রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের টেনশন ও ভয়ের মধ্যে ৪ঠা জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৭তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হচ্ছে।বিভিন্ন সামাজিক সমস্যায় কিংবা অস্ত্রধারীদের হামলায় নেতিবাচক দৃশ্যপট তৈরি করলেও স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য স্মরণ করে এই মহাদেশটি এগিয়ে চলেছে। আসলে আমেরিকা বা যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে অনেকগুলো তাৎপর্যবহ দিবস। মে মাসের শেষ সোমবার পালন করা হয় ‘স্মৃতি দিবস’। এই দিনে সামরিক সেবা দিতে গিয়ে যারা নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণ করা হয়। সেপ্টেম্বরের প্রথম সোমবার পালন করা হয় ‘শ্রমিক দিবস’। ১৭ সেপ্টেম্বর ‘সংবিধান বার্ষিকী দিবস’ উদযাপিত হয়। ‘থ্যাঙ্কসগিভিং ডে’ পালন করা হয় নভেম্বরের চতুর্থ বৃহস্পতিবার। ফসল সংগ্রহ উদযাপনে এই দিবস পালন করা হয় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকেই। ‘প্রেসিডেন্ট ডে’ পালন করা হয় ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সোমবার। দিনটি পালন করা হয় জর্জ ওয়াশিংটন এবং আব্রাহাম লিঙ্কনের জন্মদিন স্মরণে। ১১ নভেম্বর পালিত হয় ‘সেনা দিবস’। জানুয়ারির তৃতীয় সোমবার বেসামরিক অধিকার আন্দোলন নেতাদের অবদান স্মরণে বেসামরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে স্মরণ করা হয়।
তবে
বাংলাদেশের বিজয় দিবসের মতোই
আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসটি অত্যন্ত মর্যাদা সহকারে ও উৎসব মুখরিত
পরিবেশে উদযাপিত হয়। ২৪৬ বছর
আগে ১৭৭৬ সালের ২
জুলাই ইংল্যান্ডের শাসন থেকে পৃথক
হওয়ার জন্য ভোট দেয়
আমেরিকার দ্বিতীয় কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস। এর দুইদিন পর
৪ জুলাই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে চূড়ান্ত অনুমোদন আসে কংগ্রেসের হাত
ধরে। অবশ্য ব্রিটেনের সঙ্গে পৃথক হওয়ার জন্য
চূড়ান্ত স্বাক্ষর ২ আগস্টে অনুষ্ঠিত
হলেও প্রত্যেক বছর ৪ জুলাই
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে
আমেরিকা। আসলে ১৭৭৬ সালের
৪ জুলাইয়ের আগে ১৩টি উপনিবেশ
রাজ্য একসঙ্গে ইংল্যান্ডের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে স্বাধীনতা সংগ্রাম
শুরু করে।
২.
আমেরিকার
স্বাধীনতা লাভের যুদ্ধ ১৭৭৫ সালে শুরু
হয়ে ১৭৮৩ সাল পর্যন্ত
চলে। ১৭৭৫ সালে বিপ্লবী
যুদ্ধের শুরু হয় ব্রিটিশ
বাহিনী ও উপনিবেশের স্থানীয়
সশস্ত্র বাসিন্দাদের মধ্যে একটি ছোট খণ্ডযুদ্ধের
মাধ্যমে। খণ্ডযুদ্ধটি সংঘটিত হয় ১৭৭৫ সালের
১৯ এপ্রিল। এই যুদ্ধের ফলে
অন্যান্য স্থানেও সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। এই যুদ্ধে
২৫০ জনের বেশি ব্রিটিশ
সেনা হতাহত হয়, আর আমেরিকানরা
হারায় ৯৩ জন বিপ্লবীকে।
এর মধ্যে ব্রিটিশরা বিদ্রোহ দমন করার জন্য
বৃহৎ আকারে সেনা সমবেত করে।
মার্কিন বিদ্রোহী সেনাদের বিরুদ্ধে তারা গুরুত্বপূর্ণ বিজয়
অর্জন করে। এরপর ১৩
টি ব্রিটিশ কলোনির স্বাধীনচেতা মানুষেরা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়
তারা স্বাধীনতার দাবিতে অস্ত্র হাতে নিবে। উপনিবেশগুলো
হলো নিউ হ্যামশায়ার, ম্যাসাচুসেটস,
কানেকটিকাট, রোড আইল্যান্ড, নিউইয়র্ক,
নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া, ডেলেয়ার, ম্যারিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ
ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়া। ১৭৭৬
সালের ২ জুলাই তারা
সম্মিলিতভাবে ‘ইউনাইটেড অফ স্টেটস’ নামের
দেশের ঘোষণা দেয়। ৪ জুলাই
এই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। ফ্রান্স,
স্পেন ও ডাচ প্রজাতন্ত্র
১৭৭৬ সালের শুরুতে গোপনে বিপ্লবীদের রসদ ও অস্ত্র
সরবরাহ করতে থাকে। স্পেন
স্থল ও নৌ ক্ষেত্রে
মার্কিনীদের সহায়তা দিয়েু ব্রিটিশদের উত্তর আমেরিকা থেকে হটিয়ে দেয়।
১৭৮১ সালে ব্রিটিশরা ভার্জিনিয়া
দখলের চেষ্টা চালায় কিন্তু ফরাসি নৌ বিজয়ের ফলে
ফরাসি আমেরিকানরা ইয়র্কটাউন অবরোধ করে। এতে ৭০০০
এর বেশি ব্রিটিশ সৈনিককে
বন্দি করা হয়। তার
ফলে যুদ্ধ এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে ব্রিটেনের ইচ্ছায় পরিবর্তন আসে। ১৭৮২ সাল
পর্যন্ত সীমিত আকারে লড়াই চলতে থাকে।
১৭৮৩ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস
চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। স্বাধীনতা যুদ্ধে
জয় পাওয়ার জন্য ২৫ হাজার
বিপ্লবী আমেরিকানকে জীবন দিতে হয়।
একইসঙ্গে ২৭ হাজার ব্রিটিশ
ও জার্মান সেনার মৃত্যু ঘটে। স্বাধীনতা যুদ্ধে
ভার্জিনিয়া উপনিবেশের জেনারেল জর্জ ওয়াশিংটন (আমেরিকার
প্রথম প্রেসিডেন্ট ১৭৮৯-১৭৯৭) ছিলেন
প্রধান সেনাপতি। আর কন্টিনেন্টাল কংগ্রেসের
পাঁচজনের একটি কমিটি স্বাধীনতার
ঘোষণাপত্র রচনা করেন। টমাস
জেফারসন, জন অ্যাডামস, বেঞ্জামিন
ফ্রাঙ্কলিন ছিলেন এ কমিটির অন্যতম
সদস্য। টমাস জেফারসন ছিলেন
মূল লেখক। রচিত ঘোষণাপত্রটি নিয়ে
কংগ্রেসে তর্ক-বিতর্ক হয়
এবং পরিশেষে সেটি চূড়ান্ত রূপ
লাভ করে।
‘প্রতিটি
মানুষই সমান এবং একই
সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি’ এই বাণীকে সামনে
রেখে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার বাণী রচিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বিভিন্ন দেশের আরো অনেক সমশ্রেণির
দলিল প্রণয়নে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে এবং এর ধারণাসমূহ
পরবর্তী সময়ে ক্যারিবিয়ান, স্প্যানিশ
আমেরিকা, বলকান, পশ্চিম আফ্রিকা, মধ্য ইউরোপসহ অন্যান্য
দেশে ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত
অনুসৃত হয়। অন্যদিকে আমেরিকার
ইতিহাস থেকে বিশ্বের অনেক
দেশ নিজেদের শুধরে নিতে সক্ষম হয়েছে।
১৮৬৩ সালে প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম
লিংকন দাস প্রথা বাতিল
করেন, ১৮৭০ সালে কৃষ্ণাঙ্গদের
ভোটাধিকার এবং ১৯২০ সালে
নারীদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়। ১৯৫০ সালের
দিকে কালো লোকদের ভাল
স্কুলে যাওয়ার, ভাল রেস্টুরেন্টে খাওয়ার
ও বাসে বসার অধিকার
ছিল না। মার্টিন লুথার
কিংয়ের আন্দোলনের ফলে তারা সব
অধিকার লাভ করে। এসব
ঘটনা বিশ্ববাসীকে মানুষের মর্যাদা রক্ষার জন্য অনুপ্রাণিত করেছে।
৩.
২৪৭
বছরে উপনীত হয়ে স্বাধীনতা দিবসটি
উদযাপনে বহুমাত্রিক বৈচিত্র্য এসেছে। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব
জোয়ারে পুরানো অনেক কিছুই এখনো
বহাল রয়েছে। সপ্তাহজুড়ে প্যারেডগুলো সম্পন্ন হয় সকালে, সন্ধ্যায়
হয় আতশবাজি আর পারিবারিক পুনর্মিলনী;
রাত্রি জেগে ওঠে সংগীতের
মূর্ছনায়। কোনো কোনো শহরে
সুউচ্চ টাওয়ার থেকে আলোককিরণ ছড়িয়ে
পড়ে গ্রীষ্মের বাতাসে। দিবসটিতে আপনি শুনতে পাবেন
দেশাত্মবোধক গান আর জাতীয়
সংগীত, ‘গড ব্লেস আমেরিকা’,
‘আমেরিকা বিউটিফুল’, ‘দিস ল্যান্ড ইজ
ইয়োর ল্যান্ড’ স্লোগান। কখনো বা প্রত্যন্ত
অঙ্গরাজ্যের লোকায়ত সুরে যুদ্ধের কথা
স্মরণ করিয়ে দেবে। প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণাকালে ছিল ১৩টি রাষ্ট্র;
বর্তমানে আমেরিকার স্টেট ৫০টি। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ; যার জনসংখ্যা
৩২ কোটি ৫০ লাখের
বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপূর্ব, দক্ষিণ, মধ্যপশ্চিম, দক্ষিণ-পূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চলগুলোর রয়েছে
ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহ্য এবং রীতি। আর
এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্র সাংস্কৃতিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় দেশগুলোর একটি। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলের সংস্কৃতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতিকে
সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে
ইংরেজরা। ব্রিটিশরা ১৬০০ খ্রিস্টাব্দ থেকেই
সেখানে উপনিবেশ গড়ে তুলতে থাকে।
এছাড়া স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী (রেড ইন্ডিয়ান), ল্যাটিন
আমেরিকান, আফ্রিকান এবং এশিয়ানরাও মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে।
আমেরিকার
স্বাধীনতা দিবসে কেন্দ্র থেকে প্রতিটি প্রান্ত
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে থাকে ব্যস্ত।
বছরের এ মাসে হয়ত
একটানা তিনদিন ছুটি থাকে কিংবা
গ্রীষ্মাবকাশ শুরু হয়। ১৭৭৯
সালের ৪ জুলাই ছিল
রবিবার। এজন্য ৫ জুলাই ছুটি
দেয়া হয়। ১৭৮১ সালের
সর্বপ্রথম দিবসটি সাংবিধানিক স্বীকৃতি লাভ করে। অন্যদিকে
দিবসটিতে ১৭৮৩ সালে নর্থ
ক্যারোলিনায় যে সংগীতানুষ্ঠানের সূচনা
হয়েছিল তা এখন পর্যন্ত
প্রচলিত আছে। ১৮৭০ সালে
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস দিবসটিতে বিনাবেতনে ছুটি মঞ্জুর শুরু
করলেও ১৯৩৮ সালে সেটি
প্রত্যাহার করে বেতনসহ দিবসটিতে
ছুটি কার্যকর করা হয়। স্বাধীনতা
দিবসকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে
উঠেছে উৎসবের নানামাত্রা।
এই দিবসে প্রায় চার কোটি ৮০
লাখ আমেরিকান নিজের বাড়ি থেকে শত
মাইল দূরত্ব ভ্রমণ করে। স্বাধীনতা দিবসের
ছুটির সঙ্গে আরো কিছু দিন
ছুটির ব্যবস্থা করে নিয়ে পুরো
ফ্যামিলিসহ ট্রেন, প্লেন বা অটোমোবাইল যোগে
অন্যান্য স্টেটের দর্শনীয় বস্তুগুলো, যেমন নায়াগ্রা জলপ্রপাত,
ডিজনি, ইয়োলস্টোন ন্যাশনাল পার্ক, স্যান্ডিয়েগো জু, সাউথ ডাকোটার
মাউন্ট রাশমোর, হাওয়াই দ্বীপ, আলাস্কা ইত্যাদি দেখতে বের হয়। কেউ
কেউ অন্যান্য দেশ যেমন, কানাডা,
মেক্সিকো, ইউরোপ প্রভৃতি ভ্রমণ করে। অনেকে সাউথ
আমেরিকার আর্জেন্টিনা, চিলি, পেরু, ব্রাজিলও যায়। অতি উৎসাহীরা
আফ্রিকাতেও ঢুঁ মেরে আসে।
বাচ্চাদের স্কুলের ছুটি থাকায় এ
সময় অনেকে সপরিবারে তাদের নিজেদের আদি দেশ যথা
ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মিসর, ফিলিপাইন ইত্যাদি বেড়িয়ে আসে। অনেকে স্থানীয়
সিক্স ফ্ল্যাগ, সি ওয়ার্ল্ড, লোকাল
জু, মিউজিয়াম দেখতে যায়। আবার কেউ
কেউ অনেক দিন ধরে
সরিয়ে রাখা নিজেদের বাড়ির
বিভিন্ন অংশের বকেয়া মেরামত, পেইন্টিং, ডেক, রুম এডিশন,
বেসমেন্ট ফিনিশিং ইত্যাদি কাজগুলো সম্পন্ন করে। সারা বছরের
সবচেয়ে প্রত্যাশিত ছুটির দিনগুলোর মধ্যে ৪ জুলাইয়ের স্বাধীনতা
দিবস উপলক্ষের ছুটির মওশুমটি বলতে গেলে সবচেয়ে
আনন্দঘন ও কর্মবহুল।
৪.
২০২৩
সালের ডিসেম্বর কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমেরিকা-বাংলাদেশের
নিবিড় সম্পর্ক তুলে ধরা দরকার।বিএনপি-জামায়াতের লবিস্ট মারফতে পাওয়া বিবরণ দিয়ে শেখ হাসিনার
শাসনকালকে মূল্যায়ন করা হলে তা
বিভ্রান্তির জন্ম দিবে। বরং
২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত সিটি
করপোরেশনের নির্বাচনগুলোর দিকে তাকালে কিংবা
এদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে বিবেচনায়
নিলে উন্নয়নশীল এই দেশটির মহিমান্বিত
রূপ উন্মোচন করা সম্ভব হবে।এজন্য
আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসে মনে রাখতে হবে-
বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে
গৌরবান্বিত একটি দেশ। যেমন
ব্রিটিশদের কাছ থেকে শুধু
ভৌগোলিক স্বাধীনতা নয় আমেরিকায় সেদিন
উৎপাটিত হয়েছিল সব পরাধীনতার শৃঙ্খল,
বহাল হয়েছিল বাকস্বাধীনতা, পত্রিকা ও প্রকাশনার স্বাধীনতা,
ধর্মীয় স্বাধীনতা, এমনকি কোনো আইন পরিবর্তনের
জন্য সরকারের কাছে আবেদন করার
স্বাধীনতা পেয়েছিল সবাই, আমেরিকায় বসবাসকারী প্রতিটি মানুষ, তেমনি পরিস্থিতি আজ বাংলাদেশেও বিদ্যমান।
অর্থাৎ নিজেকে প্রকাশ করার যে স্বাধীনতা,
সংবাদপত্র, রেডিও-টেলিভিশন তথা গোটা মিডিয়ার
যে স্বাধীনতা তাও স্বীকৃতি পেয়েছে
শেখ হাসিনার শাসনকালে।এখন বাংলাদেশের যে কোনো ব্যক্তি
জানেন ধর্ম পালনে রাষ্ট্র
কাউকে বাধ্য বা নিষেধ করবে
না। যে যার ধর্ম
পালন করবে। নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে স্বাধীনভাবে
নিজের ধর্ম পালনের জন্য
যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশও একমাত্র
শান্তির ভূমি। প্রায় আড়াই’শ বছর
ধরে নানা ধর্ম-বর্ণের
মানুষ আমেরিকায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করে চলেছে যেমনটি
গত সাড়ে ১৪ বছরে
বাংলাদেশের অবস্থা। এজন্য নির্বাচনে জয়ী আমেরিকার প্রেসিডেন্টের
বক্তব্য হয় এরকম-‘আমি
সব আমেরিকানের প্রেসিডেন্ট। ...আমি এজন্য এসেছি
যেন আমরা একসঙ্গে কাজ
করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা
সবাই আমেরিকাকে গ্রেট করার জন্য কাজ
করবো।’ বক্তব্যের এই স্পিরিট এসেছে
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র থেকে।একই ধরনের চেতনা রয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রেও।এজন্য বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সুন্দর ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক
সবসময়ের জন্য প্রশংসনীয়।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।