নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ১৯ জুন, ২০২১
ভাটি বাংলার সাংস্কৃতিক রাজধানীখ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কেন্দ্রস্থলের যে স্থানটিতে `দি আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন` প্রতিষ্ঠিত হয় এ জমিটা সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ`র নিজের ক্রয়কৃত জমি। জানা যায়, ১৯৫৪ সালে ওস্তাদ এখানে ৫৪ শতক জমি ক্রয় করেন। ১৮৬২ সালে শিবপুরে জন্ম নেয়া ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ`র বয়স তখন ৯২ বছর। ধারনা করা হয়, জন্মভূমির তিতাস-মোড়ানো সুন্দরতম মহকুমা শহরের এ জায়গাটিতে তিনি স্হায়ীভাবে বসবাস করতে চেয়েছিলেন। পরে তিনি তাঁর মত পাল্টে ভারতের মাইহার রাজ্যেই স্হায়ী হন। মূলতঃ পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা ও নিরাপত্তার প্রশ্নেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন বলে আমাদের সংগীত-সংবিৎ গবেষকগন মতামত দেন।
২) এখানে প্রাসঙ্গিক ভাবে বলে রাখা ভালো যে,
সঙ্গীতাঙ্গনটি প্রথম ০৭ বৈশাখ ১৩৮২ বঙ্গাব্দে অর্থাৎ ১৯৭৫ সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক জনাব তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী কর্তৃক উদ্বোধন করা হয়। যাত্রাকালে এর নাম ছিল `সুর সম্রাট শ্রী আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন `। বর্তমানে এখানে একটি মাঝারি সাইজের অডিটোরিয়ামের সাথে একটি পরিপাটি স্হায়ী মঞ্চসহ মোটামুটি নান্দনিকতার আবহে সংস্কৃতি চর্চা চলমান আছে। সংগীতের আসর, কবিতা আবৃত্তি , চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নাটক, সিনেমাসহ নতুন প্রজন্মের কোলাহলে বলা যায় সারা বছরই মুখরিত থাকে। যদিও এর দৃশ্যমান সম্প্রসারণ বা রূপান্তরিত কোন অবয়ব নেই।
৩) ২০১০ সালে জেলাপ্রশাসক হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যোগদান করেই সেখানকার শিল্প- সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা দিক নিয়ে কথাবার্তা শুনে আসছিলাম। এতে আমার নিজেরও খানিকটা আগ্রহ ছিল। সেসময় স্হানীয় একজন প্রবীন শিক্ষক, গবেষক ও সাংবাদিক জনাব মুহম্মদ মুসা আমার সামনে নানাবিধ তথ্য-উপাত্তের ভান্ডার মেলে ধরেন। তিনি ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে এ শহরের ভূমিকা, কথাসাহিত্য, কবিতা, গীতিকাব্য, মলয়া সংগীত, বাউল গানের দার্শনিক গভীরতা ইত্যাদি বিষয়ে বই পুস্তক, কাগজ পত্র, পত্রিকার প্রতিবেদন তথা ঐতিহাসিক ও বাস্তবভিত্তিক ডকুমেন্টস সরবরাহ করে আমাকে দ্রুত হৃদ্ধ ও সমৃদ্ধ হতে বেশ সহযোগিতা করেন। সাম্প্রতিক কালে প্রয়াত তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। তখন তাঁর এবং আরও কয়েকজন মুক্তবুদ্ধিচর্চাকারী ব্যক্তিত্বের পরামর্শ ও সংগ্রহের সমাহার থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েই ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর সঙ্গীতাঙ্গন সংলগ্ন একটি কক্ষে আমার হাতে উন্মোচিত হয়ে `সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ জাদুঘর` চালু হয়। উদ্বোধন কালে এ জাদুঘরে রক্ষিত হয়েছিল ওস্তাদজীর ব্যবহৃত বেশকিছু বিরল দ্রব্যাদি। যেমন ;সরোদ, বেহালা, সন্তুর, এস্রাজ, সৌদি আরবের বাদশাহপ্রদত্ত জায়নামাজ, মাইহার রাজ্যের রাজা প্রদত্ত গালিচা, কিছু বাদ্যযন্ত্র ও আসবাবপত্র।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ২০১৬ সালে এক মৌলবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর আকস্মিক তান্ডবের শিকার হয় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ জাদুঘর। এবং তাদের প্রথম টার্গেটে পরিনত হয় এ আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন। সেদিন তারা কেবল ভাংচুর করেই নিবৃত হয়নি, আগুনে পুড়িয়ে ধংসস্তুপে পরিণত করে জাদুঘরটি।
৪) পরবর্তীতে বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম হিসেবে আমি যোগদান করলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেই সংস্কৃতিজনদের পক্ষ থেকে পুনঃউদ্যোগ নিয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। তাঁদের নিরলস প্রচেষ্টা ও সাধ্যাতীত শ্রমের বিনিময়ে এবং একই সাথে আমার স্বতঃস্ফুর্ত আর্থিক সহায়তায় পূর্বে সংরক্ষিতজিনিসপত্রের রেপ্লিকা যোগাড় করে ২০১৮ সালের ১৭ মে তারিখে জাদুঘরটি পুনরায় উদ্বোধন করা হয়।একই স্থানে আমি দ্বিতীয়বারের মতো ওস্তাদের নামীয় জাদুঘর চালু করি। তখন পাথরের গায়ে লেখা হল,
"সন্ত্রাসী হামলায় ধ্বংসকৃত সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ জাদুঘরের পুনঃ সংস্কার ও পুনর্গঠন শেষে শুভ উদ্বোধন করেন -- ---ইত্যাদি, যা বিগত ২৮ মার্চ একই শ্রেণী গোষ্ঠীর আকস্মিক তান্ডবে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এদের পাশবিকতা আর উল্লাস-নৃত্যের তালে তালে, আঘাতে আঘাতে লুপ্ত হয়ে যায় ওস্তাদের শেষ চিহ্নবিন্দু। যেন তাঁর স্বদেশে স্বজাতির হাতেই বিলীন হল স্বঅস্হিত্ব। অথচ কী আশ্চর্য! এমন শঙ্কা ওস্তাদ আলাউদ্দিন তাঁর জীবনাবসানের প্রায় তিন দশক আগেই করেছিলেন!
৫) তবে একটি অদ্ভুত বিষয় আমি অতি নিভৃতে লক্ষ করেছি, অতীতেও বিভিন্ন সময়ে এ শহরে নানা ইস্যুতে মৌলবাদী হেফাজতী বা স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠী কর্তৃক আচমকা, আকস্মিক মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠি ধরিয়ে রাস্তায় নামিয়ে ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপূরনীয় ক্ষতি করেছে। কখনোই তারা প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়নি। সাধারণ মানুষ, ছাত্র সমাজ, সাংস্কৃতিক কর্মী বা রাজনৈতিক দলের সমর্থক কেউ বাধা দিতে এগিয়ে আসেনি বা আসার সাহস দেখাতে পারেনি। এটি যুথবদ্ধ বা সমাজবদ্ধ মানুষের একধরনের নৈতিক দুর্বলতা ছাড়া আর কিছু নয় বলে আমি মনে করি। এতেও বিস্তর ভাবনার অবকাশ আছে। মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, "ঐক্যবদ্ধ নিরস্ত্র মানুষের চেয়ে শক্তিশালী কোন বাহিনী নেই "।
৬) একটি ছোট্ট গল্প দিয়ে আজকের লেখাটি শেষ করলে মন্দ হবে না। কারন, কাকতালীয় ভাবে আজই ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ`র ছেলে জগৎ বিখ্যাত সুরসাধক ও একাত্তরের `কনসার্ট ফর বাংলাদেশ ` এ অংশ নেয়া শিল্পী ওস্তাদ আলী আকবর খান এর মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৯ সালে ৮৭ বছর বয়সে আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর আত্মার চির শান্তি কামনা করছি। তাঁর আত্মজীবনীই আমার দোহাই।
"১৯২৫-২৬ সাল হবে। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। সাথে তাঁর শিশুপুত্র আলী আকবর খান। মূলতঃ কবির অসুস্থতার খবর পেয়ে তাঁকে দেখতেই ঠাকুর বাড়িতে যাওয়া। দু`জন নানা বিষয়ে কথা বলছেন, আলী আকবর এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে। একটু পরে তার জন্য রসগোল্লা আনা হল। আলী আকবর হঠাৎ করে এসে রসগোল্লা মুখে দিয়ে তার হাতে লেগে থাকা রস রবি ঠাকুর এর দাড়িতে মুছে ফেলে। এতে কবি একেবারে স্বাভাবিক থাকলেও ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ভীষণ বিব্রত ও শর্মিন্দাবোধ করলেন। এমনকি ভবিষ্যতে যখনি তিনি এ ঘটনা মনে করেছেন তখনই
পুত্র আলী আকবর খানকে ভৎর্সনা করতে ভুলেন নি"।
উল্লেখ করা যায়, ওস্তাদজী কবিকে `গুরুদেব` আর কবি `ওস্তাদ` বলে সম্বোধন করতেন। তবে বয়সে কবি এক বছরের বড় ছিলেন।
আমার সীমাহীন সৌভাগ্য যে, সরকারের এমন বর্ণাঢ্য চাকরিতে থাকার সুবাদে সুরের ইন্দ্রজালে বিশ্বকে বেঁধে রাখার কিংবদন্তি ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ`র নামে গড়ে উঠা মিউজিয়ামটি দু`বার উদ্বোধন করি। আর আমার চরম দুর্ভাগ্য যে, দু`বারই ঢাকায় বসে টেলিভিশনের পর্দায় অশ্রুসিক্ত হয়ে নিজের সৃষ্টি অপরের হাতের নিষ্ঠুরাঘাতে নিমিষেই নিঃশেষ হতে দেখি।
১৯ জুন ২০২১ খ্রি,
০৫ আষাঢ় ১৪২৮ বঙ্গাব্দ।
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।