নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০২১
সম্প্রতি (১৬/৩/২০২১) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে একটি অভিন্ন নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন। নানা সমালোচনা হলেও এটির কিছু ভালো দিকও আছে-বারবার অংশীজনের মতামত নেয়া হয়েছে যাতে এটি inclusive ও টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়। তবে যে বিষয়টি ওই নীতিমালা প্রণয়নে আসেনি সেটি হলো: কিভাবে পদের বিজ্ঞাপন দেয়া হবে এবং কিভাবে অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
আমরা জানি টেকসই উন্নয়ন হলো "development that meets the needs of the present without compromising the ability of future generations to meet their own needs” (United Nations General Assembly, 1987, p. 43). আমরা এটাও জানি বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন অর্জনে বিশ্বদরবারে দায়বদ্ধ। সেই দায়বদ্ধতা থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন পদ সৃষ্টি, বিজ্ঞাপন, নিয়োগ পরীক্ষার মতো বিষয়গুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দিকনির্দেশনা দিতে পারতো। যেহেতু, সেই রকম দিকনির্দেশনা আমাদের নেই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে শুরু করে বিভাগীয় সভাপতির ক্ষমতা প্রদর্শনে ব্যস্ত, আমাদের অভিজ্ঞতা ও পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলো থেকে যা জানা যায়, এরকম একটি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে কিভাবে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব হয় সেটা নিয়ে আমার আজকের আলোচনা এবং এই আলোচনার প্রেক্ষাপট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ৬ জন প্রভাষক নিয়োগের বিরুদ্ধে ৮ জন শিক্ষকের প্রতিবার ও রিট পিটিশন।
আমি ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল দর্শন বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালযে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করি। ১৯৮৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই বিভাগে আমরা তখন ৬ জন শিক্ষক। মহান আল্লাহ দেয়া এই শ্রেষ্ঠ উপহার যত্ন করে রাখতে চেষ্টা করেছি বিগত ৩১ বছর। আজ আমি এই বিভাগের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষিক। সে এক অন্যরকম আনন্দ। আমার ছাত্ররা বিগত ১০ বছরে অনেক খুব ভালো ফল করে ঢাকা রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে -উন্মুক্ত, জগন্নাথ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সহযোগী/সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছে। তারা যেকোনো সময়ে অধ্যাপক হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকে এখন অধ্যাপক। এমনকি একজন ছাত্রী কলা ও মানবিকী অনুষদে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে থেকে স্বর্ণপদক পেয়ে এখন কানাডাতে পিএইচডি করছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া থেকে এম এ করে সরকারি কলেজ চাকরি করে এখন পিএইচডি করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নতুন নিয়োগ তরুণ মেধাকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন। আমরা জানি সক্রেটিসের ছাত্র ছিলেন প্লেটো। আর প্লেটোর ছাত্র ছিলেন এরিস্টটল। একথা বলবার অর্থ হলো নতুনদের মেধা মূল্যবান। সেই মেধাকে দেশ ও জাতির কাজে লাগাতে বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্নভাবে নিয়োগ দিয়ে থাকে। জ্ঞান গরিমায় নতুনরা পুরাতনদেরকে হার মানিয়ে দিয়েছে। সুতরাং, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা অপেক্ষা করি। প্রতিবছরই এখানে নিয়োগ হয়না। আবার প্রতিটি পদ তথা প্রভাষক থেকে অধ্যাপক-বিজ্ঞাপন দিতে হয়। উদ্দেশ্য উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে যদি কেউ যোগ্য থাকেন তার জন্য সুযোগ রাখা। এখন অবশ্য সকলেই একদিন অধ্যাপক হতে পারেন আপগ্রেডিং প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে- সুতরাং নতুন কেউ যাতে না আসতে পারে সেজন্য উচ্চতর পদগুলোর বিজ্ঞাপন দেয়া হয় না। প্রাথমিকভাবে, বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসোসিয়েট নিয়োগ দেয়া হয়। যদি শুন্য পদ থাকে তবে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। আর উচ্চপদে নিয়োগ উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে অর্জন করতে হয়। আর সেকারণেই তারা র্যাংকিংয়ে স্থান পায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া অন্য সকল প্রতিষ্ঠান থেকে আলাদা। পদ শুন্য থাকলেও নিয়োগ দেয়া বন্ধ থাকতে পারে - প্রত্যাশা আগামীতে হয়তো একজন আরো ভালো শিক্ষক পাওয়া যেতে পারে। যিনি শুধু শিক্ষকই হবেন না গবেষক হবেন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন ধরণের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। কিছু শিক্ষক পাঠদান করবেন, কিছু শিক্ষক পাঠদান ও গবেষণা করবেন এবং কিছু শিক্ষক গবেষণা করবেন। সেখানে আছে অর্গানোগ্রাম। যদি ২টি অধ্যাপক থাকে তবে ৪টি সহযোগী অধ্যাপক, ৬টি সহকারী অধ্যাপক এবং ৮টি প্রভাষক পদ থাকে। অর্থাৎ, সকলেই অধ্যাপক হতে পারেন না।
একজন শিক্ষক ৪০ বছর একটি বিভাগের থেকে মানুষ গড়বেন। সুতরাং, কেবল প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া যায় না। তার আরও অনেক বিষয় দেখা হয়ে থাকে। এই অন্য বিষয় দেখাটাকে যুক্তি দিয়ে অসার প্রমাণ করা যায়। তবুও আমরা এই পদ্ধতি মেনে নিয়েছি। ভালো কিছু চাই সে আশায় আমরা অপেক্ষায় থাকি।
সম্প্রতি অনুষদের এক সভায় একটি নতুন বিভাগের তরুণ শিক্ষকরা অধ্যাপকের পদ চেয়ে কথা বলছিলেন।উল্লেখ্য পদ সৃষ্টি ও বিজ্ঞাপনের জন্য দেশের সবচে পুরাতন বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগের শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটু ভিন্ন রকম। পদ সৃষ্টির রায় বিভাগের সকলের কাছ থেকে নেয়া হয় এবং সেটা অনুষদের সভায় উত্থাপিত হয় এবং সেখান থেকে অনুমোদিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে সুপারিশ আকারে অনুমোদিত হয়। এরপর সেটা সিন্ডিকেট পাশ করে। এবং চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
পদ সৃষ্টিতে এভাবে বিভাগের শিক্ষকদের সুপারিশ প্রয়োজন হলেও বিজ্ঞাপন তথা নিয়োগের সিদ্ধান্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চেয়ারম্যান নিতে পারেন। একারণেই এখানে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। দর্শন বিভাগের ৬ জন অস্থায়ী প্রভাষকের নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত মাননীয় উপাচার্য নিলেও বিভাগের শিক্ষকদের কিংবা অনুষদের মতামত নেয়া হয়নি।
আমরা মনে করি এই ৬ জন প্রভাষক নিয়োগের বিষয়টি যেভাবে ঘটছে তা টেকসই উন্নয়নের বিরোধী। টেকসই উন্নয়ন ন্যায়পরতা, অংশীজনের মতামত, rights of future generations, deliberation, inclusive decision making নৈতিক আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে।এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এসবের বালাই নেই। নেই সুশাসন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার ন্যূনতম ছাপ।
বাংলাদেশ জাতিসংঘে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করবে।সেই অঙ্গীকারে অংশীজনের মতামতকে মর্যাদা দেবে বলে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দর্শন বিভাগের শিক্ষকরা অনেকেই টেকসই উন্নয়নের উপর পিএইচডি করেছেন। আবার এই বিষয়ে অনেকেই প্রবন্ধ লিখেছেন এবং কিছুদিন আগে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল নির্মাণে অংশীজনের মতামত না নেয়াতে আন্দোলন করেছেন।
সেই বিবেচনায় বিভাগের শিক্ষকরা মনে করছেন শিক্ষক নিয়োগের বেলায়ও অংশীজনের মতামত নেয়া প্রয়োজন ছিল। এখানে সরকার গৃহীত টেকসই উন্নয়ন ধারণাকে অবজ্ঞা করে সেই সনাতনী শাসন কায়েম করা হয়েছে। ফলে বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখার সুযোগ হয়েছে।
কেন তড়িঘড়ি করে মাত্র ১৪ দিনের সময় দিয়ে এই মহামারীর সময়ে ৬ জন প্রভাষক নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা চলছে যখন কিনা যারা নিয়োজিত আছেন তারই কাজ করতে পারছেন না? কেনই বা মাত্র ৩ দিনের নোটিসে ৫৭ আবেদনকারীর ভাইভা অনলাইনে নেয়ার হচ্ছে? এই কি তাহলে সুশাসনের নমুনা!
শিক্ষকরা আরও কিছু কারণে মনে করেন এক সঙ্গে ৬ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার প্রয়োজন নেই। প্রথমত বিভাগে কোনো প্রভাষকের পদ শুন্য নেই।
বিভাগে যে শিক্ষক আছেন তাদের দিয়েই বিভাগ পরিচালনা করে আসছেন বর্তমান ও অতীত দুই সম্মানিত সভাপতি। যদি এখন ৬ জন প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হয় তবে তারা সহসাই স্থায়ী হতে পারবেন না। এবং তাদের স্থায়ী নিয়োগ দিতে হলে শুন্য ওই উঁচু পদগুলোকে Down Garde করতে হবে। ফলে বিতর্কিত upgradation নিয়ম অব্যাহত থাকবে এবং একদিন সকল পদ প্রভাষক পদে পরিনিত হবে। সুতরাং, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আলাদা নিয়োগ ব্যবস্থা ও অর্গানোগ্রাম বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
আর এই মতের শিক্ষকরা (যারা এভাবে নিয়োগ দিচ্ছেন) বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষকদেরকে পরামর্শ দেন নতুন বিভাগে অধ্যাপক পদ সৃষ্টি না করতে- যাতে বর্তমানদের সুবিধা অব্যাহত থাকে। যা অনৈতিক। ব্যক্তিগতভাবে এই নীতি আমি ও আমাদের প্রতিবাদী শিক্ষকরা পছন্দ করছেন না।
যে উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা সেই উদ্দেশ্যকে ঠিক রাখতে হলে সৃষ্ট অর্গানোগ্রাম মেনে চলতে হবে। এবং যে পদ শুন্য থাকবে সেই পদের বিজ্ঞাপন দিতে হবে। আইনের ফাঁক গলিয়ে শুন্য পদ থাকা সত্ত্বেও Upgradation নৈতিকভাবে সঠিক হয় না। সর্বোপরি সকল শুন্য পদ এখনই পূরণ করলে আগামীতে মেধাবী ছাত্র বঞ্চিত হবে যা টেকসই উন্নয়ন ধারণার পরিপন্থী।
বিগত ১০ বছরে দর্শন বিভাগে ১টি অধ্যাপক, ৩টি সহযোগী অধ্যাপক, ৪টি সহকারী অধ্যাপকের পদ শুন্য হয়েছে। এবং সেগুলো শুন্য বিবেচনা করে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। বিভাগে বর্তমানে যে কজন শিক্ষক আছেন তাদের কর্মঘন্টা হিসাব করলে কমপক্ষে ১৭৪ ঘন্টা প্রতি সপ্তাহে। বিভাগে ১ম পর্ব থেকে শেষ পর্ব এবং এমফিল শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে ৪০টি কোর্সের পাঠ দান চলছে। প্রতিটি কোর্সের ৩ ঘন্টা সপ্তাহে বিবেচনায় নিলে ৬০ ঘন্টার একটি কোর্সের জন্য ২০ সপ্তাহে পাঠদান করা হলে ১২০ ঘন্টার জনবল প্রয়োজন। সেখানে আছে ১৭৪ ঘন্টা। আর বছর ৫২ সপ্তাহ। সুতরাং অবশিষ্ট থাকে ৫৪ ঘন্টা ও পুরো একটি সেমিস্টার অর্থাৎ ১৭৪ ঘন্টা। এভাবে গণনা করলে, আর যদি সেমিস্টার সিস্টেম করা হয়, তবে আরো ৪০টি কোর্স পড়ানোর সক্ষমতা বিভাগের আছে।
উপরের পরিসংখ্যান থেকে সকলেই পদ বিজ্ঞাপনের বিপক্ষে হয়তো যুক্ত হবেন। কিন্তু তার পরেও টেকসই উন্নয়নের জন্য আমি পদ বিজ্ঞাপনের পক্ষেই থাকছি। কারণ (১) মেধাকে মূল্যায়ন করতে হবে, (২) টেকসই উন্নয়নের আলোকে বর্তমান প্রজন্মর অধিকারকে (Rights of Present generations) মর্যাদা দিতে হবে।
সেজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে আগেই সভাপতিকে বিভাগের শুন্য পদ বিজ্ঞাপন দিতে বলেছি। কারণ কিছু ভালো প্রার্থী আছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে ৬টি প্রভাষক পদের বিজ্ঞাপন দিতে হবে। যদি আগেই পদ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হতো তবে আজকে যারা প্রার্থী তারা আগেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারতো। পদ থাকার পরেও কেন বিজ্ঞাপন দেয়া হয়নি উপাচার্য ও বিভাগের সভাপতি তার জবাব দিতে পারবেন।আমার প্রশ্ন:কেন প্রভাষক পদে বিজ্ঞাপন- কেন সহকারী , সহযোগী বা অধ্যাপক পদে বিজ্ঞাপন নয়? Rights of immediate past generations কে মূল্যায়ন করতে উঁচু পদগুলোর বিজ্ঞাপন দিতে হবে।তাতে ন্যায়পরতা, সুশাসন ও স্বচ্ছতা অর্জিত হবে।
একটি ঘটনাটির কথা এখানে বলা প্রাসঙ্গিক মনে করছি। প্রায় বছর চারেক আগের কথা। আমার এক ছাত্রকে বর্তমান ইউজিসি চেয়ারম্যান আমাদের বিজ্ঞ অভিভাবক অধ্যাপক শহীদুল্লাহ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দিয়ে এসে আমাকে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন দর্শন বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রটি অসাধারণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকের চেয়ে ভালো। ১০ বছর পর প্রভাষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর ওই অসাধারণ ছাত্রটি আজ বঞ্চিত হলো। আমরা মনে করতে পারি কি ওই ছাত্রটিকে বঞ্চিত করতে এই আয়োজন ?
আজ যে ছাত্রটি জহর লাল নেহেরু -ইন্ডিয়া থেকে এমএ করে পিএইচডি করছে, যে ছাত্রীটি কানাডাতে পিএইচডি করছে, যে ছাত্রটিকে নিয়োগ দেয়ার আনন্দ স্বেচ্ছায় আমাকে কাছে ডেকে নিয়ে প্রকাশ করেন (একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন , উপাচার্য ও বর্তমান ইউজিসি চেয়ারম্যান) তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
সমাজে কিছু মানুষ আছে তারা সব কিছুতেই মন্দ দেখে বলেই আজ অন্যায় এর প্রতিবাদ হয়ে যায় প্রচারণা ও ষড়যন্ত্র। আর সেজন্য দিনে দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা হয়ে যাচ্ছে মেরুদন্ডহীন।বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং হয়ে যাচ্ছে কল্পনাতীত স্বপ্ন।
আবার ফিরে আসি দর্শন বিভাগের নিয়োগের বিষয়ে। প্রথমত, দর্শন বিভাগের সভাপতি ও মাননীয় উপাচার্য অংশীজনের অহংবোধের মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।দ্বিতীয়ত কেবল মাত্র প্রভাষক পদের বিজ্ঞাপন দিয়ে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে উচ্চতর যোগ্যতার প্রার্থীদেরকে বঞ্চিত করেছেন। তৃতীয়ত, ৬টি প্রভাষক পদের বিজ্ঞাপন ও নিয়োগ ভবিষত মেধাবীদের বঞ্চিত করবে। এটাও টেকসই উন্নয়নের পরিপন্থী এবং injustice। টেকসই উন্নয়ন আমাদেরকে শিক্ষা দেয় সব কিছুর উপরে ন্যায়পরতা বা জাস্টিসকে মূল্য দিতে। এবং এই জাস্টিস অতীত, বর্তমান ও ভবিৎষ্যৎ প্রজন্মর অধিকার সংরক্ষণের কথা বলে।
আমরা আরও জানতে পেরেছি যে, পাবলিক সার্ভিস কমিশন প্রতিদিন একটি বোর্ডে ২০ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে থাকে। আর সেখানে একটি unsecure মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিনে ৫৭ প্রার্থীর ভাইভা নেয়া হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গত একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে এই মহামারীর সময়ে অনলাইনে পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষার নীতিমালা অনুমোদন করেছে। কিন্তু তারা অনলাইনে শিক্ষক নিয়োগের জন্য কোনো নীতিমালা প্রণয়ন না করে উল্টো স্রোতে সাঁতার কাটছেন। আমরা গত ৮ জুন শতাধিক শিক্ষকের ভার্চুয়াল মিটিং এ বিষয়টি (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভা) আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে নীতিমালা প্রণয়ন করতে অনুরোধ করি যা সিদ্ধান্ত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এবিষয়ে আমরা প্রতিবাদী শিক্ষকরা ইউজিসির নজরে আনলে বিজ্ঞ কমিশন ১৩/০৬/২০১২ একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা মনে করি ইউজিসির ওই সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী ও সময়পোযোগী।
এখনোও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য অনলাইনে মৌখিক পরীক্ষার নীতিমালা প্রবর্তন করা করার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করে নি। বরং শিক্ষক সমিতির আহ্বানকে আমলে না নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ দর্শন বিভাগের ৮জন শিক্ষকের মতামতকে উপেক্ষা করে কোনো নীতিমালা ছাড়াই মাত্র ৪ দিনের নোটিসে ১২/০৬/২০২১ তারিখ একদিনে ৫৭ জনের মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছেন। সুতরাং, এটা বোধগম্য যে এখানে Injustice হয়েছে। সেই injustice থেকে আবেদনকারীদেরকে রক্ষা করতে এবং স্বচ্ছতা আনতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ৮ জন শিক্ষকের আবেদনে সাড়া দিয়ে গত ১৩ জুন তারিখ অনলাইনে মৌখিক পরীক্ষার একটি নীতিমালা প্রকাশ করেছেন। আমরা মনে করি অভিভাবক হিসেবে ইউজিসি এখানে এক অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন।
আমরা বাংলাদেশের সর্বোচ আদালতে নিবেদন করেছি এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে ইউজিসির প্রতি সন্মান রেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ যেন একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে অনলাইন নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং সেই নীতিমালা অনুসরণ করে আগামী দিনের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হোক।
আমরা মনে করি দর্শন বিভাগ সহ সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে টেকসই উন্নয়ন চিন্তার প্রতিফলন যেন ঘটে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে, জাতিসংঘে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে; মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতায়; বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার , মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী, মাননীয় সাংসদ বৃন্দ টেকসই উন্নয়নের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটি আলাদা অফিস টেকসই উন্নয়নের জন্য নিয়োজিত আছে। টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে, ন্যায়নীতির স্বার্থে, অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে এবং বর্তমান ও ভবিৎষত প্রজন্মর অধিকার সংরক্ষণ করে দেশের সকল নিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আশা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।