নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০৮ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
কৌশলী বামাতি, জামাতি, নষ্ট-ভ্রষ্টরা আবার একাট্টা হয়েছেন। যেমনটির শুরু হয় ১৯৭২ সালে ৩১শে অক্টোবর আদর্শচ্যুত মুক্তিযোদ্ধা মেজর মোহাম্মদ আবদুল জলিলের নেতৃত্বে সাত সদস্য বিশিষ্ট জাসদের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে। যার ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছিল দেশের তাবৎ স্বাধীনতা বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর জলিল। ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজবন্দী হিসেবে মেজর জলিলকে বন্দী করা হয় নৈতিক স্খলনের অপরাধে। কেড়ে নেয়া হলো তাকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেয়া সম্মানসূচক পদক। মেজর জলিলের অপরাধ ছিল মারাত্মক নৈতিক স্খলনের তাই সদ্যস্বাধীন দেশে তা প্রকাশ করতে বারণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সংবাদের সিনিয়র সাংবাদিক সন্তোস গুপ্তকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এই সত্য প্রকাশের ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
যা হোক, আদর্শচ্যুত মুক্তিযোদ্ধা মেজর মোহাম্মদ আবদুল জলিলের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর জাসদের যাত্রা শুরু হলেও ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অতিরিক্ত কাউন্সিলে ১০৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই সম্মেলনে জাসদ তার ঘোষণাপত্রও অনুমোদন করে। সেই ঘোষণাপত্রে সামাজিক বিপ্লবের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র তথা শ্রেণিহীন শোষণহীন কৃষক শ্রমিকরাজ প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দেয়া হয়। এর মাত্র কয়েকদিন আগেই অসাম্প্রদায়িক এক বাংলাদেশ গড়ার প্রয়াসে বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ করেন একাত্তরে ধর্মের নামে ব্যভিচারী, ধর্ষক, নিপীড়ক রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগসহ এ দেশে ক্রিয়াশীল ধর্মভিত্তিক সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। জাসদের আত্মপ্রকাশে স্বাধীনতা বিরোধী ধর্মভিত্তিক দল আর চৈনিক বামেরা, যাদের অধিকাংশই ছিল মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, সবাই জাসদের ছায়াতলে সমবেত হতে থাকে। ১৯৭১ সালে যারা সামাজিক শক্তির ভারসাম্য রক্ষায় পারিবারিকভাবে বাধ্য হয়ে নিজেদের আদর্শের বাইরে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন, তাঁরা স্বাধীনতার অব্যহতি পরেই নিজ নিজ ঘরে ফিরেছে, যেতে চেয়েছে জাসদের ঘাড়ে ভর করে। তাই এর ফলে ৭ মার্চ ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচনে ২৩৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, শতকরা ৭ ভাগ (১,২২৯,১১০) ভোট পেয়ে ৫টি আসনে বিজয়ী হয়ে তাক লাগিয়ে দেয়। আসলে এই ৫টি আসনে জাসদের বিজয় ছিল মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী আর বিভ্রান্ত বা আদর্শচ্যুত মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত প্রয়াসের ফসল।
জাসদ ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ পল্টন ময়দানের জনসভা শেষে প্রায় হাজার ত্রিশ উত্তেজিত জনতার এক বিক্ষোভ মিছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। মিছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ির সামনে পৌঁছলে পুলিশের সঙ্গে জনতার খণ্ডযুদ্ধ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রক্ষীবাহিনী তলব করা হয় এবং রক্ষীবাহিনীর গুলিতে প্রায় ২২/২৩ জন জাসদ কর্মী নিহত হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এরই প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়া এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ড্রেজার বিভাগের পরিচালক পদে চাকরিরত অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল আবু তাহেরকে ফিল্ড কমান্ডার এবং জাতীয় কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুল হক ইনুকে ডেপুটি কমান্ডার করে জাসদের গণবাহিনী গঠন করা হয়। মাঠ পর্যায়ে এই গণবাহিনীতে যোগ দেয় স্বাধীনতা বিরোধী ধর্মভিত্তিক দল আর চৈনিক বামের স্থানীয় কর্মীরা। সারা দেশজুড়ে এমন অরাজক পরিস্থিতি তৈরী হয় তাতে জাসদের গণবাহিনীর কেন্দ্রীয় বা জেলা কমাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ ছিল না যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে। জাসদের গণবাহিনীর গ্রাম এলাকার সশস্ত্র সদস্যরা খুন খারাবী, ছিনতাই, ডাকাতি ইত্যাদিতে জড়িত হয়ে পড়ে। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ তাদের আরও বেপরোয়া করে, জনমনে বঙ্গবন্ধু সরকারের প্রতি ক্ষোভের আগুন জ্বলতে থাকে। জাসদের গণবাহিনীর সশস্ত্র সদস্যদের অত্যাচার থেকে গ্রামের সাধারণ জনগণকে নিরাপত্তা দিতে অনেক এলাকায় রক্ষীবাহিনী নামানো হলেও তাতে ফল আশানারূপ হয় না। বরং খারাপ হয়। দিনে রক্ষীবাহিনী আর রাতে জাসদের সশস্ত্র গণবাহিনীর অত্যাচারে সারা দেশে বিভিন্ন এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। গণবাহিনীতে যোগ দেওয়া স্বাধীনতা বিরোধী ধর্মভিত্তিক দল আর চৈনিক বামের স্থানীয় কর্মীরা ১৯৭১ সালে তাদের পরাজয়ের পরিশোধ নিতে এতোই মরিয়া ছিলো যে, তাঁরা তাদের অনেক নেতার কথাই মানত না। এটা নিয়ে বিরোধ চরমে উঠলে জাসদের সশস্ত্র গণবাহিনীর স্থানীয় পর্যায়ে অনেক ছোট ছোট উপদল তৈরী হয় অমুক বাহিনী, তমুক বাহিনী নামে।
১৯৭২ সালের পরে স্বাধীনতা বিরোধী ধর্মভিত্তিক দল আর চৈনিক বামের কর্মী সমর্থকরা জাসদে যোগ দিয়েছিলেন বা ছায়াতলে ছিলেন, তাঁদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরে ধীরে ধীরে নিজেদের আদর্শের দলে ফিরে যান। জাসদের প্রতিষ্ঠাতা মেজর এম এ জলিল নিজেও ইসলামী দল গঠন করেন। জাসদের পত্রিকা গণকন্ঠের সম্পাদক সদ্য প্রয়াত কবি আল মাহমুদ তাঁর নিজের ঠিকানা জামায়াতে ফিরে যান।
বিএনপিতে যোগ দিয়ে এমপি হন ৫০ জনেরও বেশী। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শাজাহান সিরাজ, রাবেয়া সিরাজ, স্পিকার মরহুম শেখ রাজ্জাক আলী, আবদুস সালাম, ডা. সাখাওয়াৎ হোসেন, কলিমউদ্দিন মিলন, আবুল হোসেন খান, জি এম ফজলুল হক, অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী, লুত্ফর রহমান খান আজাদ, ভিপি জয়নাল আবেদীন, মারুফ কামাল খান সোহেলসহ অনেকে।
জাতীয় পার্টিতে-যোগদানকারীদের মধ্যে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, এ বি এম শাহজাহান, আজম খান, বর্তমান এমপি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের নোমান মিয়া ও বগুড়া-২ আসনের শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, শামসুল আলম মাস্টার, আবদুস সাত্তার মিয়া, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, দিদারুল আলম দিদার, গোলাম মোহাম্মদ রাজু, শাহ ই আযম, মুন্সীগঞ্জের জামাল হোসেন, নোয়াখালীর ফজলে এলাহী, চট্টগ্রামের মাজহারুল হক, বগুড়া সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম জাকারিয়া খান অন্যতম।
এছাড়া জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আসম আব্দুর রব, মাহামুদুর রহমান মান্নাসহ আরও অনেকেই জামায়াতের সাথে জোট করে ধানের শীষ প্রতীকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আর এদের অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছেন ড. কামাল হোসেনের মত মানুষ। তবে এখনো যারা অন্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও লালন করেন তাঁদের অনেকেই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন বা আওয়ামী লীগের সাথে জোট করে নির্বাচন করেছেন।
১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এ পর্যন্ত অন্তত ১৯ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যায়ে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছে আরও অন্তত পাঁচ দফা। শেখ হাসিনার ওপর এসব হামলার ঘটনায় অন্তত ৬৬ জন দলীয় নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার হিসাব আছে। উইকিলিক্স তাদের প্রকাশিত পিলখানা সিক্রেটে পিলে চমকানো খবর দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা এখন ভাইরাল। খবরে বলা হয়েছে যে, পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর বরাদ্দ করা ৬০ কোটি পাকিস্তানী রুপি ও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে ১৫ জন শ্যুটার যোগান সহায়তায় বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০৯ সালে ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ৭৪ জন কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয় যার মধ্যে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ছিল ৫৭ জন। আসল লক্ষ্য ছিল সরকারের পতন। এটা করতে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই প্রায় ২০০ ইমেইল যোগাযোগ করে। পিলখানা ঘটনায় সরকারের পতন না হলে নিরাপত্তাহীন হতে পারেন এই আশঙ্কা থেকে হত্যাকাণ্ড শুরুর দুই ঘণ্টা আগেই খালেদা জিয়াকে তাঁর ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে পাকিস্তান হাইকমিশন হয়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন তারেক জিয়া বলে উইকিলিক্স দাবি করেছে। হত্যাকাণ্ডের পরে এবং মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রেও বিএনপি-জামায়াতের আইনজীবীরা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের আসামীদের পক্ষ নিয়ে লড়েছেন, লড়ছেন।
এমতাবস্থায় জামায়াতের বিলুপ্তির মাধ্যমে বিএনপিতে একীভূত হওয়ার কথা প্রচার, জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার রাজ্জাকের পদত্যাগ, কোন জামায়াত নেতাকে বহিষ্কার, ১৯৭১ সালের গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য জামায়াতের ক্ষমা চাওয়ার কথা কিংবা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার দলের পদ ছেড়ে উপদেষ্টা হওয়ার গুঞ্জন, ড. কামাল আর তাঁর জামাতার গতিবিধি, সব কিছুই যেন আরেকটি ১৯৭৫ সালের জন্য অপেক্ষা বা ১৯৭২ সালের মত স্বাধীনতা বিরোধী ধর্মভিত্তিক দল আর চৈনিক বাম বা বর্তমান বিএনপি-জামায়াতের ২০ দলীয় জোটের জন্য একটি জাসদ আদলের প্ল্যাটফর্ম খুঁজে ফেরা। যাতে করে পরে যার যার ঘরে ফেরা সহজ হয়, বর্তমানেও টিকে থাকা যায়। যেমনটি হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। ১৯৭১ এর পূর্বে জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংস্থার নাম ছিল ইসলামী ছাত্রসংঘ। পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তারা ১৯৭৭ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। তাই ইতিহাস বলে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পানি ঘোলা করে ড. কামালে উপর ভর করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে নিজেদের অপকর্ম লুকিয়ে সাময়িক চুপ থাকা বামাতী-জামাতীদের অনেক পুরাতন কৌশল।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।