ইনসাইড থট

সবকিছু নষ্টদের দখলে যাবে!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ৩১ জুলাই, ২০২১


Thumbnail

নেলসন ম্যান্ডেলার এ সাক্ষাৎকারটি ১৯৯৪ সালে নেওয়া। সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন উইনফ্রে অপেরাহ। দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচনে বিপুল বিজয়ী হওয়ার পর সবে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। দীর্ঘ এ সাক্ষাৎকারে অপেরাহ জানতে চান, একটি জাতিরাষ্ট্রের উত্তরণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তার কাছে কী? নেলসন ম্যান্ডেলা জবাব দিলেন, চারটি। প্রথম দরকার যোগ্য শিক্ষক। যারা নাগরিকদের গড়ে তুলবেন। দ্বিতীয়, সৎ এবং নেতৃত্ব দিতে সক্ষম রাজনীতিবিদ। যারা দেশকে ঐক্য এবং উন্নয়নের পথে নিয়ে যাবেন। তৃতীয়ত, নিবেদিতপ্রাণ সংস্কৃতি কর্মী। যারা আমাদের সংস্কৃতিকে বিদেশি আগ্রাসন থেকে রক্ষা করবেন। চতুর্থত, দেশপ্রেমিক সুশীলসমাজ (সিভিল সোসাইটি) যারা নির্মোহ এবং পক্ষপাতহীনভাবে রাষ্ট্রের বিবেক হিসেবে কাজ করবেন। ম্যান্ডেলার এ সাক্ষাৎকারটি নতুন করে আবার পড়লাম। পড়লাম, একজন অধ্যক্ষের খিস্তি শুনে। আমার এক বন্ধু যখন এটা প্রথম পাঠাল তখন অডিও ক্লিপটি শুনতে গিয়ে একটু ধন্ধে পড়ে গেলাম। কে এসব নোংরা, কুৎসিত, অরুচিকর ভাষায় কথা বলছেন। এ যেন কলতলার অশালীন ঝগড়াকেও হার মানায়। পরে জানলাম উনি দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার। অভিভাবক ফোরামের একজন উপদেষ্টার সঙ্গে তার প্রলাপ কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে পুরোটা শোনা সম্ভব নয়। ওই অধ্যক্ষ বলছেন, ‘আমি কিন্তু গুলি করা মানুষ। রিভলবার নিয়ে ব্যাগে হাঁটা মানুষ।’ কী সাংঘাতিক! ভিকারুননিসায় এখন অস্ত্র চালানো শিক্ষা দেওয়া হয় নাকি। এত দিন শুনতাম ‘তলোয়ারের চেয়ে কলম শক্তিশালী’। এখন এই অধ্যক্ষ কী শেখাচ্ছেন, কলম-টলম সব ফালতু। আসল ক্ষমতা অস্ত্রের। এই অধ্যক্ষ বলেছেন, ‘রাস্তার মধ্যে পিটাইয়া কাপড় খুইলা ফেলব’! এসব কথা শুনে আমার দম বন্ধ হয়ে গেল।

আমার মা কিছুদিন আগে আমাদের ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে গেছেন। ৩৭ বছর রংপুরে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। কোনো দিন তাঁর কোনো ছাত্রীকে একটা গালি দিতে শুনিনি। এই ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ ছিলেন হামিদা আলী। আমি তখন ‘পরিপ্রেক্ষিত’ অনুষ্ঠান করি। ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেধাবী মেয়েরা কেন ফেল করে এ নিয়ে আচমকাই আমরা তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে গেলাম। কি বিনয়ী, কি ঋদ্ধ, পরিশীলিত একজন শিক্ষক। সেই প্রতিষ্ঠানে এ রকম একজন অধ্যক্ষ নিয়োগ পান কীভাবে? রাজনৈতিক বিবেচনায়? রাজনৈতিক বিবেচনায় অধ্যক্ষ এবং উপাচার্য নিয়োগের যে কি ভয়ংকর প্রভাব আমাদের শিক্ষার ওপর পড়ছে তা কি আমরা কল্পনা করি। আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি তখন শিক্ষক ছিলেন সরদার ফজলুল করিম, রঙ্গলাল সেন, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, কামরুদ্দিন আহমেদ (আমাদের আইন অনুষদের ডিন ছিলেন)। তাঁরা শুধু শিক্ষক ছিলেন না, একেকজন ছিলেন একটি করে প্রতিষ্ঠান। জ্ঞানভান্ডার। এখন যখন শুনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দুর্নীতির কাহিনি তখন শিউরে উঠি। এক উপাচার্য দায়িত্ব পালনকালে নিজের কর্মস্থলে ছিলেন মাত্র কয়েকদিন। তাঁর এসব কেচ্ছা-কাহিনি শুনে লজ্জায় গুটিয়ে যাই, কারণ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী উপাচার্যের গণনিয়োগ নিয়ে লিখতে আর রুচি হয় না। এখন বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি কলেজে নিষ্ঠাবান, যোগ্য শিক্ষক কজন আছেন? শিক্ষক লীগ হয়েছে কি না জানি না। হলেও অবাক হব না।

শিক্ষার যখন এই হাল তখন নতুন রাজনীতিবিদরা কীভাবে গড়ে উঠবে? তারা কলতলার খিস্তি বলবে, নয় তো পিস্তল নিয়ে ঘুরবে। ছাত্র সংসদগুলোর নির্বাচন হয় না। ডাকসুর এক নির্বাচন প্রমাণ করে দিল শিক্ষকরা এখন আর অভিভাবক নন, রাজনৈতিক দলের ক্যাডার। ছাত্র রাজনীতি নির্বাসনে। কাজেই তরুণ নেতৃত্বের পাইপলাইন বন্ধ। ফলে রাজনীতিতে ঢুকে পড়ছে পাপিয়া, সাহেদ আর হেলেনারা। হেলেনা জাহাঙ্গীর। আওয়ামী লীগের নেতা হয়েছেন ম্যাজিকের মতো। একেবারে উড়ে এসে জুড়ে বসা। হেলেনা কার সঙ্গে নেই? দেখলাম বেগম জিয়ার সঙ্গে তার ছবি। প্রয়াত জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গেও তার ছবি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গেও তার যুগলবন্দী ছবি দেখলাম। বাঃ! সেই হেলেনা আবার নতুন দোকান খুলেছিলেন ‘চাকরিজীবী লীগ’ নামে। আমি জানি হেলেনাকে নিয়ে হইচই কদিন পর মিইয়ে যাবে। যাবেই তো, কারণ কত হেলেনা, কত পাপিয়া, কত সাহেদ আওয়ামী লীগে এখনো প্রবল প্রতাপ নিয়ে আছে কে জানে? এরাই আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ হয়তো। আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরীদের রাজনৈতিক অধ্যায় শেষ প্রান্তে। রাজপথের আন্দোলনের কর্মী, আদর্শে অবিচল, ত্যাগী, দুঃসময়ের কান্ডারিরা এখন কোণঠাসা হতে হতে মৃতপ্রায়। কান পাতলেই তাদের কান্না শোনা যায়। শেখ হাসিনার পর আওয়ামী লীগ তাহলে গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আর দুর্বৃত্ত লুটেরাদের হাতে চলে যাবে? শুধু আওয়ামী লীগের এ দুরবস্থা নয়। সব রাজনৈতিক দলই দখল করে নিচ্ছে লুটেরা, ‘নষ্ট’রা। বিএনপিতে এখন পদবাণিজ্য, কমিটি বাণিজ্য ওপেন সিক্রেট। বাম দলগুলো রুগ্ন, নিঃস্ব। ইসলামী দলগুলো তো এখন দুর্নীতি এবং লাম্পট্যে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোকেও পরাজিত করেছে। কিছুদিন আগে মামুনুল হকের লাম্পট্যের যে উপাখ্যান জনসমক্ষে এসেছে তা তো পর্নোগ্রাফিকেও হার মানিয়েছে। তার মানে, গোটা রাজনৈতিক ব্যবস্থাই এখন দুর্বৃত্তরা ঘিরে ফেলেছে। ব্যাপারটা নষ্টদের দখলে চলে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ভালো না, বিএনপি আরও খারাপ, অন্যরা রুগ্ন, না হয় জঘন্য। সৎ এবং নেতৃত্ব দিতে সক্ষম রাজনীতিবিদ কোথায়?

নেলসন ম্যান্ডেলার মতে, জাতি বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ তৃতীয় বিষয় হলো সাংস্কৃতিক শক্তি। যাদের হাত ধরে আমাদের সংস্কৃতি নিজস্ব শক্তিতে বিকশিত হবে। বিদেশি আগ্রাসন রুখবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম হাতিয়ার ছিল আমাদের সংস্কৃতি। মুক্তিযুদ্ধের গান এখনো আমাদের শিহরিত করে। স্বাধীনতার পর সংস্কৃতির ধারাটা আমরা শক্তিশালী রাখতে পেরেছিলাম নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও। মঞ্চনাটক, টেলিভিশন নাটক আমাদের সংস্কৃতির ভিতরের শক্তিকে বারবার প্রমাণ করেছে। গ্যালিলিও, পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, নূরুলদিনের সারা জীবন, মুনতাসীর ফ্যান্টাসি, কেরামত মঙ্গলের মতো অসাধারণ সব মঞ্চনাটক আমাদের সংস্কৃতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। মঞ্চ থেকে প্রাণশক্তি পেয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন। হুমায়ুন ফরীদি, সুবর্ণা মুস্তাফা, আসাদুজ্জামান নূর, প্রয়াত আলী যাকের, ফেরদৌসী মজুমদার, আফজাল হোসেন, রাইসুল ইসলাম আসাদ মঞ্চ থেকে উঠে আসা তারকা। রক্তকরবী, সংশপ্তক, বাবার কলম কোথায়, পারলে না রুমকীর মতো নাটক বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসন ঠেকিয়েছে প্রবলভাবে। এরপর বাংলা নাটকের হুমায়ূন যুগের সূচনা হয়। একের পর নাটক লিখে, পরিচালনা করে হুমায়ূন আহমেদ আমাদের মধ্যবিত্তের সাংস্কৃতিক মানস গড়েছেন নিপুণ হাতে। কিন্তু তারপর নাটক এবং আমাদের সংস্কৃতিও চলে গেল দুর্বৃত্তদের হাতে। নষ্টদের হাতে সংস্কৃতি আর সংস্কৃতি থাকল না। এখন অধিকাংশ নাটকের সংলাপ অনেকটা ওই অধ্যক্ষের কথার মতোই। গান, চলচ্চিত্র তো গেছে বহু আগেই, নাটকও গড্ডলিকা প্রবাহে নামতে থাকল। যার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত হলো ‘ঘটনা সত্যি’ নাটক। ‘ঘটনা সত্যি’র মতো নিম্নমানের, অরুচিকর এবং আপত্তিকর নাটক কিন্তু হঠাৎ করেই হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে মানহীন, গল্পহীন, উদ্ভট সংলাপের নাটকের অনিবার্য ফল হলো ‘ঘটনা সত্যি’। এ নাটকটি নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংস্কৃতি কর্মীরা এ নাটকের সমালোচনায় মুখর। কিন্তু প্রশ্ন হলো, একটি নাটক নির্মাণে অনেক ধাপ পেরোতে হয়। এতগুলো ধাপ পেরিয়ে ‘ঘটনা সত্যি’ আলোর মুখ দেখল কীভাবে? তা ছাড়া নাটকটি আগে ইউটিউবে প্রচার হয়নি। দেশের প্রথম ‘ডিজিটাল টেলিভিশন’ পরিচয়দানকারী একটি বেসরকারি টেলিভিশনে এটি প্রথম প্রচারিত হয়েছে। একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অবস্থা কি এত দেউলিয়া যে যা খুশি অবলীলায় প্রচার করা যায়? অবশ্য আজকাল নাকি নাটকের কোনো পান্ডুলিপিই থাকে না। অভিনয়শিল্পীদের একত্রিত করে যা খুশি বলার নামই নাটক। কদিন আগে একটি প্রভাবশালী মিডিয়া হাউস নেটফ্লেক্স, প্রাইম ভিডিও, জি-৫, হইচই-এর আদলে একট ওটিটি প্ল্যাটফরম চালু করেছে। ১২ জুলাই বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে ‘চরকি’ নামের ওই ওটিটি প্ল্যাটফরমটি চালু হলো। নেটফ্লেক্স, প্রাইম দেখতে দেখতে ক্লান্ত এবং বাংলা কনটেন্টের জন্য তৃষ্ণার্ত দর্শক, গাঁটের পয়সা দিয়ে চরকির মেম্বার হলো। উদ্বোধনী দিনে দেখানো হলো ‘মরীচিকা’। ছাত্রদল নেতা গোলাম ফারুক অভি এবং মডেল তিন্নির প্রেম এবং মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ওই নাটক। নাটকের মান, সংলাপ, যৌনতা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলতে চাই না। এটি বোদ্ধা, সমালোচকরা মূল্যায়ন করবেন। কিন্তু নাটকের শেষটায় গিয়ে ভিরমি খেলাম। একজন হত্যাকারী, সন্ত্রাসীকে বিদেশে পালাতে বাধ্য করায় পুরস্কৃত হলেন পুলিশ কর্মকর্তা (সিয়াম)। ওমা! পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ কি তাহলে অপরাধীকে দেশত্যাগে বাধ্য করা? তাহলে অপরাধীদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় কেন? পি কে হালদার কীভাবে পালাল তা নিয়ে হুলুস্থুল হলো কেন? দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যঙ্গ করার জন্যই কি এটা করা হয়েছে? অনন্য মামুনকে যদি পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্টের অপরাধে জেলে যেতে হয়, একই অপরাধে চরকির কর্তাদের, এই নাটকের পরিচালক শিহাব শাহীন কেন স্পর্শহীন থাকবেন? এ চরকিতেই ঈদের দিন প্রচারিত হলো আরেক অখাদ্য ‘ইউ টিউমার’। অর্থাৎ আমাদের সংস্কৃতির চাবিও চলে গেছে দুর্বৃত্তদের হাতে। নষ্ট মানুষের হাতে আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতির নিপুণ নিধন চলছে এখন। আফ্রিকার মুক্তির নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা, জাতিরাষ্ট্রের বিকাশ চতুর্থ বিষয় হিসেবে দেশপ্রেমিক সুশীলসমাজের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। আমাদের সুশীলসমাজ নিজেদের কর্মকান্ড এমন এক খেলো পর্যায়ে নিয়ে গেছেন যে ‘সুশীল’ এখন একটি গালিতে পরিণত হয়েছে। নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছেন, সুশীলদের হতে হবে দেশপ্রেমিক, পক্ষপাতহীন এবং রাষ্ট্রের বিবেক। আমাদের সুশীলরা এখন মোটামুটি তিন ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ যারা সরকারের কাছ থেকে কিছু পেয়েছে। মূলত চারটি ‘প’-এর যে কোনো একটি পাওয়ার আশায় তারা নির্লজ্জ পদলেহন করে ক্ষমতাসীনদের। পদ, পদক, প্লট এবং পয়সা। আরেক পক্ষ, যারা সরকারের নেকনজরে পড়েনি তারা বিরোধী পক্ষ। এরা বিএনপি-জামায়াতপন্থি বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত। মোটা দাগে এরা আওয়ামী লীগবিরোধী। এর বাইরে এক তৃতীয় পক্ষ রয়েছে। যারা দেশের চেয়ে বিদেশিদের আস্থাভাজন হতে পছন্দ করে। বাংলাদেশকে নোংরা, আবর্জনাময়, দূষিত দেখিয়ে এরা শান্তি পায় সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ সম্পর্কে নানা নেতিবাচক তথ্য দিয়ে, বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করে। সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে যেভাবে ভয়ংকর করে দেখানো হয়েছে, আসলে কি বাংলাদেশের পরিস্থিতি তেমন? ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোয় মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রকৃত চিত্র কি অ্যামনেস্টি তুলে ধরতে পারবে? একটু খোঁজ নিলে দেখা যায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বা ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার’-কে এসব তথ্য দেয় সুশীল নিয়ন্ত্রিত কিছু দোকান। উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকার সংগঠনের নামে কিছু প্রতিষ্ঠানের কাজই হলো বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পরিস্থিতি ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে ভয়াবহ করে দেখানো। এতে এনজিওদের জন্য ফান্ড আসে। বাংলাদেশে দুর্নীতি নেই এ কথা কেউ বলবে না। কিন্তু ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল প্রতি বছর বাংলাদেশের যে অবস্থান দেখায় তা অতিরঞ্জিত। আমাদের সুশীলদের একটি বড় অংশই এ রকম দেশপ্রেমবিবর্জিত তথ্য পাচারে সরাসরি জড়িত। একটা সময় বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ পীড়িত দেখিয়ে বিদেশ থেকে অনুদান আনা হতো। সে অনুদানের টাকায় এনজিও কর্তারা দামি পাজেরো গাড়িতে গ্রাম-গ্রামান্তরে দরিদ্র নির্মূল নিয়ে নিরীক্ষায় যেতেন। মাঝে কিছুদিন এইচআইভি (এইডস) ব্যবসা রমরমা চলল। একটি এনজিও বলেছিল এইচআইভিতে নাকি বাংলাদেশের অবস্থা আফ্রিকার মতো হবে। বাস্তব পরিস্থিতি তার ধারেকাছে যায়নি। এখন বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলো এবং সুশীলদের বড় বাণিজ্য হলো রোহিঙ্গা, মানবাধিকার আর দুর্নীতি। বাংলাদেশকে যত কলঙ্কিত করা যাবে ততই ফান্ড আসবে। দেশপ্রেমবিবর্জিত এ সুশীলসমাজও নষ্টদের দখলে। এই সুশীলদের বাঁচিয়ে রাখার মহান দায়িত্ব নিয়েছেন বিরাজনীতিকরণের মুখপাত্র একটি ইংরেজি ও একটি বাংলা দৈনিকের সম্পাদক। এ দুই দৈনিকের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশে নষ্ট সুশীলদের একটা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এ সিন্ডিকেটে লক্ষণীয়ভাবে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির অবস্থান দৃশ্যমান। রাজাকারের সন্তান হয়ে গেছে পরিবেশবাদী। এদের চোখে সব খারাপ। এরা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপনের এক প্রাণান্ত চেষ্টায় লিপ্ত। ২৩ জুলাই এক বৈরী পরিবেশে টোকিওতে অলিম্পিকের উদ্বোধন হলো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘অলিম্পিক লরেল’ পেলেন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আমি বোঝার চেষ্টা করলাম কেন ড. ইউনূস ‘অলিম্পিক লরেল’-এ ভূষিত হলেন। সাধারণত ক্রীড়া ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য ২০১৬ সাল থেকে এ সম্মান দেওয়ার প্রথা চালু হয়। ড. ইউনূস ক্রীড়া ক্ষেত্রে কী অবদান রাখলেন তা নিয়ে নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে গবেষণা হবে। এ সময় অনেকেই আর্তনাদ করলেন। বিদেশে ড. ইউনূসের এত সম্মান। দেশে আমরা তাঁকে এতটুক সম্মান দিতে পারি না কেন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমার ১৯৯৭ সালে গ্রামীণফোনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দৃশ্যটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। মঞ্চে প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা উঠবেন। না, তিনি উঠলেন না। দাঁড়ালেন। ড. ইউনূসকে আগে উঠতে দিলেন। ওই অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বললেন, ‘গ্রামীণফোনের লাইসেন্স পেতে এক কাপ চা কাউকে খাওয়াতে হয়নি।’ তারপর? আমি জানতে চাইব না, গরিব মানুষের জন্য ‘পল্লীফোন’ কোথায় গেল? গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানা কি সত্যি গরিব মানুষের কাছে? ২০০৬ সালে নোবেল পেয়ে কেন ড. ইউনূস নতুন দল করলেন? ওয়ান-ইলেভেনে তিনি কী করেছিলেন? হিলারি কেন ড. ইউনূসের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তদবির করবেন? গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির চাকরির বয়সসীমাটা ড. ইউনূস কেন আগে ঠিক করে নেননি (গ্রামীণ ব্যাংকের আইনটা তো তারই করা)? এসব প্রশ্ন করে ড. ইউনূসের অর্জনকে খাটো করতে চাই না। কিন্তু আমি অবশ্যই জানতে চাই ড. ইউনূস এ দেশের দুর্যোগে-বিপদে কখনো থাকেন না কেন? টিকা সংকটের সময় তিনি বাংলাদেশের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকা চেয়ে আবেদন করলেন না কেন? আইলা, সিডরে ড. ইউনূস কোথায় থাকেন। করোনাকালে ড. ইউনূস নিজের দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ালেন না কেন? এ দেশের পবিত্র মাটিতেই ড. ইউনূস বিকশিত হয়েছেন। এ দেশের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা কেন নেই। ভারতের নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন মোদি সরকারের হাতে নিগৃহীত। কিন্তু তাতে কি ড. সেন দেশকে উপেক্ষা করেছেন। ভারতের করোনায় ড. সেনের প্রতীচি ফাউন্ডেশন কী ব্যাপক কাজ করেছে একটু দেখুন। একজন পন্ডিত, বিশ্বখ্যাত মানুষ যদি দেশের দুঃসময়ে নীরব-নিথর মূর্তি হয়ে যান তখন কি তিনি জাতিরাষ্ট্রের বিকাশের শক্তি থাকেন? সন্তান বিশ্বখ্যাত হয়ে যদি নিজের গরিব বাবা-মায়ের খোঁজ না নেয়, তাদের পরিচয় দিতে কুণ্ঠাবোধ করে তাহলে সেই সন্তানের মূল্য কী?

নেলসন ম্যান্ডেলাকে দিয়ে শুরু করেছিলাম। জাতিরাষ্ট্র বিনির্মাণে যে চার যন্ত্রের কথা তিনি বলেছিলেন বাংলাদেশে সেই চারটি খুঁটিতেই ঘুণ ধরেছে। উইপোকা খেয়ে ফেলছে। ফলে সবকিছু চলে যাচ্ছে নষ্টদের দখলে। নষ্ট আবর্জনা সরিয়ে ফেলতে আরেকটি যুদ্ধ আজ অনিবার্য।

লেখক : নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত।
ইমেইল :  poriprekkhit@yahoo.com

সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন 

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

আওয়ামী লীগে খুনি মোশতাকদের বাম্পার ফলন


Thumbnail

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।

খুনি মোশতাকের কথা আমাদের নিশ্চিয় মনে আছে। বঙ্গবন্ধু তাকে অনেক ভালোবাসতেন, বিশ্বস্ত মনে করতেন। খুনি মোশতাকেরও এমন অবস্থা যেন তিনি যে কোন মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আছেন। এমনও হয়েছিল যে, খুনি মোশতাকের মা মারা যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধুই তাকে সান্ত্বনা দিয়ে তার কান্না থামিয়েছেন। কিন্তু সেই মোশতাকই বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন। ঠিক একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আজকে আওয়ামী লীগে। দার্শনিক শেখ হাসিনা আপনাদের মন্ত্রী বানিয়েছেন, এমপি বানিয়েছেন, তার অনুকম্পায় আপনি রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পেয়েছেন কিন্তু আপনার স্বার্থের জন্য আপনি তারই (শেখ হাসিনা) নির্দেশনা অমান্য করলেন। আপনি উপজেলায় আপনার মত করে প্রার্থী দিলেন। সুতরাং আপনি খুনি মোশতাকের চেয়ে কম কিসে? জেলায় জেলায় আজ খুনি মোশতাক জন্ম নিয়েছে। এমনকি উপজেলা গুলোতে একই অবস্থা। ফলে এটা স্পষ্ট যে, খুনি মোশতাকের বাম্পার ফলন হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে।

আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) আওয়ামী লীগ তার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকেছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি যে কোন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত চিন্তা ভাবনা করে নেন এবং দর্শন ভিত্তিতে নেন। সুতরাং স্বাভাবিক ভাবে আমরা আন্দাজ করতে পারব না যে, তিনি কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তবে আমরা অনুমান করতে পারি যে, দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে নিশ্চিয় তিনি বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিবেন।

দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের একটি বিখ্যাত উক্তি আছে সেটি হল ‘ফর গিভেন বাট নট ফরগটেন’(forgiven but not forgotten) অর্থাৎ তিনি ক্ষমা করে দেন কিন্তু সেটা ভুলে যান না। সুতরাং যারা এখন নতুন করে খুনি মোশতাক হয়েছেন এবং যাদের বাম্পার ফলন হয়েছে তাদের এটা মনে রাখতে হবে। আগামীকাল আওয়ামী লীগ তার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত নিবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্বপূর্ণ হল দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঠিক মতই জানেন কিভাবে এই সকল খুনি মোশতাকদের কিভাবে ধরতে হবে। খুনি মোশতাক খুব ভাগ্যবান যে তিনি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার আগেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

কিছুদিন আগে বাংলা ইনসাইডারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউই রাজনীতিতে ভালো করতে পারেননি।’ উনার এই বক্তব্য ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই ভালো লেগেছে। তিনি চিরন্তন একটি সত্য তুলে ধরেছেন। সুতরাং দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের এই বিষয়টি মনে রাখা উচিত।

আমি মনে করি, দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারী এই নতুন খুনি মোশতাকরা বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে স্থান করে নিয়েছে। কেউ নিজে থেকে বা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ করলেও তিনি আসলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নয়, খুনি মোশতাকের আদর্শে দীক্ষিত হয়েছেন। যেমন জার্মানিতে এখনও হিটলারের সমর্থক কিছু লোক পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি ভাবে এখন আওয়ামী লীগের ভেতর এখনও খুনি মোশতাক এর দোসররা রয়ে গেছেন। এই সমস্ত খুনি মোশতাকদের যদি এখনই প্রতিহত না করা যায় তাহলে আওয়ামী লীগকে বুঝতে হবে তাদের জন্য সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা সেই কঠিন সময় আসার আগেই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যেন এই খুনি মোশতাকদের বাম্পার ফলন যে ভাবেই হোক ধ্বংস করে দিবেন।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশই দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ


Thumbnail

দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী

বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।

কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায় না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।

প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয় এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে।

সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন। যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে বিনির্মিত হবে।

কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।


দ্য শেখ হাসিনা   ইনিশিয়েটিভ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকেই প্রস্তুতি প্রয়োজন


Thumbnail

১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার।  জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?

১৯৯৫ সালে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেই, ১৭তম বিসিএস। জীবনে একবারই এই পরীক্ষা দেই। উত্তীর্ণ হই। সাড়ে আট বছর চাকুরী করেছি, ছেড়েও দিয়েছি । সে অন্য প্রসঙ্গ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, ল্যাপটপ কি ? অপশন ছিল- ছোট কুকুর, পর্বতারোহন সামগ্রী, বাদ্যযন্ত্র ও ছোট কম্পিউটার। উত্তর কি দিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে যে, আমি উত্তরের জায়গায় ছোট কম্পিউটারে টিক দেইনি। জীবনে যে জিনিসের নামই শুনিনি তাতে টিক দেই কেমনে ? সেকালের কোন গাইড বইতে এ ধরণের কোন প্রশ্ন বা তার উত্তর নেই বলে শুনেছি। পরীক্ষার্থীদের প্রায় ৯৯ ভাগ সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। গাইড পড়ে এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে যারা আধুনিক প্রযুক্তি বা অনাগত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধ্যান ধারণা রাখে তারা সঠিক উত্তর দিয়েছিল।

ঘটনাটি মাথায় এলো সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও দেখে। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী হুড়োহুড়ি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঢুকছে। শুনলাম তারা আসন্ন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিবে। ভিডিওটি আবার দেখার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করলাম- 'ঢাবি লাইব্রেরিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ভিড়'। সেখানে দেখি শত শত খবর। প্রতি বছর নাকি এমনটি হয়। লাইব্রেরিতে ঢুকতে হুড়োহুড়ি। পরীক্ষার আগে নাকি সেখানে এমন যুদ্ধ চলে। বিসিএস কি দু এক মাস বা দু এক বছরের প্রস্তুতির ব্যাপার ? একবার পরীক্ষা দিয়ে আমার কাছে তা মনে হয়নি। আমার মতে, এর জন্য সমগ্র শিক্ষা জীবন ধরে প্রস্তুতি প্রয়োজন। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। আমার সাথে অনেকেই একমত নাও হতে পারেন।

ছোট কাল থেকে নিয়মিত অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়া প্রয়োজন। জগৎ সংসার, দেশ বিদেশ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, খেলাধুলা বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা দরকার। কোন একটি দেশি বা বিশ্ব ইভেন্ট চলছে। সেটি চলাকালে দৈনন্দিন খোঁজ খবর রাখার পাশাপাশি ওই ইভেন্টের অতীত জেনে নিলেন। কবে থেকে ইভেন্টটি চলছে, কোথায় সেটি শুরু হয়েছিল, সেটি জেনে নিলেন। নিয়মিত সংবাদপত্র পড়লে বা টিভি সংবাদ দেখলে সেগুলি আপনা আপনি জেনে যাবেন।

তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য একটু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আমি নিয়েছি এক সপ্তাহের। তাও ইন্টার্নি চলাকালে ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে। আপনি এর জন্য সর্বোচ্চ এক মাস বরাদ্ধ রাখতে পারেন। বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস অংশে কিছু সাল মনের মধ্যে গেঁথে নেয়ার জন্য গাইড বইটি একটু চোখ বুলাতে পারেন। যে সব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো একটু দেখতে পারেন। অংকের ফর্মুলা গুলো একটু ঝালাই করে নিতে পারেন। সমসাময়িক বিশ্ব বিষয়ে অনেকের দুর্বলতা থাকে। সংবাদপত্রের এ অংশটুকু প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ অধ্যায়টিও দেখে নিতে পারেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে যদি এর চেয়েও বেশি সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার দুর্বলতা অনেক। বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকে আপনার প্রস্তুতি নেই। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মতিউর রহমানই প্রথম আলো বিক্রির প্রধান বাঁধা?


Thumbnail

দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

শুধু কর্ণফুলী গ্রুপই নয়, প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করতে স্কয়ার গ্রুপের সাথেও বেশ অগ্রসর হয়েছিলেন মতিউর রহমান। এর মধ্যে বসুন্ধারাসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমার জানা মতে সর্বশেষ এস আলম গ্রুপ এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য বেশ অগ্রসর হয়েছে এবং তারাই এখন সবচেয়ে অগ্রগামী। কিন্তু এস আলম গ্রুপ কেনার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। কারণ উনি দেখছেন যে, একমাত্র কর্ণফুলী ছাড়া অন্য যে কোন গ্রুপে গেলে তার সম্পাদক পদের নিশ্চয়তা নেই।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, যারাই ‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করুক না কেন, তারা মতিউর রহমানকে প্রথম দিকে রাখলেও পরবর্তীতে তারা পরিবর্তন করবে। যদি প্রথম আলোতে কেউ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন, আমার ধারণা আনিসুল হক আসতে পারেন। কারণ আনিসুল হক সবার কাছে যেমন সম্মানিত তেমনি জ্ঞানী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি যদি এস আলম গ্রুপ কিনে নেয় তাহলে প্রধান বাঁধা হবে মতিউর রহমান। কিন্তু তার বাঁধা টিকবে না। কারণ কোন প্রতিষ্ঠানের যদি ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব দেখা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ‘প্রথম আলো’ নিজেদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ফলে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। সাধারণত যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে তারা দেখবে। সরাসরি না হলেও প্রথম আলোর মতিউর রহমান এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছেন। যদিও মতিউর রহমান বিভিন্নিভাবে বিষয়টি প্রকাশ করে বুঝাতে চেষ্টা করছেন যে, এতে উনার কোন আগ্রহ নেই। 

তবে এর আগে থেকেই কিছু গণমাধ্যমে এসেছিল যে, মতিউর রহমন ও ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম এই দ্বন্দ্বে জড়িত রয়েছেন। যদিও বিষয়টি তাদের মধ্যকার বিষয়। কিন্তু এখন প্রথম আলো বিক্রিতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মতিউর রহমান। অচিরেই এই বাঁধা অতিক্রম করে ‘প্রথম আলো’ বিক্রি হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি কিনবে এস আলম। কারণ এস আলম একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসাতেই যুক্ত হচ্ছেন ব্যর্থ হচ্ছেন না। বরং সফল হচ্ছেন।

‘প্রথম আলোর’ কেনার জন্য দেশে যেসব কর্পোরেট হাউজগুলো আছে তাদের অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। তবে এক একজনের আগ্রহ একেক কারণে। কেউ চান প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞ জনবলের কারণে, আবার কিছু কর্পোরেট হাউজের ইচ্ছে হলো ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব একেবারে কমিয়ে আনা। এসব বিভিন্ন কারণে আগ্রহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তবে আমার বিশ্বাস প্রথম আলো বিক্রিতে যে প্রধান বাঁধা মতিউর রহমান। তার বাঁধা টিকবে না। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি একটা কর্পোরেট হাউজের হাতেই যাবে। আমার ধারণা মতে, এস আলম গ্রুপই প্রথম আলোকে কিনতে সক্ষম হবে। আমরা হয়ত কয়েক মাসের মধ্যেই দেখব যে, প্রথম আলোর নতুন মালিক হিসেবে আরেকটি কর্পোরেট হাউজ এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম আলোতে বর্তমানে যারা অভিজ্ঞ সাংবাদিক আছেন যারা শিক্ষিত তাদেরকে ইতোমধ্যে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ লোকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

আমার ধারণা, এ পর্যায়ে প্রথম আলো বিক্রি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এমনকি মতিউর রহমানের চেষ্টাও সফল হবে না। তবে আমার সবসময়ের আকাঙ্খা, সংবাদপত্রের সাথে যারা জড়িত তাদের চাকরি যেন অবশ্যই নিশ্চয়তা থাকে। কারণ এরা দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নিজেদেরকে একটা পর্যায়ে এনেছেন আর এদের চাকরি অবশ্যই থাকতে হবে এবং তাদের যে মেধা, সেই মেধা থেকে জাতি যেন বঞ্চিত না হয়।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন