জাতির
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবের
জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল গোপালগঞ্জ
জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ৫
আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ৭৫তম
শুভ জন্মদিন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে
শেখ কামাল দ্বিতীয় ছিলেন। তিনি শাহীন স্কুল
থেকে ম্যাট্রিক, ঢাকা কলেজ থেকে
ইন্টারমিডিয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান)
ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
ছাত্রলীগের
একনিষ্ঠ কর্মী ও সংগঠক হিসেবে
৬ দফা ও ১১
দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে
শেখ কামাল সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। আমার স্মৃতির পাতায়
ভেসে ওঠে ’৬৯-এর
অগ্নিঝরা গণ-আন্দোলনের স্মৃতি।
যে আন্দোলনে শেখ কামালের প্রতিদিনের
উপস্থিতি ছিল সবার জন্য
তুমুল উত্সাহব্যঞ্জক। এই আন্দোলনে ঢাকা
কলেজের ছাত্রদের সংগঠিত করে মিছিলসহ বটতলায়
সমবেত হতেন। আমার পরম স্নেহভাজন
ছিলেন শেখ কামাল। মনে
পড়ে, ’৬৯-এ পাকিস্তান
সামরিক জান্তা সরকার ধর্মীয় উগ্রতার পরিচয় দিয়ে রবীন্দ্রসংগীত নিষিদ্ধ
করে। শেখ কামাল তখন
রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীদের সংগঠিত করেন এবং রবীন্দ্রনাথের
‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’
গানটি খ্যাতিমান শিল্পী জাহিদুর রহিমকে দিয়ে বিভিন্ন সভা
ও অনুষ্ঠানে গাওয়ানোর উদ্যোগ নেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের
অন্যতম সংগঠক হিসেবে ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করে হাতিয়ার তুলে
নিয়ে দেশমাতৃকার মুক্তির যুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ
করেন। বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর এডিসি ছিলেন শেখ কামাল। মুক্তিযুদ্ধ
চলাকালে ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’ সংগঠিত করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার আশাবাদ ছিল,
দেশ স্বাধীন হলে বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রের
ছবিটাই পালটে দেবেন এবং দেশকে অনন্য
উচ্চতায় আসীন করবেন। মুক্তিযুদ্ধে
বিজয় অর্জনের পর ধ্বংসস্তূপে পরিণত
হওয়া দেশ পুনর্গঠনে নিজের
অসামান্য মেধা ও অক্লান্ত
কর্মক্ষমতা নিয়ে জাতির পিতার
আদর্শ বুকে ধারণ করে
ক্রীড়া ও সংস্কৃতিচর্চায় মনোনিবেশ
করেন।
স্বাধীন
বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে
শেখ কামালের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি ছায়ানট থেকে
সেতার শিক্ষার তালিম নেন। পড়ালেখা, সংগীতচর্চা,
থিয়েটার, অভিনয়, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা থেকে শুরু করে
বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতিকে
বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরার চেষ্টায়
সদাসর্বদা নিয়োজিত ছিলেন শেখ কামাল। অধ্যয়নের
পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তার পদচারণায় ছিল
মুখর। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল
তার বন্ধুদের সহযোগে ‘থিয়েটার’ চর্চা এবং আধুনিক সংগীত
সংগঠন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
নাট্যাঙ্গনে তিনি ছিলেন সুপরিচিত
সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া সংগঠক
ও অভিনেতা।
আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠার জন্য
তিনি দেশের ক্রীড়াজগতে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি
কখনো ব্যাবসায়িক কার্যকলাপে জড়িত হননি, অনর্থক
ছোটেননি অর্থের পেছনে।
শাহীন
স্কুলের ছাত্র থাকাকালে স্কুলের প্রতিটি খেলায় তিনি ছিলেন অপরিহার্য।
এর মধ্যে ক্রিকেট ছিল তার প্রিয়।
তত্কালের অন্যতম উদীয়মান পেশার ছিলেন তিনি। ‘আজাদ বয়েজ ক্লাব’
তখন কামালদের মতো উঠতি প্রতিভাদের
আশ্রয়স্থল। এখানেই শেখ কামাল প্রথম
বিভাগ ক্রিকেট খেলেছেন দীর্ঘদিন। দেশ স্বাধীনের পর
’৭২-এ ‘আবাহনী সমাজকল্যাণ
সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংস্থার নামে
সংগঠিত করেন ফুটবল দল
‘ইকবাল স্পোর্টিং’, আর ক্রিকেট, হকির
দল ‘ইস্পাহানী স্পোর্টিং’। পরে এসব
দলের সমবায়ে নবোদ্যমে যাত্রা শুরু করে ‘আবাহনী
ক্রীড়া চক্র’। ফুটবল,
ক্রিকেট, হকি এই খেলাগুলোতে
বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন
ছিল কামালের। তার স্বপ্ন ছিল
একদিন আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশ হবে অপরাজেয় অপ্রতিদ্বন্দ্বী
ক্রীড়াশক্তি। সত্যিই তিনি বেঁচে থাকলে
সেটা সম্ভব ছিল। শেখ কামালের
নবপরিণীতা বধূ সুলতানা খুকু
ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।
দেশজোড়া খ্যাতি ছিল তার। আন্তর্জাতিক
পরিমণ্ডলে তার পরিচিতি ছিল
এক প্রতিভাবান অ্যাথলেট হিসেবে। নিজে পছন্দ করে
বিয়ে করেছিলেন। ’৭৫-এর ১৪
জুলাই যেদিন গণভবনে শেখ কামাল ও
শেখ জামাল দুই ভাইয়ের বিয়ে
হয়, সেদিন আমি সেই বিয়ের
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারিনি। কেননা ঐ বছরের ১১
জুলাই আমার বড়ো ভাই
পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল
বিশ্ববিদ্যালয়) মৃত্যুবরণ করেন। আমি তখন ভোলায়।
বিয়ের দিন ভোলার পুলিশ
স্টেশনে ফোন করে বঙ্গবন্ধু
আমার খবর নিয়েছিলেন। বলেছিলেন,
‘জামাল-কামালের বিয়ের আসরে সকলেই আছে।
শুধু তুই নাই।’
শেখ
কামালের আচার-আচরণ কেমন
ছিল সে-সম্পর্কে চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবুল ফজল রচিত
‘শেখ মুজিব :তাঁকে যেমন দেখেছি’ গ্রন্থ
থেকে কিছু অংশ তুলে
ধরছি। নাতিদীর্ঘ এই গ্রন্থটির ৪৭-৪৮ এই দুই
পৃষ্ঠা জুড়ে আছে একটি
স্মৃতিচারণমূলক লেখা। লেখাটির শিরোনাম ‘শেখ কামাল :স্মৃতিচারণ’। তিনি লিখেছেন-
“১৭ই
মার্চ শেখ সাহেবের জন্মদিন।
স্বাধীনতার পর ছাত্রলীগ প্রতিবছর
এ দিনটি পালন করে থাকে।
১৯৭৪-এর অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথি হওয়ার জন্য ঢাকার ছাত্রলীগ
আমাকে অনুরোধ জানায়। আমি রাজি হলাম,
তবে দিনে দিনে ফিরে
আসতে চাই এ শর্তে।
তারা সেভাবে বিমানের টিকিট পাঠিয়ে দিয়েছিল।
“১৭
তারিখ ঢাকা বিমানবন্দরে নেমে
আমি চিন্তা করতে লাগলাম, ওরা
আমাকে নিতে আসবে কিনা,
এলেও আমি চিনতে পারব
কিনা। ওদের কারো সঙ্গে
তো আমার দেখা নেই।...একধারে দেখলাম একটা ছিপছিপে গোঁফওয়ালা
ছেলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বেশ লম্বা বলে
সহজে চোখে পড়ে। ছেলেটাকে
আমি চিনতে পারলাম না। লাউঞ্জের প্রবেশপথে
ছেলেটি এগিয়ে এসে বলে : ‘আপনাকে
নিতে এসেছি।’ বলেই আমার হাত
থেকে ব্যাগটি আমার আপত্তি অগ্রাহ্য
করে নিজের হাতে নিয়ে নিল।
নিশ্চিন্ত হওয়ার জন্য জিজ্ঞাসা করলাম
: তুমি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এসেছ?
‘জ্বী হ্যাঁ।’ নম্র কণ্ঠে জবাব
দিলো ছেলেটি।
“ওর
পেছনে পেছনে হেঁটে এসে একটা গাড়িতে
উঠে বসলাম। ড্রাইভারের সিটে গিয়ে বসলো
ও নিজে এবং শুরু
করলো ড্রাইভ করতে। তার আগে ও
জেনে নিয়েছে আমি কোথায় উঠবো।
গাড়িতে তৃতীয় ব্যক্তি নেই। কিছুদূর যাওয়ার
পর আমার মনে হঠাত্
কৌতূহল হলো, জিজ্ঞাসা করলাম
:তুমি কি করো? বললে
:‘অনার্স পরীক্ষা দিয়েছি সোশিয়োলজিতে।’ ঢাকা থেকে? ‘জ্বী
হ্যাঁ।’ শেখ সাহেবের সঙ্গে
ছেলেটির দৈহিক সাদৃশ্য আমার মনে ধীরে
ধীরে স্পষ্টতর হয়ে উঠেছিল। জিজ্ঞাসা
করলাম :তোমার নাম ‘শেখ
কামাল, ও তুমি আমাদের
শেখ সাহেবের ছেলে।”
এই ছিলেন শেখ কামাল। জাতির
পিতার সন্তান হওয়া সত্ত্বেও তার
মধ্যে কোনো অহমিকাবোধ ছিল
না। তিনি ছিলেন বিনয়ী,
মার্জিত ও সংস্কৃতিমান। দাম্ভিকতা
ছিল তার স্বভাববিরুদ্ধ। পরোপকারী,
বন্ধুবত্সল ও মার্জিত শেখ
কামালের বিনম্র আচরণে মুগ্ধ হতো সবাই।
পরিশেষে,
কামালের শৈশবের একটি স্মৃতি উদ্ধৃত
করছি। যে স্মৃতিকথাটি পাঠ
করলে দুই চোখ পানিতে
ভরে আসে, অশ্রুসংবরণ দুঃসাধ্য
হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘শেখ
মুজিব আমার পিতা’ শিরোনামের
লেখায় এই স্মৃতিকথা লিপিবদ্ধ
করেছেন : “১৯৪৯ সালে আমার
আব্বা গ্রেফতার হন। আমি তখন
খুবই ছোট্ট আর আমার ভাই
কামাল কেবল জন্মগ্রহণ করেছে।
আব্বা ওকে দেখারও সুযোগ
পাননি। একটানা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত
তিনি বন্দি ছিলেন। সে সময় আমাদের
দুই ভাইবোনকে নিয়ে আমার মা
দাদা-দাদির কাছেই থাকতেন। একবার একটা মামলা উপলক্ষ্যে
আব্বাকে গোপালগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হয়।
কামাল তখন অল্প কথা
বলা শিখেছে। কিন্তু আব্বাকে ও কখনো দেখেনি,
চেনেও না। আমি যখন
বারবার আব্বার কাছে ছুটে যাচ্ছি,
আব্বা-আব্বা বলে ডাকছি ও
শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে
দেখছে। গোপালগঞ্জ থানায় একটা বড় পুকুর
আছে, যার পাশে বড়
খোলা মাঠ। ঐ মাঠে
আমরা দুই ভাইবোন খেলা
করতাম ও ফড়িং ধরার
জন্য ছুটে বেড়াতাম। আর
মাঝে মাঝেই আব্বার কাছে ছুটে আসতাম।
অনেক ফুল, পাতা কুড়িয়ে
এনে থানার বারান্দায় কামালকে নিয়ে খেলতে বসেছি।
ও হঠাৎ আমাকে জিজ্ঞাসা
করল, ‘হাসু আপা, তোমার
আব্বাকে আমি একটু আব্বা
বলি।’ কামালের সেই কথা আজ
যখন মনে পড়ে, আমি
তখন চোখের পানি রাখতে পারি
না।”
ঘাতকের
বুলেট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার মধ্য দিয়ে
স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। সেদিন
জাতির পিতার দুই কন্যা বিদেশে
থাকায় ঘাতকের বুলেট তাদের স্পর্শ করতে পারেনি। ইতিহাসের
নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের পর ’৮১-তে
আমরা দলীয় ও জাতীয়
ঐক্যের প্রতীক জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার হাতে
শহিদের রক্তে ভেজা দলীয় পতাকা
তুলে দিই। সেই পতাকা
যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে হাতে তুলে নিয়ে
জাতির পিতার আদর্শ সমুন্নত রেখে পরম নিষ্ঠার
সঙ্গে তিনি আজ দেশকে
নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে
বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে আসীন করার
যে স্বপ্ন শেখ কামাল দেখতেন,
সেই অসমাপ্ত কাজটিও তারই পৃষ্ঠপোষকতায় সাফল্যের
সঙ্গে বাস্তবায়িত করে চলেছেন।
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।