নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৭ অক্টোবর, ২০১৮
আমাদের প্রধানমন্ত্রী কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়ার সিদ্ধান্তে ভিতরে ভিতরে অনেক মানুষের আর প্রকাশ্যে কিছু অতি উৎসাহী বামের সঙ্গে মুক্তচিন্তার মানুষের নানা কথা শোনা যাচ্ছে। তাঁরা কেউ বলছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যার কাছে এটা আশা করা যায় না, দেশটা মৌলবাদী হতে শেখ হাসিনা একধাপ এগিয়ে দিলেন, আখেরে ফল ভালো হবে না। ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বিপদে পড়বে, ইত্যাদি বিস্তর অভিযোগ, অনুযোগ, আক্ষেপ আর রাগ। আসলে ঘটনা কি? কেন দেওয়া হলো এই কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার স্বীকৃতি? কেউ মুখ খোলে না, তাই স্পষ্ট হয় না কোনো কিছু। তাই আসুন একটু চিন্তা করে দেখি সম্ভাব্য কি কারণ থাকতে পারে এর পিছনে।
প্রাচীন ভারতীয় শিক্ষাধারা ছিল গুরুমুখী, শুনে শেখার ঐতিহ্য। কারণ, বেদ কণ্ঠস্থ করতে হতো এবং মুখস্থ রাখতে হতো। ছাত্রদের জন্য কোনো গ্রন্থ ছিল না। তাই বই পড়ে বেদ মুখস্থ করা চলত না। জোর গলায় পাঠ করা এবং বেদ বর্ণ কর্ণগোচর করা বেদ-অধ্যয়নের অঙ্গ এবং গুরুর কাছে শুনেই তা করতে হতো।৬ শ্রবণ হলো শিক্ষক বা গুরু কর্তৃক উচ্চারিত শব্দ বা পাঠ্যবিষয়। এই ব্যবস্থাটিকে ‘গুরু-শিষ্য পরম্পরা’ বলা হয়। গুরুর কাছ থেকে শিষ্য, শিষ্য থেকে তাঁর শিষ্য—এই রূপে পরম্পরায় জ্ঞান প্রবাহিত ও সংরক্ষিত হতো। এই কারণে সে যুগে জ্ঞান গ্রন্থনাকে বলা হতো ‘স্মৃতি’ বা ‘শ্রুতি’। অর্থাৎ যা স্মৃতিতে ধরে রাখা হয়েছে বা যা শোনা গেছে। গুরুর মুখে শুনে শুনে শিক্ষালাভের আর একটি উদ্দেশ্য হলো, শিক্ষার সুযোগ সীমাবদ্ধ করে রাখা। এতে শূদ্ররা শিক্ষালাভের সব ধরনের সুযোগ হারাল। পাঠদানের লিখিত পদ্ধতি বা গ্রন্থ না থাকায় শূদ্ররা চাইলেও লুকিয়ে এই শিক্ষালাভ করতে পারত না। ঠিক এভাবে সমাজের বিরাট এক অংশকে শোষণ করার জন্য প্রাচীন ভারতে ব্রাহ্মণ্য শিক্ষাব্যবস্থা প্রথম থেকেই চাতুর্যের পথ গ্রহণ করেছিল, পরবর্তী সময়ে যা শূদ্রদের জন্য শাপে বর হয়েছিল।
গোটা অখণ্ড ভারতের তথা এই অঞ্চলের মুসলিম সম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েদের মাদ্রাসায় হুজুরের অধীনে শিক্ষাদান বা পাঠদান শুরু হয়, যা ইদানীং কালের কওমি মাদ্রাসা নামে চলে আমাদের এই বাংলায়। এঁদের শিক্ষাদান পদ্ধতি অনেকটাই গুরুগৃহে পাঠদানের মতো মনে হলেও বিবর্তিত হয়ে এটা একেকটা বিশাল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সিলেবাস অনেক কঠিন, হয়তো যুগোপযোগী না। তবে এটা আমাদের দেশের আলেমদের জন্য একটা বিরাট অর্জন, অন্য পথে।
ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৭৮১ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস কলকাতা মাদ্রাসা (অধুনা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়) চালু করেন। ১৭৯১ সালে জোনাথান ডানকান বারাণসীতে একটি সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
গুরু গৃহের শিক্ষা, তার পরে আলিয়া মাদ্রাসা, সংস্কৃত কলেজ হয়ে আধুনিক কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা দেশে চালু হলেও প্রাচীন সেই শিক্ষা পদ্ধতি এখনো দেশ থেকে মুছে যায় নি। কারণ মানুষের মনে ধর্মের শক্ত ভিত্তি এখনো বিদ্যমান। যারা যুক্তি বা বিজ্ঞান মানে না, মানে তাঁদের মুরুব্বীদের কথা, আমাদের উপমহাদেশের চিত্রটা এটাই, এখানে মুক্তচিন্তার সুযোগ তো নেই বরং আছে বাধা, কেউ বলেন ‘চাপাতি’ বাধা।
আমাদের দেশের কওমি মাদ্রাসায় কারা পড়েন? এই ধরনের মাদ্রাসায় যারা ভর্তি হন তাঁরা খুব গরীব পরিবারের (দুই একটা ব্যতিক্রম বাদে)। জন্মই হয় গরীব ঘরে অপুষ্টির শিকার মায়ের গর্ভে। জন্মানোর পরেও অপুষ্টির কারণে এঁদের ব্রেইনের গঠন যা হবার কথা, তা হয় না। তাই আইকিউ অনেক কম থাকে যারা অপুষ্টির শিকার নয় তাদের তুলনায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এঁদের ব্রেইনের অ্যানালিটিক্যাল ফ্যাকাল্টি দুর্বল থাকে, মানে বিবেচনা শক্তি দুর্বল থাকে। ভবিষ্যতের চিন্তায় থাকে খামতি, ‘জি হুজুর’ বলা এঁদের আদত হয়ে দাঁড়ায়। তাই যুক্তির চেয়ে মুরুব্বীর কথায় অন্ধ বিশ্বাসকে তাঁরা আঁকড়ে থাকে। এরা বাংলার যত না দক্ষ তাঁর চেয়ে উর্দু আর আরবিতে বেশি দক্ষ তাঁরা।
এরা আসলে বাংলাদেশের পশ্চাৎপদ বা অবহেলিত জনগোষ্ঠীর একটা অংশ (যদিও অনেকে তাঁদের অনগ্রসর গ্রুপ বলতে নারাজ)। অবহেলা, হতাশা থেকে তাঁরা আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। এটাকে পুঁজি করে কেউ কেউ উপরে উঠার কৌশল হিসেবে, আবার ধর্মীয় অগাধ বিশ্বাস থেকে করে এটা, কেউ করে রাজনীতি। যারা রাজনীতি করেন তাঁরা তাঁদের ছেলে মেয়েদের কাউকেই মাদ্রাসায় পড়ান না, পড়ান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। কিন্তু মিটিং এ লোক দরকার হলে নেন মাদ্রাসা থেকে, ইসলাম প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে। যেন তাঁরা দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার একমাত্র এজেন্সি পেয়েছেন।
যদিও আমার আপনার মত রাষ্ট্রের কাছ থেকে অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা চিকিৎসা, বাসস্থান পাওয়া তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার আছে।কিন্তু বাস্তবে তাঁরা কিছুই পান না, অন্যদের তুলনায়। এছাড়াও তাঁদের আপনি স্কুলে আনতে পারছেন না নানা কারণে। তাই তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাসের আলোকে তাঁরা এই মাদ্রাসায় যায়, অর্থনৈতিক কারণে মাদ্রাসায় যায়, কারণ সেখানে পড়ালে থাকা খাওয়া ফ্রি। থাকার জায়গাও পায় তাঁরা ফ্রি। চিকিৎসার ক্ষেত্রে ঝাড় ফুঁকে বিশ্বাস করতে হয়, যদিও তা বিজ্ঞান সমর্থন করে না। কিন্তু পারিবারিক ভাবে পাওয়া নিজেদের বিশ্বাসে তাঁরা অটল- এটাই বুঝতে হবে আমাদের।
নদী ভাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, শোষণ নির্যাতন, ধর্মের অপব্যাখ্যা, পরিবারের কর্তাদের ভুল সিদ্ধান্ত, নিজের পাপ কর্ম থেকে আত্মমুক্তির আশা, দারিদ্র, দুনিয়া গতি প্রকৃতি সম্পর্কে তথ্য বা পরামর্শের অভাব, ইত্যাদি মানুষকে এসব মাদ্রাসা শিক্ষার পথে আনে। ক্ষমতা, শক্তি থাকা অবস্থায় কেউ ঈশ্বরভক্ত হয় না বলে কথা প্রচলিত আছে। বিপদে না পড়লে কেউ আল্লাহকে ডাকে না। বিপদগ্রস্ত মানুষ শুকরিয়া আদায়ের জন্য আল্লাহ / ভগবান ভক্ত হয়।
এই ধরনের মানুষের সংখ্যা উন্নত দেশেও কম নেই, যদিও সে সব দেশে ধর্মের অবস্থান এখন দুর্বল হয়ে আসছে দিনই দিন। দীর্ঘদিন একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকতে থাকতে উন্নত দেশে বহু মানুষ ধর্মহীন হয়ে পড়লেও, ধর্মের আচার ও বিশ্বাস সে সব দেশ থেকে মুছে যায় নি। তাই নিজ নিজ দেশের মৌলবাদীরা উন্নত দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা করে। ব্রিটিশের একটা ক্ষুদ্র অংশের মুসলিম মেয়েরা সেবাদাসী হতে আইএস এ যোগ দেয়। কী বলে ব্যাখ্যা দেবেন তার!
দারিদ্র ও শিক্ষার অভাবে বাংলাদেশে মানুষের বিরাট অংশের মাঝে ধর্মের বিশ্বাস খুব শক্ত। মুক্তবুদ্ধির চর্চা এখানে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে খুব ধীরে। আবার মুক্তচিন্তার মানুষ বলে যারা নিজেদের দাবী করলেও পরে জীবনের বেলা শেষে এসে আবার হয়ে যাচ্ছে ইসলামী চিন্তাবিদ। যা মুক্তচিন্তা চর্চার বিকাশে বড় অন্তরায়, কঠিন করে দিচ্ছে পথ চলা। নিজেকে নাস্তিক দাবি করা ফরহাদ মাজাহার, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কবি আল মাহমুদ তাঁদের মধ্যে অন্যতম। কঠোর মার্ক্সবাদী বহু মানুষ এখন জামায়াত করে, বিএনপি করেন, বিশেষ কোন আকর্ষণে।
যারা মাদ্রাসা চালান তাঁদের সবাই সৎ তা আমি দাবি বা বিশ্বাস কোনটাই করি না। কিন্তু তাঁদের বুদ্ধির চেয়ে বিশ্বাস বড় তাই- যে কোনো গুজব তাঁরা ও তাঁদের সাগরেদরা খুব সহজেই বিশ্বাস করেন। একটা আহ্বান দিলে লাখ লাখ তালেবে ইলম এসে যোগ দেয় তাঁদের কর্মসূচিতে। কিন্তু আমাদের দেশে যারা মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া আর পত্রিকায় লেখা লেখি, বই ছাপানো, আর টেলিভিশনে টক শো করেন, রাস্তায় নামেন না, নামলেও লোক হয় ১০/২০ জন সাকুল্যে।
আমাদের দেশের প্রচলিত গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। বর্তমান সরকার তাই গ্রহণ করেছেন, অধিকাংশের দাবি পূরণ করে চলেছেন। সরকারের সবাই এটার বিষয়ে একমত না, তা অনেকেই জানেন, কিন্তু প্রচলিত গণতন্ত্রের ফর্মুলায় পড়ে গেছেন, সবাই। তাই মুক্তচিন্তার মানুষেরা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এখন সরকারের নিন্দা জানাচ্ছেন। আইন অনুসারে সংখ্যাগরিষ্ঠের মত তাঁরা মানেন না।
কী হতে পারে এর ফল? কওমি মাদ্রাসার মানুষ এখন সরকারি চাকরী পাবেন যদিও তা সংখ্যায় কম হবে খুব। তখনই তাঁরা সেই আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কলেজের মতো করে তাঁরা ধীরে ধীরে কারিকুলাম চেঞ্জ করবেন, ফিরে আসবেন শিক্ষার মূল ধারায়, হয়তো সময় নেবে কয়েক বছর, বা যুগ, যেমনটি হচ্ছে খোদ সৌদি আরবে। মেয়েরা টিভিতে খবর পড়ে, গাড়ি চালায়, স্টেডিয়ামে খেলা দেখে, ইত্যাদি। আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সম্মান দিয়ে পরিবর্তনের আর উন্নয়নের ট্রেনে উঠার সুযোগ করে দিয়েছেন, ফল কী হবে তা ভবিষ্যৎ বলবে। তবে দেশের জন্য খুব খারাপ হবে না তা পারিপার্শ্বিক দেশের অভিজ্ঞতা থেকেই বলা যায়।
লেখক: উন্নয়ন কর্মী ও কলামিস্ট
তথ্যঋণঃ বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, উইকিপিডিয়া, অন্যান্য
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।