নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
বাংলা গানের প্রবাদতুল্য গীতিকার শ্রদ্ধেয় গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের ``মঙ্গল দীপজ্বেলে অন্ধকারে---বিখ্যাত গানের বাণী থেকে লেখার শিরোনামটি ধার করা হলো। ঢাকা থেকে দুবাই যাচ্ছিলাম। উদ্দেশ্য আসন্ন দুবাই এক্সপো-২০২০ এতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, প্যাভিলিয়ন ব্যবস্হাপনা স্বচক্ষে অবলোকন, কমার্সিয়াল কাউন্সিলর ও দুবাই কনস্যুলেট জেনারেল অফিসে সভা ইত্যাদি প্রস্তুতিমূলক কাজ।
উল্লেখ করা যায়, করোনা বিশ্বের বেহাল অবস্থার কারনেই এক্সপো ০১ অক্টোবর ২০২১ থেকে শুরু হচ্ছে। সীটে বসেই এদিক ওদিক তাকাই- কিন্তু যাত্রী কোথায়? এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিজনেস ক্লাসে আমরা চারজন। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী`র উপদেষ্টা ড.তৌফিক এলাহি চৌধূরী স্যারের সাথে দু`জন এ-ই। একপর্যায়ে একজন এয়ার ক্রুকে জিজ্ঞেস করি আজ তোমাদের প্যাসেন্জার কতজন? জানায় ১২৫ জনের মত হবে অর্থাৎ পঞ্চাশ শতাংশেরও কম। করোনা পরিস্থিতি, এমিরেটসের বিধি-নিষেধ, পিসিআর/ এন্টিজেন টেস্ট জটিলতা এসবই মূল কারণ। আবহাওয়া সম্পূর্ণ অনুকূলে ছিল। তবু চার ঘন্টার একটু বেশি সময় লাগে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছাতে। যদিও করোনাবিশ্বে এ বিমান বন্দরের চিত্র অনেকটা অচেনা মনে হলো।
২) সরকারের সচিব হিসেবে এই প্রথম দেশের বাইরে যাওয়া। চাকরির সমাপনী বেলার ঘন্টাধ্বনিতে পররাষ্ট্রে এ সফর। আমার কুটনৈতিক পাসপোর্টেও প্রথম স্পর্শ। ধারণা ছিল দাগবিহীন অবস্থায়ই এটা চাকরি অন্তে সরকারের জিম্মায় জমা দিয়ে যাব। আমার প্রয়াত স্ত্রী জেবু এমনটাই ভবিষ্যত বাণী করেছিল। বহুদিন পর বিদেশের মাটিতে এসে তাঁকে খুব মিস করছি। ভাবছি, এরি মধ্যে কতবার তার ফোন কল হত। খাওয়া, থাকা, হোটেল কামরার বর্ণনা আরও কতকিছু। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্পাউস হিসেবে তার হাতে লাল পাসপোর্টটি হস্তান্তর করার সময় তাৎক্ষণিক মন্তব্য ছিল, "করোনা নাকি বাংলাদেশেও চলে আসছে। কয়েক বছর নাকি থাকবে। তোমার চাকরিকালীন এটা মনে হয় ব্যবহারের সুযোগ পাবোনা"। তার কথাই সত্যি হলো, নিষ্ঠুর অদৃশ্য করোনাতেই সে জুন মাসে আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নেয়। তবুও মনে হয়, আমার চারপাশ ঘিরে এখনো শুধু ওরই বিচরণ।
৩) এক পলক তাকালেই দুবাই একটি ছোট্ট দেশ। বলা যায়, UAE`র একটি প্রদেশ বা আরব আমিরাতের আধুনিকতম ও পর্যটন নগরী। এদের এমিরেটস এয়ারলাইন্স পৃথিবীর আকাশেও একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে চলেছে। কঠোর আইন-শৃঙ্খলা, নিপুণ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, আকাশচুম্বী অট্রালিকা, স্থাপত্যের অভাবনীয় সৌন্দর্য, দৃষ্টিনন্দন বৈদ্যুতিক কারুকার্য বলতে গেলে গোটা বিশ্বকেই মোহাচ্ছন্নতায় ফেলে দিয়েছে এখানকার পরম্পরার সরকার ব্যবস্হা। তবে আমিরাতের বৃহত্তম শহরের নামই দুবাই। যার আয়তন ৪,১১৪ বর্গ কিঃ মিঃ। জনসংখ্যা ৩৫ লাখের কাছাকাছি হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পারস্য উপসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত পরম রাজতন্ত্রের কাঠামোতে গড়ে উঠা এক সরকার ব্যবস্হার মূর্তমান প্রতীক এটি। ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিষ্ঠিত হয়। সময়ের হিসেবে আমাদের বাংলাদেশের সাথে মিল আছে। আমিরাতের আয়তন প্রায় ৮৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার। এদের মাথাপিছু আয় প্রায় ৬৮ হাজার মার্কিন ডলার। দুবাইসহ সাতটি আমিরাতে আজমান, আল ফুজাইরা,শারজাহ্, রাআস আল খাইমা, উম্ম আল ক্বাইওয়াইন। এদের রাজধানী আবুধাবি। সব মিলিয়ে জনসংখ্যা এক কোটির মত। এতে ভারতীয়,পাকিস্তানি ও বাংলাদেশীয়দের প্রাধান্য লক্ষ্যনীয়। মোট জনসংখ্যার ১২% আদি আমিরাতের বাসিন্দা এবং ৮৮ ভাগ বহিঃবিশ্বের। এ ১২% জনই ৮৮ ভাগকে প্রযুক্তির নির্ভরতায় সুচারু ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে চলেছেন। একে অদৃশ্য সুশাসনও (invisible Governance) বলা যায়। কোথাও কেউ নেই অথচ সর্বত্র বিরাজমান। ভাষা আরবী ও মুদ্রা দিরহাম। এক দিরহাম সমান ০.২৭ মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশী ২৩ টাকার কাছাকাছি।
৪) দুবাই শহরে ঘুরতে গিয়ে বিচিত্র জিনিস দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে। বুর্জ আল্ খলিফার আকাশ ছোঁয়া ইমারত শৈলী শুধু নয় এর আলোকসম্পাতের অনন্য অপরূপ নান্দনিকতা সারা দুনিয়ার পর্যটকদের নিয়ত আকৃষ্ট করে চলেছে। বুর্জ আল আরব নামের সাত তারকা হোটেলের নির্মানকৌশলেও সবার মাঝে অনাবিল মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। ম্যারিনা সৈকতের দৃশ্য চোখে পড়ার মতন। ডেজার্ট সাফারিতে প্রচুর বিদেশি প্রতিদিন গাড়ি চড়ে আনন্দ উপভোগ করছে। সাম্প্রতিককালে তৈরি দুবাই গেইট ইতোমধ্যে সর্ব্বোচ্চ নয়নাভিরাম ও ব্যয়বহুল গেইট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। মহিষের শিং এর আদলে অসাধারণ নক্সায় তৈরি হয়েছে দুবাই ফিউসার মিউজিয়াম। প্রচন্ড উত্তাপ আর ধূলিকণার ভেতর থেকে যেন প্রতিমুহূর্তে অঙ্কুরিত হয়ে হাজার হাজার বহুতল ভবনের মিছিলে উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে এ শহর। বৃষ্টিহীন জনপদের মাটি ভেদ করে উঠে আসে রাশি রাশি তেলের স্রোতধারা। তাই প্রতিটা বৃক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে কৃত্রিম করুণাধারা। তবুও খেজুরের শাখা প্রশাখাগুলো বিবর্ণ বদনে পথচারীদের কাছে যেন বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে। পাথর আর বালির মরুপথের বাঁকে চোখে পড়ে এক টুকরো সবুজে ঝরে পড়ছে কাঠ গোলাপের পাপড়ি। ভাবছিলাম, আমাদের এত সবুজের সমারোহ যেখানে মেঘ না চাইতেই অনবরত বৃষ্টি। অথচ অনেক কিছুই নেই আমাদের। তবে আমরাও একদিন।
৫) দাপ্তরিক কাজের ফাঁকে দুবাইয়ে দুটো হাসপাতালে যাই। দুবাই `আমেরিকান হসপিটাল` এবং `সৌদি-জার্মান হসপিটাল`। দুটো হসপিটালই অভাবনীয় ব্যবস্হাপনায় পরিচালিত। স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচ্ছন্নতা বিশ্বমান সম্পন্ন। কোভিড-১৯ মোকাবেলায়ও এরা দারুণ সফল। আমেরিকান হসপিটালটি গত ২৫ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্য, আমিরাত এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত থেকে সুনাম কুড়িয়ে চলেছে। সেখানকার মিসরীয় ENT Specialist Dr. Aiham Alshawwa এর সাথে কথা বলে মনে হয়েছে প্রকৃত অর্থে একজন চিকিৎসক। রোগীকে রিসিভ করতে দরজার বাইরে এসে দাঁড়িয়ে। মনে হলো রোগীর সময়ই তাদের সময়। পরদিন সাক্ষাৎ করি জর্ডানের Specialist Oral Surgery dept. Dr. Tareq Gharaibeh এর সঙ্গে। অসাধারণ তাঁর কথা ও রোগীর মনোবল বৃদ্ধি করার কৌশল। আমাকে কিছু পরামর্শ দিয়ে একমাসের ব্যবধানে পুনঃ সাক্ষাতের ব্যবস্হা করলেন।
প্রথমদিন দ্বিতীয় প্রহরে সাক্ষাৎ করি সৌদি-জার্মান হসপিটালের Cardiologist Dr. Fuad Hakeem Fcps, Lahore, Pakistan এর সাথে। বয়সে তরুণ তবে দারুণ পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করে জনপ্রিয় তিনি। দীর্ঘ সময় শুনলেন। দুয়েকটা সাধারণ ঔষধ লিখে দিলেন। নিয়মিত ব্যয়াম ও পরিমিত আহার বিষয়ক পরামর্শ। যা-ই বলুক, আত্মবিশ্বাসী করে তোলার চমৎকার আর্ট তারা আয়ত্ত করেছে ধৈর্য, মানবতা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে। কেবল এ একটি জায়গায় আমরা এখনো বেশ পিছিয়ে।
৬) এক্সপো ২০২০ ভেনু এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে বিমোহিত হয়েছি আমরা সবাই। পৃথিবীর ১৯২ রাষ্ট্রের জাতীয় পতাকার সারিবদ্ধ মিছিলে আমাদের গাঢ় সবুজের বুকে লাল সূর্যকে খোঁজে পেয়ে গর্ববোধ করেছি। আমাদের প্যাভিলিয়নের ভেতরটায় LED`র ব্যবহার ও event management এর নিরলস প্রচেষ্টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এর ম্যুরালসহ একখন্ড অখণ্ড বাংলাদেশের উদ্ভাসন হবে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।