নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
বাংলাদেশে করোনা সংকটের সময় দুর্নীতি একটি আলোচিত বিষয়। বিশেষ করে, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছিল। এ সমস্ত দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছিল সরকারি কর্মকর্তাদের নাম। দুর্নীতি বাংলাদেশে একটি বহু চর্চিত এবং বহু আলোচিত বিষয়। অনেক সময় ঘুষ লেনদেন করা হয় কাজের গতিকে বেগবান করার জন্য। আবার এরকমও দেখা গেছে যে, ঘুষ নিয়েও অনেকে কাজ করেন না। বাংলাদেশে ঘুষের প্রকৃতি প্রকরণ নিয়ে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান তার ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ গ্রন্থে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন, যে প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল ‘শুয়রের বাচ্চাদের অর্থিনীতি’। বর্তমান সময়ে প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় এই প্রবন্ধের চুম্বক অংশটুকু পাঠকদের জন্য এখানে উপস্থাপন করছি-
…চাণক্যের অর্থশাস্ত্রের বয়সও প্রায় দু হাজার বছর হবে। চাণক্য লিখেছেন, সরকারী কর্মচারীরা দু’ভাবে বড়লোক হয়: হয় তারা সরকারকে প্রতারণা করে, অন্যথায় প্রজাদের অত্যাচার করে। চাণক্যের অর্থশাস্ত্রে সরকারী কর্মচারিদের চল্লিশ ধরনের তছরুপের ও দুর্নীতির পন্থা চিহ্নিত করা হয়েছে। দুর্নীতির কুফল সম্পর্কে সজাগ থাকা সত্ত্বেও চাণক্য রাজস্ব বিভাগে দুর্নীতি অনিবার্য মনে করতেন। অর্থশাস্ত্রের দুটি অনুচ্ছেদের নিম্নরূপ ইংরেজি রূপান্তর করা হয়েছে।
Just as it is impossible not to taste honey or poison that one may find at the tip of one’s tongue, so it is impossible for one dealing with government funds not to taste, at least a little bit of the king’s wealth. Just as it is impossible to know when a fish moving in water is drinking it, so it is impossible to find out where government servants in charge of undertaking misappropriate money.
(জিহবার ডগায় বিষ বা মধু থাকলেও তা না চেটে থাকা যেমন অবাস্তব তেমনি অসম্ভব হলো সরকারের তহবিল নিয়ে লেনদেন করে একটুও সরকারের সম্পদ চেখে না দেখা। জলে বিচরণরত মাছ কখন জল পান করে তা জানা যেমন অসম্ভব তেমনি নির্ণয় সম্ভব নয় কখন দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারিরা তহবিল তছরুপ করে)।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের মত বাংলাদেশেও ব্যাপক দুর্নীতি ছিল। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে দুর্নীতির জীবন্ত বর্ণনা রয়েছে। ষোড়শ শতকের কবি মুকুন্দরাম লিখেছেনঃ
“সরকার হইলা কাল খিল ভুমি লিখে লাল
বিনা উপকারে খায় ধুতি’’
সরল ভাষায় এর অর্থ নিম্নরূপঃ রাজস্ব কর্মকর্তা (সরকার) অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনাবাদী জমিকে কর্ষিত জমি গণ্য করছে (যার ফলে অতিরিক্ত খাজনা দিতে হবে) এবং ধুতি ঘুষ নিয়েও সঠিকভাবে কাজ করছে না। মুকুন্দরামের লেখা পড়ে মনে হয় ঘুষ দেওয়াতে তাঁর দুঃখ নেই। তাঁর দুঃখ হল ধুতি উৎকোচ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ষোড়শ শতকের বাঙ্গালী কবি ও ক্যারিটের বর্ণিত পাঞ্জাবী ঠিকাদারের নালিশ একইঃ “ শুয়র কা বাচ্চারা” জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। বাংলা লোক সাহিত্যেও এই ধরণের দুর্নীতির উল্লেখ রয়েছে। মলুয়া লোকগীতিতে স্থানীয় কাজী সম্পর্কে নিম্নরূপ বর্ণনা দেখা যায়ঃ
“বড়ই দুরন্ত কাজী ক্ষেমতা অপার
চোরে আশ্রা দিয়া মিয়া সাউদেরে দেয় কার
ভাল মন্দ নাহি জানে বিচার আচার
কূলের বধূ বাহির করে অতি দুরাচার।’’
(বড় দুরন্ত কাজীর অপার ক্ষমতা রয়েছে। সে চোরকে আশ্রয় দেয়, সাধুকে দেয় কারাবাস, ভাল মন্দ বা আচার বিচার জানে না। সে এতই খারাপ যে কুলের বধূদের ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসে)।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এ ধারণাই স্পষ্ট হয় যে, দুর্নীতি এ দেশে মোটেও অভিনব নয়। অন্যান্য সমাজেও দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি রয়েছে। দুর্নীতি একটি অতি পুরানো ও জটিল সামাজিক সমস্যা হওয়া সত্ত্বেও অর্থনীতিবিদরা তাঁদের তত্ত্বে দুর্নীতির ক্ষতিকর দিকসমূহ দীর্ঘদিন ধরে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছেন। এই উপেক্ষার কারণ দুটিঃ একটি ঐতিহাসিক ও অন্যটি তাত্ত্বিক।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, দুর্নীতির সাথে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের কোনো বৈরিতা নেই। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে, দুর্নীতির পঙ্কেই বিকশিত হয়েছে পুঁজিবাদের শতদল। ইউরোপে অনেক পুঁজিপতিই জীবন শুরু করেন একচেটিয়া ব্যবসায়ের লাইসেন্সের এবং কর ইজারার মত সরকারী দায়িত্বের অপব্যবহার করে। উনবিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাদেশিক ও স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক দুর্নীতি বিশ্ব –বিশ্রুত। লুণ্ঠন হতে প্রাথমিক পুঁজি সংগ্রহ করে যারা বড়লোক হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তারাই দস্যু-কুবের (robber baron) নামে পরিচিত। চীন দেশে দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছেঃ বড় ধরণের ডাকাতরা ব্যাংক স্থাপন করে। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে দুর্নীতি সত্ত্বেও উন্নত দেশসমূহে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। তবে এ সব তথ্যের ভিত্তিতে দুর্নীতি ও উন্নয়নের মধ্যে কোন কার্যকারণ সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠা করা যায় না।
তাত্ত্বিক দিক থেকেও অনেক সমাজবিজ্ঞানী মনে করেন যে, দুর্নীতি উন্নয়নের জন্য সহায়ক। পুঁজিবাদের বিকাশের পথে রাষ্ট্রযন্ত্রে যে সব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, ব্যাপক রাজনৈতিক পরিবর্তন ছাড়া তাদের অপসারণ সম্ভব নয়। পক্ষান্তরে প্রশাসনিক অচলায়তনে দুর্নীতির মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে বিভিন্ন বাধা এড়ানো সম্ভব হয়। ঘুষের মাহাত্ম্যে লাল ফিতার দৌরাত্ম্যকে পাশ কাটিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত পাওয়া সম্ভব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শক হান্টিংটন তাই ফতোয়া দেন, অতি কেন্দ্রীভূত সৎ আমলাতন্ত্রের চেয়ে। অতি কেন্দ্রীভূত ঘুষখোরে আমলাতন্ত্র শ্রেয়। অবশ্য এ ধরনের যুক্তির দুর্বলতা রয়েছে। দ্রুত সিদ্ধান্তের জন্য একবার ঘুষ দেওয়া শুরু হলে, ঘুষ ছাড়া কোন সিদ্ধান্তই পাওয়া যাবে না। ঘুষ না পাওয়া পর্যন্ত সকল সিদ্ধান্তই আটকে থাকবে। দীর্ঘ মেয়াদে দুর্নীতি দ্রুত সিদ্ধান্তের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।
হান্টিংটন সাহেবের বক্তব্যের সব চেয়ে বড় দুর্বলতা হল যে, তিনি দুর্নীতি- পরায়ণ আমলাদের নেহাত খারাপ লোক মনে করেন। কিন্তু তিনি ‘‘ শুয়রের বাচ্চা’’ পর্যায়ের আমলাদের কথা চিন্তা করেননি। আধুনিক অর্থনীতিবিদগণ বলছেন, ঘুষ হচ্ছে এক ধরণের অলিখিত চুক্তি। আদালতের মাধ্যমে এ ধরণের চুক্তি কার্যকর করা সম্ভব নয়। বিশ্বাস ভঙ্গের সম্ভাবনা এখানে বেশি। তাই অর্থনীতিবিদরা দু’ ধরণের দুর্নীতির মধ্যে তফাৎ করে থাকেনঃ নির্ভরযোগ্য (predictable) দুর্নীতি ও অনির্ভরযোগ্য (unpredictable) দুর্নীতি। নির্ভরযোগ্য দুর্নীতি হলো সে ধরণের ব্যবস্থা যেখানে ঘুষ দিলে লক্ষ্য অর্জিত নিশ্চিত। বিনিয়োগকারীদের এ ধরণের দুর্নীতিতে অরুচি নেই, বরং এ ধরণের দুর্নীতি তারা পছন্দ করেন, কেননা ঘুষ দিয়ে তাড়াতাড়ি কাজ করিয়ে নেওয়া যায়। অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর হলো অনির্ভরযোগ্য দুর্নীতি, যাকে মাইকেল ক্যারিট সাহেব “শুয়রের বাচ্চাদের” দুর্নীতি বলে অভিহিত করেছেন। অনির্ভরযোগ্য দুর্নীতি ঘুষ দিয়েও কার্যসিদ্ধির কোন নিশ্চয়তা নেই। বিভিন্ন রাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, একনায়কত্ব ও কেন্দ্র্রীভূত শাসন ব্যবস্থা নির্ভরযোগ্য দুর্নীতির জন্য অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করে। যেখানে ক্ষমতা খণ্ডিত সেখানে ঘাটে ঘাটে নজরানা দিতে হয়। এর ফলে ঘুষ বাবদ ব্যয় বেড়ে যায়। অন্যদিকে বহু সংখ্যক ব্যক্তি ঘুষের ক্ষেত্রে নিমকহালালি করবে তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। গণতান্ত্রিক পরিবেশে তাই ‘শুয়রের বাচ্চা’ কর্মকর্তাদের প্রাধান্য দেখা দিতে পারে।…
(সংক্ষেপিত)
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।