প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। বিশ্বনেতারা এখন প্রতিনিয়ত শেখ হাসিনার কাছে উন্নয়নের জাদু কী, তা জানতে চান। শেখ হাসিনা বিশ্বনেতাদের জানান, তাঁর উন্নয়নের জাদু দেশপ্রেম।
উন্নয়নের এই ধারা শুরু হয় ২০০৮ সালে নির্বাচনে জনতার আওয়ামী লীগের বিজয়ের মাধ্যমে । ২০০৯ সালে জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার সরকার গঠন বাংলাদেশে ইতিহাসের এক অন্যন্য মাহেন্দ্রক্ষণ । এ সময় শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইস্তেহার বাস্তবায়নে নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে শেখ হাসিনা এসব উন্নয়নের পরিকল্পনা শুরু করেন । কিন্তু ২০০১ সালের অক্টোবরের প্রহসনের নির্বাচনে বিএনপি জামায়েত জোট ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের উন্নয়নমুখী সকল প্রকল্প একবাক্যে বাতিল করে দেয় তৎকালে খালেদা নিজামী সরকার। দুর্নীতিতে দেশ দুর্নীতি টানা কয়েকবার চ্যাম্পিয়ান হয়। জোট সরকার দেশকে নিয়ে যায়, খাদের কিনারায়। সেখান থেকে শেখ হাসিনা দেশকে টেনে তুলে আনার সুযোগ পান ২০০৮ সালে জনতার ভোটে বিজয়ের মাধ্যমে।
২০০৯ থেকে বর্তমান সময়ে শেখ হাসিনার সরকার নানামুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়। একযুগে শেখ হাসিনা সরকারের অবকাঠামো উন্নয়নের কথা লিখে শেষ করা যাবে না। আলোচিত পদ্মাসেতু, কর্ণফুলি টানেল, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র,পায়রা প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সবার জানা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যখাতের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন,নতুন নতুন ভবন নির্মাণ, নতুন মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ নানান প্রতিষ্ঠানের অবকাঠানো উন্নয়ন উল্লেখযোগ্য।
স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন শেখ হাসিনার কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। মূলত বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই ধারা অব্যাহত রেখে শেখ হাসিনা হলেন বাংলাদেশের আধুনিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আধুনিক নির্মাতা। বঙ্গবন্ধু স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য সেক্টরের যে উন্নয়নের যাত্রা শুরু করেছিলেন, তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা এই জাতীয় স্বাস্থ্যখাতকে আন্তর্জাতিক মানের করে তুলেছেন।
সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে চিকিৎসক হওয়ার আগ্রহ থাকলেও পাস করার পর তাদের চাকরির নিশ্চয়তা ছিল না। বঙ্গবন্ধু চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে সব মেডিকেল কলেজে মেধাবীদের ভর্তির ব্যবস্থা করেন। চিকিৎসকরা তখন সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেতেন না। বঙ্গবন্ধু চিকিৎসকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান করেন। একই সঙ্গে ১৯৭২ সালের জুন মাসে Bangladesh College of Physicians and Surgeons (BCPS)-কে একটি আইনগত কাঠামো করে সাংগঠনিক রূপদান করেন। দেশে চিকিৎসকদের বিশেষায়িত ট্রেনিং ও উচ্চতর শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার দূরদর্শী চিন্তা থেকেই বঙ্গবন্ধু এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি মিটফোর্ড হাসপাতালকে স্বাধীনতার পরপরই পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের রূপ দেন এবং ১৯৭২ সালেই প্রথম ব্যাচের MBBS ছাত্ররা ভর্তি হয়। দেশের একমাত্র কলেরা হাসপাতালকে The International Centre for Diarrhoeal Disease Research,Bangladesh (ICDDR,B) হিসেবে রূপান্তর করে একে সাংগঠনিক রূপ দেন। শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্যের দিকে বঙ্গবন্ধুর সজাগ দৃষ্টি ছিল। এ প্রেক্ষাপটে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত ‘National Economic Council of Bangladesh’-এর সভায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট একটি শিশু হাসপাতাল প্রকল্প অনুমোদিত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালে মার্চ মাসে তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এই প্রকল্প বর্তমান অবস্থান শেরেবাংলা নগরের শ্যামলীতে স্থানান্তর করেন, যা ঢাকা শিশু হাসপাতাল নামে পরিচিত। স্বাস্থ্য খাতে বঙ্গবন্ধুর ব্যাপক কর্মপরিকল্পনার আরও একটি দিক হল, ১৯৭২ সালে ১০০ শয্যার বিশেষায়িত সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল স্থাপন করেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের সময় ১৯৭২ সালে সারা দেশে হাসপাতাল ছিল মাত্র ৬৭টি, যা ছিল খুবই অপ্রতুল।
যার ফলে গরিব জনগোষ্ঠী ঠিকমতো চিকিৎসা নিতে পারত না। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বঙ্গবন্ধু সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রতি থানায় একটি করে হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেন। যার ফলে বঙ্গবন্ধু নির্মমভাবে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত এভাবে সারা দেশে ৩৭৫টি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়।
শুধু চিকিৎসক ও হাসপাতালই নয়- বঙ্গবন্ধু গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধের দিকেও নজর দিয়েছিলেন। এজন্য তিনি প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেন, যার লক্ষ্য ছিল ক্ষতিকর, অপ্রয়োজনীয় ও বেশি দামি ওষুধ আমদানি বন্ধ এবং ওষুধের যৌক্তিক ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করা। ক্ষতিকর অনেক ওষুধও তিনি বাতিল করেছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি ওষুধের উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ওষুধ প্রশাসন পরিদফতর গঠন করেন। বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলো কর্তৃক মামলা করার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তিনি ওষুধের পেটেন্ট আইন না মানার ঘোষণা দেন। ফলে মানুষ কম দামে ওষুধ পেত, যা আজও অব্যাহত রয়েছে।
এভাবে তিনি ওষুধ নিয়ন্ত্রণে একটি নীতিমালা তৈরি করেছিলেন, যাকে বাংলাদেশের প্রথম ওষুধনীতি বলা যেতে পারে। উল্লেখ্য, পরবর্তীকালে ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতি প্রণয়নের সময় বিশেষজ্ঞ কমিটি বঙ্গবন্ধুর এসব নীতিমালাকেই ভিত্তি হিসেবে অনুসরণ করেছিল।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পাকিস্তানি আমলের নৈরাজ্য আবার ফিরে আসে। তার থেকে উত্তরণে দু’দশক লেগে যায়। ১৯৭৫-পরবর্তী সরকারগুলো সর্বজনবান্ধব নীতি ও প্রকল্প বাদ দিয়ে দেয়।
ওষুধনীতিরও অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ ও মূল্যসংক্রান্ত নিয়মের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটানো হয় ১৯৯৪ সালে। আক্ষরিক অর্থেই স্বাস্থ্য খাতের জনবান্ধব নীতিমালা থেকে সরকার সরে আসে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এলে স্বাস্থ্য খাত আবার জনবান্ধব হতে থাকে। স্বাস্থ্যকে গণমুখী ও জনবান্ধব করার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা ১৯৯৮ সালে দরিদ্র মানুষের প্রতি লক্ষ্য রেখে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিকে একত্র করার ফলে সেবা পাওয়া আরও সহজ হয়। এ সময় শেখ হাসিনা বুঝতে পারেন দেশের স্বাস্থ্যসেবা শতভাগ নিশ্চিত করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব না।তাই বেসরকারি খাতকে উদ্বুদ্ধ করতে মেডিকেল ও চিকিৎসা সেবার কাছে সকল প্রকার যন্ত্রপাতির উপর কর ও ভ্যাট মুক্ত করেন। যার পরে বেসরকারি বড় বড় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সেবাদান শুরু করে। দেশের প্রায় প্রতিটি শহরের হাসপাতালগুলো কার্ডিয়াক সেবার সুযোগ হয়। বর্তমানে বিভিন্ন শহরের বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো কার্ডিয়াক সার্জারি সেবা দেয়া হচ্ছে।বিভিন্ন চিকিৎসক সোসাইটির অধীনে দেশে বড় বড় আন্তর্জাতিক চিকিৎসক সভা সেমিনার হচ্ছে। যার ফলে তরুণ চিকিৎসরা প্রশিক্ষিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের আপত্তি না শুনে জননেত্রী শেখ হাসিনা শাহবাগ ইন্সটিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ ও হাসপাতাল (আইপিজিএমআর)-কে পূর্ণাঙ্গ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে’ রূপান্তরিত করেন এবং হাসপাতালকে উন্নততর সেবাদান পরিকল্পনার অনুমোদন দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালগুলোকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেন। ফলে বিশেষত গরিব মানুষ উন্নত সেবা পেতে থাকে। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন শুরু করেন, যা ন্যক্কারজনকভাবে ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দেয়।
বঙ্গবন্ধু কন্যা ২০০৯ সালে আবার সরকারে আসার পর গরিব মানুষের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের কাজ শুরু করেন এবং এ পর্যন্ত সারা দেশে মোট ১৩ হাজার ৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক, যেগুলোতে ৩১টি ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে সরকারি ৩০টি ও বেসরকারি ৭৪টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে চিকিৎসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি সব মেডিকেল কলেজের পাঠ্যসূচিকে উন্নত এবং একমুখী করেছেন।
এভাবে প্রতি বছর সারা দেশে ১০ হাজার চিকিৎসক স্বাস্থ্যসেবায় যোগ দিতে পারবেন। সব জেলা হাসপাতালকে তিনি ২৫০ শয্যা, যেগুলো ২৫০ শয্যার ছিল সেগুলোকে ৫০০ শয্যা এবং ৫০০ শয্যার হাসপাতালকে ১ হাজার শয্যায় রূপান্তরিত করেছেন।
কিছু সমস্যা সত্ত্বেও সরকারি হাসপাতালগুলো এখনও গরিব মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার একমাত্র জায়গা। গরিব জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি মাথায় রেখে তিনি এসব করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি সব সরকারি হাসপাতালে রোগী প্রতি খাবারের বরাদ্দ দ্বিগুণ করে দিয়েছেন।
এছাড়া নতুন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৩৬টি। দেশে এই প্রথম জেলা হাসপাতালগুলোতে কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শহরের নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তদের জন্য নতুন হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া উন্নত বিশ্বের মতো নতুন বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
উপজেলা ও জেলা হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামের হাসপাতাল থেকে ভিডিও কনফারেন্স করে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন’ প্রকল্পে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে গ্রামের রোগীরাও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতামত পাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। রোগীরা এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে কম যাচ্ছে এবং জটিল ও দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা দেশেই গ্রহণ করতে শুরু করেছে।
যেখানে শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৫ শয্যার একটিমাত্র বার্ন ইউনিট ছিল এখন সেখানে নতুন একটি ‘শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল ’ উন্নত ও সম্প্রসারিত চিকিৎসা সেবাদানের জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে। এছাড়া প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা হাসপাতালে বার্ন ইউনিট খোলা হচ্ছে। নতুন একটি শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল নির্মিত হয়েছে, যেখানে বর্তমানে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে।
করোনো নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রেষ্ঠ হয়েছে। উন্নত বিশ্ব যেখানে করোনা ভ্যাকসিন পেতে হিমশিম খাচ্ছে। শেখ হাসিনার করোনা মোকাবেলায় সফল কূটনীতির ফলে বাংলাদেশ করোনা ভ্যাকসিন পেয়েছে।
দেশে বেশ কয়েকটি ২৫০ বেডের চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হয়েছে। তেজগাঁওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট। প্রতিবছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট ও সিএমএইচ থেকে বধির শিশুদের কক্কলিয়ার বিনামূল্যে প্রদান করে আসছে।সম্প্রতি সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজে বধির শিশুদের কক্কলিয়ার বিনামূল্যে প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের পথে। দেশের ৬৪ জেলায় মেডিকেল কলেজ করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নার্সদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী তাদের সরকারি দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেয়া হয়েছে। এ রকম আরও বিভিন্ন জনবান্ধব ও গরিব মানুষের কল্যাণমুখী কাজের ফলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত আজ তৃতীয় বিশ্বের রোল মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে অনেক ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে। Bangladesh Bureau of Statistics 2019 তথ্যানুসারে, নবজাতক মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৩০ এবং ১ বছর পর্যন্ত শিশুমৃত্যু হার ৩৮; আর ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার বর্তমানে প্রতি হাজারে ৪৫ জনে নেমে এসেছে। মাতৃমৃত্যুর হার বর্তমানে ১.৮১ প্রতি হাজারে। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের সফলতায় বাংলাদেশ বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
শিশুদের টিকাদান কর্মসূচির অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম আদর্শ দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। যেজন্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ‘ভ্যাকসিন হিরো’ (২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯) সম্মাননায় ভূষিত হন। কালাজ্বরে মৃত্যুর হার এখন শূন্য।
যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসায় সফলতার হার এখন ৯৪ শতাংশ। এইচআইভির বিস্তার থামানো গেছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ বার্ড ফ্লু প্রতিহত করতে পেরেছে। হেপাটাইটিস-বি, মাম্পস, রুবেলা ও নিউমোনিয়ার টিকাও এখন সরকারি টিকা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশকে এখন পোলিওমুক্ত রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের কারণে এখন দুর্ভিক্ষ আর মঙ্গা নেই। মানুষের সচ্ছলতা বেড়েছে। ফলে মানুষের গড়পড়তা ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে। বিভিন্ন হিসাবে ক্যালরি গ্রহণের সর্বনিম্ন পরিমাণ ২ হাজার ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬৪০ পর্যন্ত পাওয়া গেছে, যা গড়ে ২ হাজার ২০০ ক্যালরি অনায়াসেই ধরে নেয়া যায়। ফলে মানুষের কর্মক্ষমতা বেড়েছে। পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের উন্নতির ফলে গড় আয়ু বেড়ে ৭১.২ বছর হয়েছে।
সরকারের এতসব সাফল্যের কারণে জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাংলাদেশ ২০১৫ সালের আগেই অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের দু’বছর আগেই অর্জনে সফল হয়েছে। যার স্বীকৃতি স্বরূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘এমডিজি অ্যাওয়ার্ড ২০১০’, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তির সফল প্রয়োগের জন্য ‘সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড ২০১১’সহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন।
বাংলাদেশে নারী শিক্ষা ও উদ্যোক্তা তৈরিতে অসামান্য নেতৃত্বদানের জন্য গত বছরের ২৭ এপ্রিল ২০১৯ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন।
ওষুধের মানসম্মত উৎপাদন ও দেশকে ওষুধে স্বনির্ভর করার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে যে ওষুধ প্রশাসন পরিদফতর গঠন করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে একে অধিদফতর করেছেন। এখন দেশের বার্ষিক চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এখন বাংলাদেশের ওষুধ মোট ১২৫টি দেশে রফতানি হচ্ছে। স্বল্পোন্নত, উন্নয়নশীল ও উন্নত বিশ্বও আজ আমাদের ওষুধ খাচ্ছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ওষুধের বাজার বলে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এ বছর থেকে আমাদের ওষুধ রফতানি শুরু হয়েছে। কিছু অসাধু ওষুধ কোম্পানি যখন যে সরকার আসে সে সরকারি দলের আশ্রয়ে গিয়ে নিম্নমান, নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রির চেষ্টা করে থাকে।
এ সরকারের আমলে জাতীয় সংসদের স্বাস্থ্যবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সুপারিশে ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নিম্নমান, নকল ও ভেজাল ওষুধ নির্মূলে ৬২টি বেশী কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সরকারের এসব তৎপরতা অব্যাহত থাকায় দেশের ওষুধ খাত গার্মেন্টসের পরই দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি খাতে পরিণত হচ্ছে।
মহামারী করোনাভাইরাসের টিকা পেতে যখন উন্নত বিশ্ব হতবিহ্বল, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ প্রতিদিন ভ্যাক্সিন আমদানী করছে। শেখ হাসিনার নির্দেশেই গোপালগঞ্জে আগামী ছমাসের মধ্যে করোনাভাইরাস রোধী টিকা উৎপাদন শুরু হচ্ছে।
করোনাভাইরাস রোধে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি কথা, যত টাকা লাগুক দেশের প্রতিটি নাগরিককে করোনাভাইরাস রোধী টিকার আওতায় আনা হবে।
লেখক পরিচিতি: সাবেক সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
দেশে একটি সুষ্ঠু
নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে
রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং
সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা
সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ
ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি
সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।
আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা
রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত
অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান
ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে
দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে
এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক
করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি
একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি
পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার
করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের
সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন
পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন
শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী
লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের
প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন
করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে
সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।
গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে,
তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো
দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের
অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা
পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে
প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ
এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে
নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও
একই ভাবে থেকেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি
হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে
যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু
এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার
পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে
তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
মন্তব্য করুন
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।