ইনসাইড থট

পিতার স্বত্তা তুমিই জানান দিলে, তুমিই আজ পিতার প্রতিচ্ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:৩০ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০


Thumbnail


শুভ জন্মদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা -আমাদের প্রানপ্রিয় নেত্রী l  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পর রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তুমি বাংলাদেশকে এবং বাঙালী জাতিকে যা দিয়েছো - বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছো, যতদিন বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে, ততদিন বাংলাদেশ আর বাঙালী তা মনে রাখবে l তোমার নেতৃত্ব, তোমার শাসন, তোমার ভালোবাসা আর মমত্ববোধ, তোমার সাহস, সততা আর দৃঢ়তা, তোমার মেধা আর দূরদৃষ্টি তোমাকে কালোত্তীর্ণ করেছে l  তোমার সব যুগান্তকারী সাফল্য, অবদান আর মহানুভবতার জন্য হাজার বছর পরও তোমার নাম উজ্জ্বল হয়ে থাকবে বাঙালীর হৃদয়ে l 

পিতা হত্যার পর তোমার কারণেই আমরা আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। তোমার কারণেই আমরা মুক্তি সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধের কথা জানতে পেরেছিলাম। গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছিলাম। মানুষ তার অধিকার ফিরে পেয়েছিল। তুমিই বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী হেনরী কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ির মতো ষড়যন্ত্রমূলক অপবাদ মিথ্যা প্রমাণ করে বাংলাদেশকে আজ উন্নয়নসহ সকল ক্ষেত্রে পৃথিবীর বুকে নেতৃত্বের পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছ। আর্থ-সামাজিক সকল ক্ষেত্রের উন্নতিতে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ বিশ্বে আজ এক অনন্য উদাহরণ। সমগ্র বিশ্বে গণতন্ত্রের মানসকন্যা থেকে তুমি আজ ‘উন্নয়ন কন্যা’য় ভূষিত। তোমার মানবিকতা আর মমত্ববোধের জন্যে তুমি ‘মানবতার মা’ হিসেবেও অভিষিক্ত। তুমি এসেছিলে বলে খাদ্য ঘাটতির দেশ বাংলাদশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। তোমার নেতৃত্বেই জাতির পিতা সূচিত বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম সফল পরিণতির দিকে যাচ্ছে। পঁচাত্তরে পিতার হত্যার পর দেশের স্বাধীনতার সূর্য যখন প্রায় অস্তমিত হতে যাচ্ছিল, তোমার প্রত্যাবর্তন আর তোমার নেতৃত্বের জন্যেই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির সার্থকতা প্রমাণিত হয়েছে। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, তোমার মতো একজন কালজয়ী নেতাকে আজকের দিনে তিনি আমাদের মাঝে পাঠিয়েছিলেন l 

তোমার শৈশব, তোমার কৈশোর, তোমার তারুণ্য তথা তোমার সমগ্র জীবন কেটেছে নানা রকম সংগ্রাম আর চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে l জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা হিসেবে তুমি আমাদের কাছে এক জীবন্ত কিংবদন্তি l পিতা হত্যার পর প্রায় ছয় বছর তুমি খুনিদের সরকারের কারণে নির্বাসনে ছিলে l ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে  আসার পর তুমি সংবিধান লঙ্ঘনকারী সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের লড়াই শুরু করেছিলে। সেই লড়াইয়ে তুমিই নেতৃত্ব দিয়েছ। তোমার দাবিতেই এদেশে জবাবদিহিতামূলক সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জাতির পিতার হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ তুমিই বাতিল করে খুনিদের বিচার শুরু করেছিলে। পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় কোনো রাষ্ট্রে এই ধরনের বর্বর কালো আইন জারী হয়েছিল কিনা সেটি আমার জানা নেই। খুনিদের বিচার এখনও কার্যকর করা হচ্ছে। জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল কারণ তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছিলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি মুক্তি সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই সংগ্রাম আর যুদ্ধের তিনি মহানায়ক ছিলেন। পঁচাত্তর থেকেই এই বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার হতে শুরু করল। বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী আমাদের মুক্তি সংগ্রামের মহান আদর্শগুলোকে দুর্বল ও প্রয়োজনে ভুলুন্ঠিত করার লক্ষ্যে ঐতিহাসিকভাবে আমাদের গৌরবের প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় অর্জনগুলোকে বিতর্কিত ও দুর্বল করার কৌশল গ্রহণ করেছিল। এই প্রক্রিয়ায় ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে লেখা সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করা হলো। সংবিধানের মৌলিক অংশ প্রস্তাবনা থেকে অবৈধভাবে মুক্তি সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধের কিছু মৌলিক আদর্শ বাতিল করে সেখানে প্রতিস্থাপন করা হলো ঐ আদর্শ বিরোধী বিধান। রাষ্ট্রের এই সর্বোচ্চ আইনের আরও অনেক জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সম্বলিত বিধানগুলো বাতিল করা হয়েছিল। ওই সময়ে তারা ইতিহাস বিকৃতির মহোৎসবে মেতে উঠল। জাতির পিতার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হল। সরকারি ও প্রশাসনিকভাবে ‘বঙ্গবন্ধু’ নামটি নিষিদ্ধ করা হলো। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিসংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে সংবিধান লঙ্ঘনকারী সামরিক শাসকগুলো একই রকম আচরণ করেছে। তাদের অবস্থান বাংলাদেশের আদর্শের বিপক্ষেই ছিল।

বাংলাদেশের গণতেন্ত্রের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তুমি অনেক ধৈর্য ধারণ করেছিলে; অনেক অপমান আর অত্যাচার সহ্য করেছিলে। কত অপপ্রচারই না করেছিল তারা তোমার বিরুদ্ধে! তোমার কষ্ট আমরা বুঝতাম, কারণ আমরা তোমারই অংশ। তুমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাতি বয়ে বেড়িয়েছ বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। তুমি মানুষকে জাগিয়ে তুলেছ, ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চার করেছ। তোমার হাতে পিতার আদর্শের বাতি দেখে মানুষ প্রজ্জ্বলিত মশাল নিয়ে ছুটেছে। তুমি নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়েছ আদর্শের চেতনা, তাদের দেখিয়েছ নতুন স্বপ্ন। বাংলাদেশের স্বপ্ন। তোমার এই সময়টি বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘এনলাইটেনমেন্ট’ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। তোমার ছড়ানো আদর্শ আর তোমার দেখানো স্বপ্নে মানুষ জেগে উঠেছিল। তুমিই তাদের বুঝিয়েছ, এই রাষ্ট্র জনগণের মালিকানাধীন – এটি রিপাবলিক, কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কুক্ষিগত সত্তা নয়। তোমাকে বাঙালি বারে বারে সমর্থন দিয়েছে, তাদের সবটুকু ভালবাসা তারা তোমাকে উজার করে দিয়েছে।

তুমি শাসনভার নিয়েছ জনগণের জন্য, আমাদের সকলের জন্য। তোমার প্রতিটি সিদ্ধান্ত যেন জনগণেরই সিদ্ধান্ত। তুমি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছ, গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা দিয়েছ আর সংসদকে সত্যিকার অর্থে কার্যকর করে সংসদের কাছে সবার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছ। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে একটি গোষ্ঠী সেনাবাহিনীকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে – আমাদের বিরুদ্ধে কত যে অপপ্রচার করেছিল, সে কথা নিশ্চয়ই তোমার মনে আছে। তারা অপপ্রচার চালিয়েছিল, আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু পরিবার সেনাবাহিনী বিরোধী – সেনাবাহিনীর সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। অশুভ শক্তির এই অপপ্রচার বহুদিন চলেছে। অথচ মানুষ আস্তে আস্তে জানতে পেরেছে, এই সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুর হাতে তৈরি বাহিনী। তারা জানতে পেরেছে, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ দুই পুত্র সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন আর শিশু পুত্র রাসেল দুই ভাইকে অনুসরণ করে সৈনিক হতে চেয়েছিল। সেই কথা আজ তোমার জন্যই সবাই জানতে পারছে। সেই অশুভ শক্তির এক প্রতিভু যখন বহুবছর ধরে সেনানিবাস দখল করে ছিল এবং অশুভ শক্তির এই অবস্থানকে তাদের ক্ষমতার একটা কেন্দ্র মনে করা হতো, তুমিই তখন জাতির শক্তির প্রতিভু হয়ে সেনানিবাসকে দখল মুক্ত করেছিলে।

ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে লেখা আমাদের সংবিধানকে তুমি কলঙ্কমুক্ত করেছ। পঁচাত্তরের পর অসাংবিধানিক সরকারের সময় এই পবিত্র সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়। তুমিই এই সংবিধান থেকে মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী সকল বিধান বাতিল করেছিলে। তুমি ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানে আবার প্রতিষ্ঠিত করেছ। উন্নয়নশীল বিশ্বে তুমিই একমাত্র সফল রাষ্ট্রনায়ক যিনি সংবিধানকে সকল অপশক্তি থেকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য বিশেষ সাংবিধানিক রক্ষাকবচ (constitutional entrenchment) তৈরি করেছে যার সুফল আজ গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষ পাচ্ছে। তুমিই এদেশে গণহত্যাকারী, মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে যুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছ। মানবতাবিরোধী অপরাধকারীদের গাড়িতে যখন জাতীয় পতাকা উড়ছিল, তখন এদেশে তাদের বিচার হবে না – এই রকম একটা ধারণায় যখন মানুষ হতাশাগ্রস্ত ছিল, তুমি তখন জাতির সামনে আশার আলো প্রজ্জ্বলিত করেছিলে। জাতির পক্ষে ঘোষণা দিয়ে এই নরঘাতকদের তুমি বিচার করেছিলে। বাঙালির ইতিহাসে জাতি হিসেবে এটি একটি মাইলফলক অর্জন ছিল। এর কৃতিত্ব তোমারই প্রিয় নেত্রী।

রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে তুমি অনন্য সাফল্য দেখিয়েছ। জাতির পিতার দূরদর্শী সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় তোমার ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ (মধ্যম আয়ের দেশ) ও রূপকল্প-২০৪১ (উন্নত দেশের মর্যাদা) অর্জনে জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তুমি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছ। তুমি শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, গোটা উন্নয়নশীল বিশ্বের একমাত্র সরকার প্রধান যিনি জ্বালানী নিরাপত্তার বিষয়টিকে জাতীয় নিরাপত্তার সমার্থক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছ। ১৯৯৭ সাল থেকে তুমি সরকার প্রধান হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছ। পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্র ও উন্নয়ন সহযোগী এই মডেলটির প্রশংসা করেছে। তোমার সরকার এক দশকে দেশে ব্যাপকভিত্তিক শিল্পায়ন, বিনিয়োগ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে অব্যহতভাবে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং অর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে নবদিগন্তের সূচনা করে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছে। এক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান জ্বালানীর চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানী সরবরাহ অন্যতম প্রধান নিয়মক হিসেবে কাজ করেছে।

তুমিই দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম রাষ্ট্রনায়ক যিনি ‘এনার্জি ডিপ্লোমেসি’-কে আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক ও দ্বি-পাক্ষিক পর্যায়ে প্রধান্য দিয়ে আসছ। তোমার উদ্যোগে ভারত থেকে নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ীমূল্যে বিদ্যুৎ আনার জন্যে ভেড়ামারায় যে ক্রসবর্ডার ইন্টারকানেকশন স্থাপিত হয়েছে, সেটি বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা। তোমার উদ্যোগে ভারতের ত্রিপুরার সাথেও ক্রসবর্ডার ইন্টারকানেকশন স্থাপিত হয়েছে। তোমার ‘এনার্জি ডিপ্লোমেসি’র ফলে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে। তুমি এটি অনুধাবন করেছিলে, জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়া যাবে না। বিদ্যুৎ আর জ্বালানীর সংস্থান আর উৎপাদনে তুমি রেকর্ড স্থাপন করেছ। একটি কথা আমরা জানি, জাতির পিতা যে গ্যাস সম্পদ আমাদেরকে দিয়ে গিয়েছিলেন, দেশের জ্বালানী নিরাপত্তা তথা সার্বিক উন্নয়নের জন্য সেই সম্পদ রক্ষা করেছিলে তুমি। এই সম্পদ রক্ষা করেছিলে বলে ২০০১ সালের প্রহসনমূলক নির্বাচনে তোমাকে হারানো হয়েছিল।

তোমার কারণেই বাংলাদেশ গঙ্গা চুক্তির মাধ্যমে ভারত থেকে ন্যায্য পানি পাচ্ছে। পৃথিবীর অনেক প্রতিবেশী এই ধরনের চুক্তি করতে পারেনি। অন্যান্য নদী থেকেও চুক্তির মাধ্যমে পানি আনার উদ্যোগ তুমিই গ্রহণ করেছ। অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির মাধ্যমে একদিকে তুমি শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছ, অন্যদিকে ঐ এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব টেকসই করার জন্য যথাযথ আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছ। তুমি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র্য সত্তাকে সুরক্ষা দিয়েছ। এই ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী চুক্তির জন্য তুমি অনায়াসেই সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক পুরষ্কার পেতে পারতে। কিন্তু বাংলাদেশ বিরোধী আন্তর্জাতিক লবি’র কারণে তোমাকে সেটি দেয়া হয়নি। পরবর্তীকালে, তোমার সব অনন্য সাফল্যের জন্য তুমি অসংখ্য বিশ্বখ্যাত পুরষ্কার ও অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছ।

তুমি আজ বাংলাদেশকে নিয়ে গেছ এক অনন্য উচ্চতায়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুমৃত্যুর হার, পরিবেশ, শিল্পায়ন, বিনিয়োগ ইত্যাদিতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে একটি অনুকরণীয় রাষ্ট্র। তোমার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উপনিত হয়েছে। দেশের এই যুগান্তকারী সাফল্যের কৃতিত্ব একমাত্র তোমার। মানুষের প্রতি তোমার মমত্ববোধ আর ভালবাসার কারণে তুমি আজ বাংলাদেশকে বানিয়েছ একটি কার্যকরী কল্যাণমুখী রাষ্ট্র। এদেশের মানুষের জন্য তোমার প্রবর্তিত ‘সোশ্যাল সেফটি নেট’ বা সামাজিক নিরাপত্তা বলয় গোটা উন্নয়নশীল বিশ্বে এক অনন্য ঘটনা।

বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে তুমি দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষা করতে গিয়েছ। দেশি-বিদেশি সকল বিশেষজ্ঞ ও গবেষকের হাইপোথিসিস’কে ভুল প্রমাণ করে তোমার সুদক্ষ ও সাহসী নেতৃত্বে এবং সফল এনার্জি ডিপ্লোমেসির কারণে তুমি মিয়ানমার ও ভারতের দাবির বিরুদ্ধে বিশাল সমুদ্রসীমা জয় করেছ। আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে পৃথিবীর খুব কম দেশই এত সফলভাবে সমুদ্রের উপর তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। এই কৃতিত্ব কেবলই তোমার।

পাকিস্তান সরকার ২৪ বছরে, জিয়া এরশাদ ও খালেদা জিয়ার মোট ৩১ বছর শাসনামলে যেখানে ভারতের সাথে স্থল সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, তোমার সুদক্ষ উদ্যোগ ও কার্যকরী ডিপ্লোমেসির কারণে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারত গ্রহণ করেছে যার মোট আয়তন ৭১১০ একর ভূমি। অন্যদিকে, ভারতের ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশ পেয়েছে যার মোট আয়তন ১৭,১৬০ একর ভূমি। এর ফলে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে ১০,০৫০ একর বা ৪০.৬৭ স্কোয়ার কি.মি. ভূমি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু কর্তৃক চুক্তি সম্পাদন ও তোমার মাধ্যমে চুক্তি বাস্তবায়নের কারণে আজ বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে এই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভূমি লাভ করল। তোমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে যেভাবে ৪০.৬৭ বর্গ কিলোমিটার ভুমি আদায় করে নিল, এটি বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এই ৪০.৬৭ বর্গ কি.মি. এরিয়া পৃথিবীর ৪টি দেশের চেয়ে বড়।

নেত্রী, তুমিই দেশের তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্য সেবা সুনিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্যখাতে কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা চালু করেছিলে। তুমি এদেশে ১৩,৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছ। আরো ৪,৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণাধীন রয়েছে। একটি স্বল্পোন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য তুমি এই যুগান্তকারী ব্যবস্থা চালু করেছিলে। এটি উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি অনুকরণীয় মডেল। দেশের সিংহভাগ মানুষ এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন। করোনাভাইরাস প্যানডেমিক মোকাবেলা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তোমার নেতৃত্বে গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় যেকোনো উন্নত দেশের তুলনায় এদেশে লকডাউন পরিস্থিতি বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। করোনাভাইরাস ইস্যুতে উন্নত দেশে শুধু চিকিৎসা সেবাই একমাত্র চ্যালেঞ্জ। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে শুধু চিকিৎসা সেবা নয়, লকডাউন কার্যকর করলে দেশের কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, খেটে খাওয়া স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিও সরকারকে দেখতে হয়। রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তুমি করোনাভাইরাস উদ্ভুত সকল বিষয় ইস্পাত কঠিন মনোবল নিয়ে পারদর্শিতার সাথে মোকাবেলা করেছো। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় যা যা প্রয়োজন তুমি তাই করেছো। তুমি দেশের মানুষকে বাঁচাতে ও অর্থনীতিকে রক্ষা করতে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার অনুদান ও প্রণোদনা দিয়েছো।

এক শ্রেণির নিন্দুক আছে যারা সারাটি জীবন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করে আসছে। তোমার প্রতিটি অর্জনেই তারা বিরোধীতা করেছে; চরম অপপ্রচার আর মিথ্যাচার করেছে। তাদের সকল অপপ্রচারকে তুমি পৃথিবীর কাছে অসত্য প্রমাণ করেছ। তাদের মিথ্যাচার আর তথ্য সন্ত্রাস এখনও থেমে নেই। এখন আবার সেই পুরোনো শকুন অপপ্রচারে নেমেছে। করোনাভাইরাস নিয়ে তারা অসংখ্য লাশ চায়। এ সংখ্যা দুই মিলিয়ন অর্থাৎ ২০ লক্ষ মানুষের। তারা অপপ্রচার করে জনমনে নানা ভীতির সঞ্চার করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে কেন এখনো যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি আর স্পেনের মতো মানুষ মরছে না, এই জন্যে তারা অত্যন্ত ক্ষুব্দ। তারা বাংলাদেশে সত্যিকারের একটা মহামারী চায় যেখানে হাজার হাজার এমনকি লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাবে। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের কয়েকজনের লেখায় সেটাই পরিষ্কার হয়েছে। বাংলাদেশ তথা বিশ্ববাসীর এই সংকটের মধ্যেও তারা সরকার পতনের উপাদান খুঁজে বেড়ায়। তারা প্রতিদিনই নানা রকমের অপপ্রচার করে যাচ্ছে। এই বৈশ্বিক মহামারী মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করণীয়, তোমার সরকার তার প্রত্যেকটিই করছে। তোমার বলিষ্ঠ নির্দেশে প্রতিটি কাজই হচ্ছে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে। পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় অনেক দ্রুত, কার্যকরী ও পেশাদারিত্বের সাথে এই কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস তুমিই পারবে এই অদৃশ্য ও অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করতে।

প্রিয় নেত্রী, তুমি ফিরে এসেছিলে বলে অশুভ শক্তি পরাস্ত হয়েছে। তোমার সংগ্রামের সময়টি বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘এনলাইটেনমেন্ট’ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। তুমি ফিরে এসেছিলে বলেই বাংলাদেশ আজ অন্ধকার থেকে আলোর পথে। বঙ্গবন্ধুর পর বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের আলোকবর্তিকা তুমিই। ‘৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের সকল অর্জন তোমার কারণেই। তোমার জন্য বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে। যতদিন এই বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে, তোমার মহান কীর্তির জন্য রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে ততদিন তোমার নামটিও থাকবে দেদীপ্যমান। তুমি হাজার বছর বেঁচে থাকবে বাঙালির হৃদয়ে।

প্রিয় নেত্রী, তোমার কারণেই অশুভ শক্তি এদেশে পরাস্ত হয়েছে l তোমার সংগ্রামের সময়টি বাংলাদেশের `এনলাইটেনমেন্ট’ অধ্যায় । পিতার স্বত্তা তুমিই জানান দিলেl পিতার মুখে দেখেছিলাম বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি, আজ বাঙালীর কাছে তুমিই পিতার প্রতিচ্ছবি l তোমার কারণেই  বাংলাদেশ আজ অন্ধকার থেকে আলোয়। বাঙালীর মুক্তি সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের আলোকবর্তিকা তুমিই। ‘৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের সকল অর্জন তোমার কারণেই। তোমার জন্য বাংলাদেশ আজ দেদিপ্যমান নক্ষত্র। তোমার মহান কীর্তির জন্য তুমি হাজার বছর বেঁচে থাকবে বাঙালির হৃদয়ে।

লেখকঃ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার ও তাৎক্ষণিক ভাবনা


Thumbnail

মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?

আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা বিরোধী।  আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা  লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে  মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে  আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।

পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা

অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না, সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।

পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায় ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।

 

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মিল্টন সমাদ্দার   গ্রেপ্তার   আইন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

আওয়ামী লীগে খুনি মোশতাকদের বাম্পার ফলন


Thumbnail

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।

খুনি মোশতাকের কথা আমাদের নিশ্চিয় মনে আছে। বঙ্গবন্ধু তাকে অনেক ভালোবাসতেন, বিশ্বস্ত মনে করতেন। খুনি মোশতাকেরও এমন অবস্থা যেন তিনি যে কোন মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আছেন। এমনও হয়েছিল যে, খুনি মোশতাকের মা মারা যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধুই তাকে সান্ত্বনা দিয়ে তার কান্না থামিয়েছেন। কিন্তু সেই মোশতাকই বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন। ঠিক একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আজকে আওয়ামী লীগে। দার্শনিক শেখ হাসিনা আপনাদের মন্ত্রী বানিয়েছেন, এমপি বানিয়েছেন, তার অনুকম্পায় আপনি রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পেয়েছেন কিন্তু আপনার স্বার্থের জন্য আপনি তারই (শেখ হাসিনা) নির্দেশনা অমান্য করলেন। আপনি উপজেলায় আপনার মত করে প্রার্থী দিলেন। সুতরাং আপনি খুনি মোশতাকের চেয়ে কম কিসে? জেলায় জেলায় আজ খুনি মোশতাক জন্ম নিয়েছে। এমনকি উপজেলা গুলোতে একই অবস্থা। ফলে এটা স্পষ্ট যে, খুনি মোশতাকের বাম্পার ফলন হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে।

আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) আওয়ামী লীগ তার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকেছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি যে কোন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত চিন্তা ভাবনা করে নেন এবং দর্শন ভিত্তিতে নেন। সুতরাং স্বাভাবিক ভাবে আমরা আন্দাজ করতে পারব না যে, তিনি কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তবে আমরা অনুমান করতে পারি যে, দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে নিশ্চিয় তিনি বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিবেন।

দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের একটি বিখ্যাত উক্তি আছে সেটি হল ‘ফর গিভেন বাট নট ফরগটেন’(forgiven but not forgotten) অর্থাৎ তিনি ক্ষমা করে দেন কিন্তু সেটা ভুলে যান না। সুতরাং যারা এখন নতুন করে খুনি মোশতাক হয়েছেন এবং যাদের বাম্পার ফলন হয়েছে তাদের এটা মনে রাখতে হবে। আগামীকাল আওয়ামী লীগ তার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত নিবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্বপূর্ণ হল দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঠিক মতই জানেন কিভাবে এই সকল খুনি মোশতাকদের কিভাবে ধরতে হবে। খুনি মোশতাক খুব ভাগ্যবান যে তিনি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার আগেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

কিছুদিন আগে বাংলা ইনসাইডারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউই রাজনীতিতে ভালো করতে পারেননি।’ উনার এই বক্তব্য ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই ভালো লেগেছে। তিনি চিরন্তন একটি সত্য তুলে ধরেছেন। সুতরাং দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের এই বিষয়টি মনে রাখা উচিত।

আমি মনে করি, দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারী এই নতুন খুনি মোশতাকরা বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে স্থান করে নিয়েছে। কেউ নিজে থেকে বা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ করলেও তিনি আসলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নয়, খুনি মোশতাকের আদর্শে দীক্ষিত হয়েছেন। যেমন জার্মানিতে এখনও হিটলারের সমর্থক কিছু লোক পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি ভাবে এখন আওয়ামী লীগের ভেতর এখনও খুনি মোশতাক এর দোসররা রয়ে গেছেন। এই সমস্ত খুনি মোশতাকদের যদি এখনই প্রতিহত না করা যায় তাহলে আওয়ামী লীগকে বুঝতে হবে তাদের জন্য সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা সেই কঠিন সময় আসার আগেই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যেন এই খুনি মোশতাকদের বাম্পার ফলন যে ভাবেই হোক ধ্বংস করে দিবেন।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশই দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ


Thumbnail

দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী

বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।

কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায় না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।

প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয় এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে।

সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন। যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে বিনির্মিত হবে।

কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।


দ্য শেখ হাসিনা   ইনিশিয়েটিভ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকেই প্রস্তুতি প্রয়োজন


Thumbnail

১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার।  জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?

১৯৯৫ সালে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেই, ১৭তম বিসিএস। জীবনে একবারই এই পরীক্ষা দেই। উত্তীর্ণ হই। সাড়ে আট বছর চাকুরী করেছি, ছেড়েও দিয়েছি । সে অন্য প্রসঙ্গ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, ল্যাপটপ কি ? অপশন ছিল- ছোট কুকুর, পর্বতারোহন সামগ্রী, বাদ্যযন্ত্র ও ছোট কম্পিউটার। উত্তর কি দিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে যে, আমি উত্তরের জায়গায় ছোট কম্পিউটারে টিক দেইনি। জীবনে যে জিনিসের নামই শুনিনি তাতে টিক দেই কেমনে ? সেকালের কোন গাইড বইতে এ ধরণের কোন প্রশ্ন বা তার উত্তর নেই বলে শুনেছি। পরীক্ষার্থীদের প্রায় ৯৯ ভাগ সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। গাইড পড়ে এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে যারা আধুনিক প্রযুক্তি বা অনাগত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধ্যান ধারণা রাখে তারা সঠিক উত্তর দিয়েছিল।

ঘটনাটি মাথায় এলো সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও দেখে। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী হুড়োহুড়ি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঢুকছে। শুনলাম তারা আসন্ন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিবে। ভিডিওটি আবার দেখার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করলাম- 'ঢাবি লাইব্রেরিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ভিড়'। সেখানে দেখি শত শত খবর। প্রতি বছর নাকি এমনটি হয়। লাইব্রেরিতে ঢুকতে হুড়োহুড়ি। পরীক্ষার আগে নাকি সেখানে এমন যুদ্ধ চলে। বিসিএস কি দু এক মাস বা দু এক বছরের প্রস্তুতির ব্যাপার ? একবার পরীক্ষা দিয়ে আমার কাছে তা মনে হয়নি। আমার মতে, এর জন্য সমগ্র শিক্ষা জীবন ধরে প্রস্তুতি প্রয়োজন। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। আমার সাথে অনেকেই একমত নাও হতে পারেন।

ছোট কাল থেকে নিয়মিত অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়া প্রয়োজন। জগৎ সংসার, দেশ বিদেশ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, খেলাধুলা বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা দরকার। কোন একটি দেশি বা বিশ্ব ইভেন্ট চলছে। সেটি চলাকালে দৈনন্দিন খোঁজ খবর রাখার পাশাপাশি ওই ইভেন্টের অতীত জেনে নিলেন। কবে থেকে ইভেন্টটি চলছে, কোথায় সেটি শুরু হয়েছিল, সেটি জেনে নিলেন। নিয়মিত সংবাদপত্র পড়লে বা টিভি সংবাদ দেখলে সেগুলি আপনা আপনি জেনে যাবেন।

তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য একটু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আমি নিয়েছি এক সপ্তাহের। তাও ইন্টার্নি চলাকালে ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে। আপনি এর জন্য সর্বোচ্চ এক মাস বরাদ্ধ রাখতে পারেন। বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস অংশে কিছু সাল মনের মধ্যে গেঁথে নেয়ার জন্য গাইড বইটি একটু চোখ বুলাতে পারেন। যে সব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো একটু দেখতে পারেন। অংকের ফর্মুলা গুলো একটু ঝালাই করে নিতে পারেন। সমসাময়িক বিশ্ব বিষয়ে অনেকের দুর্বলতা থাকে। সংবাদপত্রের এ অংশটুকু প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ অধ্যায়টিও দেখে নিতে পারেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে যদি এর চেয়েও বেশি সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার দুর্বলতা অনেক। বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকে আপনার প্রস্তুতি নেই। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মতিউর রহমানই প্রথম আলো বিক্রির প্রধান বাঁধা?


Thumbnail

দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

শুধু কর্ণফুলী গ্রুপই নয়, প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করতে স্কয়ার গ্রুপের সাথেও বেশ অগ্রসর হয়েছিলেন মতিউর রহমান। এর মধ্যে বসুন্ধারাসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমার জানা মতে সর্বশেষ এস আলম গ্রুপ এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য বেশ অগ্রসর হয়েছে এবং তারাই এখন সবচেয়ে অগ্রগামী। কিন্তু এস আলম গ্রুপ কেনার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। কারণ উনি দেখছেন যে, একমাত্র কর্ণফুলী ছাড়া অন্য যে কোন গ্রুপে গেলে তার সম্পাদক পদের নিশ্চয়তা নেই।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, যারাই ‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করুক না কেন, তারা মতিউর রহমানকে প্রথম দিকে রাখলেও পরবর্তীতে তারা পরিবর্তন করবে। যদি প্রথম আলোতে কেউ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন, আমার ধারণা আনিসুল হক আসতে পারেন। কারণ আনিসুল হক সবার কাছে যেমন সম্মানিত তেমনি জ্ঞানী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি যদি এস আলম গ্রুপ কিনে নেয় তাহলে প্রধান বাঁধা হবে মতিউর রহমান। কিন্তু তার বাঁধা টিকবে না। কারণ কোন প্রতিষ্ঠানের যদি ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব দেখা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ‘প্রথম আলো’ নিজেদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ফলে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। সাধারণত যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে তারা দেখবে। সরাসরি না হলেও প্রথম আলোর মতিউর রহমান এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছেন। যদিও মতিউর রহমান বিভিন্নিভাবে বিষয়টি প্রকাশ করে বুঝাতে চেষ্টা করছেন যে, এতে উনার কোন আগ্রহ নেই। 

তবে এর আগে থেকেই কিছু গণমাধ্যমে এসেছিল যে, মতিউর রহমন ও ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম এই দ্বন্দ্বে জড়িত রয়েছেন। যদিও বিষয়টি তাদের মধ্যকার বিষয়। কিন্তু এখন প্রথম আলো বিক্রিতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মতিউর রহমান। অচিরেই এই বাঁধা অতিক্রম করে ‘প্রথম আলো’ বিক্রি হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি কিনবে এস আলম। কারণ এস আলম একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসাতেই যুক্ত হচ্ছেন ব্যর্থ হচ্ছেন না। বরং সফল হচ্ছেন।

‘প্রথম আলোর’ কেনার জন্য দেশে যেসব কর্পোরেট হাউজগুলো আছে তাদের অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। তবে এক একজনের আগ্রহ একেক কারণে। কেউ চান প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞ জনবলের কারণে, আবার কিছু কর্পোরেট হাউজের ইচ্ছে হলো ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব একেবারে কমিয়ে আনা। এসব বিভিন্ন কারণে আগ্রহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তবে আমার বিশ্বাস প্রথম আলো বিক্রিতে যে প্রধান বাঁধা মতিউর রহমান। তার বাঁধা টিকবে না। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি একটা কর্পোরেট হাউজের হাতেই যাবে। আমার ধারণা মতে, এস আলম গ্রুপই প্রথম আলোকে কিনতে সক্ষম হবে। আমরা হয়ত কয়েক মাসের মধ্যেই দেখব যে, প্রথম আলোর নতুন মালিক হিসেবে আরেকটি কর্পোরেট হাউজ এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম আলোতে বর্তমানে যারা অভিজ্ঞ সাংবাদিক আছেন যারা শিক্ষিত তাদেরকে ইতোমধ্যে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ লোকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

আমার ধারণা, এ পর্যায়ে প্রথম আলো বিক্রি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এমনকি মতিউর রহমানের চেষ্টাও সফল হবে না। তবে আমার সবসময়ের আকাঙ্খা, সংবাদপত্রের সাথে যারা জড়িত তাদের চাকরি যেন অবশ্যই নিশ্চয়তা থাকে। কারণ এরা দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নিজেদেরকে একটা পর্যায়ে এনেছেন আর এদের চাকরি অবশ্যই থাকতে হবে এবং তাদের যে মেধা, সেই মেধা থেকে জাতি যেন বঞ্চিত না হয়।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন