নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০১ এএম, ২২ জুন, ২০১৮
‘নাজি স্পিড’ বা ইয়াবার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে এখন শুদ্ধি অভিযান চলছে। এটা নাকি আরও চলবে, সাথে যোগ হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান। মাদক আর দুর্নীতি দুটোই আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ গরীব (!) দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বিরাট বড় অন্তরায়। কারণ এই দুটোই আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ নষ্ট করে দেয়, শ্রেণি বৈষম্য বাড়ায়, মানুষের মানবিক মূল্যবোধ নষ্ট করে দেয়। এর ফলে আমাদের দেশের অন্যতম সম্পদ, মানব সম্পদকে ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের দারিদ্রের নাগপাশে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলবে। তাই আমাদের দেশের মানুষের ব্যক্তিগত, সামাজিক তথা রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধের উন্নয়নে মাদকের আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান খুব জরুরি, যেটা এখন সবে শুরু হয়েছে।
জানা গেছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ক্লান্তি দূর করতে ও যুদ্ধের সময় লম্বা সময় সজাগ থাকতে হিটলারের নির্দেশে তার বৈজ্ঞানিকরা সেনাদের জন্য মেথঅ্যামফিটামিন সমৃদ্ধ ইয়াবা টাইপের ওষুধ আবিষ্কার করে। সে সময় এটাকে ‘নাজি স্পিড’ নামে ডাকা হতো। পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষ বিশেষত শিক্ষার্থী, দীর্ঘ যাত্রার গাড়িচালক ও দৌড়বিদেরা এটি ব্যবহার শুরু করেন। আইএস নামে পরিচিত ‘ইসলামী গ্রুপ’ তাঁদের শরীরে তাগতের জন্য ‘কেপ্টাগন’ নামের এক ধরনের মারাত্মক ক্ষতিকর ড্রাগ ব্যবহার করে, যা তাদের দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধের সময় শক্তি যোগায়, ক্লান্তি দূর করে। সেটাও অ্যামফিটামিন সমৃদ্ধ মাদক।‘কেপ্টাগন’ নামের এই ‘জেহাদি’ ড্রাগ এক/দুইবার ব্যবহার করলে আর এর থেকে বেরিয়ে আসা যায় না। ‘কেপ্টাগন’ মনকে এক ট্রাকে নিয়ে আসতে পারে তাই আইএস এ আত্মঘাতী জেহাদির অভাব হয় না, এরা স্লিপার সেলের সদস্যদের মতো কাজ করতে পারে। মজার ব্যাপার হলো, ইয়াবা কিংবা ‘কেপ্টাগন’ যাই খান না কেন প্রাথমিকভাবে এটার প্রভাব খুব ভালো, আপনাকে শক্তি দেবে, ক্লান্তিকে তাড়িয়ে দিয়ে অনেক সময় ধরে যুদ্ধের মতো কঠিন কাজেও সজাগ রাখবে, কিন্তু পরে আপনি আসতে আসতে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবেন।
ধারণা করা হয়, ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে ইয়াবার আবির্ভাব ঘটে। মিয়ানমারের মাদক নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন যে, মিয়ানমারের বহু বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ সেই দেশে প্রায় ৩৭টারও বেশি ফ্যাক্টরির মাধ্যমে ইয়াবা তৈরি করে পাশের সব দেশে পাচার করে তহবিল সংগ্রহ করে, তাদের কর্মকাণ্ড চালায়। সাম্প্রতিক অভিযানে, ধরা পড়া বাংলাদেশের এক মাদক ব্যবসায়ী রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার বিএনপি মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লাইলা সুলতানা লীজা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে, এর থেকে করা আয়ের অংশ যায় বিলেতে, দলের খরচ চালাতে।
কোনো দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করতে বা কারও সম্পদ লুট করতে বা কব্জায় নিতে ড্রাগের ব্যবহার একটা পুরাতন কৌশল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কাল থেকে এটা হয়ে আসছে, আমদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতেই কী তবে এই ইয়াবার ছোবল এসেছে আমাদের দেশে?
কেন মানুষ ইয়াবার মতো মাদক সেবন করে? প্রেমে বিফলতা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট কিনে (বেশিরভাগ, সব না) চাকরি না পাওয়ার ফলে হতাশা, অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে শুরু করা, অবৈধ পয়সার মালিক বাবা মায়েরা সন্তানদের সময় না দেওয়া থেকে আসা বিষণ্ণতা, টাকার পিছনে দৌড়ানো, পারিবারিক ও সামাজিক নৈতিকতার অভাব, সুস্থ বিনোদনের অভাব, আকাশ সংস্কৃতির কু-প্রভাব ইত্যাদি নানা কারণে আমাদের দেশের যুব সমাজ এই মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। অনেক বয়স্ক নিজেদের শরীরের তাগদ আনতে এক দুইবার সেবনের পরে বেশিরভাগই আসক্ত হয়ে পড়ে।
ইয়াবা সেবন মানুষকে কী করে? প্রথম প্রথম এটা খেলে মনটা খুব ফুরফুরে লাগে, শরীরে অনেক শক্তি পাওয়ার অনুভূতি পাওয়া যায়। পরে অভ্যাস হয়ে গেলে মাদক নেওয়ার ডোজ বেড়ে যায়। তখন মাদক না নিলে বা না খেলে আর ভালো লাগে না। দ্বিতীয় স্তরে তারা মাদকের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তখন তারা পারিবারিক, সামাজিক রীতি নীতি আর মানে না। পরিবার থেকে টাকার যোগান আর পায় না। তাই নেশার টাকার যোগান নিতে যা ইচ্ছা তাই করে। নেশার একটা স্তরে তারা ভাবতে থাকে যে, তারা যা করছে সব ঠিক করছে। কারও কথা বা পরামর্শ নেয় না বা শোনে না। এভাবেই চলে যায় চতুর্থ স্তরে। তখন তাদের কাছে জীবনের আর কোন মানে থাকে না। তারা পুরোপুরি মাদকের কাছে আত্মসমর্পণ করে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। অসহায় মা-বাবা তাদের সন্তানের মৃত্যু নিজে চোখে দেখে দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে যায়। পিতার কাঁধে ওঠে পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী সন্তানের লাশ।
ইয়াবা তৈরিতে খরচ কত, আর লাভ হয় কত? এটাকে ‘কিচেন কোম্পানি’ বলে থাকেন অনেকে। কারণ খুব ছোট্ট জায়গাতেই এই ইয়াবার উৎপাদন সম্ভব। সাধারণত চার কোয়ালিটির ইয়াবা আমাদের দেশে দেখা যায়। আমার অ্যামেরিকান এক কেমিস্ট বন্ধু বললেন, যদি ভেজাল না দেওয়া হয় (এখানে ভেজাল বেশি) তবে মান ভেদে ইয়াবা তৈরির কাঁচামালে খরচ হয় ২৫ টাকা থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত। যা বিক্রি হয় ২০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। এটাতে এতই লাভ হয় যে, রাতারাতি বড় লোক হতে কম বেশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষকেই এটাতে জড়াতে দেখা যায়। কম দামের নেশা খাইয়ে নেশা ধরাতে পারলে সেই ড্রাগ ডিলার হয়ে পড়ে নিজের নেশা মিটাতে। ড্রাগ ডিলারদের হাতে এত টাকা থাকে যে, উকিল, ব্যারিস্টার থেকে আরম্ভ করে সরকারি পদস্থ আমলা, রাজনীতিবিদসহ সমাজের সকল স্তরের লোকদের কেনার ক্ষমতা থাকে তাদের। কেনেও তারা, টাকায়, তাঁদের পক্ষে।
নীতি-হীনেরাই দুর্নীতি করে টাকা আয় করে তাই এদের মধ্যেই মাদক সম্রাট হবার আকাঙ্ক্ষা বেশি, হয়ও তাই। ধরা পড়ার পরেও আইনের ফাঁক দিয়ে নামী দামী উকিল, ব্যারিস্টারের সহায়তায় বেরিয়ে এসে আবার শুরু করে ব্যবসা। আমাদের দেশের যে অবস্থা তাতে আমাদের আগামী প্রজন্ম তথা দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন এই মাদকের ছোবলে। মাদক বিরোধী অভিযান হলে মাদকের দাম বেড়ে যায়, লাভ বেশি। এমন অভিযোগ আছে যে, মাদক বিরোধী অভিযানে জড়িত অনেকে আবার উদ্ধার করা মাদকের সংখ্যা কমিয়ে দেখিয়ে তা পরে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করে নেয়।
উন্নত দেশে ইয়াবার মত ড্রাগের ব্যবহার অনেক আগে থেকেই। কলম্বিয়ায় তো ড্রাগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আর জাতিসংঘ মিলে কত কোটি টাকা এর জন্য খরচ করেছে তা নেট সার্চ দিলেই পাবেন। ৩০ বছর ধরে চলেছে এই যুদ্ধ, কিন্তু ফলাফল সুখকর না। কারণ সর্ষের ভিতরেই ভূত। ১৯৯০ সাল থেকে কলম্বিয়াতেই ৪৫০,০০০ মানুষকে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়েছে বা হত্যা করা হয়েছে। প্রতি ১ লাখ লোকের মধ্যে ২০ থেকে ৩৬ জনকে হত্যা করা হয় এই মাদক সম্পৃক্ততার জন্য, মাদক বিরোধী যুদ্ধে। তাও থামানো যায়নি। একই সময়ে পাশের দেশ মেক্সিকোতে ২,২০,০০০ মানুষকে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়। জাতিসংঘ বলেছে ২০১৬ সালেই কলম্বিয়াতে কোকেনের উৎপাদন হয়েছে ৮৬৬ মেট্রিক টন। অন্যদিকে ফিলিপাইনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার আগে ছিলেন একটি ছোট্ট শহরের মেয়র। তিনি ক্রসফায়ারের মাধ্যমে এতই জনপ্রিয়তা পান যে, ভোটে দাঁড়িয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে যান। তিনিও ইদানীং দমে গেছেন, ক্রসফায়ার কমিয়ে দিয়েছেন।
আমাদের দেশের এই সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কী নেই? আমাদের উচিৎ জাতিসংঘ, আমেরিকা ও ফিলিপাইনের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া। তবে আপাতত: মাদক ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযান জোরদার রাখা, ক্রসফায়ার অব্যাহত রাখা আরও কিছু দিন। কারণ এদের টাকার কাছে সমাজের অধিকাংশই অর্গান বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, যাবে। যদিও প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতাকারী ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে শিগগিরই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত সংশোধিত আইনে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষক ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হবে। তবে বাংলাদেশে আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি দেওয়া খুব কঠিন। বেগম খালেদা জিয়া যে মামলায় জেল খাটছেন তা ৬০ কার্যদিবসে শেষ হবার আইন থাকলেও লেগেছে ১০ বছর। আবার অনেকে পুলিশ ভ্যানে থেকেও ফেসবুক লাইভে আসেন, জেলে থেকে বাবা হন, সে খবর সবাই জানেন।
একই সঙ্গে সারা দেশের সব হাসপাতালে মাদক নিরাময় কেন্দ্র খুলে নেশাগ্রস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। কারণ চাহিদা না থাকলে ব্যবসা হবে না। তাই ইয়াবার চাহিদা কমাতে নেশাগ্রস্তদের সমাজে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, কারণ এটা একটা অসুখ। অপরদিকে অতিশয় দ্রুততার সঙ্গে শিক্ষার সর্বস্তরে নৈতিকতা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। মাদকের ও দুর্নীতির কুফল শেখানো / পড়ানো। শিক্ষার কারিকুলামে তো বটেই এমন কী সিলেবাসে মাদক আর দুর্নীতির অপকারীটা নিয়ে প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষাস্তরেও পাঠ চালু রাখা। বিশেষ করে শিক্ষার উচ্চস্তরে পেশাগত নৈতিকতার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। এর পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা, যেমনটি হয়েছে ইসলামের নামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, আমাদের দেশে। তার একটা সুফল আমরা এখন পাচ্ছি। একমাত্র উচ্চ নৈতিকতার জনসম্পদকে কাজে লাগিয়ে দেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে, অন্য কিছুতে নয়। অভিজ্ঞরা বলেন, ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক নৈতিকতার অব্যাহত চর্চা যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়নে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ গঠনের জন্য খুবই জরুরি।
লেখক: উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
তথ্যঋণঃ CBS NEWS, দৈনিক ইত্তেফাক, মুরাদ নেওয়াজ, ইন্টারনেট, অন্যান্য
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।