নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১০ জানুয়ারী, ২০২০
আমার এই লেখাটি জানুয়ারির ১০ তারিখ প্রকাশিত হওয়ার কথা। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধকে দেখেছি তাদের কাছে অনেকগুলো তারিখ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ, তবে দুটি তারিখ ছিল অবিস্মরণীয় উল্লাসের। একটি ষোলই ডিসেম্বর- যেদিন পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে, আরেকটি ছিল জানুয়ারির ১০ তারিখ যেদিন বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি কিংবা পৃথিবীর যেসব মানুষ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটি জানে না তারা অবাক হয়ে ভাবতে পারে একটি দেশের মুক্তি আর একটি মানুষের মুক্তি কেমন করে সমার্থক হতে পারে? কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু সমার্থক।
যখন এই দেশের যুদ্ধাপরাধীরা সরকারের অংশ ছিল তখন আমি অনেক খাটাখাটুনি করে খুবই ছোট একটা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখেছিলাম, সেটি এত ছোট ছিল যে এটাকে বই না বলে পুস্তিকা বলা যুক্তিসঙ্গত। উদ্দেশ্য ছিল যেন এই দেশের নূতন প্রজন্ম কোনো ধরনের বড় প্রস্তুতি ছাড়াই ছোট ইতিহাসটি পড়ে ফেলতে পারে। আমরা খুব আনন্দ নিয়ে লক্ষ্য করছিলাম সত্যি সত্যি আমাদের নতুন প্রজন্মের অনেকেই এই ছোট ইতিহাসটা পড়ে মুক্তিযুদ্ধের জন্য এক ধরনের আগ্রহ এবং ভালোবাসা অনুভব করেছে।
সেই সময় আমি এক ধরনের ছেলেমানুষী কৌতূহল নিয়ে ভেবেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যদি আরও ছোট করে লিখতে হয় তাহলে সেটি কেমন দেখাবে? বাইশ পৃষ্ঠায় না হয়ে এক পৃষ্ঠায়? কিংবা আরও ছোট, এক পৃষ্ঠা না হয়ে এক প্যারাগ্রাফে? কিংবা আরও ছোট, এক লাইনে? আমি তখন এক ধরনের বিস্ময় নিয়ে আবিষ্কার করেছিলাম যে, কেউ যদি এক লাইনেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটুকু বর্ণনা করতে চায় সেখানেও বঙ্গবন্ধুর অবদানটুকুর কথা লিখতে হবে। সে জন্য এটি মোটেও অতিরঞ্জিত কোনো বক্তব্য নয় যে, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু সমার্থক। তাই ষোলই ডিসেম্বর যখন এই দেশের মাটিতে পৃথিবীর নৃশংসতম সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল তখন আমরা যে রকম উল্লাসে ফেটে উঠেছিলাম ঠিক একইভাবে ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু যখন এই দেশের মাটিতে পা দিয়েছিলেন তখনও বাঁধভাঙা আনন্দের বন্যায় আমরা ভেসে গিয়েছিলাম।
দিনটির কথা আমার স্পষ্ট মনে আছে। মুক্তিযুদ্ধের সেই ভয়াবহ দিনগুলোতে এই দেশের অসংখ্য পরিবারের মতো আমরাও তখন পুরোপুরিভাবে সহায় সম্বলহীন, আশ্রয়হীন। স্বাধীন বাংলাদেশে বেঁচে থাকার জন্য মা আর ভাইবোন কয়েকজন ছাড়া আর কিছু নেই। বিচ্ছিন্ন হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আমরা সবাই গ্রামের বাড়িতে একত্র হয়েছি এবং তখন হঠাৎ খবর পেয়েছি বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসছেন। মুহূর্তের মাঝে আমাদের সব দুর্ভাবনা, সব দুশ্চিন্তা কেটে গেল। আমি কল্পনা করতে লাগলাম তিনি এসে দেশের হাল ধরবেন আর দেখতে দেশের আমাদের দেশের সব দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা দূর হয়ে যাবে।
সেই সময়ে ইন্টারনেট কল্পনার অতীত কোনো কিছু, টেলিভিশন শুধু বিত্তশালীদের একটি বিলাসিতা, শুধু ঘরে ঘরে রেডিও। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টাতে মুক্তিযোদ্ধারা যখন মাঠেঘাটে বনে জঙ্গলে থেকে যুদ্ধ করেছে তখন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এই দেশের মানুষের বুকে স্বপ্ন জাগিয়ে রেখেছে। যুদ্ধের খবরের পাশাপাশি বজ্রকণ্ঠ হিসেবে একটু পর পর বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠস্বর শুনিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু সেই সুদূর পাকিস্তানে কোনো একটি জেলখানার মৃত্যুর প্রহর গুনছেন, এই দেশে কী হচ্ছে তার কিছুই তাকে জানানো হয়নি। অথচ তার কণ্ঠস্বর শুনিয়ে এই দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করা হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধারা জীবনপণ করে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। তিনি সেটাও জানতেন না।
কাজেই আমরা সবাই গোল হয়ে ঘিরে বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার সেই মুহূর্তগুলোর ধারা বর্ণনাগুলো শুনে রোমাঞ্চিত হয়েছি। মানুষের ভালোবাসা খুব সহজে অনুভব করা যায়। বঙ্গবন্ধু নিশ্চয়ই এই দেশের মানুষের সেই অবিশ্বাস্য অফুরান ভালোবাসা অনুভব করেছিলেন, দেশের মাটিতে পা রেখে তার বুকের ভেতর কেমন অনুভূতি হয়েছিল সেটা আমার খুব জানার ইচ্ছা করে। দেশকে নিয়ে তার একটি স্বপ্ন ছিল সেই স্বপ্ন আমাদের ভেতরে সঞ্চারিত হয়েছিল। আমরা এখনও সেই স্বপ্ন দেখে যাচ্ছি। দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা, ষড়যন্ত্র, নিষ্ঠুরতা, ব্যর্থতা, পৈচাশিকতা কোনো কিছু কখনো আমাদের সেই স্বপ্ন কেড়ে নিতে পারেনি, কেড়ে নিতে পারবে না।
আমরা সবাই জানি স্বাধীনতার কয়েক বছরের ভেতর বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। এই মানুষটি আমার দেশের সমার্থক তাই বলা যায় দেশটিকেও এক অর্থে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন আমি নিজে দেশের বাইরে, তাই কীভাবে দেশটিকে ধীরে ধীরে পরিবর্তন করা হয়েছিল নিজের চোখে দেখতে পারিনি। দূর থেকে খবর পাই, তখনো ইন্টারনেট আসেনি তাই খবর ভাসা ভাসা, তার গভীরতা অনুভব করতে পারি না।
একসময় দেশে ফিরে এসে অবাক হয়ে দেখি, যে জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে মুক্তিযোদ্ধাদের জবাই করেছে, তারা এখন এই দেশে প্রকাশ্যে রাজনীতি করে। সবচেয়ে অবাক ব্যাপার এই দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর শেষ চিহ্নটিও মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। যে বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি স্বাধীন দেশে দিয়ে গেছেন রেডিও টেলিভিশনে সেই বঙ্গবন্ধুর নামটি পর্যন্ত উচ্চারিত হয় না। পাকিস্তানি ক্রিকেটের ভক্ত নতুন একটি প্রজন্মের জন্ম হয়েছে তারা মুখে পাকিস্তানের পতাকা এঁকে খেলা দেখে, ছোট শিশুরা জানতে চায় স্বাধীনতার ঘোষক কে। মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে এর বাইরে তাদের কোনো কৌতূহল নেই।
সবচেয়ে অশ্লীল ব্যাপারটি ঘটে পনেরোই আগস্ট, যখন বিএনপি তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাল্পনিক জন্মদিন পালন করে মহাধূমধামে, বিছানার সাইজের কেক কাটাকাটি করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে শুধু মানুষের স্মৃতি থেকে মুছে ফেলা নয়, তাকে অবজ্ঞা করা হয়, অপমান করা হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে। এত বড় দুঃসাহস কেমন করে দেখাতে পারে এই দেশের কিছু মানুষ? কেমন করে এত অকৃতজ্ঞ হতে পারে এই দেশের মাটিতে থাকা এই দেশের বাতাসে নিঃশ্বাসে নেয়া কিছু মানুষ? যে রাজনৈতিক দলটির জন্ম হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর সেই রাজনৈতিক দলটি কেন বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করতে চায়? কে আমাকে এই প্রশ্নের উত্তর দিবে?
আওয়ামী লীগের পর বিএনপি এই দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক দল একটি কর্পোরেশন নয় যে কিছু দক্ষ মানুষ সেটি কর্পোরেট কায়দায় চালিয়ে নিয়ে যাবে। সবার আগে তাদের প্রয়োজন কিছু আদর্শের। আমি রাজনীতির খুটিনাটি বুঝি না, কিন্তু তারপরও একটি বিষয় বুঝতে আমার বিন্দুমাত্র সমস্যা হয় না। সেটি হচ্ছে বাংলাদেশ পঁচাত্তর পরবর্তী সেই ভয়ংকর অমানিশার কাল পার হয়ে এসেছে। এই দেশে কোনো দল রাজনীতি করতে চাইলে এখন তাদের সবার আগে আদর্শের মূল দুটি ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে, একটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ অন্যটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু। মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে এবং বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ না করে এই দেশে কেউ আর কোনোদিন রাজনীতি করতে পারবে না। যারা মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে তারা এই দেশের আবর্জনা। আবর্জনা দিয়ে আস্তাকুঁড় ভরা যায়, রাজনৈতিক দল তৈরি করা যায় না।
পৃথিবীর খুব বেশি দেশ এককভাবে সেই দেশের স্থপতির নাম বলতে পারবে না। আমাদের খুব সৌভাগ্য, আমাদের যে রকম একটি দেশ আছে ঠিক সে রকম সেই দেশের একজন স্থপতিও আছে। এই দেশে সত্যিকারের রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি ক্যান্টনমেন্টে কিছু রাজনৈতিক দলের জন্ম হয়েছে। সেগুলোরও জন্ম হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মারা যাবার পর, কাজেই এই দেশে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। পাকিস্তান দেশটিকে ভেঙে বাংলাদেশের জন্ম দেয়াটিকে যদি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা যায় শুধু তাহলেই পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক করার চেষ্টা করতে পারে। সেই কাজটিও এখন কঠিন, পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে সবদিক দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে, এই পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা এখন কী নিয়ে কথা বলবে?
বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার জন্য এই দেশে অনেক বড় একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমি খুবই আগ্রহ নিয়ে সেই মুজিববর্ষটিকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছি। গালে পাকিস্তানি পতাকা আঁকা নতুন প্রজন্ম কিংবা স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিভ্রান্ত শিশু-কিশোর যেন এই দেশে আর কখনো জন্ম না নেয় এখন থেকে সেটিই হতে হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এই দেশের নূতন শিশুকিশোররা যেন নিজের দেশকে ভালোবাসতে পারে, নিজের দেশকে নিয়ে গর্ব করতে পারে সবার আগে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
তথ্য দিয়ে তাদের ভারাক্রান্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই। তাদের হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হবে যে এই দেশের জন্ম দিয়েছেন যেই মানুষটি তার হৃদয় ছিল আকাশের মতো বিশাল। তাদের বলতে হবে আমাদের কত বড় সৌভাগ্য যে এই দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামে সেই মানুষটির জন্ম হয়েছিল।
তা না হলে কী হতো?
লেখক : কলামিস্ট ও অধ্যাপক (অব.), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।