নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৯ অগাস্ট, ২০১৯
ডেঙ্গু সংক্রমণের মাত্রা এ বছর পূর্বের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে এক আতঙ্কের পর্যায়ে পৌঁছেছে। বড় আকারের স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এই ডেঙ্গু। যদিও এটি একটি সামাজিক সমস্যা, তবুও বলা যায়, প্রকৃতপক্ষে আমাদের অনেক স্বাস্থ্য সমস্যাই সামাজিক সমস্যা, যা স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে পরবর্তীতে আত্মপ্রকাশ করে। ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, অপুষ্টিজনিত সকল রোগ, দূর্ঘটনাজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা ইত্যাদি সবকিছুই সামাজিক সমস্যা। আর যে কোন সামাজিক সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ এ দেশে শুরু হয়েছে বর্তমান শতকের শুরুতেই। এটি প্রধানত আফ্রিকা মহাদেশের রোগ এবং ঐ মহাদেশের অধিকাংশ দেশে এ রোগের প্রাদুর্ভাব আছে। উনবিংশ শতাব্দীর শেষে এটি বিভিন্ন ট্রপিকাল ও সাব-ট্রপিকাল দেশে ছড়িয়ে পরে। যেহেতু এটি মশাবাহিত রোগ, কাজেই এ রোগ কখনই পলিও রোগের মত নির্মূল করা যাবেনা। তবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। ডেঙ্গু ভাইরাস এর ৪টি সেরোটাইপ আছে, যেগুলোকে ১,২,৩ ও ৪ নং সেরোটাইপ বলে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। যে সেরোটাইপের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গু হবে, পরবর্তীতে অন্য সেরোটাইপের ভাইরাস থেকে ডেঙ্গুরোগ হবার আশঙ্কা থাকবেই। কাজেই, একজন লোক সর্বোচ্চ ৪ বার ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে দ্বিতীয়বার বা পরবর্তীতে পুনরায় আক্রান্ত হলে রোগীর খারাপ অবস্থা হবার বেশি আশঙ্কা থাকে। আমরা জানি এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। এ মশা আরও ৩টি প্রাণঘাতী ভাইরাসের বাহক এবং সেগুলো হচ্ছে চিকুনগুনিয়া, জিকা ও ইয়োলো ভাইরাস। ইতোমধ্যে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের সংক্রমণ এ দেশে শুরু হয়েছে। কিন্তু জিকা ও ইয়োলো ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে এক মহা সমস্যার সৃষ্টি হবে। কাজেই, এডিস ইজিপ্টাই মশা ও ডেঙ্গু রোগের প্রতিরোধ কার্যক্রম সকল সেক্টরকে সম্পৃক্ত করা খুবই জরুরী।
জীবন ধারণের জন্য মশা ফুলের মধু, পাতার রস এ সবের উপরই নির্ভরশীল। যেহেতু বংশবৃদ্ধি যে কোন প্রাণির একটি সহজাত প্রবৃত্তি। সে কারণেই, ডিম পরিষ্ফুটনের জন্য রক্তের প্রয়োজন বিধায় স্ত্রী জাতীয় সকল প্রজাতির মশা রক্তের জন্য মানুষ ও প্রাণির দেহে হুল ফুটায় ও রোগ সংক্রামণ ঘটায়। স্ত্রী প্রজাতির মশা গড়ে কম বেশী দেড় মাস বাঁচলেও একটি পূর্ণাঙ্গ মশা প্রতি তিন দিনে একবার উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ডিম পাড়ে। সে কারণেই মশার বংশবৃদ্ধি ও বিস্তার অনেক অনেক বেশি।
ডেঙ্গু ছড়ানোর জন্য দায়ী এডিস প্রজাতির এ মশা খুবই অল্প পানিতে (১ চা-চামচ) ডিম পাড়তে পারে। তবে পানি হতে হবে পরিস্কার, বদ্ধ পাত্রে এবং অপেক্ষাকৃত ছায়া ও আদ্র পরিবেশে। এ জন্য ঘরের ফুলের টব, ফিজের নিচের জমাকৃত পানি ছাড়াও গাড়ীর অবব্যহৃত টায়ার, অব্যবহৃত বা জব্দকৃত গাড়ী, বাড়ীর অনাচে কানাচে পড়ে থাকা দই, আইসক্রিম, কফি, চা ইত্যাদির ছোট প্লাস্টিক পাত্র এবং এমনকি বোতলের পড়ে থাকা ছিপি, কাচের ভাঙা পাত্র সবকিছুই এ মশার ডিম পাড়ার জন্য উপযুক্ত স্থান। শুধু প্রয়োজন একটু পরিষ্কার বদ্ধ পানি। সে পানির যোগান দিতে জলবায়ু পরিবর্তন বিরাট ভুমিকা রাখছে।
জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে শুরু হয়েছে বেশ আগে। ঝড়, সাইক্লোন, বন্যা, বজ্রপাত ইত্যাদির আধিক্যের পাশাপাশি বৃষ্টিপাতে এসেছে বড় ধরণের পরিবর্তন। একে বলা হয়ে থাকে ভ্রমাত্মক বৃষ্টিপাত। বর্ষাকালে বৃষ্টি নেই। আবার হঠাৎ যখন বৃষ্টি হয়, তখন আর থামেনা। কয়েকদিনের বৃষ্টি কয়েক ঘন্টায় নামে। থেমে থেমে বৃষ্টি হয় কয়েক দিন বা মাস ধরে। এখন শ্রাবণের শেষ। অথচ শ্রাবণের ধারা এখনও চোখে পড়েনি। একদিন একটু বৃষ্টি হচ্ছে, আবার কয়েকদিন নেই। এটাই এডিশ প্রজাতির বংশ বিস্তারের মহা সুযোগ। এক নাগাড়ে বৃষ্টি হলে পাত্রের জল বদ্ধ থাকেনা, উপচিয়ে পড়ে যায়। ফলে এডিশ মশার বংশ বৃদ্ধি ঘটেনা। দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল এবং আজ ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে। ফলে ডেঙ্গুর সংক্রমণের মাত্রা এখনই কমতে শুরু করবে। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবজনিত বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন এডিস মশার বংশ বিস্তার এবং ডেঙ্গুসহ সংশ্লিষ্ট রোগের সংক্রমণে বড় ধরণের প্রভাব ফেলছে।
আমাদের দেশ বর্তমানে যেমন দ্রুত গতিতে উন্নয়নের রাস্তায় অগ্রসর হচ্ছে, তেমনি এর সাথে পাল্লা দিয়ে ভোগ্যপণ্য ব্যবহারের মাত্রা বাড়ছে। ছোট কাপে দই, কফি, আইসক্রিম ইত্যাদি ছোট শহরে পৌঁছে গেছে। পানি এবং বিভিন্ন ধরণের পানীয় ও ফলের রসের বোতল এখন ছোট মুদি দোকানে পাওয়া যায়। শহরে এর ব্যবহার বাড়ছে এবং পর্যায়ক্রমে গ্রাম পর্যায়ে তা সম্প্রসারিত হচ্ছে। কিন্তু এসব ব্যবহারের পর উৎপাদিত বর্জ্য বর্জনের অভ্যাস তেমন পরিবর্তিত হয়নি। বর্জ্য ছুড়ে ফেলার মানসিকতা ও অভ্যাস আমাদের অনেক পুরানো। উন্নয়নের সাথে বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় একই মাত্রায়। ছোটকালে লঞ্চে যাতায়াত করার সময় দেখেছি- লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তি যা লঞ্চের ভিতরে লাগানো থাকতো। যেমন ‘ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলুন, ডেকে ফেলে নোংরা করবেনা’ ইত্যাদি। এ মানসিকতার খুব একটা উন্নতি হয়নি। গাড়ীর কাঁচ নামিয়ে বর্জ্য এমনকি কলার ছোলা বাইরে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলতে দেখেছি এই সাম্প্রতিককালেও। আমাদের উন্নয়নের সাথে বর্জ্য বৃদ্ধি পাবে, আর আমরা সব বর্জ্য বাইরে ফেলবো এবং সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার মেয়রগণ তা পরিস্কার করার ব্যবস্থা করবেন- এ অসুস্থ্য মানসিকতার পরিবর্তন হতেই হবে। এসব বর্জ্যের মধ্যে ছোট ছোট কোন পাত্র বা এমনকি পানির বোতলের ছিপি বা মুখ বাইরে থাকলে এবং তাতে একটু বৃষ্টির পানি জমলেই এডিস মশার জন্য যথেষ্ট। যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কয়েকদিন বিরতি দিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে, তাই এসব ছোট পাত্রে এবং এমনিক বোতলের ছিপিতে জমা পাত্রে ডেঙ্গু মশার বিস্তার ঘটছে। ভোগ্যপণ্য ব্যবহারের মাত্রা যেহেতু শহরাঞ্চলে বৃদ্দি পেয়েছে, কাজেই এবারে ডেঙ্গু রোগের সংক্রামণ সব জেলা শহরে পৌছে গেছে। আমরা সচেতন না হলে এবং সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ না হলে তা গ্রাম পর্যায়ে ছড়াতে খুব বেশি সময় লাগবে না।
কাজেই, সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা কর্তৃক ড্রেনে ঔষধ ছিটালে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। ঘরের এবং আশেপাশের এসব ছোট পাত্রে পানি জমার উৎস বন্ধ করতে হবে। এ মশা দিনে বা রাতে কামড়ায়না। এর আক্রমণ প্রধানত; খুব সকালে ও সন্ধ্যার আলো আধারীতে। দিনে ও রাতের বেলায় এরা ঘরের মধ্যেই থাকে। থাকার স্থান হচ্ছে পর্দা, কাপড়, দড়ি বা এরূপ কোন ঝুলন্ত বস্তু। কাজেই, ছোট পাত্র ছুড়ে ফেলার অভ্যাস পাল্টানো, ঘরে ও আশেপাশে এরূপ পাত্রে পানি জমার উৎস বন্ধ করা এবং দিনে ও রাত্রে ঘরের পর্দা, কাপড়, দড়ি এবং অন্যান্য ঝুলন্ত বস্তুর উপর মশা মারার ব্যাট চালনা করে বসে থাকা মশা নিধন করাই হবে বর্তমানে প্রধান কাজ। ডেঙ্গু রোগ হলে আতঙ্কিত হওয়ার পরিবর্তে ডেঙ্গু রোগ ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি জেনে পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। এ মশা যখন আছে এবং থাকবে, কাজেই ডেঙ্গুর পাশাপাশি চিকুনগুনিয়া, জিকা ও ইয়োলো ভাইরাস আসার যত রাস্তা তৈরী আছে, তা বন্ধ করার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
ড. মিহির কান্তি মজুমদার, চেয়ারম্যান, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, (সাবেক সচিব)।
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।