদেশে মিডিয়া এবং সুশীল সমাজের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং ভয় দেখানোর বিষয়ে উদ্বেগের কথাও উল্লেখ করেছেন।
ব্লিঙ্কেনের নতুন ভিসা নীতি স্পষ্টতই হাসিনা সরকারের সদস্যদের লক্ষ্য করে দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে আইন প্রয়োগকারী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়েছে। যদিও এই নতুন ভিসা নীতিতে বিরোধীদলের সদস্যদেরও উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু এই বিদেশী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সাধারণত প্রতীকী উদ্দেশ্য ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু এটি কূটনীতিকে বাধাগ্রস্ত এবং কখনও এটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতিও বয়ে আনতে পারে।
এই মাসের শুরুর দিকে, সিঙ্গাপুরে চীনা জেনারেল লি শাংফুর সাথে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের বৈঠক করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বেইজিং। এর কারণ হিসেবে বেইজিং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের পাঁচ বছর আগে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় লি’র উপস্থিতির উল্লেখ করেছে।
এটিও বলা যেতে পারে যে, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চীফ মিন অং হ্লাইং সহ তিনজন সিনিয়র কমান্ডারের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাই দেশটিতে বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে মূল অবদান রেখেছিল। কারণ দেশটির জেনারেলরা হয়ত ভেবেছিল এতে ব্যক্তিগতভাবে তাদের কাছে হারানোর কিছু নেই। পরবর্তীতে দেয়া আরও কিছু নিষেধাজ্ঞা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকেই নিয়ে গেছে এবং মিয়ানমারের সাথে চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।
মিয়ানমার, ইরান, বেলারুশ কিংবা কিউবা, কোন দেশেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে পারেনি। বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমতে থাকা এবং বৈশ্বিক ক্ষমতার নতুন মেরুকরণ মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলিকে অকার্যকর করে তুলছে। কিন্তু তারপরও যেহেতু এখনও বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে পশ্চিমাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং বিশ্বে মুদ্রার প্রাথমিক রিজার্ভ হিসেবে ডলারই ব্যবহার করা হয়- তাই এমন নিষেধাজ্ঞা মার্কিনদের জন্য এখনও একটি আকর্ষণীয় অস্ত্র।
যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে এবং এশিয়ার নিরাপত্তার উন্নতিতে হাসিনা সরকার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চাপের মধ্যে রয়েছে। বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাথে আলোচনার জন্য গত মাসে যখন শেখ হাসিনা ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন তখন বাইডেনের প্রশাসনের কেউ তার সাথে দেখা করেনি।
এই মাসে সিঙ্গাপুরে থাকাকালীন অস্টিন ঘোষণা করেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের গুন্ডামি ও জবরদস্তিকে তোয়াক্কা করে না। কিন্তু গুন্ডামি ও জবরদস্তি দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশে তাদের স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা না করে বরং বিশ্বের সপ্তম-সবচেয়ে জনবহুল দেশকে অবজ্ঞা করা, ১৯৭১ সালে তারা যেভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বাধা দান করেছিল, পাকিস্তান বাহিনীর ৩০ লাখ মানুষকে হত্যাকে সমর্থন করেছিল সেই পুরনো ঘা’কেই মনে করিয়ে দেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলে কি চায়? তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে?
বাংলাদেশ পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আচরণ
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:১২ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৮:০৭ এএম, ১৬ মে, ২০২৪
মন্তব্য করুন
সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতে বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক অভাবনীয়, অনন্য এবং যুগান্তকারী একটি মডেল। শিশু স্বাস্থ্য, মাতৃ স্বাস্থ্য এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নবজাতকের মৃত্যু, মাতৃ মৃত্যু কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনুসরণ শুরু করেছে। গত বছর ১৭ মে কমিউনিটি ক্লিনিক ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়। ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ সারা বিশ্বের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশী জনগণের জন্য ‘আলোক বর্তিকা’।
আজকে আমরা ১৭ মে নিয়ে কথা বলছি। যেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আবার গত বছর এই দিনে তাঁর চিন্তা প্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিককে জাতিসংঘ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, উন্নয়নশীল বাংলাদেশের কথা বলছি, যে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, একদিন উন্নত বাংলাদেশ হব বলে স্বপ্ন দেখছি এই সবকিছু শেখ হাসিনার স্বপ্ন, শেখ হাসিনার ইনিশিয়েটিভ। বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৭৮১ সালে পলাশি যুদ্ধে ইতিহাসের ঘৃণিত সেনাপতি মির্জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজ উদ্দৌলার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ২০০ বছরের গোলামী আমাদের ললাটে এসেছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও বাঙালী এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা পায়নি। যার পটভূমিতে বীরদর্পে আবির্ভূত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ থেকে ৭৫’ বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে স্বাধীনতার লাল পতাকা উড়েছিল বাঙালী আশায় বুক বেধেছিল।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্তের ঘটনায় জাতি ছিল দিক নির্দেশনাহীন। নারকীয় এই ঘটনায় জনগণ হয়ে পড়েন দিশেহারা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করার কোন শক্তি সাহস ছিল না। দলের অনেক বড় বড় নেতাও ছিলেন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ধানমন্ডির ৩২ বাড়ি ছিল কবরের নীরবতা। সমগ্র জাতি তখন অন্ধকারে। সামরিক বুটে পিষ্ঠ গণতন্ত্র। নির্বাসনে সংবিধান আর মানুষের মৌলিক অধিকার। বাক স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি বঙ্গবন্ধু নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মৌলিক চরিত্রকেই বদলে ফেলা হয়। বিশেষ করে পাকিস্তানি ধারায় সামরিক শাসনের সংস্কৃতির প্রবর্তন ঘটে দেশে। সাম্প্রদায়িকতা ফিরে আসে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে। একের পর এক স্বপ্নভঙ্গের ঘটনা ঘটতে থাকে দেশে। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ১৯৮১ সালের ১৭ মে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন বাঙালির মুক্তির মহানায়কের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা।